‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

শাসক সিরিজ - ১১ (শাসক কর্তৃক হারাম কাজ করা বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলা)

প্রশ্নঃ কোনো শায়খ বা তালেবুল ইলমকে যদি আমরা শাসক কর্তৃক হারাম কাজ করা বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে দেখি, তাহলে এই কাজ কি তাকে সুন্নাহ থেকে বের করে দেবে?

উত্তরঃ হ্যা, আমরা এই লোককে সুন্নাহর বাইরে ধরব। আমরা তাকে বলব: প্রথমত, এই ধরনের কথা বলাটাই তোমার জন্য বৈধ নয়।

আমরা তাকে বের করে দেওয়ার পর, নসীহত এবং কথা বলার পরও যদি সে এই কাজে অটল থাকে, তবে নিঃসন্দেহে এটা খারেজীদের পন্থা; কারণ একমাত্র তারাই শাসকদের বিরুদ্ধে লোকদের সামনে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়। এটাই খাওয়ারেজে ক'দিয়্যাহ তথা শয্যাশায়ী খারেজীদের (যারা অন্যদের উস্কে দিলেও নিজেরা নামে না) অনুসৃত পথ

তোমরা আব্দুল্লাহ ইবনে উকাইম রহিমাহুল্লাহর কথাটা মনোযোগ দিয়ে শোনো, আলেমগণ তার বিষয়ে মতভেদ করেছেন যে, তিনি কি সাহাবী নাকি সাহাবী নন?-। তিনি বলেছেন: "আমি উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুর হত্যায় অংশগ্রহণের পর আর কারো হত্যায় অংশগ্রহণ করব না। তাকে বলা হলো: আপনি কি তার হত্যায় অংশগ্ৰহণ করেছিলেন?! তিনি বললেন: তার দোষত্রুটি লোকজনের সামনে বলাটাকেই আমি তার হত্যায় অংশগ্রহণ বলে মনে করি।"

অতএব (বোঝা যাচ্ছে যে,) শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দুইভাবে হতে পারে:
১) মুখের মাধ্যমে বিদ্রোহ এবং
২) অস্ত্র নিয়ে বিদ্রোহ।

অস্ত্র নিয়ে বিদ্রোহের বিষয়টা সব্বাই জানে।

আর মুখের মাধ্যমে বিদ্রোহ হয় লোকজনকে বিদ্রোহের বিষয়ে উস্কানি দেওয়ার মাধ্যমে এবং প্রজাদের মনকে শাসকদের ব্যাপারে বিষাক্ত করে তোলার মাধ্যমে।

মুসলিম শাসকদেরকে সম্মান করা এবং তাদের মর্যাদা রক্ষা করা ওয়াজিব। এটা যে আমি বলছি তা নয়, বরং এমনটি খোদ রাসূল ﷺ বলেছেন। এই মতের উপরই চলেছেন সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীনে ইযাম, যেগুলোর দলীল পূর্বে তোমরা শুনেছ। সুতরাং, শাসকদের খারাপ দিকগুলো জনসাধারণের সামনে তুলে ধারা জায়েয নয়।

আমি এই লোককে (যে সবার সামনে শাসকের ভুল আলোচনা করে) জিজ্ঞেস করতে চাই: তুমি কি চাও আমি তোমার ভুলগুলো নিয়ে সবার সামনে রাষ্ট্র করে দিই? এটাই শুধু উত্তর দাও।

তোমরা যাকেই এধরনের কথা বলতে দেখবে, তাকেই এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবে।

আমাদের সবারই ভুল আছে, আছে গুনাহ। রাসূল ﷺ বলেছেনঃ "সব বনী আদমই ভুলকারী, তাওবাকারীরাই তাদের মাঝে সর্বোত্তম।"

আল্লাহর সিত্তীর নামের অসীলায় আমরা আল্লাহর কাছে চাই যে, তিনি যেন দুনিয়া ও আখিরাতে আমাদের এবং তোমাদেরকে (রহমত ও মাগফিরাতে) ঢেকে নেন। তার আবরণ যেন তিনি উঠিয়ে না নেন।

কাউকে তার বন্ধু বা শত্রু কোনো খারাপ কাজ করতে দেখলে সেটা প্রচার করে বেড়াক এটা কেউই পছন্দ করবে না। তাহলে শাসকের কথা কেমন হবে?

এই যে তুমি, প্রশ্নকারী, তোমাকে যদি আমি তোমার সম্পর্কে আমার জানা সব পাপ ও দোষের কথা সবাইকে বলে বেড়াই, তোমার পছন্দ হবে?

এখানে কেউ আছে, যে এটা পছন্দ করে? আমি তোমাদের উদ্দেশ্যে বলছি: আমাদের এখানকার কেউ কি এমনটা পছন্দ করবে?

তাহলে অবশ্যই এক্ষেত্রে ইনসাফ বজায় রাখতে হবে। রাসূল বলেছেনঃ "নিজের জন্য যা ভালোবাসে, তা অন্যের জন্যও ভালোবাসার আগ পর্যন্ত কেউ পূর্ণ মুমিন হতে পারবে না।"
কেউ তোমার দোষত্রুটি লোকজনকে বলে বেড়ালে এখান থেকে মানুষ কি উপকার পাবে? তাদের কোনো ক্ষতি হবে না, কিন্তু তোমার ঠিকই ক্ষতি হবে।

যদি বাস্তবেই অপরাধটি শাসক করেই থাকে, তাহলে তোমার এই জনগণের সামনে এটা বলে বেড়ানোতে কি লাভ? (বরং বিপরীতে) মুসলিম মানসে শাসকদের বিরুদ্ধে মনোভাব জাগিয়ে দেবে। এটা তো জানা কথা ।

তো ভাইটি আমার, তুমি একজন সাধারণ নাগরিক হয়েও নিজের দোষ জনগণের সামনে বলাটাকে পছন্দ করছ না, তাহলে জেনে রেখো, শাসকের মান ও মর্যাদা এর চেয়েও উচ্চতর। কারণ এতে অনেক ক্ষতি নিহিত রয়েছে। সবচেয়ে খতরনাক বিষয় হলো, জনসাধারণের মন থেকে শাসকের প্রতি শ্রদ্ধার ভাব উঠে যাবে। আর এই শ্রদ্ধাবোধ উঠে গেলেই শরয়ী বিধানাবলী অকেজো হয়ে যাবে এবং মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের বহুবিধ উপকার হারিয়ে যাবে; যেমনটি আলেমগণ আলোচনা করেছেন।"

উত্তর প্রদানেঃ শায়খ মুহাম্মাদ বিন হাদী আল-মাদখালী হাফিযাহুল্লাহ।

গৃহীত: https://i.top4top.io/m_23750w6uf0.mp3
 
Last edited by a moderator:

Golam Rabby

Knowledge Sharer

ilm Seeker
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Top Active User
Threads
865
Comments
1,016
Reactions
9,673
Credits
4,363
জাযাকাল্লাহু খাইরন
 

Share this page