সিয়াম ও রামাদান

  1. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় লবণ বা মিষ্টি চাখা

    রোযা অবস্থায় যা করা চলে এমন কিছু কাজ আছে যা আপাতদৃষ্টিতে রোযাদারের জন্য করা অবৈধ মনে হলেও আসলে তা বৈধ। সেরূপ কিছু কাজ নিম্নরূপঃ- রান্না করতে করতে প্রয়োজনে খাবারের লবণ বা মিষ্টি সঠিক হয়েছে কি না তা চেখে দেখা রোযাদারের জন্য বৈধ। তদনুরূপ কোন কিছু কেনার সময় চেখে পরীক্ষা করার দরকার হলে তা করতে...
  2. Abu Abdullah

    সিয়াম রাস্তার ধূলা রোযাদারের নিঃশ্বাসের সাথে পেটে গেলে রোযার কোন ক্ষতি হয় না

    রাস্তার ধূলা রোযাদারের নিঃশ্বাসের সাথে পেটে গেলে রোযার কোন ক্ষতি হয় না। তদনুরূপ যে ব্যক্তি আটাচাকিতে কাজ করে অথবা তার কাছে যায় সে ব্যক্তির পেটে আটার গুঁড়ো গেলেও রোযার কোন ক্ষতি হবে না।[1] কারণ, এ সব থেকে বাঁচার উপায় নেই। অবশ্য মুখে মুখোশ ব্যবহার করে বা কাপড় বেঁধে কাজ করাই উত্তম। [1] (আহকামুস...
  3. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় থুথু ও গয়ের

    যা থেকে বাঁচা দুঃসাধ্য তাতে রোযা নষ্ট নয় থুথু ও গয়ের থেকে বাঁচা দুঃসাধ্য। কারণ, তা মুখে বা গলার গোড়ায় জমা হয়ে নিচে এমনিতেই চলে যায়। অতএব এতে রোযা নষ্ট হবে না এবং বারবার থুথু ফেলারও দরকার হবে না। অবশ্য যে কফ, গয়ের, খাঁকার বা শ্লেমা বেশী মোটা এবং যা কখনো মানুষের বুক (শবাসযন্ত্র) থেকে, আবার কখনো...
  4. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় নাকে বা মুখে স্প্রে ব্যবহার

    স্প্রে দুই প্রকার; প্রথম প্রকার হল ক্যাপসুল স্প্রে পাওডার জাতীয়। যা পিস্তলের মত কোন পাত্রে রেখে পুশ করে স্প্রে করা হয় এবং ধূলোর মত উড়ে গিয়ে গলায় পৌঁছলে রোগী তা গিলতে থাকে। এই প্রকার স্প্রেতে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে। রোযাদারকে যদি এমন স্প্রে বছরের সব মাসে এবং দিনেও ব্যবহার করতেই হয়, তাহলে তাকে এমন...
  5. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় সুগন্ধির সুঘ্রাণ নেওয়া

    রোযা রাখা অবস্থায় আতর বা অন্য প্রকার সুগন্ধি ব্যবহার করা এবং সর্বপ্রকার সুঘ্রাণ নাকে নেওয়া রোযাদারের জন্য বৈধ। তবে ধুঁয়া জাতীয় সুগন্ধি (যেমন আগরবাতি, চন্দন-ধুঁয়া প্রভৃতি) ইচ্ছাকৃত নাকে নেওয়া বৈধ নয়। কারণ, এই শ্রেণীর সুগন্ধির ঘনত্ব আছে; যা পাকস্থলিতে গিয়ে পৌঁছে।[1] বলা বাহুল্য, রান্নাঘরের যে...
  6. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় কুল্লি করা ও নাকে পানি নেওয়া

    রোযাদারের ঠোঁট শুকিয়ে গেলে পানি দ্বারা ভিজিয়ে নেওয়া এবং মুখ বা জিভ শুকিয়ে গেলে কুল্লি করা বৈধ। অবশ্য গড়গড়া করা বৈধ নয়। আর এ ক্ষেত্রে মুখ থেকে পানি বের করে দেওয়ার পর ভিতরে পানির যে আর্দ্রতা বা স্বাদ থেকে যাবে, তাতে রোযার কোন ক্ষতি হবে না। কেননা, তা থেকে বাঁচা সম্ভব নয়।[1] অতি প্রয়োজনে গড়গড়ার...
  7. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় মাথা ইত্যাদি নেড়া করা

    রোযাদারের জন্য নিজ মাথার চুল বা নাভির নিচের লোম ইত্যাদি চাঁছা বৈধ। তাতে যদি কোন স্থান কেটে রক্ত পড়লেও রোযার কোন ক্ষতি হয় না। পক্ষান্তরে দাড়ি চাঁছা সব সময়কার জন্য হারাম; রোযা অবস্থায় অথবা অন্য কোন অবস্থায়।[1] [1] (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ ১৯/১৬৫) রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল শাইখ...
  8. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় ক্ষতস্থানে ওষুধ ব্যবহার

    রোযাদারের জন্য নিজ দেহের ক্ষতস্থানে ওষুধ দিয়ে ব্যান্ডেজ ইত্যাদি করা দূষণীয় নয়। তাতে সে ক্ষত গভীর হোক অথবা অগভীর। কারণ, এ কাজকে না কিছু খাওয়া বলা যাবে, আর না পান করা। তা ছাড়া ক্ষতস্থান স্বাভাবিক পানাহারের পথ নয়।[1] [1] (আহকামুস সাওমি অল-ই’তিকাফ, আবূ সারী মঃ আব্দুল হাদী ১৪০পৃঃ) রমাযানের ফাযায়েল...
  9. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় আহারের কাজ দেয় না এমন (ওষুধ) ইঞ্জেকশন ব্যবহার করা

    রোযাদারের জন্য চিকিৎসার ক্ষেত্রে সেই ইঞ্জেকশন ব্যবহার করা বৈধ, যা পানাহারের কাজ করে না। যেমন, পেনিসিলিন বা ইন্সুলিন ইঞ্জেকশন অথবা অ্যান্টিবায়োটিক বা টনিক কিংবা ভিটামিন ইঞ্জেকশন অথবা ভ্যাক্সিন ইঞ্জেকশন প্রভৃতি হাতে, কোমরে বা অন্য জায়গায়, দেহের পেশী অথবা শিরায় ব্যবহার করলে রোযার ক্ষতি হয় না। তবুও...
  10. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় কিড্নী (বৃক্ক বা মূত্রগ্রন্থি) অচল অবস্থায় দেহের রক্ত শোধন

    রোযাদারের কিড্নী অচল হলে রোযা অবস্থায় প্রয়োজনে দেহের রক্ত পরিষ্কার ও শোধন (Dialysis) করা বৈধ। পরিশুদ্ধ করার পর পুনরায় দেহে ফিরিয়ে দিতে যদিও রক্ত দেহ থেকে বের হয়, তবুও তাতে রোযার কোন ক্ষতি হবে না।[1] [1] (ইবনে উষাইমীন, সাবঊনা মাসআলাহ ফিস্-সিয়াম ৪২নং) রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল শাইখ...
  11. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় দাঁত তোলা

    রোযাদারের জন্য দাঁত (স্টোন ইত্যাদি থেকে) পরিষ্কার করা, ডাক্তারী ভরণ (ইনলেই) ব্যবহার করা এবং যন্ত্রণায় দাঁত তুলে ফেলা বৈধ। তবে এ সব ক্ষেত্রে তাকে একান্ত সাবধানতা অবলম্বন করা উচিৎ, যাতে কোন প্রকার ওষুধ বা রক্ত গিলা না যায়।[1] [1] (ইবনে বায, ফাতাওয়া মুহিম্মাহ, তাতাআল্লাকু বিস্সিয়াম ২৯পৃঃ)...
  12. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় রক্তদান করা

    পরীক্ষার জন্য কিছু রক্ত দেওয়া রোযাদারের জন্য বৈধ। এতে তার রোযার কোন ক্ষতি হয় না।[1] তদনুরূপ কোন রোগীর প্রাণ বাঁচানোর উদ্দেশ্যে রক্তদান করাও বৈধ এবং তা দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করার মতই। এতেও রোযার কোন ক্ষতি হয় না।[2] [1] (রিসালাতানি মু’জাযাতানি ফিয যাকাতি অস্সিয়াম ২৪পৃঃ, ফাসিঃ মুসনিদ ৫৩পৃঃ...
  13. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় নাক অথবা কোন কাটা-ফাটা থেকে রক্ত বের হওয়া

    দেহের কোন কাটা-ফাটা অঙ্গ থেকে রক্ত পড়লে রোযা নষ্ট হয় না। বরং তা দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করার মতই। অনুরূপ নাক থেকে রক্ত পড়লেও রোযা নষ্ট নয়। কারণ, তাতে মানুষের কোন এখতিয়ার থাকে না। আর ইচ্ছা করে বের করলে তাও দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করার মত।[1] তদনুরূপ মাথায় বা দেহের অন্য কোন জায়গায় পাথর বা অন্য...
  14. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় দেহের দূষিত রক্ত বহিষ্করণ

    রোযা অবস্থায় কোন যন্ত্র দ্বারা অথবা যন্ত্র ছাড়াই, পা থেকে অথবা মাথার কোন শিরা থেকে, মুখে করে চুষে অথবা যে কোন প্রকারে দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করলে রোযা নষ্ট হবে কি না, সে নিয়ে উলামাদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। যেহেতু মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কর্তৃক উভয় শ্রেণীর বর্ণনা মজুদ রয়েছে। তিনি...
  15. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর আপোষের চুম্বন ও প্রেমকেলি

    যে রোযাদার স্বামী-স্ত্রী মিলনে ধৈর্য রাখতে পারে; অর্থাৎ সঙ্গম বা বীর্যপাত ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা না করে, তাদের জন্য আপোসে চুম্বন ও প্রেমকেলি বা কোলাকুলি করা বৈধ এবং তা তাদের জন্য মকরূহ নয়। কারণ, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) রোযা রাখা অবস্থায় স্ত্রী-চুম্বন করতেন এবং রোযা অবস্থায় প্রেমকেলিও...
  16. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় বাহ্যিক শরীরে তেল, মলম, পাওডার বা ক্রিম ব্যবহার

    বাহ্যিক শরীরের চামড়ায় পাওডার বা মলম ব্যবহার করা রোযাদারের জন্য বৈধ। কারণ, তা পেটে পৌঁছে না। তদনুরূপ প্রয়োজনে ত্বককে নরম রাখার জন্য কোন তেল, ভ্যাসলিন বা ক্রিম ব্যবহার করাও রোযা অবস্থায় অবৈধ নয়। কারণ, এ সব কিছু কেবল চামড়ার বাহিরের অংশ নরম করে থাকে এবং শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে না। পরন্তু যদিও...
  17. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় পেটে (এন্ডোসকপি মেশিন) নল সঞ্চালন

    পেটের ভিতর কোন পরীক্ষার জন্য (এন্ডোসকপি মেশিন) নল বা স্টমাক টিউব সঞ্চালন করার ফলে রোযার কোন ক্ষতি হয় না। তবে হ্যাঁ, যদি পাইপের সাথে কোন (তৈলাক্ত) পদার্থ থাকে এবং তা তার সাথে পেটে গিয়ে পৌঁছে, তাহলে তাতে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে। অতএব একান্ত প্রয়োজন ছাড়া এ কাজ ফরয বা ওয়াজেব রোযায় করা বৈধ নয়। রমাযানের...
  18. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় পায়খানা-দ্বারে ওষুধ ব্যবহার

    রোযাদারের জ্বর হলে তার জন্য পায়খানা-দ্বারে ওষুধ (সাপোজিটরি) রাখা যায়। তদনুরূপ জ্বর মাপা বা অন্য কোন পরীক্ষার জন্য মল-দ্বারে কোন যন্ত্র ব্যবহার করা দোষাবহ বা রোযার পক্ষে ক্ষতিকর নয়। কারণ, এ কাজকে খাওয়া বা পান করা কিছুই বলা হয় না। (এবং পায়খানা-দ্বার পানাহারের পথও নয়।) রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার...
  19. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় পানিতে নামা, ডুব দেয়া ও সাঁতার কাটা

    রোযা অবস্থায় যা বৈধ কিছু কাজ আছে, যা রোযা অবস্থায় করা বৈধ নয় বলে অনেকের মনে হতে পারে, অথচ তা রোযাদারের জন্য করা বৈধ। সেই ধরনের কিছু কাজের কথা নিম্নে আলোচনা করা হচ্ছেঃ- ১। পানিতে নামা, ডুব দেয়া ও সাঁতার কাটা রোযাদারের জন্য পানিতে নামা, ডুব দেওয়া ও সাঁতার কাটা, একাধিক বার গোসল করা, এসির হাওয়াতে...
  20. Abu Abdullah

    সিয়াম উভয় হাত ও পায়ের রোযা

    রোযাদারের উচিৎ, তার হাতও যেন হারাম নেওয়া, ধরা ও স্পর্শ করা থেকে রোযা রাখে। সুতরাং যে মহিলাকে স্পর্শ করা তার জন্য হালাল নয়, তাকে যেন স্পর্শ না করে।[1] তার হাত যেন রোযা রাখে মানুষের উপর অত্যাচার করা থেকে, কাউকে ধোকা দেওয়া থেকে, কাউকে অন্যায়ভাবে মারা থেকে, সূদ, ঘুস, চুরি, ভেজাল বা অন্য হারাম...
Back
Top