হস্তমৈথুন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা

Joined
Sep 24, 2025
Threads
1
Comments
1
Reactions
19
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

আমার একটি প্রশ্নটি হচ্ছে এখানের উত্তরগুলো কি আলিম কর্তৃক দেওয়া হয়?

আমার মূল প্রশ্নটি একটু ব্যাপক। আমি অনুরোধ করবো যারা পড়বেন, কিছু মনে করবেন না। আমাদের দেশে বিবাহ অত্যন্ত কঠিন। ‘সুশীল’ সমাজ এটাকে হারামের ন্যায় করে ফেলেছে, অপরদিকে ধ্বংসাত্মক বিষয়গুলো সহজলভ্য করেছে। ফলে ছেলেদের জন্যে পরিণত বয়সে বিবাহ জিনিসটা যেনো অসম্ভবের মত হয়ে পড়েছে। সাধারণত বিয়ে হতে হতে ত্রিশ ক্রস হয়ে যায়। বালেগ হবার পর থেকে এই দীর্ঘ সময়টা অনেক কিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হয়, হোক সে পাক্কা দ্বীনদারও। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ডিভাইসে যে পরিমাণ ফিতনা এ যেনো হাতে জ্বলন্ত অগ্নি রাখার ন্যায়। ফলে যে পুরুষ নিজেকে পরনারী থেকে রক্ষা করতে যায়, দেখা যায় সে অন্য দিক দিয়ে বিভিন্ন ধরণের অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে, যেমন সমকামিতা, পর্ণগ্রাফি, গোপন গুনাহ, বালকপ্রীতি* (!), বিকৃত যৌনাচার, হস্তমৈথুন ইত্যাদি।

* বালকপ্রীতি বিষয়টা একটু বিস্তারিত বলি। কোনো একজন আলিম সম্ভবত ইমাম আযযাহাবি রহিমাহুল্লাহ তার কবিরা গুনাহ বইয়ে বলেছিলেন সমকামিতা তিন ধরণের। এর মধ্যে সম্ভবত প্রথম জাত হচ্ছে যারা সুশ্রী দাড়িবিহীন ছেলেদেরকে দেখতে ভালোবাসে; দ্বিতীয় যারা তাদের সঙ্গে খেলতে, আদর করতে এবং তৃতীয় হচ্ছে চূড়ান্ত অপকর্মে যারা জড়িত হয়। দাড়িবিহীন বালকের দিকে সাধারণভাবে তাকানোও অনেক আলেম হারাম বলেছেন। এটি একটি এড়িয়ে চলা অথচ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

আমিও একটা সময় এই সমস্যায় জর্জরিত ছিলাম। আমার কিছু জুনিয়র বন্ধু ছিলো, যাদেরকে আমি বাছাই করেছিলাম। আমি তাদেরকে অত্যধিক ভালবাসতাম, আমার সকল চিন্তা-ভাবনা তাদেরকে ঘিরে ছিলো। আমি সুযোগ পেলে তাদের দিকে ঘনিষ্ঠ হবার চেষ্টা করতাম। নির্জন হলে তাদেরকে আদর-সোহাগ করার চেষ্টা করতাম। এগুলো আমি অনেকটা বুঝতাম, বুঝেও না বুঝার ভান ধরে ‘নারীর ফিতনা থেকে বাঁচার’ উদ্দেশ্যে (!) করতাম। অথচ এতে আমার বিভিন্ন ধরণের গুনাহ হচ্ছিলো।

আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ এখন আমাকে এই পাপ থেকে ফিরিয়ে এনেছেন। কিন্তু সমস্যা বাঁধে অন্য জায়গায়। আমি যেই হস্তমৈথুন ও পর্নগ্রাফি থেকে দুই-তিন বছর ধরে বিরত ছিলাম আল্লাহর রহমতে, সেটিতে আমি লিপ্ত হয়ে গেছি। তবে এই পর্ন সাধারণ নয়, এটি হচ্ছে সমকামিতার পর্ন। সরাসরি সমকামিতাকে আমি ঘৃণা করি। কিন্তু এটি মূলত কমবয়সী ছেলেদের হস্তমৈথুন ও মুখমৈথুন (না'উযুবিল্লাহ) দেখি এবং মানসিকভাবে এসবে আসক্ত হয়ে গেছি। এই চোখের গুনাহটা আমার এক-দেড় বা দুই মাস পর পর একবার বা কয়েকবার হয়ে যায়। তবে, আমি হস্তমৈথুন বিষয়টায় বেশ কিছুদিন লিপ্ত থাকলেও এতে সাধারণত সরাসরি লিপ্ত হই না। বিভিন্ন ধরণের কৌশলে বীর্যপাত ঘটিয়ে ফেলি। যেমন অধিক চাহিদা থাকলে নির্জনে বিবস্ত্র অবস্থায় অপেক্ষা করলেও উত্তেজিত হয়ে বীর্যপাত হয়ে যায়। অথবা আমি শারিরীক উপকারের কথা মনে নিয়ে অলিভ অয়েল দিয়ে যৌনাঙ্গ মালিশ করি, ফলে এটি যদিও উপকার হয় কিন্তু এক পর্যায়ে নিজে থেকেই উত্তেজিত হয়ে বীর্যপাত হয়ে যায়। মাঝেমধ্যে প্রবৃত্তির সাথে সাধারণভাবে স্পর্শ করলে বা ধরে রাখলেও উত্তেজিত হয়ে বীর্যপাত হয়ে যায়। সরাসরি হস্তমৈথুনে কম লিপ্ত হই। এতে তিন বছর পর দুই-এক মাস বা তিন মাসের মত লিপ্ত ছিলাম, আবার তাওবা করেছি আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু, আমার বীর্যপাত না ঘটালে, দুই এক সপ্তাহ এ থেকে বিরত থাকলে আমি শারিরীক-মানসিক জটিলতায় ভুগতে থাকি। আমার মন প্রচণ্ড রকমের অস্থির হয়ে যায় অথবা হতাশ হয়ে যাই। মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বা চলতে-মিশতে অনেক অসুবিধা হয়। লজ্জাস্থানের এলাকায় সুড়সুড়ি অনুভব, পেটে ব্যথা, অস্বাভাবিক কুচিন্তা বা অস্বাভাবিক আচরণ ইত্যাদি প্রকাশ পায়। সর্বোপরি দুই-এক সপ্তাহ যেতে না যেতে বিভিন্ন ধরণের বড়ো গুনাহ যেমন পর্ন কিংবা সমকামিতার মত বিষয়গুলোর ভয়ঙ্কর রকমের ইচ্ছা জাগ্রত হয় এবং অনেক সময় এগুলোতে এগিয়েও যাই। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, সার্বিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আমার জন্যে সীমিত পরিসরে হস্তমৈথুন করা বৈধ হবে কি? আমি কি এ ধরণের শারীরিক ও মানসিক জটিলতা এবং বড়ো পাপ থেকে নিজেকে রক্ষার জন্যে সপ্তাহে দুই-একবার হস্তমৈথুন বা কৌশলে বীর্যপাত করলে কি দোষী হবো? বিস্তারিত বললে উপকৃত হতাম। আমার বিষয়গুলো পড়ে কেউ রাগান্বিত হবেন না।
 
একজন ভালো আলেমের সাথে যোগাযোগ করুন। আমি শুধু এতটুকু বলতে পারি একটি হারাম থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি হারাম কাজে লিপ্ত হওয়া কোন সমাধান নয় বরং এটা শয়তানের প্রতারোনা। আপনি সরাসরি কোন ভালো আলেমের সাথে যোগাযোগ করুন । আমি আমার কথা বলি। আমারও এরূপ অস্তিরতা পূর্বে খুবই বেশি অনুভুত হত। আমি তখন আমার মনকে আনন্দে রাখে ভুলিয়ে রাখতাম যেমন:- সারাদিন শুধু ক্রিকেট খেলতাম , এমন কাজ করতাম যাতে মানুষ আমার প্রশংসা করে, কিন্তু এগুলো সবসময় কাজ করবে না। যখন আপনি রাতে ঘুমানোর জন্য যাবেন তখন এই খেলাধুলা টপ কাজ দেবে না। তখন আমি অন্য পদ্ধতি গ্রহণ করি। আমি আমার মনকে ২ টি অপশন দিতে শুরু করি (১) আমি যদি এখন খারাপ ভিডিও দেখি বা জিনা করি তাহলে আমি ২০ মিনিট বা তার একটু বেশি আনন্দ করতে পারবো কিন্তু বিনিময়ে আমার শরীরের ক্ষতি হবে এবং সাথে আমাকে অনেক বছর আগুনের তাপ সহ্য করতে হবে (২) আমি যদি এখন খারাপ কাজ না করি তাহলে আমার হাত থেকে কয়েক মিনিটের শান্তি চলে যাবে কিন্তু বিনিময়ে আমাকে বিশাল জান্নাত সুন্দর সুন্দর নারী আরো কতকি দেওয়া হবে। এখান মনকে বলি তুমি কোনটা বেছে নিবে। আল্লাহ রহমতে আমার মন সবসময় ২ টি বেছে নেয় আলহামদুলিল্লাহ। আর আমি প্রতিদিন প্রত্যেক ফরজ নামাজের তাশাহুদে বিশেষ ভাবে দুয়া করে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই এবং আমার পূর্বের জীবনের কথা স্বরন করি যে, পূর্বে আমি কত খারাপ ছিলাম সেখান থেকে আল্লাহ আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন, তখন আমার মন নরম হয়ে যায়। আমি নির্জনতা পরিহার করি। এখনও আমার কাছে সুন্দর ছেলেদের দেখতে ভালো লাগে কিন্তু আমি আমার মনকে সবসময় ২ টি অপশন দিতে থাকি যেমন উপরে বললাম। আমি অনেক সময় নামাজ পড়তে যায় এবং দেখি আমার পছন্দের সেই সুন্দর ছেলেটি দ্বিতীয় কাতারে দাঁড়িয়ে থেকে অন্য ছেলেদের সাথে শয়তানি করছে বয়স ১২-১৪ হবে তার ছোট ভাইটিও খুবই সুন্দর কিন্তু ছোট ৮-৯ হবে এবং সামনের কাতারে একজনের যায়গা আছে দাঁড়ানোর জন্য। আমার মন চায় আমি সেই ছেলেটির কাছে দাড়ায় কিন্তু তখনয় আমার মনকে ২ টি অপশন দেয় উপরে উল্লেখিত অনুরূপ। মনকে বলি তুমি কি প্রথম কাতারের ফজিলত চাও জান্নাত চাও নাকি ১০ মিনিটের প্রশান্তি চাও যেটা তোমাকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে এবং তোমার এত বছরের আমল কোন কাজে আসবেনা তুমি কি এই ১০ মিনিটের জন্য তোমার এত বছরের আমল বিফলে দিবে। তখনই আমার মন শান্ত হয়ে যায় এবং আমি প্রথম কাতারে চলে যায় আলহামদুলিল্লাহ। এই প্রশ্নের খেলার মাধ্যমে আল্লাহর রহমতে আমি কয়েক বছর যাবত কোন খারাপ কার্জে লিপ্ত হয়নি। এটা আমার উপর কাজ করে। কিন্তু আপনার উপর কাজ করবে কি তা আপনিই খুঁজে বের করুক। দুয়ার উপর কোন হাতিয়ার নেয় তাই আল্লাহর কাছে দোয়া করুন এবং নিয়মিত সকাল-সন্ধ্যার সকল দোয়া পরুন যেগুলোর ফজিলত এসেছে।
 
Last edited:
@abdullahahmad
আল্লাহু আকবার, এতে রাগান্বিত হবার কিছুই নেই । ভাই, লিখাটি পড়ে যা যতটুকু বুঝলাম আপনার মধ্যে তাওবা/ফিরে আসার একটা প্রবণতা আছে মাশাল্লাহ। আপনি একটু চেষ্টা করলেই নিজেকে এ থেকে বেরিয়ে নিয়ে আসতে পারবেন ইনশাল্লাহ। আপনি ভালো একজন আলেমের সহবতে যাওয়ার চেষ্টা করুন প্রথমত। তিনি আপনার কথাগুলো শুনে আপনাকে সৎ পরামর্শ দিবেন। সেইসাথে আপনি নামাজ এবং নফল রোজা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন ইনশাল্লাহ। ভালো একটা রেজাল্ট পাবেন। আর কখনো একা থাকবেন না। একা হলেই শয়তানি জিনিসগুলো গায়েল করার চেষ্টা করতে থাকবে, নিজেকে সংযত করা কষ্ট হয়ে যাবে। আপনার এই আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যাওয়ার পেছনে মূল যে একটা জিনিশ (শয়তানের বাক্স- মোবাইল) কাজ করছে এর যথেচ্ছ ব্যাবহার কমাতে হবে।
আপনি ভাই নিজে যদি নিজেকে সাহায্য না করেন তাহলে কিছুই ঠিক হবেনা। নিজের সমস্যাগুলো নোট করে একজন আলেমের সহিত পরামর্শ করে নিন দ্রুত।
 
Similar threads Most view View more
Back
Top