- Awards
- 24
- Credit
- 9,267
- Thread starter
- #1
নিফাস ও ঋতুমতী মহিলা খুন থাকা অবস্থায় রোযা রাখবে না। অবশ্য যে কয় দিন তাদের রোযা ছুটে যাবে তা পরে কাযা করে নেবে।
ঋতুমতী যখন মাসিকের খুন বন্ধ হওয়ার পর সাদা স্রাব আসতে দেখবে, তখন রাত থাকলে রোযার নিয়ত করে রোযা রাখবে। কিন্তু সে যদি মাসিক শেষে অভ্যাসগতভাবে সে স্রাব লক্ষ্য না করে থাকে, তাহলে কিছু তুলো বা কাপড় নিয়ে শরমগাহে প্রবেশ করিয়ে পরীক্ষা করে দেখবে তাতে খুনের চিহÁ আছে কি না? কোন চিহÁ না দেখলে, অন্য কথায় তুলো বা কাপড় পরিষ্কার লক্ষ্য করলে রোযা রাখবে। রোযা রাখার পর দিনের বেলায় আবার খুন দেখা দিলে রোযা ভেঙ্গে দেবে। পক্ষান্তরে মাগরেব পর্যন্ত খুন বন্ধ থাকলে এবং ফজরের আগে রোযার নিয়ত করে থাকলে তার রোযা শুদ্ধ হয়ে যাবে।
যে মহিলা মাসিকের খুন সরার কথা অনুভব করে, কিন্তু সূর্য ডোবার পর ছাড়া বের হতে দেখে না, তার রোযা শুদ্ধ এবং ঐ দিন যথেষ্ট।
যে মহিলা তার হিসাব মত জানে যে, তার মাসিক শুরু হবে আগামী কাল, তবুও সে রোযার নিয়ত করে রোযা রাখবে এবং খুন না দেখা পর্যন্ত রোযা ভাঙ্গবে না।[1]
যে মহিলার নিফাস বা মাসিক ঠিক ফজর হওয়ার সময় অথবা তার কিছু আগে বন্ধ হয়, তার জন্য রোযা রাখা জরুরী। তার রোযা শুদ্ধ ও ফরয পালন হয়ে যাবে, যদিও সে ফজর হওয়ার পরেই গোসল করে। পক্ষান্তরে যদি ফজর হয়ে যাওয়ার পর খুন বন্ধ দেখে তাহলে সেদিন সে পানাহার থেকে বিরত থাকবে, কিন্তু রোযার নিয়ত করবে না, রোযা হবেও না। বরং তা তাকে রমাযান পর কাযা করতে হবে।[2]
ঋতুমতী মহিলার জন্য এটাই উত্তম যে, সে স্বাভাবিক অবস্থায় থেকে আল্লাহর লিখিত ভাগ্য নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে এবং খুন নিবারক কোন ঔষধ ব্যবহার করবে না। মাসিক অবস্থায় মহান আল্লাহ যেমন তার জন্য রোযা কাযা করাকে বৈধ করেছেন, তেমনি তা গ্রহণ করে নেওয়া উচিৎ। অনুরূপই ছিলেন মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণ এবং সাহাবী ও সলফদের মহিলাগণ। তাঁরা কোন খুন-নিবারক ঔষধ ব্যবহার করতঃ মাসিক বন্ধ করে রোযা রাখতেন না। তাছাড়া মহিলাদের এই মাসিক খুন-ক্ষরণের মাঝে মহান আল্লাহর সৃষ্টিগত একটি বড় হিকমতও রয়েছে। সেই হিকমত ও যুক্তি মহিলার প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রাখে। অতএব সেই স্বাভাবিক প্রকৃতিতে বাধা দিলে নিঃসন্দেহে নারী-দেহে তার ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। অথচ মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘কেউ নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না এবং অপরেরও ক্ষতি করবে না।’’[3]
এতদ্ব্যতীত মাসিক-নিবারক ট্যাবলেট ব্যবহারে মহিলার গর্ভাশয়েরও নানান ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে; যেমন সে কথা ডাক্তারগণ উল্লেখ করে থাকেন।
কিন্তু যদি মহিলা তা ব্যবহার করে মাসিক বন্ধ করে এবং পবিত্রা থেকে রোযা রাখে, তাহলে সে রোযা শুদ্ধ ও যথেষ্ট।[4]
নিফাসবতী মহিলা ৪০ দিন পার হওয়ার আগেই যদি পবিত্রা হয়ে যায়, তাহলে সে রোযা রাখবে এবং সালাতের জন্য গোসল করবে। কিন্তু ৪০ দিন পার হওয়ার আগেই পুনরায় খুন আসতে শুরু হলে রোযা-নামায বন্ধ করে দেবে। আর যে রোযা-নামায সে পবিত্রা অবস্থায় করেছিল, তা শুদ্ধ ও যথেষ্ট হবে। পক্ষান্তরে ৪০ দিন পার হওয়ার পরেও যদি খুন বন্ধ না হয়, তাহলেও তাকে রোযা-গোসল করতে হবে। অতিরিক্ত এই দিনগুলির খুনকে ইস্তিহাযা ধরতে হবে। অবশ্য সেই সময় যদি তার স্বাভাবিক মাসিক আসার সময় হয়, তাহলে সে খুনকে মাসিকের খুন ধরতে হবে।[5]
মানুষের আকৃতি আসার পর ভ্রূণ কোন জরুরী কারণে গর্ভচ্যুত করতে বাধ্য হলে যে খুন আসবে তা নিফাস। অবশ্য এর পূর্বে গর্ভচ্যুত করলে যে খুন আসবে তা নিফাস নয়। বরং সে খুন একটি শিরার খুন। এ খুনের মান ইস্তিহাযার মত। অর্থাৎ, এ খুনে নামায-রোযা বন্ধ করা বৈধ নয়।
প্রকাশ থাকে যে, ভ্রূণে মানুষের আকৃতি আসতে সময় লাগে গর্ভ ধারণের পর থেকে কমসে কম ৮০ দিন। সাধারণভাবে ৯০ দিন ধরা যায়।[6]
গর্ভবতী খুন দেখলে তা যদি প্রসবের কিছুকাল (১/২ দিন) পূর্বে হয় এবং তার সাথে প্রসব-বেদনা থাকে, তাহলে সে খুন নিফাস। পক্ষান্তরে যদি সে খুন প্রসবের বহু (৩/৪ দিন বা তারও বেশী) পূর্বে হয় অথবা ক্ষণকাল পূর্বে হয়, কিন্তু তার সাথে প্রসব-যন্ত্রণা না থাকে, তাহলে সে খুন নিফাস নয়। সে খুন মহিলার মাসিক হওয়ার যথাসময়ে হলে তা মাসিকের খুন। কারণ, মহিলার গর্ভাশয় থেকে যে খুন নির্গত হয়, আসলে তা মাসিকের খুন; যদি মাসিকের খুন হওয়াতে কোন বাধা না থাকে তাহলে। আর কিতাব ও সুন্নাহতে এমন কোন দলীল নেই, যাতে বুঝা যায় যে, গর্ভিণী মহিলার মাসিক হতে পারে না।[7]
ইস্তিহাযার খুন নামায-রোযার শুদ্ধতায় কোন প্রভাব ফেলে না। কারণ, ফাতিমা বিন্তে আবী হুবাইশ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি এক এমন মহিলা, যার সব সময় ইস্তিহাযা (অতিরিক্ত মাসিকের) খুন থাকে এবং পবিত্রাই হয় না। তাহলে আমি কি নামায ত্যাগ করব?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘‘না। এটা হল একটি শিরার খুন। মাসিক নয়। সুতরাং যখন তোমার (পূর্ব নিয়ম অনুসারে পূর্ব সময়ে) মাসিক আসবে তখন তুমি নামায ত্যাগ কর। অতঃপর যখন সে (নিয়মিত মাসিক আসার সময়) চলে যাবে, তখন খুন ধুয়ে (গোসল করে) নামায পড়তে শুরু কর।’’[8]
ঋতুমতী যখন মাসিকের খুন বন্ধ হওয়ার পর সাদা স্রাব আসতে দেখবে, তখন রাত থাকলে রোযার নিয়ত করে রোযা রাখবে। কিন্তু সে যদি মাসিক শেষে অভ্যাসগতভাবে সে স্রাব লক্ষ্য না করে থাকে, তাহলে কিছু তুলো বা কাপড় নিয়ে শরমগাহে প্রবেশ করিয়ে পরীক্ষা করে দেখবে তাতে খুনের চিহÁ আছে কি না? কোন চিহÁ না দেখলে, অন্য কথায় তুলো বা কাপড় পরিষ্কার লক্ষ্য করলে রোযা রাখবে। রোযা রাখার পর দিনের বেলায় আবার খুন দেখা দিলে রোযা ভেঙ্গে দেবে। পক্ষান্তরে মাগরেব পর্যন্ত খুন বন্ধ থাকলে এবং ফজরের আগে রোযার নিয়ত করে থাকলে তার রোযা শুদ্ধ হয়ে যাবে।
যে মহিলা মাসিকের খুন সরার কথা অনুভব করে, কিন্তু সূর্য ডোবার পর ছাড়া বের হতে দেখে না, তার রোযা শুদ্ধ এবং ঐ দিন যথেষ্ট।
যে মহিলা তার হিসাব মত জানে যে, তার মাসিক শুরু হবে আগামী কাল, তবুও সে রোযার নিয়ত করে রোযা রাখবে এবং খুন না দেখা পর্যন্ত রোযা ভাঙ্গবে না।[1]
যে মহিলার নিফাস বা মাসিক ঠিক ফজর হওয়ার সময় অথবা তার কিছু আগে বন্ধ হয়, তার জন্য রোযা রাখা জরুরী। তার রোযা শুদ্ধ ও ফরয পালন হয়ে যাবে, যদিও সে ফজর হওয়ার পরেই গোসল করে। পক্ষান্তরে যদি ফজর হয়ে যাওয়ার পর খুন বন্ধ দেখে তাহলে সেদিন সে পানাহার থেকে বিরত থাকবে, কিন্তু রোযার নিয়ত করবে না, রোযা হবেও না। বরং তা তাকে রমাযান পর কাযা করতে হবে।[2]
ঋতুমতী মহিলার জন্য এটাই উত্তম যে, সে স্বাভাবিক অবস্থায় থেকে আল্লাহর লিখিত ভাগ্য নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে এবং খুন নিবারক কোন ঔষধ ব্যবহার করবে না। মাসিক অবস্থায় মহান আল্লাহ যেমন তার জন্য রোযা কাযা করাকে বৈধ করেছেন, তেমনি তা গ্রহণ করে নেওয়া উচিৎ। অনুরূপই ছিলেন মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণ এবং সাহাবী ও সলফদের মহিলাগণ। তাঁরা কোন খুন-নিবারক ঔষধ ব্যবহার করতঃ মাসিক বন্ধ করে রোযা রাখতেন না। তাছাড়া মহিলাদের এই মাসিক খুন-ক্ষরণের মাঝে মহান আল্লাহর সৃষ্টিগত একটি বড় হিকমতও রয়েছে। সেই হিকমত ও যুক্তি মহিলার প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রাখে। অতএব সেই স্বাভাবিক প্রকৃতিতে বাধা দিলে নিঃসন্দেহে নারী-দেহে তার ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। অথচ মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘কেউ নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না এবং অপরেরও ক্ষতি করবে না।’’[3]
এতদ্ব্যতীত মাসিক-নিবারক ট্যাবলেট ব্যবহারে মহিলার গর্ভাশয়েরও নানান ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে; যেমন সে কথা ডাক্তারগণ উল্লেখ করে থাকেন।
কিন্তু যদি মহিলা তা ব্যবহার করে মাসিক বন্ধ করে এবং পবিত্রা থেকে রোযা রাখে, তাহলে সে রোযা শুদ্ধ ও যথেষ্ট।[4]
নিফাসবতী মহিলা ৪০ দিন পার হওয়ার আগেই যদি পবিত্রা হয়ে যায়, তাহলে সে রোযা রাখবে এবং সালাতের জন্য গোসল করবে। কিন্তু ৪০ দিন পার হওয়ার আগেই পুনরায় খুন আসতে শুরু হলে রোযা-নামায বন্ধ করে দেবে। আর যে রোযা-নামায সে পবিত্রা অবস্থায় করেছিল, তা শুদ্ধ ও যথেষ্ট হবে। পক্ষান্তরে ৪০ দিন পার হওয়ার পরেও যদি খুন বন্ধ না হয়, তাহলেও তাকে রোযা-গোসল করতে হবে। অতিরিক্ত এই দিনগুলির খুনকে ইস্তিহাযা ধরতে হবে। অবশ্য সেই সময় যদি তার স্বাভাবিক মাসিক আসার সময় হয়, তাহলে সে খুনকে মাসিকের খুন ধরতে হবে।[5]
মানুষের আকৃতি আসার পর ভ্রূণ কোন জরুরী কারণে গর্ভচ্যুত করতে বাধ্য হলে যে খুন আসবে তা নিফাস। অবশ্য এর পূর্বে গর্ভচ্যুত করলে যে খুন আসবে তা নিফাস নয়। বরং সে খুন একটি শিরার খুন। এ খুনের মান ইস্তিহাযার মত। অর্থাৎ, এ খুনে নামায-রোযা বন্ধ করা বৈধ নয়।
প্রকাশ থাকে যে, ভ্রূণে মানুষের আকৃতি আসতে সময় লাগে গর্ভ ধারণের পর থেকে কমসে কম ৮০ দিন। সাধারণভাবে ৯০ দিন ধরা যায়।[6]
গর্ভবতী খুন দেখলে তা যদি প্রসবের কিছুকাল (১/২ দিন) পূর্বে হয় এবং তার সাথে প্রসব-বেদনা থাকে, তাহলে সে খুন নিফাস। পক্ষান্তরে যদি সে খুন প্রসবের বহু (৩/৪ দিন বা তারও বেশী) পূর্বে হয় অথবা ক্ষণকাল পূর্বে হয়, কিন্তু তার সাথে প্রসব-যন্ত্রণা না থাকে, তাহলে সে খুন নিফাস নয়। সে খুন মহিলার মাসিক হওয়ার যথাসময়ে হলে তা মাসিকের খুন। কারণ, মহিলার গর্ভাশয় থেকে যে খুন নির্গত হয়, আসলে তা মাসিকের খুন; যদি মাসিকের খুন হওয়াতে কোন বাধা না থাকে তাহলে। আর কিতাব ও সুন্নাহতে এমন কোন দলীল নেই, যাতে বুঝা যায় যে, গর্ভিণী মহিলার মাসিক হতে পারে না।[7]
ইস্তিহাযার খুন নামায-রোযার শুদ্ধতায় কোন প্রভাব ফেলে না। কারণ, ফাতিমা বিন্তে আবী হুবাইশ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি এক এমন মহিলা, যার সব সময় ইস্তিহাযা (অতিরিক্ত মাসিকের) খুন থাকে এবং পবিত্রাই হয় না। তাহলে আমি কি নামায ত্যাগ করব?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘‘না। এটা হল একটি শিরার খুন। মাসিক নয়। সুতরাং যখন তোমার (পূর্ব নিয়ম অনুসারে পূর্ব সময়ে) মাসিক আসবে তখন তুমি নামায ত্যাগ কর। অতঃপর যখন সে (নিয়মিত মাসিক আসার সময়) চলে যাবে, তখন খুন ধুয়ে (গোসল করে) নামায পড়তে শুরু কর।’’[8]
[1] (সাবঊনা মাসআলাহ ফিস্-সিয়াম ৬৪-৬৫নং)
[2] (ইবনে জিবরীন ফাসিঃ মুসনিদ ৬২পৃঃ)
[3] (আহমাদ, মুসনাদ, ইবনে মাজাহ, হাকেম, মুস্তাদ্রাক, বাইহাকী, দারাকুত্বনী, সুনান, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ২৫০নং)
[4] (ইবনে উষাইমীন, ফাসিঃ মুসনিদ ৬৪পৃঃ, সাবঊনা মাসআলাহ ফিস্-সিয়াম ৬৬নং, ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ১/২৪১)
[5] (ইবনে বায, ফাসিঃ মুসনিদ ৬৩পৃঃ, সাবঊনা মাসআলাহ ফিস্-সিয়াম ৬৭নং)
[6] (রিসালাতুন ফিদ্ দিমাইত ত্বাবিইয়্যাহ, ইবনে উষাইমীন ৪০পৃঃ, ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ১/২৪৩, ফাতাওয়াল মারআহ ২৪পৃঃ)
[7] (রিসালাতুন ফিদ্ দিমাইত ত্বাবিইয়্যাহ ১২পৃঃ)
[8] (বুখারী ৩৩১, মুসলিম ৩৩৩নং)
রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী