প্রবন্ধ আবু হানিফা কুরআনকে মাখলুক বলার প্রসঙ্গে ইমাম আলবানীর অভিমত

shafinchowdhury

Salafi
Salafi User
Joined
Jun 16, 2023
Threads
42
Comments
61
Reactions
726
আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ এর কুরআনকে মাখলুক বলার মতের উপর মৃত্যুবরণ করা প্রসঙ্গে ইমাম আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) এর অভিব্যক্তি:

খতিব আল বাগদাদী সাঈদ বিন মুসলিম আল বাহিলী এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, আমরা আবু ইউসুফকে প্রশ্ন করলাম, আপনি আমাদেরকে আবু হানিফার অবস্থা সম্পর্কে অবগত করছেন না কেন? তিনি বললেন, তোমরা সেটা জেনে কী করবে? আবু হানিফা যেদিন মারা গিয়েছিলেন সেদিনও তিনি বলেছিলেন, কুরআন মাখলুক।

وأما ما روى الخطيب "13/ 379" من طريق سعيد بن مسلم الباهلي قال: قلنا لأبي يوسف: لما لم تحدثنا عن أبي ‌حنيفة؟ قال: ما تصنعون به؟ ‌مات يوم ‌مات يقول: ‌القرآن ‌مخلوق.

ইমাম শামসউদ্দীন যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) আল উলু লিল আল্যিয়িল আযিম (العلو للعلي الغفار في إيضاح صحيح الأخبار وسقيمها ) শিরোনামে একটি কিতাব রচনা করেছেন। কিতাবটির মুখতাসার (সংক্ষেপায়ন) ও তাহকীক করেছেন শায়েখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ)। উক্ত কিতাবে এই বর্ণনার প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে যেয়ে তিনি বলেন,

«قلت: ففي ثبوته عن أبي يوسف نظر، لأن الباهلي هذا، لا يعرف بالرواية، ولذلك أغفلوه، ولم يترجموه في كتب الرجال،

আমার মতে, আবু ইউসুফ হতে এই বর্ণনাটি প্রমাণিত হওয়ার বিষয়টি বিবেচনাযোগ্য। কারণ, এই বাহিলি বর্ণনায় তেমন নির্ভরযোগ্য নন। এজন্যই মুহাদ্দিসগণ তাকে অগ্রাহ্য করেছেন এবং তাকে রিজালশাস্ত্রের কিতাবে (নির্ভরযোগ্য বলে) উল্লেখ্য করেননি।

অতঃপর এই বর্ণনাটির রাবীকে সমালোচনার পরে তিনি (ইমাম আলবানী) আরো বলেন,

لكن هناك في "التاريخ" روايات أخرى عدة أن أبا ‌حنيفة كان يقول: ‌القرآن ‌مخلوق. إلا أنني دققت النظر في بعضها فوجدته لا يخلو من قادح، ولعل سائرها كذلك، لا سيما وقد روى الخطيب عن الإمام أحمد أنه قال: لم يصح عندنا أن أبا ‌حنيفة كان يقول: ‌القرآن ‌مخلوق.

তবে তারীখ এর কিতাবাদিতে এরকম বহু বর্ণনা রয়েছে যে আবু হানিফা কুরআনকে মাখলুক বলতেন। তবে আমি পর্যালোচনা করে দেখেছি যে সেসব গুটিকয়েক বর্ণনার (সনদ) ত্রুটিমুক্ত নয়। আর বাকিগুলোরও হয়তোবা একই অবস্থা। বিশেষত, খতিব আল বাগদাদী ইমাম আহমাদ থেকে বর্ণনা করেছেন যে ইমাম আহমাদ বলেছেন, আবু হানিফার কুরআনকে মাখলুক বলার বিষয়টি আমাদের নিকট সহীহ নয়।
قلت: وهذا هو الظن بالإمام أبي ‌حنيفة رحمه الله وعلمه، فإن صح عنه خلافه، فلعل ذلك كان قبل أن يناظره أيو يوسف، كما في الرواية الثابتة عنه في الكتاب، فلما ناظره، ولأمر ما استمر في مناظرته ستة أشهر، اتفق معه أخيرا على أن ‌القرآن غير ‌مخلوق، وأن من قال: "‌القرآن ‌مخلوق" فهو كافر»

আমার মতে, কুরআনকে মাখলুক বলার মতটি আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ এর চিন্তাধারা ও ইলমি মত ছিল, এই কথা যেমন সঠিক তেমনি এর বিপরীতটাও সঠিক। হয়তোবা আবু ইউসুফ তার সাথে বিতর্ক করার পূর্বে তার এই মত ছিল, যেমনটা উক্ত কিতাবটিতে সহীহ সনদে এসেছে। আবু ইউসুফ তার সাথে এই বিষয়ে বিতর্ক করেন, আর কিছু কারণবশত আবু ইউসুফ তার সাথে টানা ৬ মাস যাবত এই বিষয়ে বিতর্ক করতে থাকেন, পরিশেষে আবু হানিফা তার সাথে একমত হোন যে কুরআন মাখলুক নয় এবং যে বলবে "কুরআন মাখলুক" সে কাফির।

মুখতাসারুল উলু লিল আল্যিয়িল আযিম, ১৫৬ পৃষ্ঠা, মাকতাবাতুল ইসলামিয়্যাহ হতে প্রকাশিত।

«مختصر العلو للعلي العظيم» (ص156):

অনুবাদ: সাফিন চৌধুরী।
Facebook: Shafin Chowdhury

Our Facebook Group: The Ideology Of Salaf
 

Attachments

  • 20240518_005122.webp.webp
    20240518_005122.webp.webp
    152.9 KB · Views: 143
Last edited:
চার মাযহাবের ইমামদের ব্যাপারেই আমরা ভাল ধারণা রাখি।ইমাম আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ একজন ক্ষণজন্মা ফকিহ ছিলেন,তবে তিনি দোষ-ত্রুটি মুক্ত ছিলেন না।তিনি ইমানের সংজ্ঞায় ভূল করেছেন এটা আমরা সবাই জানি।এজন্যই পরবর্তী অনেক আলেম উনাকে মুরজিয়া বলেছিলেন।আমরা মনে করি এটা উনার ইজতেহাদি ভূল ছিল।
 
চার মাযহাবের ইমামদের ব্যাপারেই আমরা ভাল ধারণা রাখি।ইমাম আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ একজন ক্ষণজন্মা ফকিহ ছিলেন,তবে তিনি দোষ-ত্রুটি মুক্ত ছিলেন না।তিনি ইমানের সংজ্ঞায় ভূল করেছেন এটা আমরা সবাই জানি।এজন্যই পরবর্তী অনেক আলেম উনাকে মুরজিয়া বলেছিলেন।আমরা মনে করি এটা উনার ইজতেহাদি ভূল ছিল।
উনি শুধু মুরজিয়া ছিলেন না, কুরআন মাখলুক বলার ভুলেও পতিত হয়েছিলেন। অনেক মুহাক্কিকদের মতে সেই মতের উপর মৃত্যুবরণ করেছেন, যদিও এটা নিয়ে মতভেদ আছে। আর এগুলো সামান্য ত্রুটি না।
 
চার মাযহাবের ইমামদের ব্যাপারেই আমরা ভাল ধারণা রাখি।ইমাম আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ একজন ক্ষণজন্মা ফকিহ ছিলেন,তবে তিনি দোষ-ত্রুটি মুক্ত ছিলেন না।তিনি ইমানের সংজ্ঞায় ভূল করেছেন এটা আমরা সবাই জানি।এজন্যই পরবর্তী অনেক আলেম উনাকে মুরজিয়া বলেছিলেন।আমরা মনে করি এটা উনার ইজতেহাদি ভূল ছিল।
তিনি আহলুর রায়দের ফকিহ ছিলেন। আহলুল হাদিসদের নয়।
 
চার মাযহাবের ইমামদের ব্যাপারেই আমরা ভাল ধারণা রাখি।ইমাম আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ একজন ক্ষণজন্মা ফকিহ ছিলেন,তবে তিনি দোষ-ত্রুটি মুক্ত ছিলেন না।তিনি ইমানের সংজ্ঞায় ভূল করেছেন এটা আমরা সবাই জানি।এজন্যই পরবর্তী অনেক আলেম উনাকে মুরজিয়া বলেছিলেন।আমরা মনে করি এটা উনার ইজতেহাদি ভূল ছিল।
Alhamdulillah
[automerge]1719648253[/automerge]
আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ এর কুরআনকে মাখলুক বলার মতের উপর মৃত্যুবরণ করা প্রসঙ্গে ইমাম আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) এর অভিব্যক্তি:

খতিব আল বাগদাদী সাঈদ বিন মুসলিম আল বাহিলী এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, আমরা আবু ইউসুফকে প্রশ্ন করলাম, আপনি আমাদেরকে আবু হানিফার অবস্থা সম্পর্কে অবগত করছেন না কেন? তিনি বললেন, তোমরা সেটা জেনে কী করবে? আবু হানিফা যেদিন মারা গিয়েছিলেন সেদিনও তিনি বলেছিলেন, কুরআন মাখলুক।

وأما ما روى الخطيب "13/ 379" من طريق سعيد بن مسلم الباهلي قال: قلنا لأبي يوسف: لما لم تحدثنا عن أبي ‌حنيفة؟ قال: ما تصنعون به؟ ‌مات يوم ‌مات يقول: ‌القرآن ‌مخلوق.

ইমাম শামসউদ্দীন যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) আল উলু লিল আল্যিয়িল আযিম (العلو للعلي الغفار في إيضاح صحيح الأخبار وسقيمها ) শিরোনামে একটি কিতাব রচনা করেছেন। কিতাবটির মুখতাসার (সংক্ষেপায়ন) ও তাহকীক করেছেন শায়েখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ)। উক্ত কিতাবে এই বর্ণনার প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে যেয়ে তিনি বলেন,

«قلت: ففي ثبوته عن أبي يوسف نظر، لأن الباهلي هذا، لا يعرف بالرواية، ولذلك أغفلوه، ولم يترجموه في كتب الرجال،

আমার মতে, আবু ইউসুফ হতে এই বর্ণনাটি প্রমাণিত হওয়ার বিষয়টি বিবেচনাযোগ্য। কারণ, এই বাহিলি বর্ণনায় তেমন নির্ভরযোগ্য নন। এজন্যই মুহাদ্দিসগণ তাকে অগ্রাহ্য করেছেন এবং তাকে রিজালশাস্ত্রের কিতাবে (নির্ভরযোগ্য বলে) উল্লেখ্য করেননি।

অতঃপর এই বর্ণনাটির রাবীকে সমালোচনার পরে তিনি (ইমাম আলবানী) আরো বলেন,

لكن هناك في "التاريخ" روايات أخرى عدة أن أبا ‌حنيفة كان يقول: ‌القرآن ‌مخلوق. إلا أنني دققت النظر في بعضها فوجدته لا يخلو من قادح، ولعل سائرها كذلك، لا سيما وقد روى الخطيب عن الإمام أحمد أنه قال: لم يصح عندنا أن أبا ‌حنيفة كان يقول: ‌القرآن ‌مخلوق.

তবে তারীখ এর কিতাবাদিতে এরকম বহু বর্ণনা রয়েছে যে আবু হানিফা কুরআনকে মাখলুক বলতেন। তবে আমি পর্যালোচনা করে দেখেছি যে সেসব গুটিকয়েক বর্ণনার (সনদ) ত্রুটিমুক্ত নয়। আর বাকিগুলোরও হয়তোবা একই অবস্থা। বিশেষত, খতিব আল বাগদাদী ইমাম আহমাদ থেকে বর্ণনা করেছেন যে ইমাম আহমাদ বলেছেন, আবু হানিফার কুরআনকে মাখলুক বলার বিষয়টি আমাদের নিকট সহীহ নয়।
قلت: وهذا هو الظن بالإمام أبي ‌حنيفة رحمه الله وعلمه، فإن صح عنه خلافه، فلعل ذلك كان قبل أن يناظره أيو يوسف، كما في الرواية الثابتة عنه في الكتاب، فلما ناظره، ولأمر ما استمر في مناظرته ستة أشهر، اتفق معه أخيرا على أن ‌القرآن غير ‌مخلوق، وأن من قال: "‌القرآن ‌مخلوق" فهو كافر»

আমার মতে, কুরআনকে মাখলুক বলার মতটি আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ এর চিন্তাধারা ও ইলমি মত ছিল, এই কথা যেমন সঠিক তেমনি এর বিপরীতটাও সঠিক। হয়তোবা আবু ইউসুফ তার সাথে বিতর্ক করার পূর্বে তার এই মত ছিল, যেমনটা উক্ত কিতাবটিতে সহীহ সনদে এসেছে। আবু ইউসুফ তার সাথে এই বিষয়ে বিতর্ক করেন, আর কিছু কারণবশত আবু ইউসুফ তার সাথে টানা ৬ মাস যাবত এই বিষয়ে বিতর্ক করতে থাকেন, পরিশেষে আবু হানিফা তার সাথে একমত হোন যে কুরআন মাখলুক নয় এবং যে বলবে "কুরআন মাখলুক" সে কাফির।

মুখতাসারুল উলু লিল আল্যিয়িল আযিম, ১৫৬ পৃষ্ঠা, মাকতাবাতুল ইসলামিয়্যাহ হতে প্রকাশিত।

«مختصر العلو للعلي العظيم» (ص156):

অনুবাদ: সাফিন চৌধুরী।
Facebook: Shafin Chowdhury

Our Facebook Group: The Ideology Of Salaf
Alhamdulillah
 
Back
Top