সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Habib Bin Tofajjal

প্রবন্ধ সাহাবায়ে কিরামের আকীদাহ ও আমলের ওপর আল্লাহর সন্তুষ্টি প্রকাশ

  • Thread starter
وَالسّٰبِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهٰجِرِينَ وَالْأَنصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُم بِإِحْسٰنٍ رَّضِىَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِى تَحْتَهَا الْأَنْهٰرُ خٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدًا ۚ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ​

“আর মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী এবং যারা ইহসানের সাথে তাদের অনুসরণ করে আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন। আর তিনি তাদের জন্য তৈরি করেছেন জান্নাত, যার নিচে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। এ তো মহাসাফল্য।” [সূরা আত-তাওবাহ: ১০০]

مُحَمَّدٌ رَّسُوۡلُ اللّٰهِ ؕ وَ الَّذِیۡنَ مَعَهٗۤ اَشِدَّآءُ عَلَی الۡکُفَّارِ رُحَمَآءُ بَیۡنَهُمۡ تَرٰىهُمۡ رُکَّعًا سُجَّدًا یَّبۡتَغُوۡنَ فَضۡلًا مِّنَ اللّٰهِ وَ رِضۡوَانًا ۫ سِیۡمَاهُمۡ فِیۡ وُجُوۡهِهِمۡ مِّنۡ اَثَرِ السُّجُوۡدِ ؕ ذٰلِکَ مَثَلُهُمۡ فِی التَّوۡرٰىۃِ ۚۖۛ وَ مَثَلُهُمۡ فِی الۡاِنۡجِیۡلِ ۚ۟ۛ کَزَرۡعٍ اَخۡرَجَ شَطۡـَٔهٗ فَاٰزَرَهٗ فَاسۡتَغۡلَظَ فَاسۡتَوٰی عَلٰی سُوۡقِهٖ یُعۡجِبُ الزُّرَّاعَ لِیَغِیۡظَ بِهِمُ الۡکُفَّارَ ؕ وَعَدَ اللّٰهُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ مِنۡهُمۡ مَّغۡفِرَۃً وَّ اَجۡرًا عَظِیۡمًا​

“মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল; আর তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, তাদের পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় আপনি তাদেরকে রুকূ ও সাজদায় অবনত দেখবেন। তাদের লক্ষণ তাদের মুখমণ্ডলে সাজদার প্রভাবে পরিস্ফুট; এটাই তাওরাতে তাদের দৃষ্টান্ত। আর ইঞ্জীলে তাদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে এমন একটি চারাগাছ, যা থেকে নির্গত হয় কচিপাতা, তারপর তা শক্ত ও পুষ্ট হয় এবং পরে কাণ্ডের উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে যা চাষীর জন্য আনন্দদায়ক। এভাবে আল্লাহ মুমিনদের সমৃদ্ধি দ্বারা কাফিরদের অন্তর্জালা সৃষ্টি করেন। যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও মহাপ্রতিদানের।” [সূরা আল-ফাতহ : ২৯]

لَقَدۡ رَضِیَ اللّٰهُ عَنِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اِذۡ یُبَایِعُوۡنَکَ تَحۡتَ الشَّجَرَۃِ فَعَلِمَ مَا فِیۡ قُلُوۡبِهِمۡ فَاَنۡزَلَ السَّکِیۡنَۃَ عَلَیۡهِمۡ وَ اَثَابَهُمۡ فَتۡحًا قَرِیۡبًا
“অবশ্যই আল্লাহ মুমিনগণের ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন, যখন তারা গাছের নিচে আপনার কাছে বাই'আত গ্রহণ করেছিল, অতঃপর তাদের অন্তরে যা ছিল তা তিনি জেনে নিয়েছেন; ফলে তিনি তাদের ওপর প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং তাদেরকে আসন্ন বিজয়ে পুরসৃকত করলেন।” [সূরা আল-ফাতহ: ১৮]

সাহাবায়ে কিরামের ঈমানকে মানদণ্ড হিসেবে ঘোষণা করে আসা ভাষ্য:

فَاِنۡ اٰمَنُوۡا بِمِثۡلِ مَاۤ اٰمَنۡتُمۡ بِهٖ فَقَدِ اهۡتَدَوۡا ۚ وَ اِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنَّمَا هُمۡ فِیۡ شِقَاقٍ ۚ فَسَیَکۡفِیۡکَهُمُ اللّٰهُ ۚ وَ هُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ​

“অতঃপর তোমরা যেরূপ ঈমান এনেছ তারাও যদি সেরূপ ঈমান আনে, তবে নিশ্চয় তারা হিদায়াত পাবে। আর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তারা বিরোধিতায় লিপ্ত। সুতরাং তাদের বিপক্ষে আপনার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। আর তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।” [সূরা আল-বাকারাহ: ১৩৭]

সাহাবায়ে কিরামের মত ও পথের বাইরে যাওয়া জাহান্নামে দগ্ধ হওয়ার কারণ:

وَ مَنۡ یُّشَاقِقِ الرَّسُوۡلَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُ الۡهُدٰی وَ یَتَّبِعۡ غَیۡرَ سَبِیۡلِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ نُوَلِّهٖ مَا تَوَلّٰی وَ نُصۡلِهٖ جَهَنَّمَ ؕ وَ سَآءَتۡ مَصِیۡرًا​

“আর কারো নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মুমিনদের পথ ছাড়া অন্য পথ অনুসরণ করে, তবে যেদিকে সে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে আমরা ফিরিয়ে দিব এবং তাকে জাহান্নামে দগ্ধ করাব, আর তা কতই না মন্দ আবাস!” [সূরা আন-নিসা: ১১৫]

সাহাবায়ে কিরাম সর্বোত্তম জাতির সর্বোত্তম প্রজন্ম হওয়া:

کُنۡتُمۡ خَیۡرَ اُمَّۃٍ اُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ تَنۡهَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَ تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰهِ ؕ وَ لَوۡ اٰمَنَ اَهۡلُ الۡکِتٰبِ لَکَانَ خَیۡرًا لَّهُمۡ ؕ مِنۡهُمُ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَ اَکۡثَرُهُمُ الۡفٰسِقُوۡنَ​

“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানবজাতির জন্য যাদের বের করা হয়েছে; তোমরা সৎকাজের .নির্দেশ দিবে, অসৎকাজে নিষেধ করবে এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনবে। আর আহলে কিতাবগণ যদি ঈমান আনতো তবে তা ছিল তাদের জন্য ভালো। তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক মুমিন আছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই ফাসেক।” [সূরা আলে ইমরান : ১১০]

وَ کَذٰلِکَ جَعَلۡنٰکُمۡ اُمَّۃً وَّسَطًا لِّتَکُوۡنُوۡا شُهَدَآءَ عَلَی النَّاسِ وَ یَکُوۡنَ الرَّسُوۡلُ عَلَیۡکُمۡ شَهِیۡدًا ؕ وَ مَا جَعَلۡنَا الۡقِبۡلَۃَ الَّتِیۡ کُنۡتَ عَلَیۡهَاۤ اِلَّا لِنَعۡلَمَ مَنۡ یَّتَّبِعُ الرَّسُوۡلَ مِمَّنۡ یَّنۡقَلِبُ عَلٰی عَقِبَیۡهِ ؕ وَ اِنۡ کَانَتۡ لَکَبِیۡرَۃً اِلَّا عَلَی الَّذِیۡنَ هَدَی اللّٰهُ ؕ وَ مَا کَانَ اللّٰهُ لِیُضِیۡعَ اِیۡمَانَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوۡفٌ رَّحِیۡمٌ​

“আর এভাবে আমরা তোমাদেরকে এক মধ্যপন্থী জাতিতে পরিণত করেছি, যাতে তোমরা মানবজাতির ওপর সাক্ষী হও এবং রাসূল তোমাদের ওপর সাক্ষী হতে পারেন। আর আপনি এ যাবত যে কিবলা অনুসরণ করছিলেন সেটাকে আমরা এ উদ্দেশ্যে কিবলায় পরিণত করেছিলাম যাতে প্রকাশ করে দিতে পারি কে রাসূলের অনুসরণ করে এবং কে পিছনে ফিরে যায়? আল্লাহ যাদেরকে হিদায়াত করেছেন তারা ছাড়া অন্যদের ওপর এটা নিশ্চিত কঠিন। আল্লাহ এরূপ নন যে, তোমাদের ঈমানকে ব্যর্থ করে দিবেন। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল, পরম দয়ালু।” [সূরা আল-বাকারাহ: ১৪৩]

সাহাবায়ে কিরাম দীনের দিকে প্রত্যাবর্তনকারী, তাদের পথ অনুসরণ করতে আল্লাহ আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আল্লাহ বলেন,

اتَّبِعۡ سَبِیۡلَ مَنۡ اَنَابَ اِلَیَّ ۚ ثُمَّ اِلَیَّ مَرۡجِعُکُمۡ فَاُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ​

“আর যে আমার অভিমুখী হয়েছে তার পথ অনুসরণ কর। তারপর তোমাদের ফিরে আসা আমারই কাছে, তখন তোমরা যা করতে সে বিষয়ে আমি তোমাদেরকে অবহিত করব।” [সূরা লোকমান : ১৫]

সাহাবায়ে কিরাম প্রথম সত্যবাদী হিসেবে আল্লাহর পক্ষ থেকে সত্যায়ণকৃত

আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে সত্যবাদীদের সাথে থাকতে বলেছেন, আর সাহাবায়ে কিরাম প্রথম সত্যবাদী হিসেবে আল্লাহর পক্ষ থেকে সত্যায়ণকৃত। আল্লাহ বলেন,

اَجَعَلۡتُمۡ سِقَایَۃَ الۡحَآجِّ وَ عِمَارَۃَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ کَمَنۡ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ جٰهَدَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ ؕ لَا یَسۡتَوٗنَ عِنۡدَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ لَا یَهۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ​

“হাজীদের জন্য পানি পান করানো ও মসজিদুল হারাম আবাদ করাকে তোমরা কি তার মতো বিবেচনা কর, যে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান এনেছে এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে? তারা আল্লাহর কাছে সমান নয়। আর আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে হিদায়াত দেন না।” [সূরা আত-তাওবাহ: ১৯]

সাহাবায়ে কিরামের ব্যাপারে আল্লাহর সাক্ষ্য রয়েছে যে, তারা কখনও পরিবর্তন হয়নি।
যেমন আল্লাহ বলেন,

مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ رِجَالٌ صَدَقُوۡا مَا عَاهَدُوا اللّٰهَ عَلَیۡهِ ۚ فَمِنۡهُمۡ مَّنۡ قَضٰی نَحۡبَهٗ وَ مِنۡهُمۡ مَّنۡ یَّنۡتَظِرُ ۫ۖ وَ مَا بَدَّلُوۡا تَبۡدِیۡلًا​

“মুমিনদের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহর সাথে তাদের করা অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে, তাদের কেউ কেউ (অঙ্গীকার পূর্ণ করে) মারা গেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষায় রয়েছে। তারা তাদের অঙ্গীকারে কোনো পরিবর্তন করেনি।” [সূরা আল-আহযাব: ২৩]

সাহাবায়ে কিরাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের পথের ওপর ছিলেন বলে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন।

আল্লাহ বলেন,

اَفَاَمِنُوۡۤا اَنۡ تَاۡتِیَهُمۡ غَاشِیَۃٌ مِّنۡ عَذَابِ اللّٰهِ اَوۡ تَاۡتِیَهُمُ السَّاعَۃُ بَغۡتَۃً وَّ هُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ​

“তবে কি তারা আল্লাহর সর্বগ্রাসী শাস্তি হতে বা তাদের অজান্তে কিয়ামতের আকস্মিক উপস্থিতি হতে নিরাপদ হয়ে গেছে?” [সূরা ইউসুফ: ১০৭]

অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসেও সাহাবায়েকিরামের বুঝকে গ্রহণ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। যেমন, বিদ'আত ও শির্কের ছড়াছড়ি দেখা দিলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ ও খোলাফায়ে রাশেদার আদর্শ আঁকড়ে ধরতে বলা হয়েছে।

রাসূল বলেন,

أُوصِيكُمْ بِتَقْوَى الله وَالسَّمْعِ وَالطَّاعَةِ، وَإِنْ عَبْدٌ حَبَشِي، فَإِنَّهُ مَنْ يَعِشْ مِنْكُمْ يَرَى اخْتِلَافًا كَثِيرًا، وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الأُمُورِ فَإِنَّهَا ضَلَالَةٌ فَمَنْ أَدْرَكَ ذَلِكَ مِنْكُمْ فَعَلَيْهِ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَالمَهْدِيِّينَ، عَضُوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ​

“আমি তোমাদেরকে আল্লাহ তা'আলাকে ভয় করার এবং (নেতার আদেশ) শ্রবণ ও মান্য করার উপদেশ দিচ্ছি, যদিও সে (নেতা) হাবশী ক্রীতদাস হয়ে থাকে। তোমাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে, তারা বহু বিভেদ-বিসম্বাদ প্রত্যক্ষ করবে। তোমরা নতুন নতুন বিষয় আবিষ্কার করা হতে দূরে থাকবে। কেননা তা গুমরাহী। তোমাদের মধ্যে কেউ সে যুগ পেলে সে যেন আমার সুন্নাতে ও সৎপথপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশিদীনের সুন্নাতে দৃঢ়ভাবে অবিচল থাকে। তোমরা এসব সুন্নাতকে চোয়ালের দাঁতের সাহায্যে শক্তভাবে আঁকড়ে ধর।”(১)

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উত্তম প্রজন্মকে অনুসরণ করার নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন,

خَيْرُ النَّاسِ قَرْنِ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ يَجِيءُ أَقْوَامٌ تَسْبِقُ شَهَادَةُ أَحَدِهِمْ يَمِينَهُ،وَيَمِينُهُ شَهَادَتَهُ​

“আমার যুগের লোকেরাই সর্বোত্তম ব্যক্তি, অতঃপর যারা তাদের নিকটবর্তী। অতঃপর যারা তাদের নিকটবর্তী এরপরে এমন সব ব্যক্তি আসবে যারা কসম করার আগেই সাক্ষ্য দিবে, আবার সাক্ষ্য দেয়ার আগে কসম করে বসবে।”(২)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিতনা ও সমস্যার সময় পুনরায় সাহাবায়ে কিরামের কর্মকাণ্ডের দিকে প্রত্যাবর্তন করতে নির্দেশ দিয়েছেন,

إِنَّهَا سَتَكُونُ فِتْنَةٌ. فَقَالُوا: فَكَيْفَ لَنَا يَا رَسُولَ اللهِ ؟ وَكَيْفَ نَصْنَعُ؟ قَالَ: «تَرْجِعُونَ إِلَى أَمْرِكُمُ الْأَوَّلِ​

“অবশ্যই ফিতনা সংঘটিত হবে। তখন সাহাবায় কিরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমাদের তখন কী হবে? আমরা তখন কী করব? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 'তোমরা তোমাদের প্রথম অবস্থার দিকে প্রত্যাবর্তন করবে'।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের বিভক্তির ব্যাপারে পূর্বাহ্নে আমাদেরকে সাবধান করে তাঁর আদর্শ ও সাহাবায়ে কিরামের আদর্শ অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন, তিনি বলেন,

لَيَأْتِيَنَّ عَلَى أُمَّتِي مَا أَتَى عَلَى بَنِي إِسْرَائِيلَ حَذْوَ النَّعْلِ بِالنَّعْلِ، حَتَّى إِنْ كَانَ مِنْهُمْ مَنْ أَتَى أُمَّهُ عَلَانِيَةٌ لَكَانَ فِي أُمَّتِي مَنْ يَصْنَعُ ذَلِكَ، وَإِنَّ بني إسرائيل تَفَرَّقَتْ عَلَى ينتينِ وَسَبْعِينَ مِلَّةٌ، وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِي عَلَى ثَلَاثٍ وَسَبْعِينَ مِلَّةً، كُلُّهُمْ فِي النَّارِ إِلَّا مِلَّةَ وَاحِدَةً»، قَالُوا: وَمَنْ هِيَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِ»​

“বনী ইসরাঈল যে অবস্থায় পতিত হয়েছিল, নিঃসন্দেহে আমার উম্মতও সেই অবস্থার সম্মুখীন হবে, যেমন এক জোড়া জুতার একটি আরেকটির মতো হয়ে থাকে। এমনকি তাদের মধ্যে কেউ যদি প্রকাশ্যে তার মায়ের সাথে ব্যভিচার করে থাকে, তবে আমার উম্মতের মধ্যেও কেউ তাই করবে। আর বনী ইসরাঈল ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছিল। আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। শুধু একটি দল ছাড়া তাদের সবাই জাহান্নামী হবে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে দল কোনটি? তিনি বললেন: আমি ও আমার সাহাবীগণ যার ওপর প্রতিষ্ঠিত।"(৩)

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর সাহাবীগণকে সুস্পষ্ট পথের ওপর রেখে গেছেন, যা দাবি করে যে তাদের পথেই পরবর্তীদেরকে চলতে হবে। তিনি বলেন,

قَدْ تَرَكْتُكُمْ عَلَى الْبَيْضَاءِ لَيْلُهَا كَنَهَارِهَا، لَا يَزِيعُ عَنْهَا بَعْدِي إِلَّا هَالِكٌ، مَنْ يَعِشُ مِنْكُمْ فَسَيَرَى اخْتِلَافًا كَثِيرًا، فَعَلَيْكُمْ بِمَا عَرَفْتُمْ مِنْ سُنَّتِي، وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ المُهْدِيِّينَ، عَضُوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِدِ، وَعَلَيْكُمْ بِالطَّاعَةِ، وَإِنْ عَبْدًا حَبَشِيًّا، فَإِنَّمَا الْمُؤْمِنُ كَالْجُمَلِ الْأَنْفِ، حَيْتُها قِيدَ انْقَادَه​

“আমি তোমাদের আলোকিত দীনের ওপর রেখে যাচ্ছি, তার রাত তার দিনের মতই (উজ্জ্বল)। আমার পরে নিজেকে ধ্বংসকারীই কেবল এ দীন ছেড়ে বিপথগামী হবে। তোমাদের মধ্যে যে বেঁচে থাকবে সে অচিরেই অনেক মতবিরোধ দেখতে পাবে। অতএব, তোমাদের ওপর তোমাদের নিকট পরিচিত আমার আদর্শ এবং হিদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশিদীনের আদর্শ অনুসরণ করা অবশ্য কর্তব্য। তোমরা তা শক্তভাবে দাঁত দিয়ে আকড়ে ধরে থাকবে। তোমরা অবশ্যই আনুগত্য করবে, যদি হাবশী গোলামও (তোমাদের নেতা নিযুক্ত) হয়। কেননা মুমিন ব্যক্তি হচ্ছে নাসারন্ধ্রে লাগাম পরানো উটতুল্য। লাগাম ধরে যে দিকেই তাকে টানা হয়, সে দিকেই যেতে বাধ্য হয়।”(৪)



১.তিরমিযী, আল-জামেউস সহীহ, হাদীস নং ২৬৭৬।
২. বুখারী, আল-জামেউস সহীহ, হাদীস নং ২৬৫২।
৩. তাবারানী, আল-কাবীর (৩/২৪৯)।
৪. তিরমিযী, আল-জামেউস সহীহ, হাদীস নং ২৬৪১। ইবন মাজাহ, আস-সুনান, হাদীস নং ৪৩।
 

Create an account or login to comment

You must be a member in order to leave a comment

Create account

Create an account on our community. It's easy!

Log in

Already have an account? Log in here.

Total Threads
12,914Threads
Total Messages
16,415Comments
Total Members
3,344Members
Latest Messages
Ibne YeaqubLatest member
Top