- Joined
- Jun 16, 2023
- Threads
- 42
- Comments
- 61
- Reactions
- 725
- Thread Author
- #1
উত্তর: এই বিষয়ে উলামায়ে কেরামের মাঝে তীব্র ইখতেলাফ বিদ্যমান। কেউ কেউ বলে যে ইমাম আবু হানিফা রাহ. তাবেঈ ছিলেন, আর কেউ কেউ বলে যে ইমাম আবু হানিফা রাহ. তাবেঈ ছিলেন না। এই দুটো মতের উপর পর্যালোচনার পূর্বে দুটো গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা পেশ করা যাক:
প্রথমতঃ যে কিতাব থেকে ক্বওল বা রেওয়ায়েত দলিল হিসেবে নকল করা হবে, তার সনদ হয় লিযাইতিহি নাহয় হাসান লিযাইতিহি পর্যায়ের হতে হবে। নাহলে সেই ইস্তিদালাল মারদুদ (বাতিল) হবে।
দ্বিতীয়তঃ সহীহ দলিলের মোকাবেলায় সব দ্বঈফ আর গাইর ছাবিত (অপ্রমাণিত) দলিলসমূহ মারদুদ হবে, যদিও বা সেগুলোর সংখ্যা হাজারখানেক হয়ে থাকে!
এই ভূমিকার পরে এবার উভয় দলসমূহের মতামত পেশ করা যাক।
প্রথম পক্ষ: খতিব বাগদাদি (মৃঃ ৪৬৩ হি.) রাহিমাহুল্লাহ লিখেছেন যে,
النعمان بن ثابت أبو حنيفة التيمي إمام أصحاب الرأي وفقيه أهل العراق ، رأى أنس بن مالك وسمع عطاء بن أبي رباح
মানে হলো, আল নুমান বিন ছাবিত আত তাইমী - যিনি আহলুল রায়দের ইমাম আর ইরাকের ফক্বিহ, ইনি আনাস বিন মালিক কে দেখেছেন এবং আত'আ বিন আবি রিবাহ থেকে রেওয়ায়েত শুনেছেন।
[তারীখু বাগদাদ ১৩ খণ্ড, ৩২৩-৩২৪ পৃঃ, ৭২৯৭ নং রাবী]
পরবর্তী অনেক উলামা খতিব রাহ. এর এই কথার উপর নির্ভর করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, আল ইলালুল মুতানাহিয়াহ লি ইবনুল জাওযী ( ১/১২৮, আছার নং ১৯৬)।
পরবর্তীতে লোকেরা এই উক্তিটিকে দারাকুতনীর দিকে সম্পৃক্ত করে দিয়েছিল, যা একটা বড় ভুল। (দেখুন আল লামহাত, ২/২৯৩)
দ্বিতীয় পক্ষঃ আবুল হাসান আল দারাকুতনি (মৃঃ ৩৮৫ হি.) রাহ. কে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে আবু হানিফার রেওয়ায়েত শ্রবণের বিষয়টি কী সঠিক?
তো উনি জবাব দিলেন যে,
لا ولا رؤيته ، لـم يـلـحق أبو حنيفة أحدا من الصحابة
না, আর আবু হানিফার উনাকে দেখাটা প্রমাণিত নয়, বরং আবু হানিফা তো কোনো সাহাবীর সাথেই সাক্ষাৎ করেনি।
(তারীখু বাগদাদ ৪/২০৮ পৃষ্ঠা, ১৮৯৫ নং এবং সনদ সহীহ)
(ছাওয়ালাত আল আসমি লিল দারাকুতনি, পৃ ২৬৩, ৩৮৩ নং)
(আল ইলালুল মুতানাহিয়াহ ফীল হাদিছুল ওয়াহিয়্যাহ, ১/৭৪)
বোঝা গেলো যে, খতিব বাগদাদির বহু পূর্বেই ইমাম দারাকুতনী রাহ. এই কথাটা সাফ-সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে ইমাম আবু হানিফা না সাইয়্যেদুনা আনাস রাঃ কে দেখেছেন, আর না উনার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন।
বিঃদ্রঃ- জলিল আল কদ্বর মু'তাদিল ইমাম দারাকুতনি রাহ. পূর্বের উক্তিটি আল্লামা সুয়ূতী (মৃত্যু ৯১১ হি.) এর কিতাব - "তাবিয়িদ্বুস সহীহাতি ফী মানাকিবিল ইমামু আবি হানিফা" তে বিকৃত ও পরিবর্তিত আকারে উল্লেখ্য হয়েছে।
[মুহাম্মদ আশিক ইলাইহী বুরনি দেওবন্দীর টিকাতে, পৃঃ ১০]
বিকৃত উদ্ধৃতিসমূহ আসল কিতাবের বিরোধী হওয়ার কারণে এগুলো মারদুদ। "আল লালি" কিতাবসমূহের ইবারত থেকে জানা যায় যে ইবনুল জাওযীর কালাম বুঝতে না পারায় ইমাম সুয়ূতীর এমনটা মনে হয়েছে। বাহ্যিকভাবে ইমাম দারাকুতনীর থেকে প্রমাণিত ক্বওলের মোকাবেলায় সুয়ূতী এবং ইবনুল জাওযী প্রমুখদের দলিল মারদুদ।
এই দুজনের (খতিব ও দারাকুতনি) মতামতের মধ্যে পূর্বোক্ত ও বিশ্বস্ততার দিক বিবেচনায় দারাকুতনির মতামত তারজিহ হাসিল হয়েছে।
প্রথম পক্ষের উত্থাপিত যুক্তিতর্কমূলক দলিল (معرکۃ الآراء):
যেসব লোকেরা ইমাম আবু হানিফাকে তাবেঈ মানে বা অন্যকে মানাতে চায় তারা একটি মা'আরকাতুল রায় (যুক্তিতর্কমূলক দলিল) পেশ করে।
মুহাম্মদ বিন সা'দ কিতাবুল ওয়াক্বদ্বিয়ি তে (তার মানাকিবে) বলেছেন,
حدثنا أبو الموفق سيف بن جابر قاضي واسط قال : سمعت أبا حنيفة يقول : قدم أنس بن مالك الكوفة ونزل النخع وكان يخضب بالحمرة ، قد رأيته مرارا “
[আক্বুদুজ জামান ফি মানাকিবিন নুমান, পৃঃ ৪৯; তাযকিরাতুল হুফফায লিয যাহাবী, ১/১৬৮ পৃঃ; ইমাম যাহাবীর মানাকিবে আবু হানিফা ওয়া স্বহিবিহ আবু ইউসুফ, পৃঃ ৭-৮]
এই রেওয়ায়েত এর তর্জমা এই যে, আবু হানিফা বলেছেন যে আমি সাইয়্যেদুনা আনাস বিন মালিক কে কূফাতে দেখেছি। এই রেওয়ায়েতের বুনিয়াদি রাবী হলেন সাইফ বিন জাবির, যিনি মাজহুল। তার তাওছীক কোনো গ্রহণযোগ্য কিতাবে পাওয়া যায়নি।
[দেখুনঃ তানকীল বিমানি তা'নিব আল কাওছারী মিনাল বাতিল, ১/১৭৯ পৃঃ, ৩৪ নং; তাবসিরাতুন নাক্বিদ পৃঃ ২১৮-২১৯ এবং আল লামহাত ইলা মা ফি আনওয়ারিল বারি মিনায যুলুমাত ২/২৭৭ পৃঃ]
দ্বিতীয়ত এই রেওয়ায়েতটি ইবনে সা'দ এর "আত ত্ববাকাত" কিতাবে বিদ্যমান নেই। এটি হাকিম কবির আবু আহমাদ মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ বিন আহমাদ বিন ইসহাক (মৃঃ ৩৭৮ হি.) নিম্নোক্ত সনদে বর্ণনা করেছেন,
حدثني أبو بكر بن أبي عمرو المعدل ببخاری : حدثني أبو بكر عبدالله بن محمد بن خالد القاضي الرازي الحبال قال : حدثني عبدالله بن محمد بن عبيد القرشي المعروف بابن أبي لدنيا : نا محمد بن سعد الهاشمي صاحب الواقدي : نا أبو الموفق سيف بن جابر قاضي واسط قال : سمعت أبا حنيفة يقول : قدم أنس بن مالك الكوفة ونزل النخع وكان يخضب بالجهر ( ۱ ) قدرأيته مرارا “
[ওয়া ফী উকুদুয যামানি ফী মানাকিবি, পৃঃ ৪৯]
এই রেওয়ায়েত এর রাবী আবু বকর বিন আবি আমর এর তাওছীক জানা যায় না। অতএব, জ্ঞাত হলো যে এই সনদ না ইবন সা'দ থেকে প্রমাণিত আর না আবু হানীফা থেকে। অতএব, এটিকে فإنه صح (নিশ্চিতভাবে সহীহ) বলাটা ভুল।
এছাড়াও আবু হানিফার তাবেঈয়াত প্রমাণ করার জন্য মাওযু বর্ণনা "আখবারে আবি হানিফা লিস্বস্বাইমারি" ও "জামেউল মাসানিদ লিল খাওয়ারিজিমি" এবং মানাকিবের কিতাবাদিতে ব্যাপকভাবে মজুদ আছে যাতে আহমাদ বিন আস স্বলাত, আল হামানী ও অন্যান্য কাজ্জাব, মাজহুল ও মাজরুহ রাবী আছে। এদের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে "আত তানকীল" ও "আল লামহাত" দেখে নিন।
দ্বিতীয় পক্ষের যুক্তিতর্কমূলক দলিল (معرکۃ الآراء):
মু'তাদিল ইমাম আবু আবু আহমাদ বিন আদি আল জুরজানি বলেন,
" ثناه عبدالله بن محمد بن عبدالعـزيـز : حدثني محمود بن غيلان : ثنا المقرئي : سمعت أباحنيفة يقول : ما رأيت أفضل من عطاء وعامة ما أحدثكم خطاء “
আবু হানীফা বলেন, আমি তাবেঈ আ'তা বিন আবি রিবাহ থেকে উত্তম কাউকে দেখিনি। আর আমি তোমাদেরকে সাধারণত যেসব হাদিস শোনাই সেগুলো ভুল।
[আল কামিল, ৮/২৪৭৩, নতুম সংস্করণে ৮/২৩৭ - সনদ সহীহ]
এই বর্ণনার সনদ সহীহ - [দেখুন "আল আসানিদুস্ব স্বহীহাহ ফি আখবারিল ইমামি আবি হানীফা, পৃঃ ২৯০]
আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ বিন আব্দুল আযিয আল বাগউয়ী - নিশ্চিত সিক্বাহ। (সিয়ারু আল আমিন নুবালা, ১৪/৪৫৫)
জমহুর মুহাদ্দেসীন তাকে সিকাহ আখ্যা দিয়েছেন। (আল আসানিদুস্ব স্বহীহাহ, পৃঃ ১২৪)
তার উপর সুলায়মানি ও ইবন আদির জারাহ মারদুদ।
মাহমুদ বিন গায়লান ছিকাহ। (তাকরীবুত তাহযিব, ৬৫১৬)
আবু আব্দুর রহমান ইয়াযিদ আল মুকর্যিয়ু ছিকাহে ফাযেল। (তাকরীবুত তাহযিব, ৩৭১৫)
এই রেওয়ায়েতটিও খতিব বাগদাদি সেই আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ আল বাগউয়ী থেকে বর্ণনা করেছেন।
[তারীখু বাগদাদ, ১৩/৪২৫, সনদ সহীহ]
আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ আল বাগউয়ী অন্য বর্ণনায় বলেন,
" حدثنا ابن المقرئي : نا أبي قال : سمعت أبا حنيفة يقول : ما رأيت أفضل من عطاء وعامة ما ( أ ) حدثكم به خطأ
[مسند علي بن الجعد ٧٧٧/٢ ح ٢٠٦٢، دوسرا نوسخه - ١٩٧٨ سند صحيح]
এই বর্ণনার সনদটিও সহীহ।
মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ বিন ইয়াযিদ আল মুকর্যিয়ু ছিকাহ। [তাকরিবুত তাহযিব, ৬০৫৪ নং রাবী]
আব্দুল্লাহ বিন ইয়াযিদ আল মুকরিয়্যু ছিকাহে ফাযেল যেমনটা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
আবু ইয়াহইয়া আব্দুল হামিদ বিন আব্দুর রহমান আল হামানি বলেন,
سمعت أبا حنيفة يقول : ما رأيت أحدا أكذب من جابر الجعفي ولا أفضل من عطاء بن أبي رباح
আমি আবি হানীফাকে বলতে শুনেছি, আমি জাবির আল জুফি থেকে বড় কাজ্জাব দেখিনি, আর আত'আ বিন আবি রিবাহ থেকে উত্তম কাউকে দেখিনি।
[আল ইলালুস্ব স্বগির লিল তিরমিযি, পৃঃ ৮৯১ - সনদ হাসান; মুসনাদে আলি বিন আয যা'দ (বর্ণনা আব্দুল্লাহ বাগউয়ী) ২/৭৭৭, হাদিস - ২০৬১ নং, অন্য সংস্করণে ১৯৭৭ - সনদ হাসান; আল কামিল লি ইবন আদি, ২/৫৩৭, অন্য সংস্করণে ২/৩২৭ - সনদ হাসান, ইমাম বায়হাকীর "কিতাবুল কিরাআত খুলুফুল ইমাম" পৃঃ ১৩৪, আছার নং ৩২১, অন্য সংস্করণ ১৫৭ পৃঃ, আছার নং ৩৪৫ - সনদ হাসান]
আবু ইয়াহইয়া আল হামানী - ছুদুক (সত্যবাদী) হাসানুল হাদিস।
[তাহরির তাকরীবুত তাহযিব, ২/৩০০; ৩৭৭১ নং রাবী]
বাকি সনদ একদম সহীহ।
এই সহীহ সনদ থেকে জানা যাচ্ছে যে ইমাম আবু হানীফা রাহ. সাইয়্যেদুনা আনাস বিন মালিক (সাহাবী রাঃ) কে একেবারেই দেখেননি। নাহলে তিনি কখনোই বলতেন না যে আমি আত'আ (তাবেঈ) এর চাইতে উত্তম কাউকে দেখিনি। এই কথাটা সাধারণ লোকেরাও জানে যে প্রত্যেক সাহাবী প্রত্যেক তাবেঈ থেকে উত্তম। যেখানে ইমাম সাহেব নিজেই বলেছেন যে তিনি আত'আ (তাবেঈ) থেকে উত্তম কোনো ব্যক্তিকে দেখেননি, তাহলে তিনি কোনো সাহাবীকে দেখেননি। বিস্তারিত জানতে "আল লামহাত ইলা মা ফি আনাওয়ারুল বারী মিনায যুলুমাত" কিতাবটি অধ্যয়ন করুন।
তাহকীকের মূলভাবঃ ইমাম আবু হানীফা রাহ. তাবেঈ নন। একজন সাহাবীর সাথেও উনার সাক্ষাৎ প্রমাণিত নয়। এই প্রসঙ্গে খতিব বাগদাদি ও অন্যান্যদের মতামত মারজুহ এবং ভুল। আর আসমাউর রিজাল (রিজালশাস্ত্র) এর ইমাম আবুল হাসান দারাকুতনির তাহকীকই রাজেহ এবং সহীহ।
মুহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আস সাখাউয়ী (মৃঃ ৯০২ হি.) লিখেছেন যে,
"وقسم معتدل كأحمد والدارقطني وابن عدي"
এবং মুহাদ্দিসীনে কেরামের একটি পক্ষ মু'তাদিল (ন্যায়পরায়ণ), যেমন - আহমাদ, দারাকুতনি এবং ইবন আদি।
অর্থাৎ এই তিনজন মুতাদিল ছিলেন।
(আল মুতাকাল্লিমুন ফির রিজাল, পৃঃ ১৩৭)
হাফেয যাহাবী রাহ. বলেন,
"وقسم كالبخاري وأحمد وأبي زرعة وابن عدي معتدلون منصفون"
মুহাদ্দিসীনদের একটি পক্ষ যেমন ইমাম বুখারী, আহমাদ বিন হাম্বল, আবু যুরআ (রাযি) এবং ইবন আদি মু'তাদিল ও মুনসাফ ছিলেন।
(যাকারা মান ইয়া'তামিদ কওলিহি ফিল জারাহ ওয়াত তাদিল, পৃঃ ১৫৯)
বিঃদ্রঃ - ইমাম যাহাবী "আল মুকিযাহ" গ্রন্থে ইমাম দারাকুতনি কে মুতাসাহহিল (শিথিলপন্থী মুহাদ্দিস) বলে আখ্যা দিয়েছেন। (পৃঃ ৮৩)
এই উক্তি খতিব বাগদাদী, আব্দুল গণি আযদি ও কাযী আবুল তৈয়্যিব আত তাবারী প্রমুখদের তাওছীকের বিরোধী হওয়ার কারণে মারদুদ। দারাকুতনি, আজলি, ইবন খুযাইমাহ ও ইবনুল জারুদ এর মুতাসাহহিল (শিথিলপন্থি মুহাদ্দিস) হওয়াটা প্রমাণিত নয়।
الجواب اس مسئلے میں علماۓ کرام کے درمیان سخت اختلاف ہے ۔ بعض کہتے ہیں کہ امام ابوحنیفہ رحمہ اللہ تابعی تھے اور بعض کہتے ہیں کہ امام ابوحنیفہ رحمہ اللہ تابعی نہیں تھے ۔ ان دونوں گروہوں کے نظریات پر تبصرہ کرنے سے پہلے دو اہم ترین بنیادی باتیں پیش خدمت اول : جس کتاب سے جو قول یا روایت بطور دلیل نقل کی جاۓ ، اس کی سند یح لذاتہ یا حسن لذاتہ ہو ، ورنہ استدلال مردود ہوتا ہے ۔ روم : صحیح دلیل کے مقابلے میں تمام ضعیف اور غیر ثابت دلائل مردود ہوتے ہیں اگر چہ ان کی تعداد ہزاروں میں ہی کیوں نہ ہو ۔ اس تمہید کے بعد فریقین کے نظریات پیش خدمت ہیں : فریق اول : خطیب بغدادی رحمہ اللہ ( متوفی ۴۷۳ ھ ) لکھتے ہیں : " النعمان بن ثابت أبو حنيفة التيمي إمام أصحاب الرأي وفقيه أهل العراق ، رأى أنس بن مالك وسمع عطاء بن أبي رباح . ... “ معنی : نعمان بن ثابت ، ابوحنیفہ ایمی ، اہل الرائے کے امام اور عراقیوں کے فقیہ ، آپ نے انس بن مالک ( ن ) کو دیکھا ہے اور عطاء بن ابی رباح سے ( روایات وغیرہ کو سنا ہے ۔ ( تاریخ بغدا ۳۲۳ ٫ ۱۳ ۳۴۴ ت ۷۲۹۷ ) بعد والے بہت سے علماء نے خطیب رحمہ اللہ کے اس قول پر اعتماد کیا ہے ۔ مثلا د یکھئے العلل المتناہیۃ لابن الجوزی ( ۱۹۶۱۲۸ ٫ ۱ ) بعض لوگوں نے ابن الجوزی کےالتحقيق قول کو دارقطنی کی طرف منسوب کر دیا ہے ، یہ بہت بڑی غلطی ہے ۔ ( دیکھئے لمحات ۲۹۳ / ۲ ) فریق دوم : ابوالسن الدارقطنی رحمہ اللہ ( متوفی ۳۸۵ ھ ) سے پوچھا گیا کہ کیا ابوحنیفہ کا انس بن مالک رضی اللہ عنہ ) سے سماع ( سنا صحیح ہے ؟ تو انھوں نے جواب دیا : " لا ولا رؤيته ، لـم يـلـحق أبو حنيفة أحدا من الصحابة » نہیں ، اور نہ ابو حنیفہ کا انس ( م ) کو دیکھنا ثابت ہے بلکہ ابوحنیفہ نے تو کسی صحابی سے ( بھی ملاقات نہیں کی ہے ۔ ( تاریخ بغداد ج ۳ ص ۲۰۸ ت ۱۸۹۵ وسنده پیج ) سوالات اسمی للدارقطنی ( ص ۲۲۳ ۳۸۳ ) ، العلل المتناهية في الأحاديث الواهية لابن الجوزی ( ۷۵ ٫ ۱ تحت ح ۷۴ ) ] معلوم ہوا کہ خطیب بغدادی سے بہت پہلے امام دارقطنی رحمہ اللہ اس بات کا صاف صاف اعلان کر چکے ہیں کہ امام ابوحنیفہ نے نہ تو سیدنا انس رضی اللہ عنہ کودیکھا ہے اور نہان سے ملاقات کی ہے ۔ تنبیہ : جلیل القدر معتدل امام دارقطنی رحمہ اللہ کا سابق بیان علامہ سیوطی ( متوفی ۹۱۱ ھ ) کی کتاب ” تبييض الصحيفة في مناقب الإمام أبي حنيفة ' ' میں محرف ومبدل ہوکر مچپ گیا ہے ۔ ( ص ، تعلیق محمد عاشق الہی برنی دیو بندی ) تحریف شدہ متن اصل مستند کتابوں کے مقابلے میں ہونے کی وجہ سے مردود ہے ۔ ذیل اللآلی وغیرہ کی ع بارات سے معلوم ہوتا ہے کہ پیغلطی بذات خود علامہ سیبوٹی کو حافظ ابن الجوزی کا کلام نہ بجھنے کی وجہ سے لگی ہے ۔ بہر حال امام دارقطنی سے ثابت شدہ قول کے مقابلے میں سیوطی وابن الجوزی وغیرھما کے حوالے مردود ہیں ۔ ان دونوں ( خطیب و دارقطنی ) کے اقوال میں متقدم واوثق ہونے کی وجہ سے دارقطنی کے قول کو ہی ترجیح حاصل ہے ۔ فریق اول کی معرکۃ الآراء دلیل : جولوگ امام ابو حنیفہ رحمہ اللہ کو تابعی مانتے یا منواتے ہیں وہ ایک معرکۃ الآراء دلیل پیش کرتے ہیں : محمد بن سعد ( کا تب الواقدی ) نے ( طبقات میں ) کہا : " حدثنا أبو الموفق سيف بن جابر قاضي واسط قال : سمعت أبا حنيفة يقول : قدم أنس بن مالك الكوفة ونزل النخع وكان يخضب بالحمرة ، قد رأيته مرارا “ ( عقود الجمان فی مناقب النعمان ص ۴۹ ، الباب الثالث واللفظ له ، تذکرة الحفاظ للذهمی از ۱۸ ات ۱۲۳ ، مناقب الی حدیقۃ وصاحبيه ابی یوسف محمد بن احسن للذہبی س ۷ ، ۸ ) اس روایت کا خلاصہ یہ ہے کہ ( امام ابوحنیفہ نے کہا کہ میں نے ( سیدنا انس بن مالک ( ن ) کوکوفہ میں دیکھا ۔ عرض ہے کہ اس روایت کا بنیادی راوی سیف بن جابر مجہول الحال ہے ۔ اس کی توثیق کسی مستند کتاب میں نہیں ملی ، دیکھئے اتنکیل بمانی تا نیب الکوثری من الأباطيل ( ج ۱ ص ۱۷۹ ت ۳۴ ) تبصرة الناقد ( ص ۲۱۸ ، ۲۱۹ ) واللمحات إلى مافی انوار الباری من المعالمی الظلمات ( ج ۲ ص ۲۷۷ ) دوسرے یہ کہ یہ روایت ابن سعد کی کتاب''الطبقات ' ' میں موجود نہیں ہے ۔اسے حاکم کبیر ابواحمد محمد بن محمد بن احمد بن اسحاق ( متوفی ۳۷۸ ھ ) نے درج ذیل سند وستن سے روایت کیا ہے : " حدثني أبو بكر بن أبي عمرو المعدل ببخاری : حدثني أبو بكر عبدالله بن محمد بن خالد القاضي الرازي الحبا ل قال : حدثني عبدالله بن محمد بن عبيد القرشي المعروف بابن أبي لدنيا : نا محمد بن سعد الهاشمي صاحب الواقدي : نا أبو الموفق سيف بن جابر قاضي واسط قال : سمعت أبا حنيفة يقول : قدم أنس بن مالك الكوفة ونزل النخع وكان يخضب بالجهر ( ۱ ) قدرأيته مرارا “ ا “ ( کتاب اسامی دالکنی للی کم الکبیر ۷۴ اباب ابي حديقة ) اس روایت کے راوی ابوبکر بن الی : روکی توثیق نا معلوم ہے لہذا معلوم ہوا کہ میسند نہ
( ۱ ) و فی عقود الجمان فی مناقب نی ۴۹.
تو ابن سعد سے ثابت ہے اور نہ امام ابوحنیفہ سے ثابت ہے ، لہذااسے ” فإنه صح ‘ ‘ کہنا غلط ہے ۔ اس کے علاوہ تابعیت امام ابوحنیفہ ثابت کرنے والی موضوع روایات اخبار ابی حنیفہ للصيمري و جامع المسانيدلخوارزمی وکتب مناقب میں بکثرت موجود ہیں جن کا دارو مدار احمد بن الصلت الحمانی وغیرہ جیسے کذابین و جمہولین و محرومین پر ہی ہے ۔ ان روایات پر تفصیلی جرح کے لئے تشکیل اور اللمحات کا مطالعہ کر میں ۔ فریق دوم کی معرکۃ الآراء دلیل : امام معتدل ابواحمد بن عدی الجرجانی رحمہ اللہ ( متوفی ۳۶۵ ھ ) فرماتے ہیں : " ثناه عبدالله بن محمد بن عبدالعـزيـز : حدثني محمود بن غيلان : ثنا المقرئي : سمعت أباحنيفة يقول : ما رأيت أفضل من عطاء وعامة ما أحدثكم خطاء “ ابوحنیفہ نے فرمایا : میں نے عطاء بن ابی رباح تابعی ) سے زیادہ افضل کوئی ( انسان ) نہیں دیکھا اور میں تمہیں عام طور پر جو حدیثیں بیان کرتا ہوں وہ غلط ہوتی ہیں ۔ ( الکامل ۲۴۷۳۶۷ والطبعة الجدید ۲۳۷ ٫ ۸ وسند وسیع ) اس روایت کی سند یح ہے ۔ ( اسانید صحیح فی اخبار الامام الی قلم ص ۲۹۰ ) عبداللہ بن محمد بن عبدالعزیز البغوی مطلقا ثقہ ہیں ۔ ( سیر اعلام النبلا ۴۵۵ ٫ ۱۴۰ ) جمہور محدثین نے انہیں ثقہ قرار دیا ہے ۔ ( الاسانید صحیحہ ص ۱۲۲ ) ان پر سلیمانی وابن عدی کی جرح مردود ہے ۔ محمود بن غیلان شفتہ ہیں ۔ تقریب التہذیب ۲۵۱۷ ) ابوعبدالرحمن عبداللہ بن یزید المقر کی ثقہ فاضل ہیں ۔ ( تقریب التہذیب : ۳۷۱۵ ) اس روایت کو خطیب بغدادی نے بھی عبداللہ بن محمد البغوی سے روایت کر رکھا ہے ۔ ( تاریخ بغداد ۴۲۵ ٫ ۱۳ وسند و هیچ ) عبد الله بن محمد البغوی دوسری روایت میں فرمات ے ہیں کہ : " حدثنا ابن المقرئي : نا أبي قال : سمعت أبا حنيفة يقول : ما رأيت أفضل من عطاء وعامة ما ( أ ) حدثكم
به خطأ “ ( مند علی بن الجعد ۷ / ۲ ۷ ۷ ۷ ۲۰۲۲ ، دوسرانسخه ۱۹۷۸ وسند وپیچ ) اس روایت کی سند بھی صحیح ہے ۔ محمد بن عبداللہ بن یزید المقرئی ثقہ ہیں ۔ ( انقر یب : ۲۰۵۴ ) عبداللہ بن یزید المقر کی ثقہ فاضل میں جیسا کہ ابھی گزرا ہے ۔ ابو یحی عبدالحمید بن عبدالرحمن الحمانی فرماتے ہیں : سمعت أبا حنيفة يقول : ما رأيت أحدا أكذب من جابر الجعفي ولا أفضل من عطاء بن أبي رباح “ میں نے ابوحنیفہ کو فرماتے ہوئے سنا : میں نے جابر ابھی سے زیادہ جھوٹا کوئی نہیں دیکھا اور عطاء بن ابی رباح سے زیادہ افضل کوئی نہیں دیکھا ۔ ( العلل اصفر للتر مذی ص ۸۹۱ وسنده حسن ، مسند علی بن الجعد ، رولی عبداللہ البغوی ۷۷۷ ٫ ۲ ۲۱ ۲۰ ، دوسرانسخہ ۱۹۷۷ وسند وحسن ، الکامل لابن عدی ۵۳۷/۲ ، دوسرانسخه ۳۲۷ ٫ ۲ وسنده حسن ، دعنہ الہقی فی کتاب القراءت خلف الامام ص ۱۳۴ تحت ح ۳۲۱ ، دوسرانسخ ص ۱۵۷ تحت ح ۱۳۴۵ سند و حسن ) ابوی الحمانی صدوق حسن الحدیث ہیں ۔ ( تحرر تقریب التہذیب ۳۰۰ ٫ ۲ ت ۳۷۷۱ ) باقی سند بالکل صحیح ہے ۔ ان پیج اسانید سے معلوم ہوا کہ امام ابوحنیفہ رحمہ اللہ نے سیدنا انس بن مالک ﷺ ( صحابی رسول ) کو بالکل نہیں دیکھا ، ورنہ وہ سی بھی نہ فرماتے کہ میں نے عطاء ( تابعی ) سے فضل کوئی نہیں دیکھا ۔ یہ بات عام لوگوں کو بھی معلوم ہے کہ ہر صحابی ہر تابعی سے افضل ہے ۔ جب امام صاحب نے خود اعلان فرمادیا ہے کہ انہوں نے عطاء تابعی سے زیادہ افضل کوئی انسان نہیں دیکھا تو تاج انہوں نے کسی صحابی کونہیں دیکھا ہے تفصیل کے لئے کتاب اللمحات الی مافی انوارالباری من الظلمات پڑھ لیں ۔ خلاصۃ التحقیق : امام ابوحنیفہ تابعی نہیں میں کسی ایک صحابی سے بھی ان کی ملاقات ثابت نہیں ہے ۔ اس سلسلے میں خطیب بغدادی وغیرہ کے اقوال مرجوح و غلط ہیں اور اسماءالرجال کے امام ابوالحسن الدارقطنی کا قول وتحقیق ہی رائج اور صحیح ہے ۔ محمد بن عبد الرحمن السخاوی ( متوفی ۹۰۲ ھ ) لکھتے ہیں کہ ” وقسم معتدل كأحمد والدارقطني وابن عدي “ اور محدثین کرام کا ایک گروہ معتدل ہے جیسے احمد ، دارقطنی اور ابن عدی ، یعنی یہ تینوں معتدل تھے ۔ ( مکالمون في الرجال ص ۱۳۷ ) حافظ ذہبی فرماتے ہیں : " وقسـم كـالـبـخـاري وأحـمـد وأبي زرعة وابـن عـدي معتدلون منصفون “ اور محدثین کا ایک گروہ مثلا بخاری ، احمد بن حنبل ، ابوزرعد ( رازی ) اور ابن عدی معتدل و منصف تھے ۔ ( ذکرمن یعتمد قوله في الجرح والتعدیل ص ۱۵۹ ) تنبیہ : حافظ ذہبی نے کتاب''الموقظہ ' ' میں امام دارقطنی کو بعض اوقات متساہل قرار دیا ہے ۔ ( ۸۳ ) ی قول خطیب بغدادی وعبدالغنی از دی و قاضی ابو الطیب العلم کی وغیر ہم کی توثیق وثنا کے مقابلے میں ہونے کی وجہ سے مردود ہے ۔ دارقطنی بجلی ، ابن خزیمہ اور ابن الجارود کا متساہل ہونا ثابت نہیں ہے ۔ وما علينا إلا البلاغ ( ۲۱ / ربیع الثانی ۱۳۲۶ ھ ) الحديث لا ]
[মুহাদ্দিসুল আছার হাফিজ শাইখ যুবায়ের আল যাঈ রাহ. রচিত "ফাতাওয়া ইলমিয়্যাহ আল মা'রুফ তাওদ্বিইহুল আহকাম" ২য় খণ্ড, ৪০৩-৪০৮ পৃঃ।]
অনুবাদ ও ডিজাইন: সাফিন চৌধুরী
Facebook: Shafin Chowdhury
Our Facebook Group:
The Ideology Of Salaf
প্রথমতঃ যে কিতাব থেকে ক্বওল বা রেওয়ায়েত দলিল হিসেবে নকল করা হবে, তার সনদ হয় লিযাইতিহি নাহয় হাসান লিযাইতিহি পর্যায়ের হতে হবে। নাহলে সেই ইস্তিদালাল মারদুদ (বাতিল) হবে।
দ্বিতীয়তঃ সহীহ দলিলের মোকাবেলায় সব দ্বঈফ আর গাইর ছাবিত (অপ্রমাণিত) দলিলসমূহ মারদুদ হবে, যদিও বা সেগুলোর সংখ্যা হাজারখানেক হয়ে থাকে!
এই ভূমিকার পরে এবার উভয় দলসমূহের মতামত পেশ করা যাক।
প্রথম পক্ষ: খতিব বাগদাদি (মৃঃ ৪৬৩ হি.) রাহিমাহুল্লাহ লিখেছেন যে,
النعمان بن ثابت أبو حنيفة التيمي إمام أصحاب الرأي وفقيه أهل العراق ، رأى أنس بن مالك وسمع عطاء بن أبي رباح
মানে হলো, আল নুমান বিন ছাবিত আত তাইমী - যিনি আহলুল রায়দের ইমাম আর ইরাকের ফক্বিহ, ইনি আনাস বিন মালিক কে দেখেছেন এবং আত'আ বিন আবি রিবাহ থেকে রেওয়ায়েত শুনেছেন।
[তারীখু বাগদাদ ১৩ খণ্ড, ৩২৩-৩২৪ পৃঃ, ৭২৯৭ নং রাবী]
পরবর্তী অনেক উলামা খতিব রাহ. এর এই কথার উপর নির্ভর করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, আল ইলালুল মুতানাহিয়াহ লি ইবনুল জাওযী ( ১/১২৮, আছার নং ১৯৬)।
পরবর্তীতে লোকেরা এই উক্তিটিকে দারাকুতনীর দিকে সম্পৃক্ত করে দিয়েছিল, যা একটা বড় ভুল। (দেখুন আল লামহাত, ২/২৯৩)
দ্বিতীয় পক্ষঃ আবুল হাসান আল দারাকুতনি (মৃঃ ৩৮৫ হি.) রাহ. কে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে আবু হানিফার রেওয়ায়েত শ্রবণের বিষয়টি কী সঠিক?
তো উনি জবাব দিলেন যে,
لا ولا رؤيته ، لـم يـلـحق أبو حنيفة أحدا من الصحابة
না, আর আবু হানিফার উনাকে দেখাটা প্রমাণিত নয়, বরং আবু হানিফা তো কোনো সাহাবীর সাথেই সাক্ষাৎ করেনি।
(তারীখু বাগদাদ ৪/২০৮ পৃষ্ঠা, ১৮৯৫ নং এবং সনদ সহীহ)
(ছাওয়ালাত আল আসমি লিল দারাকুতনি, পৃ ২৬৩, ৩৮৩ নং)
(আল ইলালুল মুতানাহিয়াহ ফীল হাদিছুল ওয়াহিয়্যাহ, ১/৭৪)
বোঝা গেলো যে, খতিব বাগদাদির বহু পূর্বেই ইমাম দারাকুতনী রাহ. এই কথাটা সাফ-সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে ইমাম আবু হানিফা না সাইয়্যেদুনা আনাস রাঃ কে দেখেছেন, আর না উনার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন।
বিঃদ্রঃ- জলিল আল কদ্বর মু'তাদিল ইমাম দারাকুতনি রাহ. পূর্বের উক্তিটি আল্লামা সুয়ূতী (মৃত্যু ৯১১ হি.) এর কিতাব - "তাবিয়িদ্বুস সহীহাতি ফী মানাকিবিল ইমামু আবি হানিফা" তে বিকৃত ও পরিবর্তিত আকারে উল্লেখ্য হয়েছে।
[মুহাম্মদ আশিক ইলাইহী বুরনি দেওবন্দীর টিকাতে, পৃঃ ১০]
বিকৃত উদ্ধৃতিসমূহ আসল কিতাবের বিরোধী হওয়ার কারণে এগুলো মারদুদ। "আল লালি" কিতাবসমূহের ইবারত থেকে জানা যায় যে ইবনুল জাওযীর কালাম বুঝতে না পারায় ইমাম সুয়ূতীর এমনটা মনে হয়েছে। বাহ্যিকভাবে ইমাম দারাকুতনীর থেকে প্রমাণিত ক্বওলের মোকাবেলায় সুয়ূতী এবং ইবনুল জাওযী প্রমুখদের দলিল মারদুদ।
এই দুজনের (খতিব ও দারাকুতনি) মতামতের মধ্যে পূর্বোক্ত ও বিশ্বস্ততার দিক বিবেচনায় দারাকুতনির মতামত তারজিহ হাসিল হয়েছে।
প্রথম পক্ষের উত্থাপিত যুক্তিতর্কমূলক দলিল (معرکۃ الآراء):
যেসব লোকেরা ইমাম আবু হানিফাকে তাবেঈ মানে বা অন্যকে মানাতে চায় তারা একটি মা'আরকাতুল রায় (যুক্তিতর্কমূলক দলিল) পেশ করে।
মুহাম্মদ বিন সা'দ কিতাবুল ওয়াক্বদ্বিয়ি তে (তার মানাকিবে) বলেছেন,
حدثنا أبو الموفق سيف بن جابر قاضي واسط قال : سمعت أبا حنيفة يقول : قدم أنس بن مالك الكوفة ونزل النخع وكان يخضب بالحمرة ، قد رأيته مرارا “
[আক্বুদুজ জামান ফি মানাকিবিন নুমান, পৃঃ ৪৯; তাযকিরাতুল হুফফায লিয যাহাবী, ১/১৬৮ পৃঃ; ইমাম যাহাবীর মানাকিবে আবু হানিফা ওয়া স্বহিবিহ আবু ইউসুফ, পৃঃ ৭-৮]
এই রেওয়ায়েত এর তর্জমা এই যে, আবু হানিফা বলেছেন যে আমি সাইয়্যেদুনা আনাস বিন মালিক কে কূফাতে দেখেছি। এই রেওয়ায়েতের বুনিয়াদি রাবী হলেন সাইফ বিন জাবির, যিনি মাজহুল। তার তাওছীক কোনো গ্রহণযোগ্য কিতাবে পাওয়া যায়নি।
[দেখুনঃ তানকীল বিমানি তা'নিব আল কাওছারী মিনাল বাতিল, ১/১৭৯ পৃঃ, ৩৪ নং; তাবসিরাতুন নাক্বিদ পৃঃ ২১৮-২১৯ এবং আল লামহাত ইলা মা ফি আনওয়ারিল বারি মিনায যুলুমাত ২/২৭৭ পৃঃ]
দ্বিতীয়ত এই রেওয়ায়েতটি ইবনে সা'দ এর "আত ত্ববাকাত" কিতাবে বিদ্যমান নেই। এটি হাকিম কবির আবু আহমাদ মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ বিন আহমাদ বিন ইসহাক (মৃঃ ৩৭৮ হি.) নিম্নোক্ত সনদে বর্ণনা করেছেন,
حدثني أبو بكر بن أبي عمرو المعدل ببخاری : حدثني أبو بكر عبدالله بن محمد بن خالد القاضي الرازي الحبال قال : حدثني عبدالله بن محمد بن عبيد القرشي المعروف بابن أبي لدنيا : نا محمد بن سعد الهاشمي صاحب الواقدي : نا أبو الموفق سيف بن جابر قاضي واسط قال : سمعت أبا حنيفة يقول : قدم أنس بن مالك الكوفة ونزل النخع وكان يخضب بالجهر ( ۱ ) قدرأيته مرارا “
[ওয়া ফী উকুদুয যামানি ফী মানাকিবি, পৃঃ ৪৯]
এই রেওয়ায়েত এর রাবী আবু বকর বিন আবি আমর এর তাওছীক জানা যায় না। অতএব, জ্ঞাত হলো যে এই সনদ না ইবন সা'দ থেকে প্রমাণিত আর না আবু হানীফা থেকে। অতএব, এটিকে فإنه صح (নিশ্চিতভাবে সহীহ) বলাটা ভুল।
এছাড়াও আবু হানিফার তাবেঈয়াত প্রমাণ করার জন্য মাওযু বর্ণনা "আখবারে আবি হানিফা লিস্বস্বাইমারি" ও "জামেউল মাসানিদ লিল খাওয়ারিজিমি" এবং মানাকিবের কিতাবাদিতে ব্যাপকভাবে মজুদ আছে যাতে আহমাদ বিন আস স্বলাত, আল হামানী ও অন্যান্য কাজ্জাব, মাজহুল ও মাজরুহ রাবী আছে। এদের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে "আত তানকীল" ও "আল লামহাত" দেখে নিন।
দ্বিতীয় পক্ষের যুক্তিতর্কমূলক দলিল (معرکۃ الآراء):
মু'তাদিল ইমাম আবু আবু আহমাদ বিন আদি আল জুরজানি বলেন,
" ثناه عبدالله بن محمد بن عبدالعـزيـز : حدثني محمود بن غيلان : ثنا المقرئي : سمعت أباحنيفة يقول : ما رأيت أفضل من عطاء وعامة ما أحدثكم خطاء “
আবু হানীফা বলেন, আমি তাবেঈ আ'তা বিন আবি রিবাহ থেকে উত্তম কাউকে দেখিনি। আর আমি তোমাদেরকে সাধারণত যেসব হাদিস শোনাই সেগুলো ভুল।
[আল কামিল, ৮/২৪৭৩, নতুম সংস্করণে ৮/২৩৭ - সনদ সহীহ]
এই বর্ণনার সনদ সহীহ - [দেখুন "আল আসানিদুস্ব স্বহীহাহ ফি আখবারিল ইমামি আবি হানীফা, পৃঃ ২৯০]
আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ বিন আব্দুল আযিয আল বাগউয়ী - নিশ্চিত সিক্বাহ। (সিয়ারু আল আমিন নুবালা, ১৪/৪৫৫)
জমহুর মুহাদ্দেসীন তাকে সিকাহ আখ্যা দিয়েছেন। (আল আসানিদুস্ব স্বহীহাহ, পৃঃ ১২৪)
তার উপর সুলায়মানি ও ইবন আদির জারাহ মারদুদ।
মাহমুদ বিন গায়লান ছিকাহ। (তাকরীবুত তাহযিব, ৬৫১৬)
আবু আব্দুর রহমান ইয়াযিদ আল মুকর্যিয়ু ছিকাহে ফাযেল। (তাকরীবুত তাহযিব, ৩৭১৫)
এই রেওয়ায়েতটিও খতিব বাগদাদি সেই আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ আল বাগউয়ী থেকে বর্ণনা করেছেন।
[তারীখু বাগদাদ, ১৩/৪২৫, সনদ সহীহ]
আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ আল বাগউয়ী অন্য বর্ণনায় বলেন,
" حدثنا ابن المقرئي : نا أبي قال : سمعت أبا حنيفة يقول : ما رأيت أفضل من عطاء وعامة ما ( أ ) حدثكم به خطأ
[مسند علي بن الجعد ٧٧٧/٢ ح ٢٠٦٢، دوسرا نوسخه - ١٩٧٨ سند صحيح]
এই বর্ণনার সনদটিও সহীহ।
মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ বিন ইয়াযিদ আল মুকর্যিয়ু ছিকাহ। [তাকরিবুত তাহযিব, ৬০৫৪ নং রাবী]
আব্দুল্লাহ বিন ইয়াযিদ আল মুকরিয়্যু ছিকাহে ফাযেল যেমনটা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
আবু ইয়াহইয়া আব্দুল হামিদ বিন আব্দুর রহমান আল হামানি বলেন,
سمعت أبا حنيفة يقول : ما رأيت أحدا أكذب من جابر الجعفي ولا أفضل من عطاء بن أبي رباح
আমি আবি হানীফাকে বলতে শুনেছি, আমি জাবির আল জুফি থেকে বড় কাজ্জাব দেখিনি, আর আত'আ বিন আবি রিবাহ থেকে উত্তম কাউকে দেখিনি।
[আল ইলালুস্ব স্বগির লিল তিরমিযি, পৃঃ ৮৯১ - সনদ হাসান; মুসনাদে আলি বিন আয যা'দ (বর্ণনা আব্দুল্লাহ বাগউয়ী) ২/৭৭৭, হাদিস - ২০৬১ নং, অন্য সংস্করণে ১৯৭৭ - সনদ হাসান; আল কামিল লি ইবন আদি, ২/৫৩৭, অন্য সংস্করণে ২/৩২৭ - সনদ হাসান, ইমাম বায়হাকীর "কিতাবুল কিরাআত খুলুফুল ইমাম" পৃঃ ১৩৪, আছার নং ৩২১, অন্য সংস্করণ ১৫৭ পৃঃ, আছার নং ৩৪৫ - সনদ হাসান]
আবু ইয়াহইয়া আল হামানী - ছুদুক (সত্যবাদী) হাসানুল হাদিস।
[তাহরির তাকরীবুত তাহযিব, ২/৩০০; ৩৭৭১ নং রাবী]
বাকি সনদ একদম সহীহ।
এই সহীহ সনদ থেকে জানা যাচ্ছে যে ইমাম আবু হানীফা রাহ. সাইয়্যেদুনা আনাস বিন মালিক (সাহাবী রাঃ) কে একেবারেই দেখেননি। নাহলে তিনি কখনোই বলতেন না যে আমি আত'আ (তাবেঈ) এর চাইতে উত্তম কাউকে দেখিনি। এই কথাটা সাধারণ লোকেরাও জানে যে প্রত্যেক সাহাবী প্রত্যেক তাবেঈ থেকে উত্তম। যেখানে ইমাম সাহেব নিজেই বলেছেন যে তিনি আত'আ (তাবেঈ) থেকে উত্তম কোনো ব্যক্তিকে দেখেননি, তাহলে তিনি কোনো সাহাবীকে দেখেননি। বিস্তারিত জানতে "আল লামহাত ইলা মা ফি আনাওয়ারুল বারী মিনায যুলুমাত" কিতাবটি অধ্যয়ন করুন।
তাহকীকের মূলভাবঃ ইমাম আবু হানীফা রাহ. তাবেঈ নন। একজন সাহাবীর সাথেও উনার সাক্ষাৎ প্রমাণিত নয়। এই প্রসঙ্গে খতিব বাগদাদি ও অন্যান্যদের মতামত মারজুহ এবং ভুল। আর আসমাউর রিজাল (রিজালশাস্ত্র) এর ইমাম আবুল হাসান দারাকুতনির তাহকীকই রাজেহ এবং সহীহ।
মুহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আস সাখাউয়ী (মৃঃ ৯০২ হি.) লিখেছেন যে,
"وقسم معتدل كأحمد والدارقطني وابن عدي"
এবং মুহাদ্দিসীনে কেরামের একটি পক্ষ মু'তাদিল (ন্যায়পরায়ণ), যেমন - আহমাদ, দারাকুতনি এবং ইবন আদি।
অর্থাৎ এই তিনজন মুতাদিল ছিলেন।
(আল মুতাকাল্লিমুন ফির রিজাল, পৃঃ ১৩৭)
হাফেয যাহাবী রাহ. বলেন,
"وقسم كالبخاري وأحمد وأبي زرعة وابن عدي معتدلون منصفون"
মুহাদ্দিসীনদের একটি পক্ষ যেমন ইমাম বুখারী, আহমাদ বিন হাম্বল, আবু যুরআ (রাযি) এবং ইবন আদি মু'তাদিল ও মুনসাফ ছিলেন।
(যাকারা মান ইয়া'তামিদ কওলিহি ফিল জারাহ ওয়াত তাদিল, পৃঃ ১৫৯)
বিঃদ্রঃ - ইমাম যাহাবী "আল মুকিযাহ" গ্রন্থে ইমাম দারাকুতনি কে মুতাসাহহিল (শিথিলপন্থী মুহাদ্দিস) বলে আখ্যা দিয়েছেন। (পৃঃ ৮৩)
এই উক্তি খতিব বাগদাদী, আব্দুল গণি আযদি ও কাযী আবুল তৈয়্যিব আত তাবারী প্রমুখদের তাওছীকের বিরোধী হওয়ার কারণে মারদুদ। দারাকুতনি, আজলি, ইবন খুযাইমাহ ও ইবনুল জারুদ এর মুতাসাহহিল (শিথিলপন্থি মুহাদ্দিস) হওয়াটা প্রমাণিত নয়।
الجواب اس مسئلے میں علماۓ کرام کے درمیان سخت اختلاف ہے ۔ بعض کہتے ہیں کہ امام ابوحنیفہ رحمہ اللہ تابعی تھے اور بعض کہتے ہیں کہ امام ابوحنیفہ رحمہ اللہ تابعی نہیں تھے ۔ ان دونوں گروہوں کے نظریات پر تبصرہ کرنے سے پہلے دو اہم ترین بنیادی باتیں پیش خدمت اول : جس کتاب سے جو قول یا روایت بطور دلیل نقل کی جاۓ ، اس کی سند یح لذاتہ یا حسن لذاتہ ہو ، ورنہ استدلال مردود ہوتا ہے ۔ روم : صحیح دلیل کے مقابلے میں تمام ضعیف اور غیر ثابت دلائل مردود ہوتے ہیں اگر چہ ان کی تعداد ہزاروں میں ہی کیوں نہ ہو ۔ اس تمہید کے بعد فریقین کے نظریات پیش خدمت ہیں : فریق اول : خطیب بغدادی رحمہ اللہ ( متوفی ۴۷۳ ھ ) لکھتے ہیں : " النعمان بن ثابت أبو حنيفة التيمي إمام أصحاب الرأي وفقيه أهل العراق ، رأى أنس بن مالك وسمع عطاء بن أبي رباح . ... “ معنی : نعمان بن ثابت ، ابوحنیفہ ایمی ، اہل الرائے کے امام اور عراقیوں کے فقیہ ، آپ نے انس بن مالک ( ن ) کو دیکھا ہے اور عطاء بن ابی رباح سے ( روایات وغیرہ کو سنا ہے ۔ ( تاریخ بغدا ۳۲۳ ٫ ۱۳ ۳۴۴ ت ۷۲۹۷ ) بعد والے بہت سے علماء نے خطیب رحمہ اللہ کے اس قول پر اعتماد کیا ہے ۔ مثلا د یکھئے العلل المتناہیۃ لابن الجوزی ( ۱۹۶۱۲۸ ٫ ۱ ) بعض لوگوں نے ابن الجوزی کےالتحقيق قول کو دارقطنی کی طرف منسوب کر دیا ہے ، یہ بہت بڑی غلطی ہے ۔ ( دیکھئے لمحات ۲۹۳ / ۲ ) فریق دوم : ابوالسن الدارقطنی رحمہ اللہ ( متوفی ۳۸۵ ھ ) سے پوچھا گیا کہ کیا ابوحنیفہ کا انس بن مالک رضی اللہ عنہ ) سے سماع ( سنا صحیح ہے ؟ تو انھوں نے جواب دیا : " لا ولا رؤيته ، لـم يـلـحق أبو حنيفة أحدا من الصحابة » نہیں ، اور نہ ابو حنیفہ کا انس ( م ) کو دیکھنا ثابت ہے بلکہ ابوحنیفہ نے تو کسی صحابی سے ( بھی ملاقات نہیں کی ہے ۔ ( تاریخ بغداد ج ۳ ص ۲۰۸ ت ۱۸۹۵ وسنده پیج ) سوالات اسمی للدارقطنی ( ص ۲۲۳ ۳۸۳ ) ، العلل المتناهية في الأحاديث الواهية لابن الجوزی ( ۷۵ ٫ ۱ تحت ح ۷۴ ) ] معلوم ہوا کہ خطیب بغدادی سے بہت پہلے امام دارقطنی رحمہ اللہ اس بات کا صاف صاف اعلان کر چکے ہیں کہ امام ابوحنیفہ نے نہ تو سیدنا انس رضی اللہ عنہ کودیکھا ہے اور نہان سے ملاقات کی ہے ۔ تنبیہ : جلیل القدر معتدل امام دارقطنی رحمہ اللہ کا سابق بیان علامہ سیوطی ( متوفی ۹۱۱ ھ ) کی کتاب ” تبييض الصحيفة في مناقب الإمام أبي حنيفة ' ' میں محرف ومبدل ہوکر مچپ گیا ہے ۔ ( ص ، تعلیق محمد عاشق الہی برنی دیو بندی ) تحریف شدہ متن اصل مستند کتابوں کے مقابلے میں ہونے کی وجہ سے مردود ہے ۔ ذیل اللآلی وغیرہ کی ع بارات سے معلوم ہوتا ہے کہ پیغلطی بذات خود علامہ سیبوٹی کو حافظ ابن الجوزی کا کلام نہ بجھنے کی وجہ سے لگی ہے ۔ بہر حال امام دارقطنی سے ثابت شدہ قول کے مقابلے میں سیوطی وابن الجوزی وغیرھما کے حوالے مردود ہیں ۔ ان دونوں ( خطیب و دارقطنی ) کے اقوال میں متقدم واوثق ہونے کی وجہ سے دارقطنی کے قول کو ہی ترجیح حاصل ہے ۔ فریق اول کی معرکۃ الآراء دلیل : جولوگ امام ابو حنیفہ رحمہ اللہ کو تابعی مانتے یا منواتے ہیں وہ ایک معرکۃ الآراء دلیل پیش کرتے ہیں : محمد بن سعد ( کا تب الواقدی ) نے ( طبقات میں ) کہا : " حدثنا أبو الموفق سيف بن جابر قاضي واسط قال : سمعت أبا حنيفة يقول : قدم أنس بن مالك الكوفة ونزل النخع وكان يخضب بالحمرة ، قد رأيته مرارا “ ( عقود الجمان فی مناقب النعمان ص ۴۹ ، الباب الثالث واللفظ له ، تذکرة الحفاظ للذهمی از ۱۸ ات ۱۲۳ ، مناقب الی حدیقۃ وصاحبيه ابی یوسف محمد بن احسن للذہبی س ۷ ، ۸ ) اس روایت کا خلاصہ یہ ہے کہ ( امام ابوحنیفہ نے کہا کہ میں نے ( سیدنا انس بن مالک ( ن ) کوکوفہ میں دیکھا ۔ عرض ہے کہ اس روایت کا بنیادی راوی سیف بن جابر مجہول الحال ہے ۔ اس کی توثیق کسی مستند کتاب میں نہیں ملی ، دیکھئے اتنکیل بمانی تا نیب الکوثری من الأباطيل ( ج ۱ ص ۱۷۹ ت ۳۴ ) تبصرة الناقد ( ص ۲۱۸ ، ۲۱۹ ) واللمحات إلى مافی انوار الباری من المعالمی الظلمات ( ج ۲ ص ۲۷۷ ) دوسرے یہ کہ یہ روایت ابن سعد کی کتاب''الطبقات ' ' میں موجود نہیں ہے ۔اسے حاکم کبیر ابواحمد محمد بن محمد بن احمد بن اسحاق ( متوفی ۳۷۸ ھ ) نے درج ذیل سند وستن سے روایت کیا ہے : " حدثني أبو بكر بن أبي عمرو المعدل ببخاری : حدثني أبو بكر عبدالله بن محمد بن خالد القاضي الرازي الحبا ل قال : حدثني عبدالله بن محمد بن عبيد القرشي المعروف بابن أبي لدنيا : نا محمد بن سعد الهاشمي صاحب الواقدي : نا أبو الموفق سيف بن جابر قاضي واسط قال : سمعت أبا حنيفة يقول : قدم أنس بن مالك الكوفة ونزل النخع وكان يخضب بالجهر ( ۱ ) قدرأيته مرارا “ ا “ ( کتاب اسامی دالکنی للی کم الکبیر ۷۴ اباب ابي حديقة ) اس روایت کے راوی ابوبکر بن الی : روکی توثیق نا معلوم ہے لہذا معلوم ہوا کہ میسند نہ
( ۱ ) و فی عقود الجمان فی مناقب نی ۴۹.
تو ابن سعد سے ثابت ہے اور نہ امام ابوحنیفہ سے ثابت ہے ، لہذااسے ” فإنه صح ‘ ‘ کہنا غلط ہے ۔ اس کے علاوہ تابعیت امام ابوحنیفہ ثابت کرنے والی موضوع روایات اخبار ابی حنیفہ للصيمري و جامع المسانيدلخوارزمی وکتب مناقب میں بکثرت موجود ہیں جن کا دارو مدار احمد بن الصلت الحمانی وغیرہ جیسے کذابین و جمہولین و محرومین پر ہی ہے ۔ ان روایات پر تفصیلی جرح کے لئے تشکیل اور اللمحات کا مطالعہ کر میں ۔ فریق دوم کی معرکۃ الآراء دلیل : امام معتدل ابواحمد بن عدی الجرجانی رحمہ اللہ ( متوفی ۳۶۵ ھ ) فرماتے ہیں : " ثناه عبدالله بن محمد بن عبدالعـزيـز : حدثني محمود بن غيلان : ثنا المقرئي : سمعت أباحنيفة يقول : ما رأيت أفضل من عطاء وعامة ما أحدثكم خطاء “ ابوحنیفہ نے فرمایا : میں نے عطاء بن ابی رباح تابعی ) سے زیادہ افضل کوئی ( انسان ) نہیں دیکھا اور میں تمہیں عام طور پر جو حدیثیں بیان کرتا ہوں وہ غلط ہوتی ہیں ۔ ( الکامل ۲۴۷۳۶۷ والطبعة الجدید ۲۳۷ ٫ ۸ وسند وسیع ) اس روایت کی سند یح ہے ۔ ( اسانید صحیح فی اخبار الامام الی قلم ص ۲۹۰ ) عبداللہ بن محمد بن عبدالعزیز البغوی مطلقا ثقہ ہیں ۔ ( سیر اعلام النبلا ۴۵۵ ٫ ۱۴۰ ) جمہور محدثین نے انہیں ثقہ قرار دیا ہے ۔ ( الاسانید صحیحہ ص ۱۲۲ ) ان پر سلیمانی وابن عدی کی جرح مردود ہے ۔ محمود بن غیلان شفتہ ہیں ۔ تقریب التہذیب ۲۵۱۷ ) ابوعبدالرحمن عبداللہ بن یزید المقر کی ثقہ فاضل ہیں ۔ ( تقریب التہذیب : ۳۷۱۵ ) اس روایت کو خطیب بغدادی نے بھی عبداللہ بن محمد البغوی سے روایت کر رکھا ہے ۔ ( تاریخ بغداد ۴۲۵ ٫ ۱۳ وسند و هیچ ) عبد الله بن محمد البغوی دوسری روایت میں فرمات ے ہیں کہ : " حدثنا ابن المقرئي : نا أبي قال : سمعت أبا حنيفة يقول : ما رأيت أفضل من عطاء وعامة ما ( أ ) حدثكم
به خطأ “ ( مند علی بن الجعد ۷ / ۲ ۷ ۷ ۷ ۲۰۲۲ ، دوسرانسخه ۱۹۷۸ وسند وپیچ ) اس روایت کی سند بھی صحیح ہے ۔ محمد بن عبداللہ بن یزید المقرئی ثقہ ہیں ۔ ( انقر یب : ۲۰۵۴ ) عبداللہ بن یزید المقر کی ثقہ فاضل میں جیسا کہ ابھی گزرا ہے ۔ ابو یحی عبدالحمید بن عبدالرحمن الحمانی فرماتے ہیں : سمعت أبا حنيفة يقول : ما رأيت أحدا أكذب من جابر الجعفي ولا أفضل من عطاء بن أبي رباح “ میں نے ابوحنیفہ کو فرماتے ہوئے سنا : میں نے جابر ابھی سے زیادہ جھوٹا کوئی نہیں دیکھا اور عطاء بن ابی رباح سے زیادہ افضل کوئی نہیں دیکھا ۔ ( العلل اصفر للتر مذی ص ۸۹۱ وسنده حسن ، مسند علی بن الجعد ، رولی عبداللہ البغوی ۷۷۷ ٫ ۲ ۲۱ ۲۰ ، دوسرانسخہ ۱۹۷۷ وسند وحسن ، الکامل لابن عدی ۵۳۷/۲ ، دوسرانسخه ۳۲۷ ٫ ۲ وسنده حسن ، دعنہ الہقی فی کتاب القراءت خلف الامام ص ۱۳۴ تحت ح ۳۲۱ ، دوسرانسخ ص ۱۵۷ تحت ح ۱۳۴۵ سند و حسن ) ابوی الحمانی صدوق حسن الحدیث ہیں ۔ ( تحرر تقریب التہذیب ۳۰۰ ٫ ۲ ت ۳۷۷۱ ) باقی سند بالکل صحیح ہے ۔ ان پیج اسانید سے معلوم ہوا کہ امام ابوحنیفہ رحمہ اللہ نے سیدنا انس بن مالک ﷺ ( صحابی رسول ) کو بالکل نہیں دیکھا ، ورنہ وہ سی بھی نہ فرماتے کہ میں نے عطاء ( تابعی ) سے فضل کوئی نہیں دیکھا ۔ یہ بات عام لوگوں کو بھی معلوم ہے کہ ہر صحابی ہر تابعی سے افضل ہے ۔ جب امام صاحب نے خود اعلان فرمادیا ہے کہ انہوں نے عطاء تابعی سے زیادہ افضل کوئی انسان نہیں دیکھا تو تاج انہوں نے کسی صحابی کونہیں دیکھا ہے تفصیل کے لئے کتاب اللمحات الی مافی انوارالباری من الظلمات پڑھ لیں ۔ خلاصۃ التحقیق : امام ابوحنیفہ تابعی نہیں میں کسی ایک صحابی سے بھی ان کی ملاقات ثابت نہیں ہے ۔ اس سلسلے میں خطیب بغدادی وغیرہ کے اقوال مرجوح و غلط ہیں اور اسماءالرجال کے امام ابوالحسن الدارقطنی کا قول وتحقیق ہی رائج اور صحیح ہے ۔ محمد بن عبد الرحمن السخاوی ( متوفی ۹۰۲ ھ ) لکھتے ہیں کہ ” وقسم معتدل كأحمد والدارقطني وابن عدي “ اور محدثین کرام کا ایک گروہ معتدل ہے جیسے احمد ، دارقطنی اور ابن عدی ، یعنی یہ تینوں معتدل تھے ۔ ( مکالمون في الرجال ص ۱۳۷ ) حافظ ذہبی فرماتے ہیں : " وقسـم كـالـبـخـاري وأحـمـد وأبي زرعة وابـن عـدي معتدلون منصفون “ اور محدثین کا ایک گروہ مثلا بخاری ، احمد بن حنبل ، ابوزرعد ( رازی ) اور ابن عدی معتدل و منصف تھے ۔ ( ذکرمن یعتمد قوله في الجرح والتعدیل ص ۱۵۹ ) تنبیہ : حافظ ذہبی نے کتاب''الموقظہ ' ' میں امام دارقطنی کو بعض اوقات متساہل قرار دیا ہے ۔ ( ۸۳ ) ی قول خطیب بغدادی وعبدالغنی از دی و قاضی ابو الطیب العلم کی وغیر ہم کی توثیق وثنا کے مقابلے میں ہونے کی وجہ سے مردود ہے ۔ دارقطنی بجلی ، ابن خزیمہ اور ابن الجارود کا متساہل ہونا ثابت نہیں ہے ۔ وما علينا إلا البلاغ ( ۲۱ / ربیع الثانی ۱۳۲۶ ھ ) الحديث لا ]
[মুহাদ্দিসুল আছার হাফিজ শাইখ যুবায়ের আল যাঈ রাহ. রচিত "ফাতাওয়া ইলমিয়্যাহ আল মা'রুফ তাওদ্বিইহুল আহকাম" ২য় খণ্ড, ৪০৩-৪০৮ পৃঃ।]
অনুবাদ ও ডিজাইন: সাফিন চৌধুরী
Facebook: Shafin Chowdhury
Our Facebook Group:
The Ideology Of Salaf
Attachments
Last edited: