রদ্দে খারেজিয়্যাত

বর্তমান ও পূর্বযুগের যারা বিচ্যুত হয়ে গিয়েছে তাদের অন্যতম হলো খারিজীরা। বর্তমান যুগে কাউকে কাফির বলার পক্ষে যে দলীলের পাশে সবসময় মৌমাছির মতো ভনভন করা হয়, তা হলো আল্লাহ তাআলা এ বাণী: وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ আর আল্লাহ যা অবতরণ করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয় না, তারাই কাফির।[1] আমরা সবাই জানি যে, আয়াতটি কয়েকবার এসেছে এবং তিন শব্দে আয়াতটি শেষ করা হয়েছে। যেমন: প্রথম শব্দ ‘কাফির’: وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ আর আল্লাহ যা অবতরণ করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয় না, তারাই কাফির।[2] দ্বিতীয় শব্দ ‘জালিম’: وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ আর আল্লাহ যা অবতরণ করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয় না, তারাই...
"قيل: أدخل خارجي على المأمون فقال: ما حملك على الخلاف؟ قال: قوله: {ومن لم يحكم بما أنزل الله فأولئك هم الكافرون} قال: ألك علم بأنها منزلة؟ قال: نعم. قال: وما دليلك؟ قال: إجماع الأمة. قال: فكما رضيت بإجماعهم في التنزيل فارض بإجماعهم في التأويل. قال: صدقت. السلام عليك يا أمير المؤمنين". سير أعلام النبلاء: (٢٨٠/٩) বলা হয়ে থাকে যে, একবার এক খারেজীকে আব্বাসী খলীফা মামুনের কাছে আনা হলো। খলীফা: তুমি কেন বিদ্রোহ করছ? খারেজী: আল্লাহর এই আয়াতের কারণে: "আর যে আল্লাহর বিধান ছাড়া অন্য বিধান দিয়ে বিচার করবে, সে কাফের হয়ে যাবে"। খলীফা: তুমি কি নিশ্চিত যে, এটা কুরআনের আয়াত? খারেজী: হ্যা, নিশ্চিত। খলীফা: কিভাবে জানলে? খারেজী: উম্মাহর ইজমার মাধ্যমে। খলীফা: তুমি এটা নাযিল হওয়ার ব্যাপারে যেমন ইজমা মেনে নিয়েছ, অনুরূপভাবে এটার যে ব্যাখ্যার...
"আল্লাহর কসম! যত রূপই ধারন করুক না কেন, খারেজী চিন্তাধারা কোনোদিনই উম্মাহর উপকার করতে পারে না। বৈপ্লবিক চিন্তাধারা লালনকারী এবং এটিকে মানুষের কাছে ভালো করে দেখানোর চেষ্টাকারী ইলমের দাবিদার লোকজন সমাজের কোনো কল্যাণই বয়ে আনতে পারে না। সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা ছাড়া এবং শাসকদের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে এই সমস্ত বিভ্রান্ত চিন্তাধারা থেকে বিরত না হওয়া পর্যন্ত উম্মাহর অবস্থা সংশোধন হবে না। খুরতুমে -আল্লাহ এই শহরকে হেফাজত করুন- চলমান অত্যাচার, লুন্ঠন, মৌলিক অধিকারে জুলুম ইত্যাদি খবর যখন দেখি, তখন শায়খুল ইসলাম ইবনে তায়মিয়া রহিমাহুল্লাহর এই কথাটা স্মরণ হয়: "বলা হয়ে থাকে, ষাট বছর জালেম শাসকের অধীনে থাকা শাসকহীন এক রাত থাকার চেয়ে উত্তম। বাস্তব অভিজ্ঞতা এটাকে সমর্থন করে।" আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা সুদান, সুদানের অধিবাসী সহ সমস্ত মুসলিম দেশকে...
মুসলিম সমাজে রাষ্ট্র সংস্কারে হাদীসের নির্দেশনা আমরা দেখেছি যে, সমকালীন মুসলিম রাষ্ট্রগুলি উমাইয়া, আববাসী, ফাতিমী, বাতিনী ইত্যাদি মুসলিম রাষ্ট্রের মতই পাপে লিপ্ত মুসলিম রাষ্ট্র। এ সকল রাষ্ট্রে দীনের অন্যান্য বিষয়ের ন্যায় রাষ্ট্রীয় পাপ, অনাচার, অবিচার ও ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আপত্তি ও প্রতিবাদ করা এবং এগুলো দূর করার দাওয়াত দেওয়া দীন প্রতিষ্ঠার অবিচ্ছেদ্য অংশ। পাশাপাশি এ সকল রাষ্ট্রের মুসলিম নাগরিকের জন্য রাষ্ট্রীয় আনুগত্য বজায় রাখা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখাও দীন প্রতিষ্ঠার অবিচ্ছেদ্য অংশ। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এ বিষয়ে অনেক নির্দেশনা দিয়েছেন। ইতোপূর্বে আনুগত্য, জামা‘আত, বাই‘আত ইত্যাদি প্রসঙ্গে এ বিষয়ক কয়েকটি হাদীস আমরা উল্লেখ করেছি। আমরা দেখেছি যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: (১) ‘‘কেউ তার শাসক বা প্রশাসক থেকে কোন অপছন্দনীয় বিষয় দেখলে...
যুদ্ধ বনাম সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা কুরআন-হাদীসের উপরে আলোচিত নির্দেশাবলির আলোকে সাহাবী-তবিয়ীগণ ও তৎপরবর্তী যুগের আলিমগণ সরকার পরিবর্তনের নামে বিদ্রোহ, আইন অমান্য, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া ও রাষ্ট্রীয় আনুগত্য বর্জন নিষিদ্ধ বলে গণ্য করতেন। সাধারণভাবে এ মূলনীতির বিষয়ে সকলে একমত হলেও, প্রথম যুগের কয়েকটি যুদ্ধ আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এগুলি হলো, সাহাবীগণের যুগে আলী (রা)-এর বিরুদ্ধে তালহা, যুবাইর, আয়েশা ও মুআবিয়া (রাঃ)-এর যুদ্ধ, ইয়াযিদের বিরুদ্ধে হুসাইন (রা)-এর যুদ্ধ এবং মারওয়ান ও আব্দুল মালিকের বিরুদ্ধে আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইর (রা)-এর যুদ্ধ। তাবিয়ী ও তাবিতাবিয়ীগণের যুগে আব্দুল মালিকের (খিলাফাত ৬৫-৮৬) বিরুদ্ধে আব্দুর রাহমান ইবনু মুহাম্মাদ ইবনুল আস‘আসের (৮৫ হি) বিদ্রোহে তাবিয়ী সাঈদ ইবনু জুবাইর (৯৪হি) ও অন্যান্য কতিপয় তাবিয়ীর অংশগ্রহণ...
কাউকে কাফের বলতে গেলে যেসব মূলনীতি জানা আবশ্যক তার মধ্যে প্রধান কয়েকটি নিম্নে প্রদত্ত হ'ল। ১ এটি একটি শারঈ হুকুম। যা কুরআন ও সুন্নাহ্র ভিত্তিতেই সাব্যস্ত হবে। অন্য কোন ভিত্তিতে নয় । ২ কাফের সাব্যস্ত হবে ব্যক্তির অবস্থা ভেদে। কেননা অনেকে ঈমান ও কুফরের পার্থক্য বুঝে না। ফলে প্রত্যেক বিদ'আতী ও পাপী এমনকি একজন কবরপূজারীকেও কাফের সাব্যস্ত করা যায় না তার অজ্ঞতা ও মূর্খতার কারণে । ৩ কারো কথা, কাজ বা বিশ্বাসের ভিত্তিতেই কেবল তাকে কাফের বলা যাবে না, যতক্ষণ না তার কাছে দলীল স্পষ্ট করা হবে এবং সন্দেহ দূর করা হবে। এমনকি যদি কেউ অজ্ঞতাবশে কাউকে সিজদা করে, তবে তাকে কাফের বলা যাবে না। যেমন হযরত মু'আয বিন জাবাল (রাঃ) শাম (সিরিয়া) থেকে ফিরে এসে রাসূল (ছাঃ)-কে সিজদা করেন। কেননা তিনি সেখানে নেতাদের সিজদা করতে দেখেছেন, তাই এসে রাসূলকে সিজদা করেন।...
খারিজীগণের বিভ্রান্তি অপনোদনে সাহাবীগণ বইঃ ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ হাদীসের গ্রন্থগুলিতে সাহাবী-তাবিয়ীগণের সাথে খারিজীগণের বিভিন্ন সংলাপ উদ্ধৃত করা হয়েছে। এগুলি থেকে আমরা খারিজীগণের মতামত ও তাদের বিভ্রান্তি অপনোদনে সাহাবীগণের প্রচেষ্টার বিষয়ে জানতে পারি। সাহাবীগণের বক্তব্য থেকে নিম্নের বিষয়গুলি প্রতীয়মান হয়: (১) আরকানে ইসলাম ও এ জাতীয় ইবাদতই মুমিনের মূল দায়িত্ব। এগুলি ‘উদ্দিষ্ট’ ইবাদত বা এগুলি পালন করাই মুমিন জীবনের উদ্দেশ্য। এগুলি পালনের আবশ্যকতা কখনোই কমে না বা থামে না। পক্ষান্তরে ‘জিহাদ’ উদ্দিষ্ট ইবাদত নয়; বরং উদ্দিষ্ট ইবাদত পালনের অধিকার রক্ষার জন্যই জিহাদ। এ অধিকার বিদ্যমান থাকলে জিহাদের আবশ্যকতা থাকে না। (২) ফিতনা দূরীকরণ জিহাদের উদ্দেশ্য। তবে ফিতনা দূরীকরণ বলতে সমাজের সকল অন্যায়, অনাচার, কুফর, শিরক ইত্যাদি দূর করা নয়, বরং...
অধুনা আইন দিয়ে বিচার করা কি ইসলাম থেকে বের করে দেবে? উপস্থাপকঃ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেনঃ "আর যারা আল্লাহর আইন দিয়ে বিচার করে না, তারাই তো কাফের। ...তারা জালেম। ...তারা ফাসেক।" -[সূরা মায়েদা, ৪৪, ৪৫ ও ৪৭ নং আয়াত] উপরোক্ত আয়াত গুলোর প্রেক্ষিতে কিছু আলেম বলেন, অধুনা আইন দিয়ে বিচার করা ইসলাম থেকে বের করে দেবে। আবার কতিপয় আলেম বলেন, এটা ইসলাম থেকে বের করে দেয় না। তবে এটা তো জানা কথা যে, আল্লাহ যাদের রহম করেছেন তারা ছাড়া এখন বিশ্বের প্রায় সব দেশই এই আইন দিয়ে পরিচালিত হয়। তো এখন প্রশ্ন হলো: তারা এর কারণে ইসলাম থেকে বের হবে -আল্লাহ রক্ষা করুন- নাকি হবে না? শায়খঃ তুমি যে আয়াত গুলোর দিকে ইঙ্গিত করলে, তন্মধ্যে প্রথমোক্ত আয়াতের ব্যাপারে ইমামুল মুফাসসিরীন তবারী রহিমাহুল্লাহ বলেছেন যে, যদি সে এগুলোকে হালাল জ্ঞান করে, তবেই...
প্রশ্নঃ কোনো শায়খ বা তালেবুল ইলমকে যদি আমরা শাসক কর্তৃক হারাম কাজ করা বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে দেখি, তাহলে এই কাজ কি তাকে সুন্নাহ থেকে বের করে দেবে? উত্তরঃ হ্যা, আমরা এই লোককে সুন্নাহর বাইরে ধরব। আমরা তাকে বলব: প্রথমত, এই ধরনের কথা বলাটাই তোমার জন্য বৈধ নয়। আমরা তাকে বের করে দেওয়ার পর, নসীহত এবং কথা বলার পরও যদি সে এই কাজে অটল থাকে, তবে নিঃসন্দেহে এটা খারেজীদের পন্থা; কারণ একমাত্র তারাই শাসকদের বিরুদ্ধে লোকদের সামনে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়। এটাই খাওয়ারেজে ক'দিয়্যাহ তথা শয্যাশায়ী খারেজীদের (যারা অন্যদের উস্কে দিলেও নিজেরা নামে না) অনুসৃত পথ তোমরা আব্দুল্লাহ ইবনে উকাইম রহিমাহুল্লাহর কথাটা মনোযোগ দিয়ে শোনো, আলেমগণ তার বিষয়ে মতভেদ করেছেন যে, তিনি কি সাহাবী নাকি সাহাবী নন?-। তিনি বলেছেন: "আমি উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুর হত্যায়...
কেয়ামত পর্যন্ত একটি দল হকের উপর কিতাল করতে থাকবে, বর্তমানে এই দলটি কারা? অনেকে বলে সেই দলটি হলো আল-কায়েদা

Install Salafi Forum Mobile App

Download Android App

Latest books

Forum statistics

Threads
15,109
Comments
19,953
Members
5,448
Latest member
sadi93
Back
Top