পৃথিবীর ৯৯.৯৯ শতাংশ প্রজাতি এখনো অনাবিষ্কৃত - বিবর্তনবাদের বিভ্রান্তি ১০

Abu Umar

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Joined
Nov 25, 2022
Threads
667
Comments
1,234
Solutions
17
Reactions
7,893
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব হওয়ার যতগুলো কারণ আছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে মানুষই সর্বপ্রথম পৃথিবীর অন্য প্রজাতির প্রাণীদের অনুসন্ধান করতে শুরু করে। সেই অনুসন্ধান এখনো চলছে। মানুষ গহীন জঙ্গলে, পর্বতে, গুহায়, গভীর সমুদ্রে যেমন খুঁজছে প্রাণের সন্ধান, তেমনি খুঁজছে মহাশূন্যে। কিন্তু পৃথিবীতে ঠিক কত প্রজাতির প্রাণী রয়েছে, সে বিষয়ে মানুষের জ্ঞান যে কত সামান্য সেটা বেরিয়ে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। আমেরিকার ন্যাশনাল একাডেমী অব সায়েন্সের চমকে দেওয়ার মত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর ৯৯.৯৯ শতাংশ প্রাণীই এখনো অনাবিষ্কৃত! পৃথিবীতে আরও এক হাযার কোটি প্রজাতির প্রাণী রয়েছে যার কথা বিজ্ঞানীরাএখনো পর্যন্ত জানেন না। এই গবেষণার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গবেষকরা বলেছেন, প্রাণী প্রজাতির সংখ্যা নির্ণয়ের এই পরীক্ষা চালানো হয়েছে জেনেটিক সিকুয়েন্সিং টুল বা জিনের ধারাবাহিকতা নির্ণয়ক যন্ত্র দিয়ে। এই যন্ত্রের মাধ্যমে গবেষণার লেখক এবং ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী জে লেনন এবং কেন লোসে অণুপরমাণু পর্যায়ের ফাঙ্গাই থেকে শুরু করে বড় আকৃতির স্তন্যপায়ী প্রাণীদের একটি তালিকা তৈরি করেছেন। ঐ তালিকার মিশ্রণ থেকে স্কেলিং ল বা পরিমাপ আইন ব্যবহার করে তারা প্রাণী ও উদ্ভিদের মোট প্রজাতির সংখ্যা বের করেছেন। লেনন বলেছেন, ‘জীবাণুদের মধ্যে যে কি পরিমাণ বৈচির্ত্য রয়েছে সেটা আমাদের কল্পনাতেও ছিল না’। তারা আবিষ্কার করেছেন যে, এই পর্যন্ত যত জীবাণু আবিষ্কৃত হয়েছে তার এক লাখ গুণ বেশী জীবাণু এখনো অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। আরও ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) জীবাণু নিয়ে গবেষণা করতে হবে। তাই মহাবিশ্বের বিশালত্ব নিয়ে অতি বৃহৎ গবেষণা আর ক্ষুদ্র জীবাণুর অতি ক্ষুদ্রতা নিয়ে গবেষণা মূলতঃ একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।

মানুষকে না হয় বানর থেকে সৃষ্ট বলে ডারউইনবাদীরা সুখের ঢেকুর তুলছেন। কিন্তু মশার বিবর্তন কিসের থেকে হ’ল, তার উত্তর কি? যে মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া থামিয়ে দিয়েছিল চেঙ্গিস খানের (১১৬২-১২২৭ খৃ.) পশ্চিমমুখী লুণ্ঠন। যে মশাবাহিত ম্যালেরিয়া জ্বরে ইতিমধ্যে পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ লোক মারা গেছে এবং গত ২০১৮ সালে বিশ্বের সাড়ে ৮ লাখ মানুষ মারা গেছে। সম্প্রতি এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর রাজধানী ঢাকায় মহামারির রূপ ধারণ করেছিল। যে মশাকে ‘মানব বিনাশকারী’ ও ‘ভয়ঙ্কর মৃত্যুদূত’ বলা হয়। অথচ এই ছোট্ট মশা সম্পর্কে কুরআন নাযিল হয়েছে (বাক্বারাহ ২৬ আয়াত)।

যুক্তরাজ্যের লণ্ডনে অবস্থিত ন্যাচারাল হিস্ট্রি জাদুঘরের কিউরেটর এরিকা ম্যাকঅ্যালিস্টার আনুমানিক একটা হিসাব করেছেন। সে হিসাব অনুযায়ী পৃথিবীজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কয়েক লাখ কোটি মশা-মাছি। অর্থাৎ বিশ্বে জনপ্রতি মশা-মাছির সংখ্যা ১ কোটি ৭০ লাখের মতো। সংখ্যাটা এর বেশীও হ’তে পারে। এর অর্থ, আমাদের প্রত্যেকের ভাগে পড়েছে ১ কোটি ৭০ লাখ মশা-মাছি! এই পরিমাণ মশা-মাছি যদি দল বেঁধে প্রত্যেক মানুষের পেছনে লাগে, তাহ’লে কী অবস্থা হবে? (দৈনিক প্রথম আলো ২৪শে নভেম্বর ২০১৭)।

হঠকারী নাস্তিকদের উদ্দেশ্য করে তাই আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ! একটি উপমা দেওয়া হচ্ছে, মনোযোগ দিয়ে শোন। আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের পূজা কর, তারা কখনোই একটা মাছিও সৃষ্টি করতে পারবে না, যদিও তারা সকলে এজন্যে একত্রিত হয়। আর মাছি যদি তাদের কাছ থেকে কিছু ছিনিয়ে নেয়, তবে তারা তার কাছ থেকে তা উদ্ধার করতে পারবে না। প্রার্থনাকারী ও যার কাছে প্রার্থনা করা হয়, উভয়ে শক্তিহীন (অর্থাৎ পূজারী ও দেবতা উভয়েই ব্যর্থ)’। ‘তারা আল্লাহর যথার্থ মর্যাদা বুঝে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশক্তিমান ও পরাক্রান্ত’ (হজ্জ ২২/৭৩-৭৪)।

ক্রমবিকাশবাদী ও বিবর্তনবাদীরা জবাব দিন, কেন মশাগুলো মাছি হয়না এবং কেন মাছিগুলো মশা হয়না। কেন মাছি কামড় দেয়না। আর কেন মশা কামড় দেয়। কেন সব কামড়ে মানুষ মরেনা। আবার বিশেষ বিশেষ মশার কামড় মৃত্যুদূত হয়ে দেখা দেয়? এগুলির কোন জবাব মানুষের কাছে নেই। বিগত যুগের ফেরাঊন আল্লাহকে অস্বীকার করায় এই অহংকারীকে দমন করার জন্য আল্লাহ উকুন, ব্যাঙ, পঙ্গপাল ইত্যাদি গযব পাঠিয়েছিলেন। এ যুগের নাস্তি কদেরকেও আল্লাহ নানাবিধ ভাইরাস ও গযব পাঠিয়ে দমন করছেন। ইতিমধ্যে ৩০ কোটি ভ্রূণ হত্যাকারী ও ১০ লক্ষাধিক উইঘুর মুসলমানদের উপরে ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম নির্যাতনকারী এবং ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলমানকে জন্মভূমি মিয়ানমার থেকে উৎখাত করার পিছনে মূল চক্রান্তকারী চীন সরকারকে দমন করার জন্য আল্লাহ ‘করোনা ভাইরাস’ প্রেরণ করেছেন (ডিসেম্বর ২০১৯)। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন যে, এই ভাইরাসে পৃথিবীর ৮০ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হ’তে পারে।

অতএব হে কাফের-মুশরিক-নাস্তিকবৃন্দ! দ্রুত তওবা করে ফিরে এসো আল্লাহর পথে। নইলে আল্লাহর গযবে ধ্বংস হওয়ার জন্য প্রস্তুত হও। এরপরেও তোমাদের জন্য পরকালে জাহান্নাম প্রস্তুত হয়ে আছে। আল্লাহ
আমাদেরকে সুপথ প্রদর্শন করুন- আমীন!

চলবে...

৯. দৈনিক ইনকিলাব, ৭ই মে ২০১৬ পৃ. ৬; মাসিক আত-তাহরীক (রাজশাহী), জুন ২০১৬, ১৯/৯ সংখ্যা।

 
Back
Top