রদ্দে খারেজিয়্যাত

কিভাবে তোমরা ইলাহী শরী‘আত বাস্তবায়নের আহবান জানাচ্ছ, অথচ প্রথমে তোমরা নিজেরাই আল্লাহর হুকুম লংঘন করছ? কিভাবে তোমরা ভ্রষ্টতা, প্রবৃত্তিপরায়ণতা আর কুসংস্কারে আচ্ছন্ন মানুষগুলোর উপর ইসলামী শরী‘আত বাস্তবায়ন করবে? মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর আনীত দ্বীন ইসলামের বাস্তবতা সম্পর্কেই তো তারা অজ্ঞতায় ঢাকা পড়ে রয়েছে। আল্লাহ তোমাদের কাছে যা চেয়েছেন তা হ’ল, তোমরা নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনে এবং সামাজিক জীবনে ইসলামের হুকুম জারী কর। অনুবাদ: ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব।
আশ-শায়খ, আল-আল্লামাহ্ ছালিহ্ আল ফাউযানকে حفظه الله উনার শারহু নাওঊাকিদ্ব আল-ইসলামে প্রশ্ন করা হয়েছিল: ❝প্রশ্ন: বর্তমানে যারা মুসলিম শাসকদের তাক্বফীর করে তাদের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান কী হবে? তার কী খাওয়ারিজদের অন্তর্ভুক্ত? আমাদের উপকার করুন, আল্লাহ্ আপনার কল্যাণ করুক এবং আপনাকে পুরষ্কৃত করুক। উত্তর: যারা মুসলিম শাসকদের তাক্বফীর করে তারা খাওয়ারিজদের অন্তর্ভুক্ত।❞ শারহ্ নাওঊাকিদ্ব আল-ইসলাম: ১৮৭ পৃষ্ঠা৷ এবং একই পৃষ্ঠায় উনাকে حفظه الله জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: ❝প্রশ্ন: যে শাসকদের তাক্বফীর করে এবং [লোকদের] শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ্ করতে উৎসাহ্ প্রদান করে— সে কী খাওয়ারিজদের অন্তর্ভুক্ত? উত্তর: এটি খওয়ারিজদের মাযহাব, যদি সে মুসলিমদের শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ্ করার দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে, এবং এর চেয়েও গুরুতর— যদি সে তাদেরকে তাক্বফীর করে— তাহলে...
আবূ গালিব থেকে—যিনি বলেন: “আমি দিমাস্কের মসজিদে ছিলাম এবং মসজিদে যাওয়ার পথে হারুরিয়ার খাওরিজদের ৭০ জন নেতার কাটা মাথা খাড়া করে রাখা হয়েছিল৷ যখন আবূ উমামাহ্ [رضي الله عنه] আসলেন, তিনি [رضي الله عنه] তাদের দিকে দৃষ্টিপাত করলেন এবং কান্না করা শুরু করে দিলেন এবং তিনি [رضي الله عنه] বললেন: ‘সুব-হানা-ল্লাহ্, শয়ত্বান আদম সন্তানদের সাথে [এ] কি করলো!’ তিনি এটি তিনবার বললেন, তারপরে তিনি বললেন: ‘জাহান্নামের কুকুর, জাহান্নামের কুকুর, আসমানের চামড়ার [ছাদের] নিচে নিকৃষ্টতম নিহত এরা।’ তিনি [رضي الله عنه] এটি তিনবার বললেন, ‘আর এরা যাদেরকে নিহত করেছে তারা আসমানের চামড়ার [ছাদের] নিচে নিহতদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম লোক। তুবা [জান্নাতি গাছ]— তার জন্য যে তাদের নিহত করে বা তাদের দ্বারা নিহত হয়।’ আবূ উমামাহ্ [رضي الله عنه] আমার দিকে দৃষ্টিপাত করলেন এবং বললেন...
শায়খ মুহাম্মদ ইবনু সালিহ আল-উছাইমীন রাহিমাহুল্লাহ্কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এবং তিনি এর উত্তরে বলেছেন: ❝যে কেউ দাবি করে যে ‘তাওহীদ আল-হাকিমিয়্যাহ্’ নামে চতুর্থ প্রকার/শ্রেণীর তাওহীদ রয়েছে— তাকে বিদ’য়াতী হিসেবে গণ্য করতে হবে। অতএব এটি একটি বিদ’য়াতী শ্রেণীবদ্ধকরণ যা কোন জাহিল ব্যক্তির দ্বারা উদ্ভাবিত হয়েছে— যে আক্বীদাহ্ ও দ্বীনের বিষয়ে কিছুই বুঝে না৷ কারণ এটি ‘হাকিমিয়্যাহ্’ তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ্’র অন্তর্ভুক্ত— এই দৃষ্টিকোণ থেকে যে আল্লাহ্ যা ইচ্ছা করেন [তাই] করেন৷ এটি তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ্’র অধীনে প্রবেশ করে যে বান্দাকে অবশ্যই আল্লাহ্'র আদেশ অনুযায়ী ইবাদাত করতে হবে। অতএব এটি তিন প্রকার তাওহীদের বাইরে পড়ে না, যেগুলো হল: তাওহীদ আর-রুবুবিয়্যাহ্, তাওহীদ আল-উলুহিয়্যাহ্, এবং তাওহীদ আল-আছমা ওয়াছ ছিফাত। তারপরে, যখন জিজ্ঞেস করা হল...
বর্তমান যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ও ইয়েমেনে সালাফী দাওয়াতের মুজাদ্দিদ ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদিঈ রাহিমাহুল্লাহকে প্রশ্ন করা হয়, . "প্রশ্ন: (শাসককে) স্পষ্ট কুফরী করতে দেখলে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ওয়াজিব নাকি ওয়াজিব না?" উত্তর: "এক্ষেত্রে মুসলিমদের অবস্থা পর্যালোচনা করা ওয়াজিব: তারা কি আদৌ এই স্পষ্ট কুফরীর মোকাবেলা করার সক্ষমতা রাখে? নাকি শুধু শুধুই নিজেদেরকে কুরবান করবে!!? তাদের কি নিজেদের ধনাঢ্যতা আছে, নাকি তারা আবার ঐ আমেরিকা বা এই ধরনের দেশগুলোর প্রতি হাত পাতবে? যেসব রাষ্ট্র তাদেরকে পারস্পরিক হানাহানিতে লিপ্ত রাখবে, এরপর প্রথম ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের পরিবর্তে অন্য আরেকজন ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তিকে বসাবে, নয়তো ধর্মনিরপেক্ষ এর পরিবর্তে শীয়াকে বসাবে, হতে পারে মুসলিমের পরিবর্তে কোনো খ্রিস্টানকে বসালো!!! এজন্য অবশ্যই...
কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার বিধান। উপস্থাপকঃ কিছু ছাত্র ভাইয়ের পক্ষ থেকে প্রশ্ন এসেছে, কমিউনিস্ট সরকার শাসিত দেশে (বিদ্রোহের) শরয়ী হুকুম কি? তারা কয়েকটি বছর চেষ্টা চালিয়েছে যুবকদেরকে এই কুফরী কমিউনিস্ট শাসন পরিবর্তনের প্রশিক্ষণ দিতে, এমনকি তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বড় সংখ্যক যুবক যোগার করতে সক্ষম হয়েছে। বেশি সংখ্যক ছেলেরাই খুব ভালোভাবে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং তারা বিশুদ্ধ আকীদা ধারণ করে। তারা এমন অস্ত্রের প্রস্তুতি নিয়েছে, যেগুলোতে সমস্যা নেই। তারা কি এখন এই কুফরী শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঘোষণা দেবে নাকি কুফরী শাসিত হয়েই থাকবে? আর জিহাদের আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য সেই দেশের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের অপহরণ করার হুকুম কি? শায়খঃ প্রশ্নটি এই উপমা মনে করিয়ে দিচ্ছে, "জ্বর বাড়ছে, তাপমাত্রা কমছে"!! অর্থাৎ...
কুফরী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চালু করা কি কুফরে বাওয়াহ হিসেবে গণ্য হবে? "প্রশ্নকর্তাঃ মুসলিম দেশে কুফরী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চালু করা কি কুফরে বাওয়াহ হিসেবে গণ্য হবে? যদি তাই হয়, তাহলে সামর্থবানদের, যেমন-সেনাবাহিনী, পক্ষ থেকে তার সাথে তরবারি (মানে অস্ত্র) দিয়ে মোকাবেলায় নামা যাবে? আর যারা এগুলো মানুষের বানানো বিধান চালু করে তাদের হুকুম কি? শায়খঃ প্রথমত একটা একটা করে প্রশ্ন বলো। প্রশ্নকর্তাঃ মুসলিম দেশে কুফরী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চালু করা কি কুফরে বাওয়াহ হিসেবে গণ্য হবে? শায়খঃ কুফরে বাওয়াহ তথা স্পষ্ট কুফরী আমলের পাশাপাশি আকীদাকেও শামিল করে, যে বিশ্বাসে কাজটি করা হয়। এরকম না হলে সব শরীয়ত বিরোধী কাজই কুফরে বাওয়াহ হয়ে যাবে!! যেমন, সুদখোর, সুদী কারবারকারী সবাই তো বেশক কাবীরা গুনাহে লিপ্ত; তাহলে...
প্রশ্নঃ যেসব শাসক ইসলামের নাম ভাঙিয়ে খায়, মুসলিমদের সাথে ধোঁকা প্রতারণা করে, কুফরী ঔপনিবেশিক শক্তির ক্রিড়নক, তারাই তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য এইসব শাসকদের ক্ষমতায় বসিয়েছে, এসব শাসকরাই মুসলমানদের পিছিয়ে পড়ার কারণ, ইসলামী ও আরব দেশগুলোকে তারা কাফের জাতির লেজুড়ে পরিণত করেছে, সেসব শাসকের বিরুদ্ধে সতর্ক করা কি ওয়াজিব? উত্তরঃ মুসলিম শাসকের বিরোধিতা করা ইসলামের দেখানো পথ নয়। বরং ইসলামের দেখানো পথ হলো, নিম্নোক্ত রীতিগুলো খেয়াল রেখে শাসকদের নসীহাহ করা: ১) আপনার ও তার মাঝে একান্ত গোপনে হবে এই নসীহাহ, ২) আপনি তার পদ মর্যাদা খেয়াল রেখে আদবের সাথে ও নম্র ভাষায় নসীহাহ করবেন এবং ৩) আপনার কাজ এখানেই শেষ। নসীহাহ গ্রহণ করলে ভালো, না করলে আপনি আপনার জিম্মা থেকে মুক্ত। এখন "ইসলামের নাম ভাঙিয়ে খায়" এটা সব মুসলিমের জন্য নয়, বরং এটা...
আল্লাহর বিধান ছাড়া অন্য বিধান দিয়ে বিচারের হুকুম। প্রশ্নঃ শাসকদের পক্ষ থেকে শরীয়ত বিরোধী কার্যাবলী প্রকাশ পেয়ে গেলে মুসলিমদের করণীয় কি? যেমন, আল্লাহর বিধান বাদে অন্য বিধান দিয়ে বিচার করা, যিনা, সুদ, মদের বৈধতা দান, কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব, মুসলিমদের থেকে মুক্তিকরণ... ইত্যাদি। শায়খঃ মুসলিমদের করণীয় সম্পর্কে আমরা আগেই বলেছি, প্রাথমিকভাবে তাদের কিছুই করার নেই! আবার অনেক কিছুই তাদের কর্তব্য!! কিভাবে? মুসলিমদের জন্য এখন তাৎক্ষণিক কোনো করণীয় না থাকলেও ভবিষ্যতে অনেক কিছুই তাদের করণীয়। আর এটা শুধুমাত্র আমরা যেটাকে 'তাসফিয়া ও তারবিয়া' নামে ব্যক্ত করেছি, তার মাধ্যমেই সম্ভব। আর সেটা হলো, যেসব শাসক আল্লাহর বিধান দিয়ে বিচার করে না, তাদের বিরুদ্ধে যেসব মুসলিম সত্যিই ইসলামী অবস্থান নিতে চায় তাদেরকে অবশ্যই সালাফে সালেহীনের চরিত নিজেদের...
বেশ্যাদের পৃষ্ঠপোষকতা করা সরকারের হুকুম। প্রশ্নঃ কিছু মুসলিম দেশে যেনার প্রাদুর্ভাব খুব প্রকট, সরকারই তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে এবং তাদের ভাতা দিয়ে থাকে। অথচ রাসূল ﷺ যেনার মূল্য নেওয়া থেকে নিষেধ করেছেন, যা আমরা সবাই জানি। এই বিষয়ে আপনার মতামত কি এবং দিকনির্দেশনা কি? উপস্থাপকঃ অর্থাৎ সরকারকে কি এজন্য কাফের বলা যাবে? শায়খঃ আহ্, এইসব (অধুনা) আইনের এটাই তো প্রথম শরীয়ত বিরোধী কাজ নয়। নিঃসন্দেহে এটা এক ধরনের কুফরী কাজ, তবে তা বিশ্বাসগতও হতে পারে আবার এমনি কার্যগত হতে পারে। তো যেসব শাসক এটাকে বিধিবদ্ধ করবে এই বিশ্বাসে: "এটা বৈধ ও জায়েয", তাহলে এই কুফরী তাকে মিল্লাত থেকে বের করে দেবে। আবার যারা সাধারণ চুরি, ব্যাংকের মতো লিপিবদ্ধ চুরি করে মানুষের সম্পদ অবৈধভাবে ভক্ষণ করে, তারা যদি এগুলোর হারাম হওয়াকে অস্বীকার করতঃ বৈধতা দেয়, তাহলে তারা...

Install Salafi Forum Mobile App

Download Android App

Latest books

Forum statistics

Threads
15,109
Comments
19,953
Members
5,448
Latest member
sadi93
Back
Top