সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Abu Abdullah

ভ্রান্তি নিরসন হাদীস অস্বীকারের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

Abu Abdullah

Knowledge Sharer

ilm Seeker
Uploader
Salafi User
LV
15
 
Awards
24
Credit
9,466
‘হাসান বলেন, একদা ইমরান ইবনে হুছাইন (রাঃ) রাসূল (ﷺ) থেকে আমাদেরকে হাদীস শুনাচ্ছিলেন। তখন তাকে এক ব্যক্তি বলল, হে আবু নুজাইদ! আমাদেরকে কুরআন শুনাও! তখন ইমরান ইবনে হুছাইন (রাঃ) বললেন, তুমি কি মনে কর তুমি এবং তোমার সাথীরা কুরআন পড়ে আমাকে স্বর্ণ, উট, গরু ও সম্পদের যাকাতের পরিমাণ জানাতে পারবে? অতঃপর ইমরান (রাঃ) বললেন, নিশ্চয় রাসূল (ﷺ) যাকাতে এই এই ফরয করেছেন। তখন সে ব্যক্তিটি বলল, হে আবু নুজাইদ! তুমি আমাকে বাঁচিয়েছ, আল্লাহ তোমাকে বাঁচাক'।

তাহক্বীক্ব : এ হাদীসে হাসান বাছরী (রাঃ) ইমরান হুছাইন (রাঃ) থেকে শ্রবণের বিষয়ে স্পষ্ট শব্দ' ব্যবহার করেছেন। সুতরাং এর সনদ (متصل) সংযুক্ত। এর সকল রাবী ‘মযবূত্ব' (ثقة)।

উমাইয়া ইবনে আব্দুল্লাহ একদা আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বলেন, আমরা মুক্বীম অবস্থার ছালাত ও ভীতিকর পরিস্থিতির ছালাত (صلاة الخوف) কুরআনে পাই, কিন্তু সফরের ছালাতের কথা কুরআনে পাই না। তখন আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, হে আমার ভাতিজা! মহান আল্লাহ আমাদের নিকট মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে পাঠিয়েছিলেন, যখন আমরা কিছুই জানতাম না। আমরা মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে যে কাজ যেমনভাবে করতে দেখেছি ঠিক তাই করি।

তাহক্বীক্ব : হাদীসটির সকল রাবী 'মযবূত্ব' (ثقة) আব্দুল্লাহ ইবনে আবু বকর ব্যতীত। তিনি হাসান পর্যায়ের রাবী।

এ ঘটনা দু'টি প্রমাণ করে যে, খোদ ছাহাবায়ে কেরামের যুগেই এমন কিছু অজ্ঞ ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটেছিল, যারা শুধু কুরআন যথেষ্ট এই সন্দেহে পতিত হয়েছিল। সময় যত গড়িয়েছে, এই ফিতনা তত বিস্তার লাভ করেছে। তাইতো আইয়ূব আস-সাখতিয়ানী (রহঃ) বলেন,

আইয়ূব আস-সাখতিয়ানী (রহঃ) বলেন, যখন তুমি কাউকে হাদীস শুনাও এবং সে বলে যে, ছাড়ো এসব! আমাদেরকে কুরআন শুনাও, তখন জেনো যে, সে নিজে পথভ্রষ্ট এবং অন্যকে পথভ্রষ্টকারী।

তাহক্বীক্ব : এ হাদীসের সকল রাবী মযবৃত্ব (ثقة)।

উছমান (রাঃ)-এর হত্যার পর সমগ্র ইসলামী খিলাফতে ফিতনা ছড়িয়ে পড়ে। এই ফিতনায় খারেজী ও শী'আ ফিরক্বাদ্বয়ের আবির্ভাব ঘটে, যার প্রভাব হাদীসের উপর পড়তে শুরু করে। শী'আরা শুধুমাত্র আহলে বায়াতের হাদীস গ্রহণ করা শুরু করে। খারেজীরা যে সমস্ত ছাহাবীকে কাফের মনে করত, তাদের হাদীস গ্রহণ করা ছেড়ে দেয়। হাদীস অস্বীকার করার এ ফিতনা সবচেয়ে বিস্তার লাভ করে মু'তাযিলা ফিরক্কার মাধ্যমে। তারা হাদীসের উপর বিবেককে প্রাধান্য দেয়া শুরু করে। এমনকি ‘খবারে ওয়াহেদ'ও (خبر واحد) তাদের নিকট দলীলযোগ্য নয়।

উল্লেখ্য যে, ড. মুছত্বফা আল-আযমী তার 'দিরাসাত ফিল হাদীস আন-নাবাবী' (دراسات في الحديث النبوي) বইয়ে বর্ণনা করেন যে, ইসলামের কোন ফিরক্কাই সরাসরি হাদীস অস্বীকার করেনি। ইসলামী শরী'আতের ২য় উৎস হিসাবে হাদীস সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য। কিন্তু তারা নিজেদের মত ও মাযহাব বিরোধী হাদীসগুলো বাতিল করার জন্য বিভিন্ন অসৎ পন্থা ও মূলনীতি অবলম্বন করে! সম্পূর্ণরূপে হাদীস অস্বীকার করার দুই একটা উদাহরণ কাকতালীয়ভাবে পাওয়া গেলেও তা ৩য় শতাব্দীকাল আসতে আসতে শেষ হয়ে যায়। হাদীস সরাসরি অস্বীকার করার ফিতনা ইংরেজদের পৃষ্ঠপোষকতায় বিগত কয়েক শতাব্দীতে জন্ম নেয়।'



১. আল-মু'জামুল কাবীর হা/৩৬৯; মুস্তাদরাকে হাকেম হা/৩৭২।
২. সহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৯৪৬; মুস্তাদরাকে হাকিম হা/৯৪৬।
৩. খত্বীব বাগদাদী, আল-কিফায়া ১/১৬।
৪. মুছত্বফা আল-আ'যমী, দিরাসাত ফিল হাদীস আন-নাবাবী ২২-২৫।
 
Last edited:

Create an account or login to comment

You must be a member in order to leave a comment

Create account

Create an account on our community. It's easy!

Log in

Already have an account? Log in here.

Total Threads
13,411Threads
Total Messages
17,342Comments
Total Members
3,720Members
Latest Messages
Rahat KibriaLatest member
Top