আল-হাকীম (সুবিজ্ঞ, সুদক্ষ)[1]:
আল-হাকীম হলেন, যিনি সৃষ্টিকুলকে সুন্দর আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন সেসব সৃষ্টিজগত ও তাদের আদেশ-নিষেধের ব্যাপারে যার রয়েছে সুউচ্চ হিকমত। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿وَمَنۡ أَحۡسَنُ مِنَ ٱللَّهِ حُكۡمٗا لِّقَوۡمٖ يُوقِنُونَ٥٠﴾ [المائدة: ٥٠]
“আর নিশ্চিত বিশ্বাসী জাতির জন্য...
আল-হাকাম: আল-হাকাম (মহা বিচারপতি, হুকুমদাতা)[1], আল-‘আদল (ন্যায় বিচাকর)।
শাইখ আস-সা‘দী রহ. বলেছেন, আল্লাহর নামসমূহের মধ্যে আরেকটি নাম হলো আল-হাকাম (মহা বিচারপতি, হুকুমদাতা) আল-‘আদল (ন্যায় বিচাকর)। যিনি দুনিয়া ও আখিরাতে বান্দাকে ন্যায়পরায়নতার সাথে হুকুম দেন, তাদেরকে অনু পরিমাণও যুলুম করেন না...
আল-হাক্ক (প্রকৃত সত্য)[1]:
তিনি যাত ও সিফাত সর্বদিক দিয়েই সত্য। তিনি ওয়াজিবুল ওয়াজুদ তথা অত্যাবশ্যকীয় ভাবে সদাবিদ্যমান, পরিপূর্ণ সিফাত ও গুণাবলীর অধিকারী, তাঁর অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকা তাঁর যাতের অত্যাবশ্যকীয়তা। তিনি ব্যতীত কোন কিছুর অস্তিত্ব ছিল না। তিনি আযালী তথা সর্বদা ছিল ও থাকবেন, তিনি...
আল-হাফীয (মহা সংরক্ষণকারী)[1]:
গ্রন্থকার রহ. বলেছেন, আল-হাফীয হলেন যিনি সৃষ্টিজগতকে হিফাযত করেন, তাদেরকে সংরক্ষণ করেন, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তা তাঁর ইলম দ্বারা বেষ্টন করে রাখেন, তিনি তাঁর প্রিয় বান্দাদেরকে গুনাহ ও ধ্বংসে পতিত হওয়া থেকে হিফাযত করেন, তাদের চলা-ফেরা, কাজ-কর্মে দয়া করেন, বান্দার...
আল-হাসীব (মহা মীমাংসাকারী, হিসাব গ্রহণকারী)[1]:
গ্রন্থকার রহ. বলেছেন, আল-হাসীব হলেন যিনি বান্দার সবকিছু সম্পর্কে জ্ঞাত, সর্বজ্ঞানী, সর্বদর্শী, যিনি তাঁর উপর ভরসাকারীদের জণ্য যথেষ্ট, যিনি তাঁর হিকমত ও ইলম অনুযায়ী বান্দার যাবতীয় ভালো-মন্দ কাজের প্রতিদান দানকারী।[2]
আবার আল-হাসীব অর্থ আর-রাকীব...
আল-জাওয়াদ (মহা দানশীল)[1]:
গ্রন্থকার রহ. বলেছেন, গ্রন্থকার ইবনুল কাইয়্যিম রহ. বলেছেন, আল-জাওয়াদ অর্থ আল্লাহ তা‘আলা ব্যাপক দানশীল, তাঁর বদান্যতা সমস্ত সৃষ্টির জন্য ব্যাপৃত। তাঁর দয়ায় ও দানে সবকিছু ভরপুর এবং তাঁর নি‘আমত নানা ধরণের। তাঁর দান তাঁর কাছে প্রার্থনাকারী সকল মুসলিম, অমুসলিম, সৎকর্মশীল...
আল-জামীল (সুন্দর)[1]:
আল-জামীল হলেন যার সুন্দর ও ইহসানের গুণ রয়েছে।[2] আল্লাহ সত্ত্বগত, নামগত, গুণগত ও কর্মগত সব দিক থেকেই সুন্দর। কোন সৃষ্টির পক্ষে আল্লাহর সত্ত্বাগত সৌন্দর্যের সামান্য কিছুও বর্ণনা করা সম্ভব নয়; এমনকি জান্নাতে জান্নাতিরা সব ধরণের চিরস্থায়ী নি‘আমত, ভোগ-বিলাস, আনন্দ-খুশি...
আল-জালীল (গৌরবান্বিত),[1] আল-কাবীর (সুমহান, সবচেয়ে বড়)[2]:
গ্রন্থকার রহ. বলেছেন, আল-জালীল (গৌরবান্বিত), আল-কাবীর (সুমহান, সবচেয়ে বড়) হলেন যার গৌরবের গুণ রয়েছে তিনি আল-জালীল ও আল-কাবীর। বড়ত্ব ও অহংকারের গুণ আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত, তাঁর থেকে বড়ত্ব ও পূর্ণতার এ গুণ কখনো আলাদা হয় না।[3]
আল্লাহ...
আল-জাব্বার (মহাপ্রতাপশালী, অতীব মহিমান্বিত)[1]।
শাইখ আস-সা‘দী রহ. বলেছেন, আল-জাব্বার শব্দের অর্থ সমুচ্চ, মহিমান্বিত। আবার এ শব্দের অর্থ আল-কাহহার তথা মহাপ্রতাবশালী, দমনকারী। আবার জাব্বার অর্থ আর-রাঊফ তথা প্রতি স্নেহশীল, সদয় ও সমবেদনা প্রকাশকারী। তিনি ভঙ্গ হৃদয়ের অধিকারী, দুর্বল, অক্ষম, যারা...
জামি‘উন নাস (মানুষকে সমবেতকারী)।[1]
আল্লাহর আরেকটি নাম হলো তিনি কিয়ামতের দিন মানুষকে হাশরের ময়দানে সমবেতকারী, তিনি তাদের আমল ও রিযিক একত্রকারী। তিনি তাদের ছোট-বড় কোন কিছুই বাদ দেন না, সব কিছুই তিনি গননা করে রাখেন। আগে ও পরে যারাই মারা যাবে তিনি তাঁর পূর্ণ কুদরত, প্রশস্ত ইলমের দ্বারা তাদের...
আত-তাওয়াব (তাওবা কবুলকারী, ক্ষমাকারী)[1]:
ইবনুল কাইয়্যিম রহ. বলেছেন, তাওয়াব হলেন যিনি সর্বদা তাওবাকারীর তাওবা কবুল করেন, আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তনকারীকে তিনি ক্ষমা করেন। অত:এব যারা আল্লাহর কাছে খাঁটি তাওবা করে তিনি তাদের তাওবা কবুল করেন এবং ক্ষমা করে দেন।[2]
বান্দার ব্যাপারে আল্লাহর তাওবা কবুল...
আল-বাসীর (সর্বদ্রষ্টা)[1]:
ইবনুল কাইয়্যিম রহ. বলেছেন, আল-বাসীর (সর্বদ্রষ্টা) হলেন যিনি আসমান ও জমিনের সবকিছুতে তাঁর দৃষ্টিশক্তিতে বেষ্টন করে রেখেছেন; এমনকি অন্ধকার রাতে নির্জন মরুভূমিতে একটি কালো পিপীলিকার সন্তর্পণে চলার আওয়াজও তিনি শুনতে পান, তাঁর কাছে সে আওয়াজটি পর্যন্ত গোপনীয় নয়।
তিনি...
আল-বার: আল-বার (কল্যাণকারী), আল-ওয়াহহাব (দানশীল, স্থাপনাকারী), আল-কারীম (দয়ালু)।
ইবনুল কাইয়্যিম রহ. বলেছেন, আল্লাহর নামসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো, আল-বার (কল্যাণকারী), আল-ওয়াহহাব (দানশীল, স্থাপনাকারী), আল-কারীম (দয়ালু) যিনি সমস্ত সৃষ্টিকে তার কল্যাণ, দান ও দয়ায় বেষ্টন করে রাখেন। তিনি উত্তম মাওলা...
বাদী‘উস সামাওয়াতে ওয়াল আরদি (আসমান ও জমিনের স্রষ্টা)।[1]
বাদী‘উস সামাওয়াতে ওয়াল আরদি (আসমান ও জমিনের স্রষ্টা) অর্থাৎ তিনি আসমান ও জমিন সূক্ষ্মতা ও পরিপূর্ণতার সাথে পূর্ব কোন আকৃতি ব্যতীতই সৃষ্টি করেছেন।[2] সর্বোচ্চ সুন্দরতম, সুবিন্যস্ত, চমৎকার ও সুপরিকল্পিত রূপে তিনি সব কিছু সৃষ্টি...
আল-বারী (নির্মাণকারী, পরিকল্পনাকারী): আল-খালিক (শূন্য থেকে সৃষ্টিকারী), আল-বারী (সৃষ্টিকারী), আল-মুসাওয়ির (আকৃতিদানকারী)।
আল-খালিক, আল-বারী, আল-মুসাওয়ির হলেন যিনি সমস্ত সৃষ্টিজগত সৃজন করেছেন, তিনি পূর্ব আকৃতি ব্যতীত এগুলোকে সৃষ্টি করেছেন, তাঁর হিকমত অনুসারে তিনি সেগুলোকে সুবিন্যস্ত ও...
আল-‘আলা: আল-আ‘লীয়ু (সুউচ্চ)[1] আল-আ‘লা (সুমহান)[2]:
আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের মধ্যে একটি নাম হলো আল-আ‘লীয়ু আল-আ‘লা। কেননা সর্বদিক বিবেচনায় সব ধরণের বড়ত্ব, উচুঁ মর্যাদা একমাত্র আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত, তিনি সত্ত্বাগত দিক থেকে উচুঁ[3] এবং তিনি সমস্ত সৃষ্টির উপরে তাঁর আরশে আছেন, তিনি সৃষ্টির সাদৃশ...
আল-আহাদ: আল-ওয়াহিদ (এক)[1] আল-আহাদ (একক, অদ্বিতীয়)।[2]
আল্লাহ আল-ওয়াহিদ (এক), আল-আহাদ (একক, অদ্বিতীয়)। তিনি সমস্ত পূর্ণতায় একক, সব ধরণের পরিপূর্ণতা, মর্যাদা, মহত্ব, সৌন্দর্য, প্রশংসা, হিকমত, রহমত, ও অন্যান্য পূর্ণতার গুণাবলীতে এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোনো উপমা ও সাদৃশ নেই, কোনো কিছুই কোনো...
আল্লাহ [1] :
আল্লাহ হলেন সাধারণত যার ইবাদত করা হয়, যিনি নির্ভরশীল মা‘বূদ এবং সমস্ত সৃষ্টির উপর ইলাহ ও মা‘বূদ হওয়ার যোগ্য। তিনি ইলাহ হওয়ার সমস্ত গুণাবলীতে গুণান্বিত।[2] আল্লাহ নিজেই বলেছেন, তাঁর মধ্যে উলুহিয়্যাতের সমস্ত গুণাবলী একত্রিত হয়েছে। তিনিই সমস্ত দিক থেকে একমাত্র ইলাহ হওয়ার যোগ্য যা...