If you're in doubt ask الله.
Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
গভীরভাবে চিন্তা করলে স্পষ্ট হয় যে, শুধু কুরআনের উপর নির্ভর করে শরীয়তের বিধি-বিধান বুঝা ও পালন করা সম্ভব নয়। কারণ কুরআনের অনেক মূলনীতি রয়েছে, যার ব্যাখ্যা প্রয়োজন। আবার অনেক আয়াত রয়েছে দুর্বোধ্য, যার তাফসীর ও স্পষ্টকরণ জরুরী। তাই কুরআন বুঝা ও তার থেকে হুকুম বের করা হাদিস ব্যতীত সম্ভব নয়। বস্তুতপক্ষে হাদিস না হলে কুরআনের অনেক বিধান অজানা থেকে যেত, বরং কুরআনের উপর আমল করা দুঃসাধ্য হত।
ইমাম ইব্ন হাযম রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন: “কুরআনের কোথায় রয়েছে জোহর চার রাকাত, মাগরিব তিন রাকাত, এভাবে রুকু করতে হবে, এভাবে সিজদা করতে হবে, এভাবে কিরাত পাঠ করতে হবে ও এভাবে সালাম ফিরাতে হবে; আবার সিয়ামে কি ত্যাগ করতে হবে; স্বর্ণ, রূপা, বকরি, উট ও গরুর যাকাতের নিয়ম কি, তার সংখ্যা ও পরিমাণ কত; হজের মাসায়েল যেমন ওকুফে আরাফা কোন সময়, মুজদালিফা ও আরাফাতে সালাতের নিয়ম কি, পাথর নিক্ষেপ কিভাবে, ইহরামের নিয়ম কি, ইহরাম অবস্থায় কি করব; চোরের হাত কোথা থেকে কাঁটা হবে; মাহরাম হওয়ার জন্য দুধ পানের বয়স কত; কোন বস্তু ও কোন প্রাণী হারাম; যবেহ ও কুরবানির পদ্ধতি কি; হদ কায়েমের নিয়ম কি; কিভাবে তালাক পতিত হয়; বেচাকেনার নিয়ম, সুদের বিস্তারিত বর্ণনা; বিচার, ফয়সালা ও দাবি-দাওয়ার সুরাহা ইত্যাদি। অনুরূপ কসম করা, মাল জমা সঞ্চিত করা, উন্নয়ন ও আবাদ করা ইত্যাদি ফিকাহের অধ্যায়গুলো কুরআনের কোথায় রয়েছে? বরং যদি কুরআন ও আমাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে আমাদের পক্ষে অসম্ভব হবে তার উপর আমল করা। এসব বিষয় জানার একমাত্র উপায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস। এ ছাড়া উম্মতের ইজমার সংখ্যা খুব কম, অতএব হাদিসে ফিরে যাওয়া ব্যতীত কোন উপায় নেই। যদি কোন ব্যক্তি বলে: কুরআনে যা পাই একমাত্র তাই গ্রহণ করব, অন্য কিছু নয়, তাহলে সবার ঐক্যমত্যে সে কাফের”।
মুতাররিফ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে শিখখিরকে বলা হয়েছিল: আমাদেরকে কুরআন ব্যতীত কিছু বলবেন না, তিনি বলেন: আল্লাহর কসম আমরাও তাই চাই, কিন্তু কুরআন সম্পর্কে আমাদের চেয়ে অধিক জানেন কে?[1]
ইমরান ইবনে হুছাইন রাদিয়াল্লাহ আনহুকে জনৈক ব্যক্তি বলেছিল: “তোমরা আমাদেরকে শুধু হাদিস বল, অথচ তার কোন প্রমাণ আমরা কুরআনে পাই না”, ইমরান রেগে বললেন: তুমি আহমক, তুমি কি কুরআনের কোথাও পেয়েছি জোহর চার রাকাত, তাতে আস্তে কিরাত পড়তে হবে? অতঃপর তিনি সালাত ও যাকাত ইত্যাদির কথা বলেন। তিনি বলেন: তুমি এসব বিষয় কুরআনে বিস্তারিত পেয়েছ, নিশ্চয় পাওনি, এসব বিষয় কুরআন অস্পষ্ট রেখেছে, কিন্তু হাদিস তার ব্যাখ্যা দিয়েছে”।
প্রকৃতপক্ষে হাদিস থেকে যা গ্রহণ করা হয়, তার উৎস কুরআনুল কারীম ও তার মূলনীতি। আল্লাহ তা‘আলা নিজ ঘোষণায় কুরআনের ব্যাখ্যা হাদিসের উপর ছেড়ে দিয়েছেন। তাই হাদিস আঁকড়ে ধরার অর্থ কুরআন আঁকড়ে ধরা, হাদিস ত্যাগ করার অর্থ কুরআন ত্যাগ করা। সাহাবায়ে কেরাম ও আদর্শ পূর্বসূরিগণ তাই বুঝেছেন। একদা আব্দুল্লাহ ইব্নে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন:
“আল্লাহর লানত হোক সেসব নারীদের উপর, যারা দেহাঙ্গে উল্কি উৎকীর্ণ করে এবং যারা করায়; যারা ভ্রু চেঁছে সরু (প্লাক) করে, এবং যারা সৌন্দর্যের জন্য দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করে, তারা আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃতকারী”। এ কথা বনু আসাদ বংশের জনৈক মহিলা শুনে, যার নাম উম্মে ইয়াকুব, সে ইবনে মাসউদের নিকট এসে বলে: আমি শুনেছি আপনি অমুককে অমুককে লানত করেছেন? তিনি বললেন: আমি কেন তাকে লানত করব না, যাকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত করেছেন, এবং যার কথা আল্লাহর কুরআনে রয়েছে! সে বলল: আমি পূর্ণ কুরআন পড়েছি, কিন্তু আপনি যা বলেন তা তো পাই নি? তিনি বললেন: তুমি কুরআন পড়লে অবশ্যই পাইতে, তুমি কি পড়নি:
“আর রাসূল তোমাদেরকে যা দেয় তা গ্রহণ কর এবং যার থেকে তোমাদের নিষেধ করে তার থেকে বিরত থাক”।[2] সে বলল: অবশ্যই, তিনি বললেন: নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসব কর্ম থেকে নিষেধ করেছেন”।[3]
এ থেকে প্রমাণিত হল যে, হাদিসকে দলিল হিসেবে গ্রহণ করা ও তার উপর আমল করা ওয়াজিব, এবং আনুগত্য ও অনুসরণের ক্ষেত্রে হাদিস কুরআনের সমমর্যাদার। হাদিস থেকে বিমুখ হওয়া প্রকৃতপক্ষে কুরআন থেকে বিমুখ হওয়া। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য করা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর আনুগত্য করা এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাফরমানি করা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর নাফরমানি করা। অতএব গোমরাহি ও পথভ্রষ্টতা থেকে নিরাপদ থাকার একমাত্র পথ কুরআন ও হাদিসকে আঁকড়ে ধরা।
[1] অর্থাৎ আমরা কুরআনই চাই, কিন্তু আমাদের চেয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিক কুরআন জানেন, তাই কুরআন বুঝার জন্যই তার হাদিস গ্রহণ করতে হবে।
[2] সূরা আল-হাশর: (৭)
[3] বুখারি: (৪৮৮৬)
ইমাম ইব্ন হাযম রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন: “কুরআনের কোথায় রয়েছে জোহর চার রাকাত, মাগরিব তিন রাকাত, এভাবে রুকু করতে হবে, এভাবে সিজদা করতে হবে, এভাবে কিরাত পাঠ করতে হবে ও এভাবে সালাম ফিরাতে হবে; আবার সিয়ামে কি ত্যাগ করতে হবে; স্বর্ণ, রূপা, বকরি, উট ও গরুর যাকাতের নিয়ম কি, তার সংখ্যা ও পরিমাণ কত; হজের মাসায়েল যেমন ওকুফে আরাফা কোন সময়, মুজদালিফা ও আরাফাতে সালাতের নিয়ম কি, পাথর নিক্ষেপ কিভাবে, ইহরামের নিয়ম কি, ইহরাম অবস্থায় কি করব; চোরের হাত কোথা থেকে কাঁটা হবে; মাহরাম হওয়ার জন্য দুধ পানের বয়স কত; কোন বস্তু ও কোন প্রাণী হারাম; যবেহ ও কুরবানির পদ্ধতি কি; হদ কায়েমের নিয়ম কি; কিভাবে তালাক পতিত হয়; বেচাকেনার নিয়ম, সুদের বিস্তারিত বর্ণনা; বিচার, ফয়সালা ও দাবি-দাওয়ার সুরাহা ইত্যাদি। অনুরূপ কসম করা, মাল জমা সঞ্চিত করা, উন্নয়ন ও আবাদ করা ইত্যাদি ফিকাহের অধ্যায়গুলো কুরআনের কোথায় রয়েছে? বরং যদি কুরআন ও আমাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে আমাদের পক্ষে অসম্ভব হবে তার উপর আমল করা। এসব বিষয় জানার একমাত্র উপায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস। এ ছাড়া উম্মতের ইজমার সংখ্যা খুব কম, অতএব হাদিসে ফিরে যাওয়া ব্যতীত কোন উপায় নেই। যদি কোন ব্যক্তি বলে: কুরআনে যা পাই একমাত্র তাই গ্রহণ করব, অন্য কিছু নয়, তাহলে সবার ঐক্যমত্যে সে কাফের”।
মুতাররিফ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে শিখখিরকে বলা হয়েছিল: আমাদেরকে কুরআন ব্যতীত কিছু বলবেন না, তিনি বলেন: আল্লাহর কসম আমরাও তাই চাই, কিন্তু কুরআন সম্পর্কে আমাদের চেয়ে অধিক জানেন কে?[1]
ইমরান ইবনে হুছাইন রাদিয়াল্লাহ আনহুকে জনৈক ব্যক্তি বলেছিল: “তোমরা আমাদেরকে শুধু হাদিস বল, অথচ তার কোন প্রমাণ আমরা কুরআনে পাই না”, ইমরান রেগে বললেন: তুমি আহমক, তুমি কি কুরআনের কোথাও পেয়েছি জোহর চার রাকাত, তাতে আস্তে কিরাত পড়তে হবে? অতঃপর তিনি সালাত ও যাকাত ইত্যাদির কথা বলেন। তিনি বলেন: তুমি এসব বিষয় কুরআনে বিস্তারিত পেয়েছ, নিশ্চয় পাওনি, এসব বিষয় কুরআন অস্পষ্ট রেখেছে, কিন্তু হাদিস তার ব্যাখ্যা দিয়েছে”।
প্রকৃতপক্ষে হাদিস থেকে যা গ্রহণ করা হয়, তার উৎস কুরআনুল কারীম ও তার মূলনীতি। আল্লাহ তা‘আলা নিজ ঘোষণায় কুরআনের ব্যাখ্যা হাদিসের উপর ছেড়ে দিয়েছেন। তাই হাদিস আঁকড়ে ধরার অর্থ কুরআন আঁকড়ে ধরা, হাদিস ত্যাগ করার অর্থ কুরআন ত্যাগ করা। সাহাবায়ে কেরাম ও আদর্শ পূর্বসূরিগণ তাই বুঝেছেন। একদা আব্দুল্লাহ ইব্নে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন:
«لعن الله الواشمات، والموتشمات، والمتنمصات، والمتفلجات للحسن المغيرات خلق الله».
“আল্লাহর লানত হোক সেসব নারীদের উপর, যারা দেহাঙ্গে উল্কি উৎকীর্ণ করে এবং যারা করায়; যারা ভ্রু চেঁছে সরু (প্লাক) করে, এবং যারা সৌন্দর্যের জন্য দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করে, তারা আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃতকারী”। এ কথা বনু আসাদ বংশের জনৈক মহিলা শুনে, যার নাম উম্মে ইয়াকুব, সে ইবনে মাসউদের নিকট এসে বলে: আমি শুনেছি আপনি অমুককে অমুককে লানত করেছেন? তিনি বললেন: আমি কেন তাকে লানত করব না, যাকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত করেছেন, এবং যার কথা আল্লাহর কুরআনে রয়েছে! সে বলল: আমি পূর্ণ কুরআন পড়েছি, কিন্তু আপনি যা বলেন তা তো পাই নি? তিনি বললেন: তুমি কুরআন পড়লে অবশ্যই পাইতে, তুমি কি পড়নি:
﴿وَمَآ ءَاتَىٰكُمُ ٱلرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَىٰكُمۡ عَنۡهُ فَٱنتَهُواْۚ ٧ ﴾ [الحشر: ٧]
“আর রাসূল তোমাদেরকে যা দেয় তা গ্রহণ কর এবং যার থেকে তোমাদের নিষেধ করে তার থেকে বিরত থাক”।[2] সে বলল: অবশ্যই, তিনি বললেন: নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসব কর্ম থেকে নিষেধ করেছেন”।[3]
এ থেকে প্রমাণিত হল যে, হাদিসকে দলিল হিসেবে গ্রহণ করা ও তার উপর আমল করা ওয়াজিব, এবং আনুগত্য ও অনুসরণের ক্ষেত্রে হাদিস কুরআনের সমমর্যাদার। হাদিস থেকে বিমুখ হওয়া প্রকৃতপক্ষে কুরআন থেকে বিমুখ হওয়া। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য করা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর আনুগত্য করা এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাফরমানি করা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর নাফরমানি করা। অতএব গোমরাহি ও পথভ্রষ্টতা থেকে নিরাপদ থাকার একমাত্র পথ কুরআন ও হাদিসকে আঁকড়ে ধরা।
সানাউল্লাহ নজির আহমদ
সম্পাদনা : আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
সম্পাদনা : আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
[1] অর্থাৎ আমরা কুরআনই চাই, কিন্তু আমাদের চেয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিক কুরআন জানেন, তাই কুরআন বুঝার জন্যই তার হাদিস গ্রহণ করতে হবে।
[2] সূরা আল-হাশর: (৭)
[3] বুখারি: (৪৮৮৬)