সিয়াম ও রামাদান

  1. Abu Abdullah

    সিয়াম পেটের রোযা

    রোযাদারের পেটও রোযা রাখে; রোযা রাখে হারাম খাদ্য দ্বারা তা পরিপূর্ণ করা থেকে। সুতরাং সে হারাম খাবার সেহরীতে খায় না এবং ইফতারীতেও না। সে (ব্যাংকের বা অন্য কোন প্রকার) সূদ খায় না। খায় না ঘুস, এতীমের মাল এবং হারাম উপায়ে উপার্জিত কোন অর্থ। কেননা, যে ব্যক্তি নিজ উদরে হারাম মাল প্রবেশ করায়; অর্থাৎ...
  2. Abu Abdullah

    সিয়াম কানের রোযা

    রোযাদারের কানও রোযা রাখে; রোযা রাখে নোংরা ও অশ্লীল কথা শোনা থেকে। রোযা রাখে অবৈধ প্রেম ও ব্যভিচারের দিকে আহবানকারী গান-বাজনা শোনা থেকে। রোযা রাখে আল্লাহর হারামকৃত এবং যে কথা তাঁকে ক্রোধাw¦বত ও অসন্তুষ্ট করে সে কথা শোনা থেকে। মুমিনের কান রোযা রাখে শয়তানের সুর শোনা থেকে এবং ইফতার করে রহমানের...
  3. Abu Abdullah

    সিয়াম হৃদয়ের রোযা

    দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের রাজা হল হৃদয়। বলা বাহুল্য, এই হৃদয় যখনই শরয়ী রোযা রাখবে, তখনই সারা অঙ্গে তা কার্যকর হবে। প্রিয়তম মুস্তাফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘জেনে রাখ, দেহের মধ্যে এমন এক মাংস-পিন্ড আছে যা ভালো হলে সারা দেহ ভালো হবে এবং তা খারাপ হলে সারা দেহ খারাপ হবে। শোন! তা হল...
  4. Abu Abdullah

    সিয়াম জিভের রোযা

    রোযাদারের উচিৎ, যেন তার জিভও রোযা রাখে। অর্থাৎ, সে যেন প্রত্যেক নোংরা কথা থেকে; পরচর্চা বা গীবত থেকে, চুগলখোরী বা লাগান-ভাজান থেকে, অশ্লীল ও মিথ্যা কথা থেকে বিরত থাকে। দূরে থাকে মূর্খামি ও বেওকুফি করা থেকে। যেহেতু মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি রোযা রেখে নোংরা কথা ও...
  5. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযাবিরোধী কর্ম থেকে বিরত থাকা এবং রোযা নির্মল করা

    যে সকল শ্রেষ্ঠ ইবাদত দ্বারা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়, ত¦মধ্যে রোযা হল অন্যতম। আল্লাহ তা বান্দার জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন, যাতে করে বান্দা তদ্দবারা নিজের আত্মা ও মনকে সংশুদ্ধ করতে পারে এবং প্রত্যেক কল্যাণের উপর তাকে অভ্যস্ত করতে পারে। সুতরাং রোযা রাখা অবস্থায় রোযাদারকে এমন সব কর্ম থেকে দূরে...
  6. Abu Abdullah

    সিয়াম রোযা অবস্থায় দুআ

    রোযাদারের উচিৎ, ইফতার করার আগে পর্যন্ত রোযা থাকা অবস্থায় বেশী বেশী করে দুআ করা। কারণ, রোযা থাকা অবস্থায় রোযাদারের দুআ আল্লাহর নিকট মঞ্জুর হয়। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘তিন ব্যক্তির দুআ অগ্রাহ্য করা হয় না (বরং কবুল করা হয়); পিতার দুআ, রোযাদারের দুআ এবং মুসাফিরের দুআ।’’[1]...
  7. Abu Abdullah

    সিয়াম ইফতারের সময় কখন?

    যেমন পূর্বেই আলোচিত হয়েছে যে, সূর্যের পুরো বৃত্ত অদৃশ্য হওয়ার সাথে সাথে ইফতারের সময় হয়। আর সে সময় হল মাগরেবের নামাযের আগে। ইফতার করে নামায পড়ার পর প্রয়োজনীয় আহার ভক্ষণ করবে রোযাদার। অবশ্য যদি আহার প্রস্ত্তত থাকে, তাহলে প্রথমে আহার খেয়েই নামায পড়বে। যেহেতু আনাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল...
  8. Abu Abdullah

    সিয়াম কি দিয়ে ইফতারী হবে?

    কিছু আধা-পাকা অথবা পূর্ণ পাকা (শুকনা) খেজুর দিয়ে এবং তা না পাওয়া গেলে পানি দিয়ে ইফতার করা সুন্নত। আনাস (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) নামাযের পূর্বে কিছু আধা-পাকা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তা না পেলে পূর্ণ পাকা (শুকনা) খেজুর দিয়ে এবং তাও না পেলে কয়েক ঢোক পানি খেয়ে...
  9. Abu Abdullah

    সিয়াম সূর্য ডুবে গেছে মনে করে ইফতার করলে

    সূর্য ডুবে গেছে মনে করে রোযাদার ইফতার করে নেওয়ার পর যদি জানা যায় যে, সূর্য এখনও ডুবে নি, তাহলে সঠিক মতে তার রোযা শুদ্ধ; তাকে কাযা করতে হবে না। কারণ, সে না জেনেই ইফতার করে ফেলেছে। আর অবস্থা (সময়) না জেনে রোযা নষ্টকারী জিনিস ব্যবহার করলে তার এ (না জানার) ওযর গ্রহণযোগ্য। তা ছাড়া আসমা বিন্তে আবী...
  10. Abu Abdullah

    সিয়াম সূর্য ডোবার পর আবার সূর্য দেখলে

    সূর্য ডোবার পর কোন মুসাফির বিমান বন্দরে ইফতার করার পর প্লেনে চড়ে আকাশে উঠে যদি সূর্য দেখে, তাহলে তার জন্য পানাহার থেকে বিরত থাকা এবং পুনরায় রোযায় থাকার নিয়ত করা জরুরী নয়। কারণ, সে তার রোযার পূর্ণ একটি দিন অতিবাহিত করে ফেলেছে। অতএব ইবাদত করার উদ্দেশ্যে তা শেষ হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় শুরু করার কোন পথ...
  11. Abu Abdullah

    সিয়াম শীঘ্র ইফতার

    রোযার নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে গেলে রোযা খোলা বা ইফতার করার জন্য প্রত্যেক রোযাদারের অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করাটাই স্বাভাবিক। আর সেই সময় যে তার রোযা পূর্ণ করতে পারে প্রকৃতিগতভাবে সে খুশী হয়। অতএব ইফতার করতে তাড়াতাড়ি করাটাই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু তা সত্ত্বেও দয়ার নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে...
  12. Abu Abdullah

    সিয়াম ফজর উদয় হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ হলে

    ফজর উদয় হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ হলে রোযাদার ততক্ষণ পর্যন্ত পানাহার করতে পারে, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে ফজর উদয় হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে। আর সন্দেহের উপর পানাহার বন্ধ করবে না। যেহেতু মহান আল্লাহ পানাহার বন্ধ করার শেষ সময় নির্ধারিত করেছেন নিশ্চিত ও স্পষ্ট ফজরকে; সন্দিগ্ধ ও অস্পষ্ট ফজরকে নয়। তিনি...
  13. Abu Abdullah

    সিয়াম সেহরী খাওয়ার সময় কখন?

    সেহরী খাওয়ার সময় হল অর্ধরাত্রির পর থেকে ফজরের আগে পর্যন্ত। আর মুস্তাহাব হল, ফজর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা না হলে শেষ সময়ে সেহরী খাওয়া। আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, যায়দ বিন ষাবেত তাঁকে জানিয়েছেন যে, তাঁরা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর সাথে সেহরী খেয়ে (ফজরের) নামায পড়তে উঠে গেছেন। আনাস বলেন, আমি...
  14. Abu Abdullah

    সালাত ইমামের সাথে নামায শেষ করার মাহাত্ম্য

    যে ব্যক্তি জামাআতের ইমামের পিছনে রাতের কিছু অংশ তারাবীহ পড়বে এবং ইমাম শেষ করলে সেও শেষ করবে (অর্থাৎ, তাঁর আগে বা পরে শেষ করবে না), তার নেকীর খাতায় পূর্ণ রাত নামায পড়ার সওয়াব লিপিবদ্ধ হবে। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি ইমামের সাথে নামায পড়ে এবং তার নামায শেষ করা...
  15. Abu Abdullah

    সালাত বিতর নামাযে কুনূত পড়া সুন্নত, ওয়াজেব নয়

    বিতর নামাযে কুনূত পড়া সুন্নত, ওয়াজেব নয়। কারণ, যে সকল সাহাবাবৃন্দ বিতর নামাযের হাদীস বর্ণনা করেছেন, তাঁরা তাতে কুনূতের কথা উল্লেখ করেননি। বলা বাহুল্য, যদি মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) তা প্রত্যহ করতেন, তাহলে তাঁরা সকলেই সে কথা বর্ণনা করতেন। তবে হ্যাঁ, একা উবাই বিন কা’ব বর্ণনা করেছেন...
  16. Abu Abdullah

    সালাত কুনূতের দুআর শেষে মুখে হাত বুলানো

    দুই হাত তুলে কুনূতের (অনুরূপ যে কোন) দুআর শেষে মুখে হাত বুলানো সুন্নত নয়। কেননা, এ ব্যাপারে বর্ণিত সমস্ত হাদীস যয়ীফ।[1] আর যয়ীফ হাদীস দ্বারা কোন সুন্নত প্রমাণ করা আমাদের জন্য সম্ভব নয়। তাই অনেক উলামা পরিষ্কারভাবে এ কাজকে বিদআত বলেছেন।[2] মাজমূ’ নামক কিতাবে ইমাম নওবী ইয্য্ বিন আব্দুস সালামের...
  17. Abu Abdullah

    সালাত সালাতে কুনূতের জবাব

    কুনূতের দুআয় ইমামের ‘ইন্নাহু লা য়্যাযিল্লু ---’ বলার সময় যেহেতু ‘আমীন’ বলা হয় না সেহেতু কোন কোন লোক এ ক্ষেত্রে ‘স্বাদাক্বতা’, ‘হাক্কব-হাক্কব’, ‘আশহাদ’, অথবা ‘ইয়াল্লাহ’ বলে থাকে। আসলে এ সব বলা বিদআত। রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী
  18. Abu Abdullah

    সালাত একবচন শব্দের দুআকে বহুবচন করে পড়া

    দুআ-এ মাষূর একবচন শব্দে হলে ইমাম সাহেব সেটিকে বহুবচন শব্দে ব্যবহার করবেন। কারণ, তিনি নিজের সাথে সাথে মুক্তাদীদের জন্যও দুআ করে থাকেন।[1] [1] (সালাতুল-লাইলি অত্-তারাবীহ, ইবনে বায ৪১পৃঃ, এ ব্যাপারে অধিক দ্রঃ সালাতি মুবাশ্শির ২/২৯৩) রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী...
  19. Abu Abdullah

    সালাত সালাতে লম্বা দুআ কি বৈধ ?

    কোন কোন ইমাম দুআকে এত লম্বা করেন যে, তাতে মুক্তাদীদের অনেকের অথবা সকলের কষ্ট হয়। পক্ষান্তরে আর এক শ্রেণীর ইমাম আছেন, যাঁরা কুনূতের দুআকে কবিতা আবৃত্তির মত গড়গড় করে পড়ে ফেলেন। কিন্তু যখন মুনাজাত শুরু করেন, তখন একই দুআকে বারবার বলে বেশ দীর্ঘ সময় ব্যয় করেন। ফলে কেউ কেউ প্রায় আধ ঘ¦টা ধরে কুনূত পড়েন।...
  20. Abu Abdullah

    অন্যান্য দুআয় ছন্দ ব্যবহার

    দুআ করার সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে যদি দুআর শব্দাবলীতে ছন্দ এসে যায়, তাহলে তাতে কোন দোষ নেই। দূষণীয় হল কষ্টকল্পনার সাথে ছন্দ বানিয়ে দুআ করা। কারণ, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কথায় ছন্দ ব্যবহারের নিন্দা করেছেন। এক ব্যক্তির বাঁধা-ছাঁদা কথা শুনে তিনি বলেছিলেন, ‘‘এ ছন্দ তো গণকের ছন্দের মত!’’...
Back
Top