অন্যান্য মুরতাদের শাস্তি সম্পর্কে যৌক্তিক জবাব এবং পাল্টা প্রশ্ন

Joined
Jun 12, 2024
Threads
161
Comments
240
Solutions
1
Reactions
1,633
মুরতাদের শাস্তি সম্পর্কে যৌক্তিক জবাব এবং পাল্টা প্রশ্ন :

অভিযোগ -১. ইসলামে ধর্মত্যাগের শাস্তি কেন?

জবাব : ইসলামে প্রত্যেক ব্যক্তির বিশ্বাসের স্বাধীনতা আছে: “ধর্মে কোনো জবরদস্তি নেই” (সুরা আল-বাকারা ২:২৫৬)।

তবে কেউ যদি ইসলাম ত্যাগ করে রাষ্ট্র ও সমাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক ভূমিকা পালন করে, তখন এটি বিশ্বাসের ব্যাপার থাকে না; বরং রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হয়।

ইসলামের দৃষ্টিতে শুধুমাত্র ব্যক্তিগতভাবে ধর্মত্যাগের শাস্তি নেই; শাস্তি মূলত তখনই প্রযোজ্য যখন কেউ মুরতাদ হয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ায় বা রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

অভিযোগ -২. যদি ধর্মত্যাগ ব্যক্তিগত বিষয় হয়, তবে শাস্তি কেন?

জবাব : ইসলাম শুধুমাত্র “ফিতনা” বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী মুরতাদদের জন্য শাস্তির বিধান দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো ব্যক্তি যদি সেনাবাহিনীর গোপন তথ্য শত্রুদের কাছে ফাঁস করে, তবে তা শুধু "ব্যক্তিগত স্বাধীনতা" হিসেবে গণ্য হবে না; রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে বিচার হবে।

অভিযোগ -৩. ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ না করলে কি মুরতাদের শাস্তি হবে?

জবাব : হাদিসে এসেছে:
"যে ব্যক্তি তার ধর্ম পরিবর্তন করে, তাকে হত্যা করো।" (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩০১৭)

কিন্তু একই সঙ্গে ইসলামের ইতিহাস থেকে দেখা যায়, যদি কেউ ধর্মত্যাগ করে শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করত, তাকে হত্যা করা হয়নি।

প্রমাণ: নবিজি (সা.) মক্কার এক লোককে ধর্মত্যাগের পরও হত্যা করেননি (সুনান আবু দাউদ ৪৩৫১)।

অভিযোগ -৪. অন্য ধর্মে ধর্মত্যাগের শাস্তি নেই, তবে ইসলামে কেন?

জবাব : খ্রিস্টান ও ইহুদি ও সনাতন ধর্মেও মুরতাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান ছিল:
“বাইবেলে ধর্মত্যাগের শাস্তি

খ্রিস্টান ও ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থেও ধর্মত্যাগের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান ছিল।

“যদি তোমাদের কেউ আল্লাহকে অস্বীকার করে এবং অন্য দেবতাদের পূজা করে, তবে তাকে হত্যা করো।” (বাইবেল, Deuteronomy ১৩:৬-১০)

"যে ব্যক্তি আল্লাহ ও নবীদের নিন্দা করবে, তাকে হত্যা করা হবে।"(বাইবেল, Leviticus ২৪:১৬)

"যে ব্যক্তি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে, সে হত্যা করা হবে।"(বাইবেল, Exodus ২২:২০)

২- খ্রিস্টানদের ইতিহাসে ধর্মত্যাগের শাস্তি

মধ্যযুগে খ্রিস্টান চার্চ ধর্মত্যাগীদের হত্যা করত। Spanish Inquisition (স্প্যানিশ ইনকুইজিশন)-এ হাজার হাজার মুরতাদকে হত্যা করা হয়েছিল। ক্যাথলিক চার্চের আইন অনুসারে, ধর্মত্যাগ (Apostasy) ছিল মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ।

৩. হিন্দু ধর্মে মুরতাদের শাস্তি

মনুস্মৃতিতে ধর্মত্যাগের শাস্তি
"যে ব্যক্তি তার জন্মগত ধর্ম ত্যাগ করে, সে নষ্ট ও নিকৃষ্ট ব্যক্তি। তাকে সমাজচ্যুত করে শাস্তি দেওয়া উচিত।"(মনুস্মৃতি ৪:৩০)

"যে ব্যক্তি বৈদিক ধর্ম ত্যাগ করে, তাকে হত্যা করাই উত্তম।"(মনুস্মৃতি ৯:২৪০)

৪.হিন্দু ধর্মে ধর্মত্যাগীদের সামাজিক শাস্তি

হিন্দু সমাজে ধর্মত্যাগীদের 'অচ্ছুত' করে রাখা হতো। এখনো ভারতে যারা ইসলাম গ্রহণ করে, তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করা হয়।

আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায়ও বিশ্বাসঘাতকদের (treason) জন্য শাস্তি আছে। যেমন: আমেরিকায় রাষ্ট্রদ্রোহিতার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

বিরোধীদের পাল্টা প্রশ্ন:

১. আপনার দেশ কি রাষ্ট্রদ্রোহিতার শাস্তি বাতিল করবে?

জবাব : যদি কেউ নিজের দেশ ছেড়ে শত্রুর দলে যোগ দেয়, তবে সে বিশ্বাসঘাতক বলে গণ্য হয় এবং মৃত্যুদণ্ড পায়।

তাহলে ইসলামে যারা ধর্মত্যাগ করে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, তাদের শাস্তি কেন অযৌক্তিক হবে?

২. কোনো ধর্ম কি নিজেকে রক্ষা না করে টিকে থাকতে পারে?

খ্রিস্টধর্ম, ইহুদিধর্ম ও হিন্দুধর্মও অতীতে ধর্মত্যাগীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
ইসলাম টিকে থাকার জন্য আত্মরক্ষা করবেই। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করলে যদি ফাঁসি হয়, তবে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী মুরতাদদের শাস্তি কেন অযৌক্তিক হবে?

৩. ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রেও বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তি থাকলে ইসলামে কেন থাকবে না?

রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করলে যদি ফাঁসি হয়, তবে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী মুরতাদদের শাস্তি কেন অযৌক্তিক হবে?

উপসংহার:
মুরতাদের শাস্তি ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে নয়, বরং রাষ্ট্র ও সমাজ রক্ষার জন্য। যারা চুপচাপ ধর্মত্যাগ করে, তাদের শাস্তি নেই; শাস্তি কেবল তাদের জন্য, যারা ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে।

____________________________
ব্রাদার রাহুল হোসেন রুহুল আমিন
তারিখ : ২২ ফ্রেব্রুয়ারি ২০২৫
জলঙ্গী -মুর্শিদাবাদ- ভারত
 
নাস্তিকরা বা অমুসলিমরা যেই অভিযোগ করুক না কেন, তাদের সাথে প্রথমে তর্ক হবে আপনারা আল্লাহ এবং মুহাম্মদ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে শেষ নবী মানেন কি মানেন না । বাকি ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে পরে কথা হবে। আগে সবচেয়ে মূল বিষয়ে কথা হোক। আর একবার যখন তারা আল্লাহ ও রাসূল কে মেনে নেবে তখন আল্লাহর ফায়সালার উপর কেউ কোন প্রশ্ন তুলতে পারবেনা আল্লাহতায়ালা বলে দিয়েছে
لَا یُسۡـَٔلُ عَمَّا یَفۡعَلُ وَ هُمۡ یُسۡـَٔلُوۡنَ
'তিনি যা করেন সে বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হবে না; বরং ওদেরকেই প্রশ্ন করা হবে।"। কারণ তাদের অনেক প্রশ্নের জবাব হয়না আসলে স্রষ্টার কর্তৃত্বের সকল কিছুই বিবেক দিয়ে বোঝানো সম্ভব নয়। এই যুক্তি নিয়ে কত দল যে পথভ্রষ্ট হয়েছে। তাই তাদের সাথে তর্ক একটাই আল্লাহ ও রাসূল সম্পর্কে। উদাহরণ স্বরূপ:- ""এক স্ত্রীর স্বামী এবং পাঁচটা সন্তান সবাই ছোট। হঠাৎ স্বামী মারা গেল। এটা কি সৃষ্টি কর্তার জুলুম নয়? অর্থাৎ কোন সৃষ্টিকর্তাই নেই। থাকলে স্বামী মারা যেত না।"" । আরো হরেক প্রশ্ন। তাই যারা বিবেক দিয়ে জবাব দিতে পারবে না
তাদের কে কোন নাস্তিক প্রশ্ন করলে তারা এই কথাটুকু বলবে । আর একজন মুসলিম হিসেবে এতটুকু জ্ঞান তো থাকতে হবে যা দিয়ে আল্লাহ এবং রাসূলকে চেনা যায়। এভাবে একজন সাধারন মুসলিমের মর্যাদা, নাস্তিক ও আমুসলিমদের উপরে থাকবে। তারা তাদের সাথে তর্ক করে সংশয় সৃষ্টি করতে পারবেনা। সৃষ্টিকর্তা এক এটা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করা সম্ভব এবং রাসুল এবং কুরআনকে বিভিন্ন মোজেজা দ্বারা প্রমাণ করা সম্ভব। তাই একজন সাধারণ মুসলিম কে তা জানতেই হবে। আল্লাহর প্রমাণ এই ভিডিওটি

সতর্কতা:- ইনাকে আলেমরা রাফজি বলে। শুধুমাত্র আল্লাহর পরিচয় জানার জন্য এই ভিডিও দেওয়া। এছাড়াও বই পাওয়া যায় । আমার জানামতে এই ফোরামে আছে।
 
Last edited:
আল্লাহর অস্তিত্ব প্রমাণ নিয়ে বই। ফোরামে আপলোড আছে কিন্তু আমি সার্চ দিয়ে পেলাম না।

 
Last edited by a moderator:
Back
Top