সিয়াম ও রামাদান

  1. Abu Abdullah

    সিয়াম সাধারণভাবে রোযার ফযীলত

    সাধারণভাবে রোযার ফযীলত বর্ণনা করে বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে। নিম্নে কতিপয় সহীহ হাদীস প্রণিধানযোগ্যঃ- ১। আবু হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘‘আল্লাহ আয্যা অজাল্ল বলেন, ‘আদম সন্তানের প্রত্যেক আমল তার নিজের জন্য; তবে রোযা নয়, যেহেতু তা...
  2. Abu Abdullah

    সিয়াম কাফের বা অমুসলিমের জন্য রোযা এ দুনিয়ায় আদায়যোগ্য ওয়াজেব নয়

    কাফের বা অমুসলিমের জন্য রোযা এ দুনিয়ায় আদায়যোগ্য ওয়াজেব নয়। কেননা, সে রোযা রাখলেও তা শুদ্ধ হবে না এবং আল্লাহর দরবারে কবুলও হবে না। যেহেতু রোযা (অনুরূপ যে কোন ইবাদত) শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম প্রধান শর্ত হল ইসলাম। (যেমন শর্ত হল ইখলাস ও মুহাম্মাদী তরীকা।) মহান আল্লাহ বলেন, (وَمَا مَنَعَهُمْ أَنْ...
  3. Abu Abdullah

    সিয়াম নামায-ত্যাগীর রোযা

    যে ব্যক্তি নামায ফরয হওয়ার কথা অস্বীকার করে এবং ইচ্ছাকৃত তা ত্যাগ করে সে ব্যক্তি উলামাদের সর্বসম্মতভাবে কাফের। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি অবহেলায় অলসতার দরুন নামায ত্যাগ করে, সে ব্যক্তিও উলামাদের শুদ্ধ মতানুসারে কাফের। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘মানুষ এবং কুফর ও শির্কের মাঝে...
  4. Abu Abdullah

    সিয়াম নাবালক ছোট শিশুর জন্য রোযা ফরয নয়

    নাবালক ছোট শিশুর জন্য রোযা ফরয নয়। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘তিন ব্যক্তি নিকট থেকে (পাপ লিখার) কলম তুলে নেওয়া হয়েছে; জ্ঞানশূন্য পাগলের নিকট থেকে; যতক্ষণ না সে সুস্থ হয়েছে। ঘুমন্ত ব্যক্তির নিকট থেকে; যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়েছে। আর শিশুর নিকট থেকে; যতক্ষণ না সে সাবালক...
  5. Abu Abdullah

    সিয়াম পাগলের উপর রোযা ফরয নয়

    পাগলের উপর রোযা ফরয নয়। কারণ, তার উপর থেকে কলম তুলে নেওয়া হয়েছে; যেমন পূর্বোক্ত হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে। অনুরূপ আধ-পাগলা, যার ভালো-মন্দের তমীয নেই এবং অনুরূপ স্থবির বৃদ্ধ, যার তমীয-জ্ঞান নষ্ট হয়ে গেছে। এ সকল জ্ঞানহীন মানুষদের তরফ থেকে খাদ্যদানও ওয়াজেব নয়।[1] পাগল দিনের ভিতরে সুস্থ হলে তার জন্য...
  6. Abu Abdullah

    সিয়াম অক্ষম ব্যক্তির জন্য রোযা ফরয নয়

    ১। বৃদ্ধ ও স্থবির বা অথর্ব ব্যক্তি, যার শারীরিক ক্ষমতা নিঃশেষ হয়ে গেছে এবং দিনের দিন আরো খারাপের দিকে যেতে যেতে মরণের দিকে অগ্রসর হতে চলেছে, সে ব্যক্তির জন্য রোযা ফরয নয়। কষ্ট হলে সে রোযা রাখবে না। মহান আল্লাহ বলেন, (وَعَلَى الَّذِيْنَ يُطِيْقُوْنَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِيْنٍ) অর্থাৎ, যারা...
  7. Abu Abdullah

    সিয়াম মুসাফিরের জন্য রোযা কাযা করা বৈধ

    মুসলিম উম্মাহর সর্বসম্মতিক্রমে মুসাফিরের জন্য রোযা কাযা করা বৈধ; চাহে সে মুসাফির রোযা রাখতে সক্ষম হোক অথবা অক্ষম, রোযা তার জন্য কষ্টদায়ক হোক অথবা না হোক, অর্থাৎ মুসাফির যদি ছায়া ও পানির সকল সুবিধা নিয়ে সফর করে এবং তার সাথে তার খাদেমও থাকে অথবা না থাকে, (সফর এরোপে½নে হোক অথবা পায়ে হেঁটে); যেমনই...
  8. Abu Abdullah

    সিয়াম ইসলামী শরীয়তে রোযা ও তার পর্যায়ক্রম

    মহাবিজ্ঞান ও হিকমতময় মহান আল্লাহর একটি হিকমত ও অনুগ্রহ এই যে, তিনি বান্দার উপর যে আদেশ-নিষেধ আরোপ করেছেন তার মধ্যে বহু বিষয়কেই পর্যায় অনুক্রমে ধীরে ধীরে ফরয অথবা হারাম করেছেন। অনুরূপ তাঁর এক ফরয হল সিয়াম বা রোযা। যা তিনি উম্মতে মুহাম্মাদীর উপর পর্যায়ক্রমে কিছু কিছু করে ফরয করেছেন। যেমনঃ- প্রথম...
  9. Abu Abdullah

    সিয়াম নিফাস ও ঋতুমতী মহিলা খুন থাকা অবস্থায় রোযা রাখবে না

    নিফাস ও ঋতুমতী মহিলা খুন থাকা অবস্থায় রোযা রাখবে না। অবশ্য যে কয় দিন তাদের রোযা ছুটে যাবে তা পরে কাযা করে নেবে। ঋতুমতী যখন মাসিকের খুন বন্ধ হওয়ার পর সাদা স্রাব আসতে দেখবে, তখন রাত থাকলে রোযার নিয়ত করে রোযা রাখবে। কিন্তু সে যদি মাসিক শেষে অভ্যাসগতভাবে সে স্রাব লক্ষ্য না করে থাকে, তাহলে কিছু তুলো...
  10. Abu Abdullah

    সিয়াম পূর্ববর্তী ধর্মমতে রোযা

    মানুষের জন্য রমাযানের রোযাই প্রথম রোযা নয়। কারণ, রোযা হল এমন ইবাদত, যা আল্লাহ তাআলা মানুষ সৃষ্টির পর থেকেই নিজের বান্দার জন্য ফরয করেছেন। তিনি কুরআন মাজীদে বলেন, (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ)...
  11. Abu Abdullah

    সালাত তাড়াহুড়া না করে সুন্দরভাবে তারাবীহ পড়া

    ইমামের জন্য উচিৎ নয়, নামাযে জলদিবাজি করা এবং কাকের দানা খাওয়ার মত ঠকাঠক নামায শেষ করা। যেহেতু মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ও সাহাবায়ে কেরাম এ নামাযকে খুবই লম্বা করে পড়তেন; যেমন পূর্বে এ কথা আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর রুকূ ও সিজদাহ প্রায় তাঁর কিয়ামের মতই...
  12. Abu Abdullah

    সালাত তারাবীহর নামাযে কুরআন খতম

    তারাবীহর নামাযে কুরআন খতম করার ব্যাপারে শায়খ ইবনে বায (রঃ) বলেন, এ ব্যাপারে প্রশস্ততা আছে। তবে আমার এমন কোন দলীল জানা নেই, যাকে কেন্দ্র করে বলা যায় যে, তারাবীহর নামাযে কুরআন খতম উত্তম। অবশ্য কিছু উলামা বলেন যে, ইমামের জন্য পূর্ণ কুরআন শুনানো উত্তম; যাতে করে জামাআতের জন্য (অন্ততপক্ষে বছরে একবার)...
  13. Abu Abdullah

    সালাত তারাবীহর নামাযের ক্বিরাআত

    মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) রাতের কিয়ামকে খুব লম্বা করতেন। মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ৪ রাকআত নামায পড়তেন। সুতরাং তুমি সেই নামাযের সৌন্দর্য ও দৈর্ঘ্যের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করো না। (অর্থাৎ অত্যন্ত সুন্দর ও দীর্ঘ হত।) অতঃপর তিনি ৪ রাকআত নামায পড়তেন। সুতরাং...
  14. Abu Abdullah

    সালাত তারাবীহর প্রত্যেক দুই রাকআতের মাঝে যিকর

    প্রত্যেক দুই রাকআতে সালাম ফিরে তসবীহ, ইস্তিগফার বা দুআ পড়া দোষাবহ নয়। তবে এ সময় উচ্চস্বরে সে সব পড়া উচিৎ নয়। কারণ, তার কোন দলীল নেই।[1] প্রকাশ থাকে যে, ঐ সকল যিক্র বা দুআ যা ফরয নামাযের পর পড়া হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে এই নামাযের প্রত্যেক ২ রাকআত পরপর সালাম ফিরে নির্দিষ্ট যিক্র; যেমন ‘‘সুবহানা যিল...
  15. Abu Abdullah

    সালাত তারাবীহর নামাযের পদ্ধতি

    মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর রাতের নামায সাধারণভাবে একই নিয়ম-পদ্ধতির অনুসারী ছিল না। বরং তাঁর এই নামায ছিল একাধিক ধরনের একাধিক নিয়মের। নিম্নে সংক্ষেপে সেই সব নিয়মাবলী মুসলিমের অবগতির জন্য উল্লেখ করা হলঃ- ১। তিনি ১৩ রাকআত নামায পড়তেন। প্রথমে হাল্কা করে ২ রাকআত দিয়ে শুরু করতেন।...
  16. Abu Abdullah

    সিয়াম তারাবীহর জন্য অর্থের বিনিময়ে ইমাম নিয়োগ

    তারাবীহর নামাযের জন্য সুমধুর কণ্ঠবিশিষ্ট হাফেয-ক্বারী ইমাম অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া দোষাবহ নয়। তবে (ক্বারী সাহেবের তরফ থেকে) পারিশ্রমিক নির্দিষ্ট করা উচিৎ নয়। যেহেতু এক জামাআত সলফ এ কাজকে অপছন্দ করেছেন। অবশ্য মসজিদের জামাআত যদি অনির্দিষ্ট- ভাবে তাঁকে অনেক কিছু দিয়ে পুরস্কৃত বা সাহায্য করেন...
  17. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযাদারের জন্য যা করা অপছন্দনীয়

    উলামাগণ কিছু এমন বৈধ কর্ম করাকে রোযাদারের জন্য অপছন্দনীয় মনে করেন, যা করার ফলে তার রোযা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর তা নিম্নরূপঃ- মুখে থুথু জমা করে গিলে নেওয়া। গয়ের বা শ্লেমা গিলা। চুইংগাম জাতীয় কিছু চিবানো। দাঁতের ফাঁকে লেগে থাকা খাবার পরি®কার না করা। অপ্রয়োজনে খাবার চেখে দেখা। কারণ, তা গলার...
  18. Abu Abdullah

    সালাত তারাবীহর জামাআতে মহিলাদের অংশগ্রহণ

    যদি কোন ফিতনা সৃষ্টির আশঙ্কা না থাকে, তাহলে তারাবীহর জামাআতে মহিলাদের উপস্থিত হওয়া দোষাবহ নয়। অবশ্য শর্ত হল, তারা যেন সম্ভ্রমপূর্ণ লেবাস পরিধান করে, বেপর্দা হয়ে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে এবং কোন প্রকারের সুবাস ও সুগন্ধি ব্যবহার না করে মসজিদে যায়।[1] মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)...
  19. Abu Abdullah

    সালাত তারাবীহর জামাআত

    রমাযানের কিয়াম জামাআতে পড়া বিধেয়; যেমন একাকী পড়াও বৈধ। তবে মসজিদে জামাআত সহকারে এই নামায আদায় করাই (অধিকাংশ উলামার মতে) উত্তম। পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে যে, রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) সাহাবাদেরকে নিয়ে উক্ত নামায জামাআত সহকারে আদায় করেছেন। অবশ্য তা ফরয হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তিনি জামাআত করে...
  20. Abu Abdullah

    সালাত তারাবীহর রাকআত-সংখ্যা

    সুন্নত ও আফযল হল এই নামায বিত্র সহ ১১ রাকআত পড়া। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর রাতের নামায সম্বন্ধে সর্বাধিক বেশী খবর রাখতেন যিনি, সেই আয়েশা (রাঃ)কে জিজ্ঞাসা করা হল যে, রমাযানে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর নামায কত রাকআত ছিল? উত্তরে তিনি বললেন, ‘তিনি রমাযানে এবং...
Back
Top