এই অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ লিস্ট:
- তাকবীরে তাহরীমার পর পঠিত দুআ সমূহ
- সালাতের মাঝে শয়তানের কুমন্ত্রণা হতে বাঁচার দুআ
- রুকুর দুআ সমূহ
- রুকু থেকে উঠার দুআ
- রুকুর পরে দণ্ডায়মান অবস্থায় দুআ সমূহ
- সিজদায় পঠিতব্য দুআ সমূহ
- সিজদায় কুরআন পড়তে নিষেধ
- ধীরস্থিরভাবে সিজদার গুরুত্ব
- সিজদার দুআ সমূহ
- দুই সিজদার মধ্যবর্তী দুআ সমূহ
- সিজদার আয়াত পড়ে সিজদা দেওয়ার মহত্ত্ব
- সাধারণ অবস্থায় সিজদার আয়াত পড়ার পর দুআ
- সিজদার আয়াত পড়ে সিজদায় গিয়ে দুআ
- তাশাহুদ বা বৈঠকের দুআ
- রাসূল (ﷺ)-এর প্রতি দরূদ (শেষ বৈঠক)
- তাশাহুদের পর সালাম ফেরানোর আগে দুআ সমূহ (দুআ মাসূরা)
- সালাতের মধ্যে দুআ
- সলাতের মধ্যে হাঁচি দিলে
- ফজর ও মাগরিবের পরের দুআ সমূহ
- ফরয সালাতের পরে মাসনূন দুআ-মুনাজাত
- আয়াতুল কুরসী (সূরা আল-বাকারাহ্ ২:২৫৫)
- সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস
- সালাম ফিরানোর পর পঠিতব্য দুআ সমূহ
- পাপরাশি ক্ষমা করে দেওয়া হয়, যদিও তা সমুদ্রের ফেনারাশির মতো হয়
- সালাতের পরের দুআ
- ফজর সলাতের পরে পঠিতব্য দুআ
- ফজরের সালাতের পর দুআ
- সালাত সম্পর্কিত অন্যান্য দুআ সমূহ
সিজদার দুআ সমূহ
কমপক্ষে তিনবার বলবে -سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى
উচ্চারণঃ সুব্‘হা-না রাব্বিয়াল আ'লা-
অনুবাদঃ মহাপবিত্র আমার প্রভু যিনি সর্বোচ্চ।
মনের আবেগ নিয়ে এ ঘোষণা বার বার দিতে হবে। কমপক্ষে ৩ বার এ তাসবীহ পাঠ করা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর আচরিত ও নির্দেশিত কর্ম। অধিকাংশ বর্ণনায় “সুব্হানা রাব্বিয়াল আ‘লা” এবং কোনো কোনো হাদীসে “সুবাহানা রাব্বিয়াল আ‘লা ওয়া বিহামদিহী” বর্ণিত হয়েছে। রহমত বা দয়া সংক্রান্ত প্রত্যেকটি আয়াত পাঠ করার পরপর তিনি থেমে (আল্লাহ্র কাছে তা) চেয়েছেন, এবং শাস্তি সংক্রান্ত প্রত্যেকটি আয়াত শেষ করার পর থেমে (আল্লাহ্র কাছে তা থেকে) আশ্রয় চেয়েছেন।
রেফারেন্স: মুসলিমঃ ৭৭২
সিজদার দুআ সমূহ #২
কমপক্ষে তিনবার বলবে -
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى وَبِحَمْدِهِ
উচ্চারণঃ সুব্‘হা-না রাব্বিয়াল আ'লা- ওয়া বিহামদিহী
অনুবাদঃ মহাপবিত্র আমার প্রভু যিনি সর্বোচ্চ এবং তার প্রশংসা-সহ।
রেফারেন্স: সনদ হাসান (শুয়াইব আরনা'ঊত)। আবু দাউদঃ ৮৭০
সিজদার দুআ সমূহ #৩
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন: রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সিজদার মধ্যে বলতেন -
اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِيْ كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ، وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ، وَعَلَانِيَّتَهُ وَسِرَّهُ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মাগ্ ফির লী যাম্বী কুল্লাহু, দিক্কাহু ওয়া জিল্লাহু, ওয়া আউআলাহু ওয়া আ-খিরাহু, ওয়া ‘আলা-নিয়্যাতাহু ওয়া সিররাহু
অনুবাদঃ হে আল্লাহ্, আপনি ক্ষমা করুন আমার সকল পাপ, ছোট পাপ, বড় পাপ, প্রথম পাপ, শেষ পাপ, প্রকাশ্য পাপ, গোপন পাপ।
রেফারেন্স: মুসলিমঃ ৪৮৩
সিজদার দুআ সমূহ #৪
আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি এক রাতে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বিছানায় পেলাম না। (অন্ধকারে) আমি তাকে খুঁজলাম। তখন আমার হাত তার পায়ের তালুতে লাগল। তিনি তখন সিজদায় ছিলেন ও পা দুটি খাড়া ছিল। তিনি বলছিলেন -
اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ، وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ، وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْكَ، لَا أُحْصِيْ ثَنَاءً عَلَيْكَ، أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা, ইন্নী আ'ঊযু বিরিদ্বা-কা মিন সাখাতিক, ওয়া বি মু'আ-ফা-তিকা মিন ‘উক্বুবাতিক, ওয়া আ‘উযু বিকা মিনকা, লা- উহসী ছানা-আন ‘আলাইকা। আনতা কামা- আছনাইতা ‘আলা- নাফসিক
অনুবাদঃ হে আল্লাহ্, আমি আপনার ক্রোধ থেকে আপনার সন্তুষ্টির আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং আপনার শাস্তি থেকে আপনার ক্ষমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এবং আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি আপনার কাছে আপনার থেকে। আমি আপনার প্রশংসা করে শেষ করতে পারি না। আপনি ঠিক তেমনি যেমন আপনি আপনার নিজের প্রশংসা করেছেন।
রেফারেন্স: মুসলিমঃ ৪৮৬, সহিহ। তিরমিযীঃ ৩৫৬৬
সিজদার দুআ সমূহ #৫
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সালাতের মধ্যে বা সিজদায় এ দুআটি বলেন -
اَللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِيْ نُورًا، وَفِي سَمْعِيْ نُورًا، وَفِي بَصَرِيْ نُورًا، وَعَنْ يَمِيْنِيْ نُورًا، وَعَنْ شِمَالِيْ نُورًا، وَأَمَامِيْ نُورًا، وَخَلْفِي نُورًا، وَفَوْقِيْ نُورًا، وَتَحْتِيْ نُورًا، وَاجْعَلْ لِي نُورًا (وَاجْعَلْنِيْ نُورًا)، وَاجْعَلْ فِي نَفْسِي نُورًا، (وَفِي عَصَبِيْ نُورًا، وَفِي لَحْمِي نُورًا، وَفِي دَمِيْ نُورًا، وَفِي شَعْرِيْ نُورًا، وَفِي بَشَرِيْ نُورًا)، اَللَّهُمَّ أَعْطِنِيْ نُورًا
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মাজ্-‘আল ফী ক্বালবী নূরান, ওয়াফী সাম‘য়ী নূরান, ওয়াফী বাস্বারী নূরান, ওয়া ‘আন ইয়ামীনী নূরান, ওয়া ‘আন শিমা-লী নূরান, ওয়া আমা-মী নূরান, ওয়া খালফী নূরান, ওয়া ফাওক্বী নূরান, ওয়া তা'হ্তী নূরান, ওয়াজ্-‘আল লী নূরান (ওয়াজ্-‘আলনী নূরান), ওয়াজ্‘আল ফী নাফ্সী নূরান, (ওয়া ফী ‘আসাবী নূরান, ওয়াফী লাহ্মী নূরান, ওয়াফী দামী নূরান, ওয়াফী শা‘অ্রী নূরান, ওয়াফী বাশারী নূরান), আল্লা-হুম্মা, আ‘তিনী নূরান
অনুবাদঃ হে আল্লাহ্ আপনি প্রদান করুন আমার অন্তরে নূর, আমার শ্রবণে নূর, আমার দৃষ্টিতে নূর, আমার ডানে নূর, আমার বামে নূর, আমার সামনে নূর, আমার পিছনে নূর, আমার উপরে নূর, আমার নিচে নূর, আপনি আমার জন্য নূর দান করুন, (আপনি আমাকে নূর বানিয়ে দিন)। প্রদান করুন আমার নফসে নূর, (আমার স্নায়ুতন্ত্রে নূর, আমার মাংসে নূর, আমার রক্তে নূর, আমার চুল-পশমে নূর, আমার চামড়ায় নূর)। হে আল্লাহ্ আমাকে প্রদান করুন নূর।
রেফারেন্স: সহিহ বুখারীঃ ৬৩১৬, সহিহ মুসলিমঃ ৭৬৩
সিজদার দুআ সমূহ #৬
سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ، اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي
উচ্চারণঃ সুবহা-নাকা আল্লা-হুম্মা রব্বানা ওয়াবিহামদিকা, আল্লা-হুম্মাগফির লী
অনুবাদঃ হে আমাদের রব আল্লাহ্! তুমি ত্রুটিমুক্ত। প্রশংসা সবই তোমার। হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা করে দাও। [১]
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কুরআনের নির্দেশ অনুযায়ী [২] আল্লাহ্র রাসূল (ﷺ) রুকূ ও সিজদায় গিয়ে বেশি বেশি বলতেন - (দুআটি উপরে উল্লেখিত হয়েছে)
রেফারেন্স: [১] বুখারীঃ ৭৯৪ [২] সূরা আন-নাসরঃ ১১০:৩
সিজদার দুআ সমূহ #৭
আল্লাহ্র রাসূল (ﷺ) রুকূ ও সিজদায় গিয়ে বলতেন -
سُبُّوحٌ، قُدُّوسٌ، رَبُّ الْمَلَائِكَةِ وَالرُّوحِ
উচ্চারণঃ সুব্বূহুন ক্বুদ্দূসুন রব্বুল মালা-ইকাতি ওয়াররূ'হ
অনুবাদঃ (আল্লাহ্) পবিত্র, ত্রুটিমুক্ত, সকল ফেরেশতা ও জিবরীলের মনিব।
রেফারেন্স: সহিহ। আবু দাউদঃ ৮৭২
সিজদার দুআ সমূহ #৮
আল্লাহ্র রাসূল (ﷺ) সিজদায় গিয়ে বলতেন -
اَللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ وَلَكَ أَسْلَمْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ، سَجَدَ وَجْهِيَ لِلَّذِي خَلَقَهُ، وَصَوَّرَهُ، فَأَحْسَنَ صُوْرَتَهُ وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ، تَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা লাকা সাজাদ্তু ওয়া লাকা আসলামতু, ওয়াবিকা আ-মানতু, সাজাদা ওয়াজহিয়া লিল্লাযী খালাক্বাহু ওয়া সাওয়্যারাহু ফা-আ'হ্সানা সুও-রাতাহু ওয়া শাক্কা সাম‘আহু ওয়া বাসারাহু, তাবা-রাকাল্লাহু আহ্সানুল খা-লিক্বীন
অনুবাদঃ হে আল্লাহ্! আমি তোমার উদ্দেশে সিজদা দিয়েছি, তোমার কাছে আত্মসমর্পণ করেছি। তোমার প্রতি ঈমান এনেছি, আমার চেহারা তাঁর উদ্দেশে সিজদায় অবনত, যিনি একে সৃষ্টি করে আকৃতি দিয়েছেন, এর আকৃতিকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছেন, এবং তার কান ও চোখ খুলে দিয়েছেন। সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ্ অতি বরকতময়!'
রেফারেন্স: সহিহ। নাসায়ীঃ ১১২৬
সিজদার দুআ সমূহ #৯
سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوتِ، وَالْمَلَكُوتِ، وَالْكِبْرِيَاءِ، وَالْعَظَمَةِ
উচ্চারণঃ সুবহা-নাযিল জাবারূতি, ওয়াল মালাকুতি, ওয়াল কিবরিয়া-ই ওয়াল ‘আযামাহ
অনুবাদঃ পবিত্র সেই সত্তা, যিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, সার্বভৌমত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্বের অধিকারী।
আউফ ইবনু মালিক আশজাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি (একবার) আল্লাহ্র রাসূল (ﷺ)-এর সঙ্গে রাতের সালাতে দাঁড়িয়ে যাই। তিনি (সালাতে) দাড়িয়ে সূরা আল-বাকারাহ্ পাঠ করেন। রহমত বা দয়া সংক্রান্ত কোনও আয়াত অতিক্রম করার পরপরই তিনি থেমে (আল্লাহ্র কাছে তা) চান, এবং শাস্তি সংক্রান্ত প্রত্যেকটি আয়াত শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি থেমে (আল্লাহ্র কাছে তা থেকে) আশ্রয় চান। এরপর, যেটুকু সময় দাঁড়িয়ে ছিলেন, ততটুকু সময় ধরে রুকূতে থাকেন। এরপর তিনি সিজদায় গিয়ে ততক্ষণ থাকেন, যতক্ষণ তিনি রুকূতে ছিলেন। সিজদায় তিনি বলেন - (দুআটি উপরে উল্লেখিত হয়েছে)
রেফারেন্স: হাসান। আবূ দাঊদঃ ৮৭৩