সালাফী আকিদা ও মানহাজে

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

SignUp Now!

রদ্দে খারেজিয়্যাত

খারেজীদের আক্বীদা ও ইতিহাস
আভিধানিক অর্থে ‘খারেজী’ শব্দটি আরবী ‘খুরূজ’ (الخروج) শব্দ হ’তে নির্গত, যার অর্থ ‘বের হওয়া বা বেরিয়ে যাওয়া’। বহুবচনে ‘খাওয়ারিজ’ ব্যবহৃত হয়। পারিভাষিক অর্থে শাহরাস্তানী (মৃঃ ৫৪৮ হিঃ) এর মতে খারেজী হ’ল- ‘প্রত্যেক এমন ব্যক্তি যে এমন হক ইমামের (শাসক) বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, যাকে লোকেরা ইমাম হিসাবে স্বীকার করে নিয়েছে। চাই এই বিদ্রোহ সাহাবীগণের যুগে হেদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদার বিরুদ্ধে হোক বা তাদের পরবর্তী তাবেঈনে এযামের যুগে কিংবা তৎপরবর্তী যে কোন শাসকের যুগে হোক’। ইবনু হাযম আন্দালুসী (রহঃ)-এর সংজ্ঞা অনুযায়ী ‘খারেজী বলতে প্রত্যেক এমন সম্প্রদায়কে বুঝায় যারা চতুর্থ খলীফা আলী (রাঃ)-এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারীদের মতামত কিংবা তাদের রায় অবলম্বনকারী, তা যেকোন যুগেই হোক না কেন’। ড. নাছির আল-আক্বল বলেন, ‘খারেজী হচ্ছে, যারা গোনাহের কারণে অন্য মুসলমানকে...
খারেজী সম্প্রদায়ঃ পরিচয়, উৎপত্তি ও চিন্তাধারা - ১ ━━━━━━━━━━━━━━━━ ইসলামের ইতিহাসে সন্ত্রাসী গ্রুপের উত্থানের প্রথম ঘটনা আমরা দেখতে পাই খারিজী সম্প্রদায়ের কর্মকাণ্ড। ৩৫ হিজরী সালে (৬৫৬ খু.) ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান উসমান ইবনু আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহু কতিপয় বিদ্রোহীর হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। এরপর আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু খিলাফতের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। মুসলিম রাষ্ট্রের সেনাপতি ও গভর্নরগণ আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর আনুগত্য স্বীকার করেন। কিন্তু সিরিয়ার গভর্নর মু'আবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু আলীর আনুগত্য গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। তিনি দাবি জানান যে, আগে খলীফা উসমানের হত্যাকারীদের বিচার করতে হবে। আলী দাবি জানান যে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পূর্বে বিদ্রোহীদের বিচার শুরু করলে বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পেতে পারে, কাজেই আগে আমাদের...
বর্তমান শাসকদের নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে কথোপকথন...!!! ১) শাসক জালেম হলে আমরা কিভাবে তার থেকে রেহাই পাব?? ২) কিন্তু সে তো শরীয়ত মোতাবেক শাসন করে না!! মানব দেহে শয়তানের অন্তর লালন করবে।" আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল, এরকম সময়ে আমি কি করব?? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: তুমি শাসকের কথা শুনবে ও মানবে, যদিও সে তোমাকে মেরে তোমার সম্পদ দখল করে নেয়। তথাপিও তুমি তার আনুগত্য করবে।" -(মুসলিম/১৮৪৭)। ৩) শাসক তো আমার সবকিছু নিয়ে নিল!!আমাকে সে কষ্ট দিচ্ছে!! তোমাকে মেরে তোমার সম্পদ দখল করে নেয়। তথাপিও তুমি তার আনুগত্য করবে।" -(মুসলিম/১৮৪৭)। ৪) কিন্তু সে তো আমাদের সবকিছু নিয়ে জুলুম করছে, আমাদের বঞ্চিত করছে ?!! ৫) আচ্ছা সে যদি আমাকে আল্লাহর অবাধ্যতামূলক কোনো কাজ করার কথা বলে?? ৬) আমি যদি...
মুসলিম শাসকের প্রতি আমাদের কীরূপ আচরণ হওয়া উচিত? এবং অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কী হওয়া দরকার সেই বিষয়গুলো নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক চৌধুরীর অসাধারণ একটি আলোচনা! আলোচনাটি মাসজিদ আস সিদ্দিক (রাঃ) কমপ্লেক্স এ দেয়া হয়েছিল ২৮ জানুয়ারী ২০২২ সালে। ভিডিও মাসজিদ আস সিদ্দিক (রাঃ) কমপ্লেক্সের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেল থেকে নেয়া। যে বইটি থেকে আলোচনা করা হয়েছে সেটি হচ্ছে - "Abdullah Al-Athari" এর লেখা "Islamic Beliefs A Brief Introduction to the 'Aqeedah of Ahl Assunnah Wal-jama'a" বইটি থেকে "The obligation to obey Muslim leader with regard to that which his right and proper" অধ্যায় থেকে আলোচনা করা হয়েছে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বক্তব্য যা আমরা নিজেরা জানবো এবং অন্যদের কাছেও এটি শেয়ার করবেন, ইনশাআল্লাহ। ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক...
খারেজীদের অভিযোগের অপনোদনে ইবনু আব্বাস রাদ্বিআল্লাহু আনহু
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন: আলী (রা) এর বাহিনী থেকে (হারুরিয়্যাহ) খাওয়ারিজরা বিচ্ছিন্ন হয়ে তারা একত্রিত হয়। তাদের সংখ্যা ছিল ছয় হাজারের মতো। তারা(খারেজীরা) নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে এ ব্যাপারে একমত হলো যে, তারা সাইয়্যেদুনা আলী (রা) বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে। লোকেরা ক্রমাগত সাইয়্যিদুনা আলীর কাছে আসতে থাকে এবং খবর দিতে লাগলো, খাওয়ারিজরা আলী (রা) বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তখন সাইয়্যিদুনা আলী (রা) বলেছিলেন: ❝আমি তাদের কিছু বলব না, যতক্ষণ না তারা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বের হচ্ছে। তবে তারা অবশ্যই বেরিয়ে আসবে এবং লড়াই করবে।❞ ইবনু আব্বাস (রা) আবার কাহিনী বলতে শুরু করলেন… একদিন জোহরের নামাজের সময় আমি[ইবনু আব্বাস] আলী (রা) সামনে হাজির হয়ে বললাম: ❝হে আমীরুল মুমিনীন, আজ সলাতে একটু বিলম্ব করুন। আজ হয়তো আমি খাওয়ারিজের কাছে গিয়ে তাদের...
ইমাম আবু বকর আল-আজুর্রী [মৃত্যু: ৩৬০ হিজরী] রাহিমাহুল্লাহ্ বলেছেন: “শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারী খা’রেজীর উত্থান যে ব্যক্তি দেখবে, সে ন্যায়পরায়ণ হোক বা অত্যাচারী হোক, এই ব্যক্তি বিদ্রোহ করেছে এবং তার পিছে একদল জড়ো করেছে, তরবারি কোষমুক্ত করেছে এবং মুছলিমদেরকে হত্যা করা হালাল করেছে, যে ব্যক্তি এটা দেখেছে তার জন্য সঙ্গত নয় যে, সে এই ব্যক্তির কু’রআন তেলাওয়াত, ছালাতের দৈর্ঘ্য, ক্রমাগত ছওম পালন, না ইলমে তার উত্তম ও চমত্কার কথা দ্বারা প্রতারিত হবে, যখন তার কাছে এটা স্পষ্ট যে এই ব্যক্তির পথ ও পদ্ধতি খা’ওয়ারিজদের মতো।” [আশ-শারীয়া: ২৮ নং পৃষ্ঠা] রাছূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-‘ছাল্লাম বলেছেন: তিনটি বিষয় আছে যেগুলোর প্রতি একজন মুছলিমের অন্তর কখনো ঘৃণা প্রকাশ করে না: আল্লাহ্’র জন্য আন্তরিকভাবে আমল করদ, শাসকদের আনুগত্য করা, এবং জাম’আতকে আঁকড়ে ধরা..।”...
১. যদি শাসক কাফের হয়, যার কুফরীর ব্যাপারে প্রমাণ স্পষ্ট হয়, তখন তার বিরুদ্ধে বের হওয়া মুসলিমদের জন্য ওয়াজিব হয়ে যায়, তবে শর্ত হচ্ছে, সমস্যা দূর করা কিংবা কমিয়ে ফেলার ক্ষমতা থাকতে হবে। সমস্যা যা আছে তার চেয়ে বড় ফিতনা কিংবা তার সম পর্যায়ের ফিতনাতে নিপতিত হওয়ার সম্ভাবনা মুক্ত থাকতে হবে। যদি শর্ত পূরণ করা সম্ভব না হয়, তবে সেখানে ধৈর্যের সাথে অনুকুল অবস্থার জন্য কাজ করে যেতে হবে। ২. যদি শাসক যালিম হয় বা ফাসেক হয়, তখন তার বিরুদ্ধে বের হওয়া যাবে কি না এ ব্যাপারে সালাফদের মাঝে দু'টি মত রয়েছে: বের হওয়া যাবে। এটি হানাফী, মালেকী ও শাফেয়ী মাযহাবের ইমামগণের মত। এর পক্ষে যেমন কুরআন ও হাদীসের ভাষ্য অনেক তেমনি যুক্তি ও ঐতিহাসিক ঘটনাও কম নয়। বের হওয়া যাবে না। ইমাম আহমাদ ও পরবর্তী আলেমগণের ঐকমত্য। এ ব্যাপারেও কুরআন হাদীস ও...
রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে বের হওয়ার সাধারণ সূরত ৪টি: ১। খারেজী সম্প্রদায়: তারা হচ্ছে ঐসব লোক, যারা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা'আতের আকীদাহ ও মৌলিক আমল বিরোধী হওয়ায় প্রবৃত্তি অনুসরণ করে রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে বের হয়। তারা সাধারণত কবীরা গুনাহকারীকে কাফের বলে, যালিম শাসকের বিরুদ্ধে বের হওয়া সর্বাবস্থায় ফরয মনে করে। এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশনা রয়েছে। ২। বাগী বা বিদ্রোহী সম্প্রদায়: যারা ন্যায়পরায়ণ রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষমতা গ্রহণের জন্য কোনো গ্রহণযোগ্য তা’ওয়ীল বা ব্যাখ্যা কিংবা অগ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা সহকারে বের হয়েছে। অনুরূপ যারা ন্যায়পরায়ণ রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক, দলীয় গোঁড়ামী কিংবা দুনিয়া লাভ করার জন্য বের হবে। তাদের সাথে প্রথমেই যুদ্ধ করা হবে না...
খারেজী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এ পার্থক্য জানা অতীব জরুরী জিনিস। ইবন তাইমিয়্যাহ অনেক কিতাবে এ পার্থক্য তুলে ধরেছেন। শাইখুল ইসলাম বলেন, অনেকের নিকট খারেজী আর বিদ্রোহী একই রকম। তার ওপর ভিত্তি করে তারা বিভিন্ন মাসআলা বের করে নিয়েছে। কিন্তু বস্তুত তা ভুল। কারণ বিশুদ্ধ কথা যার ওপর হাদীসের ইমাম, সুন্নার বিশেষজ্ঞ ও মদীনাবাসী রয়েছেন, যেমন, আওযা'ঈ, সাওরী, মালেক ও আহমাদ ইবন হাম্বল, তা হচ্ছে উভয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে হবে। দেখুন, ফাতাওয়া (৮/৫৪৮-৫৪৯)। ইবন তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, শরী'আর অনেক গ্রন্থকার ইমাম তাদের গ্রন্থে, যারা আকীদাহ ও আমল বিষয়ক মূলনীতির বাইরে যাওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে, যেমন যাকাত অস্বীকারকারী ও খারেজী সম্প্রদায়, এদের সাথে যুদ্ধের বিষয়টিকে, যারা ইমাম বা শাসকের বিরুদ্ধে বের হয়ে যুদ্ধে...
শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই কথা খেয়াল করুনঃ "খারেজীদের যখনই শিং বেরোবে (উৎপত্তি ঘটবে), কেটে ফেলা হবে। এমনকি, এদের শেষ ব্যক্তি দাজ্জালের সাথে যোগ দেবে।" -(ইবনু মাজাহ/১৭৪) এখান থেকে বোঝা যায়ঃ ১) তাদের প্রকাশের মাঝে একটা গতি ও শক্তি থাকবে। কারণ, শিংয়ের মতো বলা হয়েছে। ২) তাদের এই শিং (শক্তি) আল্লাহই কেটে দেবেন তার সুনিপুণ পরিচালনায়। সেজন্যই, নির্দিষ্ট কারো দিকে কাটাকে নিসবত করেননি। আল্লাহর কসম, আমি এটাতে আশ্চর্য হয়ে যাই। আল্লাহরই যাবতীয় প্রশংসা, যিনি আহলুস সুন্নাহকে সম্মানিত করেছেন; যদিও আহলুস সুন্নাহ অনেক কম, দুর্বল, কোনো সাতপাঁচে নেই। আল্লাহ তা'আলা তাদের সাহায্যকারী। তো তারা আল্লাহর অপার অনুগ্রহে ও সুন্নাহর অনুসরণের বরকতে সত্যের উপরে থেকেই বিজয়ী। ক্ষতিকারীরা এর...
পূর্ববর্তী খারেজীদের মূলনীতিসমূহের মধ্য থেকে একটি হলো— মুসলিম ভূখণ্ডকে দারুল কুফর (কুফরী ভূখণ্ড), দারুল হারব (শত্রু-ভূখণ্ড) ও দারুর রিদ্দাহ (স্বধর্মত্যাগী ভূখণ্ড) হিসেবে বিশেষায়িত করা। নাফে' আল-আযরাক্ব বলেছে, কোনো ভূখণ্ডের লোকজন প্রকাশ্যে ঈমান না আনা পর্যন্ত তা কুফরী ভূখণ্ড (দারুল কুফর) হিসেবে গণ্য হবে। তাদের যবেহকৃত পশু ভক্ষণ করা, তাদের সাথে বিবাহ-শাদী করা এবং ধন-সম্পত্তির ওয়ারিছী (উত্তরাধিকার) বৈধ নয়। তাদের মধ্য থেকে কেউ আসলে তাকে পরীক্ষা করা আমাদের উপর আবশ্যক। তারা আরবের কাফেরদের মতই। (নতুনভাবে) ইসলাম গ্রহণ অথবা তরবারির ভাষা ছাড়া ওদের সাথে কোনো কথা নেই। (এসব থেকে) বসে থাকা/বিরত থাকা ওদের মতোই সমান অপরাধের কাজ)। তাকিয়্যাহ (সত্য বলতে মিথ্যার আশ্রয় নেয়া) বৈধ নয়।১ প্রাচীনকাল ও বর্তমানের সকল খারেজীদের একটি বড় বিশ্বাস হলো, সকল...
কুফরে বাওয়াহ দ্বারা উদ্দেশ্য কি? উপস্থাপকঃ উবাদা বিন সামিত রাযিয়াল্লাহু আনহুর হাদীসে এসেছে যে, "রাসূল ﷺ আমাদেরকে ডাকলে আমরা তার হাতে বাইয়াত নিলাম এই মর্মে যে, পছন্দ-অপছন্দ সহজ-কঠিন, এমনকি আমাদের উপর (অন্যকে) প্রাধান্য দিলেও সব বিষয়েই আমরা (শাসকের কথা) শুনব এবং মানব। আমরা যেন এটা নিয়ে তাদের সাথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত না হই; তবে আল্লাহর পক্ষ থেকে (সুস্পষ্ট) প্রমাণ সাপেক্ষে কোনো স্পষ্ট কুফর দেখলে ভিন্ন কথা।" এখন প্রশ্ন হলো, এই স্পষ্ট কুফর তথা কুফরে বাওয়াহ কি? শায়খঃ এখানে কুফরে বাওয়াহ দ্বারা উদ্দেশ্য স্পষ্ট কুফর, যেটার দলীলের ব্যাপারে ব্যক্তি নিজেই স্যাটিসফাইড হতে পারে না (ভালোমতো বুঝতে পারলে), অন্যকে স্যাটিসফাইড করা দূরের কথা। তো এখানে হুজ্জাহ তথা দলীল মানে একদম সুস্পষ্ট অকাট্য দলীল; অর্থাৎ আমরা যেটাকে কুফর বলছি, সেটার বিষয়ে স্পষ্ট...
বর্তমান ও পূর্বযুগের যারা বিচ্যুত হয়ে গিয়েছে তাদের অন্যতম হলো খারিজীরা। বর্তমান যুগে কাউকে কাফির বলার পক্ষে যে দলীলের পাশে সবসময় মৌমাছির মতো ভনভন করা হয়, তা হলো আল্লাহ তাআলা এ বাণী: وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ আর আল্লাহ যা অবতরণ করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয় না, তারাই কাফির।[1] আমরা সবাই জানি যে, আয়াতটি কয়েকবার এসেছে এবং তিন শব্দে আয়াতটি শেষ করা হয়েছে। যেমন: প্রথম শব্দ ‘কাফির’: وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ আর আল্লাহ যা অবতরণ করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয় না, তারাই কাফির।[2] দ্বিতীয় শব্দ ‘জালিম’: وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ আর আল্লাহ যা অবতরণ করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয় না, তারাই...
"قيل: أدخل خارجي على المأمون فقال: ما حملك على الخلاف؟ قال: قوله: {ومن لم يحكم بما أنزل الله فأولئك هم الكافرون} قال: ألك علم بأنها منزلة؟ قال: نعم. قال: وما دليلك؟ قال: إجماع الأمة. قال: فكما رضيت بإجماعهم في التنزيل فارض بإجماعهم في التأويل. قال: صدقت. السلام عليك يا أمير المؤمنين". سير أعلام النبلاء: (٢٨٠/٩) বলা হয়ে থাকে যে, একবার এক খারেজীকে আব্বাসী খলীফা মামুনের কাছে আনা হলো। খলীফা: তুমি কেন বিদ্রোহ করছ? খারেজী: আল্লাহর এই আয়াতের কারণে: "আর যে আল্লাহর বিধান ছাড়া অন্য বিধান দিয়ে বিচার করবে, সে কাফের হয়ে যাবে"। খলীফা: তুমি কি নিশ্চিত যে, এটা কুরআনের আয়াত? খারেজী: হ্যা, নিশ্চিত। খলীফা: কিভাবে জানলে? খারেজী: উম্মাহর ইজমার মাধ্যমে। খলীফা: তুমি এটা নাযিল হওয়ার ব্যাপারে যেমন ইজমা মেনে নিয়েছ, অনুরূপভাবে এটার যে ব্যাখ্যার...
"আল্লাহর কসম! যত রূপই ধারন করুক না কেন, খারেজী চিন্তাধারা কোনোদিনই উম্মাহর উপকার করতে পারে না। বৈপ্লবিক চিন্তাধারা লালনকারী এবং এটিকে মানুষের কাছে ভালো করে দেখানোর চেষ্টাকারী ইলমের দাবিদার লোকজন সমাজের কোনো কল্যাণই বয়ে আনতে পারে না। সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা ছাড়া এবং শাসকদের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে এই সমস্ত বিভ্রান্ত চিন্তাধারা থেকে বিরত না হওয়া পর্যন্ত উম্মাহর অবস্থা সংশোধন হবে না। খুরতুমে -আল্লাহ এই শহরকে হেফাজত করুন- চলমান অত্যাচার, লুন্ঠন, মৌলিক অধিকারে জুলুম ইত্যাদি খবর যখন দেখি, তখন শায়খুল ইসলাম ইবনে তায়মিয়া রহিমাহুল্লাহর এই কথাটা স্মরণ হয়: "বলা হয়ে থাকে, ষাট বছর জালেম শাসকের অধীনে থাকা শাসকহীন এক রাত থাকার চেয়ে উত্তম। বাস্তব অভিজ্ঞতা এটাকে সমর্থন করে।" আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা সুদান, সুদানের অধিবাসী সহ সমস্ত মুসলিম দেশকে...
মুসলিম সমাজে রাষ্ট্র সংস্কারে হাদীসের নির্দেশনা আমরা দেখেছি যে, সমকালীন মুসলিম রাষ্ট্রগুলি উমাইয়া, আববাসী, ফাতিমী, বাতিনী ইত্যাদি মুসলিম রাষ্ট্রের মতই পাপে লিপ্ত মুসলিম রাষ্ট্র। এ সকল রাষ্ট্রে দীনের অন্যান্য বিষয়ের ন্যায় রাষ্ট্রীয় পাপ, অনাচার, অবিচার ও ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আপত্তি ও প্রতিবাদ করা এবং এগুলো দূর করার দাওয়াত দেওয়া দীন প্রতিষ্ঠার অবিচ্ছেদ্য অংশ। পাশাপাশি এ সকল রাষ্ট্রের মুসলিম নাগরিকের জন্য রাষ্ট্রীয় আনুগত্য বজায় রাখা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখাও দীন প্রতিষ্ঠার অবিচ্ছেদ্য অংশ। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এ বিষয়ে অনেক নির্দেশনা দিয়েছেন। ইতোপূর্বে আনুগত্য, জামা‘আত, বাই‘আত ইত্যাদি প্রসঙ্গে এ বিষয়ক কয়েকটি হাদীস আমরা উল্লেখ করেছি। আমরা দেখেছি যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: (১) ‘‘কেউ তার শাসক বা প্রশাসক থেকে কোন অপছন্দনীয় বিষয় দেখলে...
যুদ্ধ বনাম সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা কুরআন-হাদীসের উপরে আলোচিত নির্দেশাবলির আলোকে সাহাবী-তবিয়ীগণ ও তৎপরবর্তী যুগের আলিমগণ সরকার পরিবর্তনের নামে বিদ্রোহ, আইন অমান্য, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া ও রাষ্ট্রীয় আনুগত্য বর্জন নিষিদ্ধ বলে গণ্য করতেন। সাধারণভাবে এ মূলনীতির বিষয়ে সকলে একমত হলেও, প্রথম যুগের কয়েকটি যুদ্ধ আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এগুলি হলো, সাহাবীগণের যুগে আলী (রা)-এর বিরুদ্ধে তালহা, যুবাইর, আয়েশা ও মুআবিয়া (রাঃ)-এর যুদ্ধ, ইয়াযিদের বিরুদ্ধে হুসাইন (রা)-এর যুদ্ধ এবং মারওয়ান ও আব্দুল মালিকের বিরুদ্ধে আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইর (রা)-এর যুদ্ধ। তাবিয়ী ও তাবিতাবিয়ীগণের যুগে আব্দুল মালিকের (খিলাফাত ৬৫-৮৬) বিরুদ্ধে আব্দুর রাহমান ইবনু মুহাম্মাদ ইবনুল আস‘আসের (৮৫ হি) বিদ্রোহে তাবিয়ী সাঈদ ইবনু জুবাইর (৯৪হি) ও অন্যান্য কতিপয় তাবিয়ীর অংশগ্রহণ...
কাউকে কাফের বলতে গেলে যেসব মূলনীতি জানা আবশ্যক তার মধ্যে প্রধান কয়েকটি নিম্নে প্রদত্ত হ'ল। ১ এটি একটি শারঈ হুকুম। যা কুরআন ও সুন্নাহ্র ভিত্তিতেই সাব্যস্ত হবে। অন্য কোন ভিত্তিতে নয় । ২ কাফের সাব্যস্ত হবে ব্যক্তির অবস্থা ভেদে। কেননা অনেকে ঈমান ও কুফরের পার্থক্য বুঝে না। ফলে প্রত্যেক বিদ'আতী ও পাপী এমনকি একজন কবরপূজারীকেও কাফের সাব্যস্ত করা যায় না তার অজ্ঞতা ও মূর্খতার কারণে । ৩ কারো কথা, কাজ বা বিশ্বাসের ভিত্তিতেই কেবল তাকে কাফের বলা যাবে না, যতক্ষণ না তার কাছে দলীল স্পষ্ট করা হবে এবং সন্দেহ দূর করা হবে। এমনকি যদি কেউ অজ্ঞতাবশে কাউকে সিজদা করে, তবে তাকে কাফের বলা যাবে না। যেমন হযরত মু'আয বিন জাবাল (রাঃ) শাম (সিরিয়া) থেকে ফিরে এসে রাসূল (ছাঃ)-কে সিজদা করেন। কেননা তিনি সেখানে নেতাদের সিজদা করতে দেখেছেন, তাই এসে রাসূলকে সিজদা করেন।...
খারিজীগণের বিভ্রান্তি অপনোদনে সাহাবীগণ বইঃ ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ হাদীসের গ্রন্থগুলিতে সাহাবী-তাবিয়ীগণের সাথে খারিজীগণের বিভিন্ন সংলাপ উদ্ধৃত করা হয়েছে। এগুলি থেকে আমরা খারিজীগণের মতামত ও তাদের বিভ্রান্তি অপনোদনে সাহাবীগণের প্রচেষ্টার বিষয়ে জানতে পারি। সাহাবীগণের বক্তব্য থেকে নিম্নের বিষয়গুলি প্রতীয়মান হয়: (১) আরকানে ইসলাম ও এ জাতীয় ইবাদতই মুমিনের মূল দায়িত্ব। এগুলি ‘উদ্দিষ্ট’ ইবাদত বা এগুলি পালন করাই মুমিন জীবনের উদ্দেশ্য। এগুলি পালনের আবশ্যকতা কখনোই কমে না বা থামে না। পক্ষান্তরে ‘জিহাদ’ উদ্দিষ্ট ইবাদত নয়; বরং উদ্দিষ্ট ইবাদত পালনের অধিকার রক্ষার জন্যই জিহাদ। এ অধিকার বিদ্যমান থাকলে জিহাদের আবশ্যকতা থাকে না। (২) ফিতনা দূরীকরণ জিহাদের উদ্দেশ্য। তবে ফিতনা দূরীকরণ বলতে সমাজের সকল অন্যায়, অনাচার, কুফর, শিরক ইত্যাদি দূর করা নয়, বরং...
অধুনা আইন দিয়ে বিচার করা কি ইসলাম থেকে বের করে দেবে? উপস্থাপকঃ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেনঃ "আর যারা আল্লাহর আইন দিয়ে বিচার করে না, তারাই তো কাফের। ...তারা জালেম। ...তারা ফাসেক।" -[সূরা মায়েদা, ৪৪, ৪৫ ও ৪৭ নং আয়াত] উপরোক্ত আয়াত গুলোর প্রেক্ষিতে কিছু আলেম বলেন, অধুনা আইন দিয়ে বিচার করা ইসলাম থেকে বের করে দেবে। আবার কতিপয় আলেম বলেন, এটা ইসলাম থেকে বের করে দেয় না। তবে এটা তো জানা কথা যে, আল্লাহ যাদের রহম করেছেন তারা ছাড়া এখন বিশ্বের প্রায় সব দেশই এই আইন দিয়ে পরিচালিত হয়। তো এখন প্রশ্ন হলো: তারা এর কারণে ইসলাম থেকে বের হবে -আল্লাহ রক্ষা করুন- নাকি হবে না? শায়খঃ তুমি যে আয়াত গুলোর দিকে ইঙ্গিত করলে, তন্মধ্যে প্রথমোক্ত আয়াতের ব্যাপারে ইমামুল মুফাসসিরীন তবারী রহিমাহুল্লাহ বলেছেন যে, যদি সে এগুলোকে হালাল জ্ঞান করে, তবেই...
প্রশ্নঃ কোনো শায়খ বা তালেবুল ইলমকে যদি আমরা শাসক কর্তৃক হারাম কাজ করা বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে দেখি, তাহলে এই কাজ কি তাকে সুন্নাহ থেকে বের করে দেবে? উত্তরঃ হ্যা, আমরা এই লোককে সুন্নাহর বাইরে ধরব। আমরা তাকে বলব: প্রথমত, এই ধরনের কথা বলাটাই তোমার জন্য বৈধ নয়। আমরা তাকে বের করে দেওয়ার পর, নসীহত এবং কথা বলার পরও যদি সে এই কাজে অটল থাকে, তবে নিঃসন্দেহে এটা খারেজীদের পন্থা; কারণ একমাত্র তারাই শাসকদের বিরুদ্ধে লোকদের সামনে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়। এটাই খাওয়ারেজে ক'দিয়্যাহ তথা শয্যাশায়ী খারেজীদের (যারা অন্যদের উস্কে দিলেও নিজেরা নামে না) অনুসৃত পথ তোমরা আব্দুল্লাহ ইবনে উকাইম রহিমাহুল্লাহর কথাটা মনোযোগ দিয়ে শোনো, আলেমগণ তার বিষয়ে মতভেদ করেছেন যে, তিনি কি সাহাবী নাকি সাহাবী নন?-। তিনি বলেছেন: "আমি উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুর হত্যায়...
কেয়ামত পর্যন্ত একটি দল হকের উপর কিতাল করতে থাকবে, বর্তমানে এই দলটি কারা? অনেকে বলে সেই দলটি হলো আল-কায়েদা

Install Salafi Forum Mobile App

Download Android App

Latest books

Forum statistics

Threads
14,701
Comments
19,528
Members
5,124
Latest member
ibn burhan rifath
Back
Top