Abu Abdullah

ইস্তেহাযার বিধি-বিধান

Abu Abdullah

Knowledge Sharer

ilm Seeker
Uploader
Salafi User
LV
15
 
Awards
24
Credit
8,681
মুস্তাহাযাহ নারী এবং পবিত্র নারীর মধ্যে নিম্নলিখিত কয়েকটি বিষয় ছাড়া আর কোনো পার্থক্য নেই।

১. মুস্তাহাযাহ নারীর ওপর প্রতি সালাতে অযু করা ওয়াজিব। প্রমাণ হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতেমা বিনতে আবী হুবাইশকে বলেছেন:

«ثُمَّ تَوَضَّئِيْ لِكُلِّ صَلاَةٍ»​

“অতঃপর তুমি প্রত্যেক সালাতের জন্য অযু কর।”[1]

হাদীসের ব্যাখ্যা হচ্ছে: তুমি ইস্তেহাযাহ অবস্থায় ফরয অর্থাৎ ওয়াক্তিয়া সালাতের জন্য সালাতের সময় আরম্ভ হওয়ার পরেই অযু করবে। আর নফল সালাতের ক্ষেত্রে যখন সালাত পড়ার ইচ্ছা করবে তখন অযু করলেই চলবে।

২. মুস্তাহাযাহ নারী যখন অযু করার ইচ্ছা করবে তখন রক্তের দাগ ধৌত করে যোনীতে তুলা দিয়ে পট্টি বেঁধে নিবে, যেন উক্ত তুলা রক্তটাকে আঁকড়ে ধরে। এ প্রসঙ্গে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হামনাহ রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বলেছেন:

«أنْعَتُ لَكِ الْكُرْسُفَ فَإنَّهُ يُذْهِبُ الدَّمَ قَالَتْ: فَإنَّهُ أكْثَرُ مِنْ ذَلِكَ قَالَ: فَاتَّخِذِيْ ثَوْبًا قَالَتْ: هُوَ أكْثَرُ مِنْ ذَلِكَ قَالَ: فَتَلَجَّمِي»
“আমি তোমাকে লজ্জাস্থানে কুরসুফ তথা নেকড়া বা তুলা ব্যবহার করার উপদেশ দিচ্ছি। কেননা নেকড়া বা তুলা রক্তটাকে টেনে নিবে। জবাবে হামনাহ বললেন: আমার প্রবাহমান রক্তের পরিমাণ তদপেক্ষাও বেশি। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তাহলে তুমি লজ্জাস্থানে কাপড় ব্যবহার কর। হামনাহ বললেন: প্রবাহমান রক্তের পরিমাণ তার চেয়ে আরো বেশি। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুকুম দিলেন যে, তুমি তাহলে যোনীর মুখে লাগাম বেঁধে নাও।”

রক্তের দাগ-চিহ্ন পরিষ্কার করে যোনীতে তুলা দিয়ে পট্টি বাঁধার পরেও যদি রক্ত প্রবাহিত হয় তাহলে এতে কোনো অসুবিধা নেই। কেননা এ প্রসঙ্গে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস রয়েছে যে তিনি ফাতেমা বিনতে আবী হুবাইশ রাদিয়াল্লাহু আনহাকে নির্দেশ দিয়েছেন:

«اجْتَنِبِيْ الصَّلاَةَ أيَّامَ حَيْضَتِكَ ثُمَّ اغْتَسِلِيْ وَتَوَضَّئِيْ لِكُلِّ صَلاَةٍ ثُمَّ صَلِّيْ وَإنْ قَطَرَ الدَّمُ عَلَى الْحَصِيْر»​

“যে কয়দিন তুমি ঋতুস্রাবে আক্রান্ত থাকবে সে কয়দিন সালাত থেকে বিরত থাক। তারপর গোসল করে প্রতি সালাতের জন্য অযু কর এবং সালাত আদায় কর, যদিও রক্ত প্রবাহিত হয়ে চাটাইর উপর পড়ে তাতেও কোনো অসুবিধা নেই।”[2]

৩. সহবাস প্রসঙ্গ: সহবাস বর্জন করলে যদি কোনো বৈরিতার আশঙ্কা থাকে তাহলে ওলামায়ে কেরামের মাঝে এর বৈধতা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে সঠিক অভিমত হচ্ছে, ইস্তেহাযার অবস্থায় স্ত্রী সঙ্গম জায়েয।

কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে দশ অথবা ততোধিক সংখ্যক মহিলা ইস্তেহাযাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। অথচ আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের সঙ্গে সহবাস করতে নিষেধ করেন নি অথচ কুরআনে বলা হয়েছে:

﴿فَٱعۡتَزِلُواْ ٱلنِّسَآءَ فِي ٱلۡمَحِيضِ﴾ [البقرة: ٢٢٢]​

‘‘তোমরা হায়েযের অবস্থায় স্ত্রী সঙ্গম থেকে বিরত থাক।’’ [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২২২]

এ আয়াত প্রমাণ করে যে হায়েয ছাড়া অন্য কোনো অবস্থায় স্ত্রী মিলন থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব নয়।

দ্বিতীয়তঃ মুস্তাহাযাহ নারীর সালাত যেহেতু জায়েয সেহেতু সঙ্গমও জায়েয। কেননা সঙ্গম তো সালাতের চেয়ে আরো সহজ। মুস্তাহাযাহ নারীর সাথে সহবাস করাটাকে ঋতুবতী মহিলার সঙ্গে সহবাস করার সাথে বিচার-বিবেচনা করলে চলবে না। কারণ, এ দু’টি কখনো এক হতে পারে না। এমনকি মুস্তাহাযাহ নারীর সাথে সঙ্গম করাকে যারা হারাম মনে করেন তাদের কাছেও দুটো এক নয়। সুতরাং উভয়ের মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকায় একটাকে অপরটার ওপর কিয়াস করা শুদ্ধ হবে না।
নারীর প্রাকৃতিক রক্তস্রাব
শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উসাইমীন
অনুবাদ: মীযানুর রহমান আবুল হুসাইন
সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া​

[1] ইমাম বুখারী রহ. হাদীসটিকে ‘গুসলুদ্দাম’ অর্থাৎ রক্ত ধৌত করার অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন।
[2] আহমদ ও ইবন মাজাহ।
 

Create an account or login to comment

You must be a member in order to leave a comment

Create account

Create an account on our community. It's easy!

Log in

Already have an account? Log in here.

Total Threads
13,014Threads
Total Messages
16,568Comments
Total Members
3,407Members
Latest Messages
Puzzled PygmyLatest member
Top