সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Habib Bin Tofajjal

উসূলুল ফিকহ দ্বয়ীফ হাদীছের উপর আমল করা জায়েয নেই, চাই তা ফাদ্বায়েলে আমলের ক্ষেত্রে হোক অথবা অন্যকোনো ক্ষেত্রে হোক।

Habib Bin Tofajjal

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
Q&A Master
Salafi User
LV
17
 
Awards
33
Credit
16,092
আদেশ সংক্রান্ত বিধানগুলোতে সহীহ দলীল ব্যতীত কোনো কথা বলা যাবে না, কোনো বিধান মুস্তাহাব হওয়াটাও একটি অন্যতম আদেশ সংক্রান্ত বিধান। বিধায়, কোনো বস্তু মুস্তাহাব হওয়া সাব্যস্ত করার জন্যেও সহীহ দলীলের প্রয়োজন। তাই আমলের ফযীলত সম্পর্কিত হাদীসগুলোও সহীহ দলীল দ্বারা সাব্যস্ত হতে হবে। কারণ, এগুলোও দায়িত্ব সংক্রান্ত বিধানের অন্তর্ভুক্ত আর সেই বিধানটি হলো মুস্তাহাব হওয়া। আর তাছাড়া সালাফগণ কখনো আমলের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কিত হাদীস ও দীনের অন্যান্য শাখার সাথে সম্পর্কিত হাদীসের মধ্যে কোনো প্রকার পার্থক্য করতেন না। আর এই বিষয়টিকে আরো স্পষ্ট করে “তারা সনদ শক্তিশালী হওয়া, সনদের ভিত্তিতে হাদীস গ্রহণের ব্যাপারে কঠোর হওয়া ও সহীহ সনদের হাদীস অনুসারে আমল করার ব্যাপারে তারা আলোচনা করেছেন, কিন্তু তারা আমলের ফযীলত সম্পর্কিত হাদীসগুলোকে এই সাধারণ নীতি থেকে বাদ দেননি। বরং তাদের কারো থেকে এই ব্যাপারে কখনো কোনো বিবৃতিও আসেনি। এই বিষয়টি, এখন যদি কেউ বলে: ইমাম আহমাদ ও কোনো কোনো ইমাম থেকে এমন বর্ণনা পাওয়া যায়, যেখানে তারা বলেছেন: যখন আমাদের নিকট বিধি-বিধান ও হালাল-হারাম সম্পর্কিত হাদীস আসে, তখন আমরা সেই হাদীসগুলোর ব্যাপারে কঠোরতা প্রদর্শন করি। আর যখন আমাদের নিকট আমলের ফযীলত, ছাওয়াব ও শাস্তি সম্পর্কিত হাদীস আসে, তখন আমরা সহনশীলতা প্রদর্শন করি।

এর উত্তর হলো: এই সহনশীলতার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো হাদীস বর্ণনা করার ব্যাপারে সহনশীলতা প্রদর্শন, আমলের ফযীলত সম্পর্কিত উক্ত দ্বয়ীফ হাদীসের আলোকে আমল করার বৈধতা প্রদানে সহনশীলতা প্রদর্শন উদ্দেশ্য নয়, হাদীস বর্ণনা এক বিষয়, আর হাদীসের উপর আমল করা ভিন্ন বিষয়।

মু'আল্লিমী আল আনওয়ারুল কাশিফা গ্রন্থে (৮৭ পৃষ্ঠা) বলেছেন: অনেক ইমাম হাদীস বর্ণনার ব্যাপারে এতো কঠোর ছিলেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত তার কাছে কোনো হাদীস “সহীহ অথবা ছুহীর নিকটতম অথবা হাদীসটির কোনো শাহেদ হাদীস পাওয়া গেলে হাদীসটি সহীহ হওয়ার সম্ভাবনা আছে” এই বিষয়টি নিশ্চিত না হবে, কিংবা হাদীসটি যদি এর চেয়েও নিম্নস্তরের হয়, তাহলে তিনি কোনোভাবেই উক্ত হাদীসটি বর্ণনা করতেন না।

আবার তাদের মধ্যে এমনও অনেক ইমাম ছিলেন, তিনি যদি এমন হাদীস পেতেন, যা কঠিন পর্যায়ের দুর্বল নয়, যেই হাদীসে কোনো বিধান ও সুন্নাহ এর বর্ণনা নেই, বরং হাদীসটি কোনো একটি সর্বস্বীকৃত আমলের ফযীলতের সাথে সম্পর্কযুক্ত, যেমন পাঁচ ওয়াক্বত সালাত ও এই জাতীয় অন্যান্য বিষয়ের ফযীলত সম্পর্কিত, তাহলে এই অবস্থায় তিনি ঐ হাদীস বর্ণনা করা থেকে নিবৃত্ত হতেন না, তাদের বাক্যে সহনশীলতা বলে এমন সহনশীলতাকেই বোঝানো হয়েছে।

ইমাম নববী “আমলের ফযীলতের সঙ্গে সম্পৃক্ত দ্বয়ীফ হাদীস আমলযোগ্য” এই বিষয়টি ইজমার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত বলে দাবি করেছেন, তবে এই বিষয়টি ইজমার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত কি না, তা বিশ্লেষণের দাবি রাখে।
শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমীয়্যাহ মাজমূ' ফাতাওয়া গ্রন্থে (১/২৫১) বলেছেন: আর এই বিষয়টি হলো এমন যে, যখন কোনো আমল সম্পর্কে এই বিষয়টি নিশ্চিতভাবে জানা যাবে যে, আমলটি কোনো শারঈ দলীল দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে, আর উক্ত আমলের ফযীলতের ব্যাপারে এমন হাদীস বর্ণিত হয়েছে, যা মিথ্যা বলে প্রমাণিত নয়, তাহলে উক্ত আমলের ছওয়াবের বিষয়টি সত্য হতে পারে। কিন্তু কোনো ইমাম এই কথা বলেননি যে, কোনো দ্বয়ীফ হাদীস দ্বারা মুস্তাহাব বা ওয়াজিব বিধান সাব্যস্ত করা যেতে পারে, যে এমন দাবি করে, সে ইজমার বিরোধিতা করে।

আমি বলব: শায়খুল ইসলামের কথায় বুঝা গেল যে, ইজমা ইমাম নববীর দাবির বিপরীত। আর স্বাভাবিকভাবে এটা বোঝা যায় যে, এই ইজমার বিপরীত দাবিগুলো পরবর্তী যুগে সংঘটিত হয়েছে।

শায়খুল ইসলাম মাজমূ' ফাতাওয়া গ্রন্থে (১৮/৬৫) আরো বলেছেন: এমনিভাবে আমলের ফযীলতের সঙ্গে সম্পৃক্ত হাদীসগুলোর উপর আমল করার ব্যাপারে আলেমদের যেই মতামত, তার অর্থ এই নয় যে, দলীল হওয়ার যোগ্য নয় এমন হাদীস দ্বারা মুস্তাহাব সাব্যস্ত করা যাবে। কারণ, মুস্তাহাব হলো একটি শারঈ বিধান। সুতরাং এটা কোনো শারঈ দলীল ব্যতীত সাব্যস্ত হবে না। আর যে কোনো শারঈ দলীল ছাড়াই আল্লাহ সম্পর্কে এই মর্মে সংবাদ দিল যে, আল্লাহ উক্ত আমলটি ভালোবাসেন, সে দীনের মধ্যে এমন বিধান উদ্ভাবন করল, যা পালন করার অনুমতি আল্লাহ দেননি, যেমন কেউ যদি (দলীল বিহীন) কোনো ওয়াজিব বা হারাম বিধান সাব্যস্ত করে। আর এই জন্যেই আলেমগণ মুস্তাহাব নিয়ে মতানৈক্য করেন, যেমন অন্যান্য বিধান নিয়ে মতানৈক্য করেন, বরং এটা দীনের একটি বিধিবদ্ধ মূলনীতি।

শাওকানী ওয়াবলুল গামাম গ্রন্থে (১/৫৪) বলেছেন: অনেক আলেম এই বিষয়ে কোনো শর্ত ছাড়াই দ্বয়ীফ হাদীসের উপর আমল করার অনুমতি দিয়েছেন। আবার অনেক আলেম যেই হাদীস দ্বারা দলীল সাব্যস্ত করা যায় না এমন হাদীসের উপর আমল করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন, আর এটাই সত্যি। কারণ, সকল শারঈ বিধান একই মানের। সুতরাং যেই বিধান শরী‘আতের মাধ্যমে সাব্যস্ত হয়নি, তা শরী‘আতের দিকে সম্বন্ধ করা বৈধ নয় ৷

কারণ হলো আল্লাহ যা বলেননি তা আল্লাহর নামে মিথ্যা বানিয়ে বলা। আর আমলের ফযীলতের সঙ্গে সম্পৃক্ত হাদীসের দিকে যদি কোনো আমলকে সম্পৃক্ত করা হয়, তাহলে এই সম্পৃক্তকরণটা কেমন যেনো নির্দেশিত বস্তুকে নির্দেশক এর প্রতি বা প্রমাণিত বস্তুকে প্রমাণ এর প্রতি নির্দেশ করার ন্যায়। এই অবস্থায় এই হাদীসের উপর আমলকারী ব্যক্তি যদিও সালাত, সিয়াম অথবা যিকর জাতীয় যেকোনো ভালো আমলই করুক না কেন, সে উক্ত কর্মে শরী‘আতসম্মত নয় এমন কর্মকে শরী‘আতসম্মত মনে করায় বিদ'আতী বলে বিবেচিত হবে। আর সেই আমলের প্রতিদান তার বিদ'আতের গুনাহ এর সমানও হবে না। আর দলীল দ্বারা সাব্যস্ত নয় এমন কাজে কখনো একনিষ্ঠ কল্যাণ থাকতে পারে না। বরং এমন কাজের সাথে বিদ'আতের গুনাহ এর ন্যায় অকল্যাণ সংযুক্ত থাকে। আর কল্যাণ অর্জনের চেয়ে অকল্যাণ প্রতিহত করা অধিক জরূরী।

আবার অনেকে বলেছেন: যদি ঐ ফযীলতপূর্ণ আমলটি, যা দুর্বল হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে, সেই হাদীসটি যদি কোনো অন্তর্ভুক্তকারী ব্যাপক অর্থবোধক সহীহ হাদীসের আওতাধীন হয়ে থাকে, যেই হাদীসটি উক্ত আমলের ফযীলতের উপর কোনোভাবে নির্দেশক হয়ে থাকে, তাহলে ঐ ব্যাপারে দুর্বল হাদীসের উপরে আমল করা বৈধ হবে, অন্যথায় বৈধ হবে না। যেমন: মাকরূহ ওয়াক্বতের বাহিরে যদি দুই রাক'আত সালাতের কোনো ফযীলত সম্পর্কিত হাদীস বর্ণিত হয়ে থাকে, তাহলে উক্ত দুই রাক'আত সালাত আদায় করলে তাতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ, ব্যাপক অর্থবোধক সাধারণ দলীল কোনো শর্ত ছাড়াই সালাতের ফযীলতের উপর নির্দেশক, তবে কিছু বিশেষ দলীলও আছে।

কেউ কেউ বলেছেন: যদি উক্ত সহীহ ব্যাপক অর্থবোধক সাধারণ দলীলের উপর আমল করা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, তাহলে সাব্যস্ত হয়নি এমন বিশেষ হাদীসটিকে বিবেচনায় রাখলে একমাত্র বিদ'আতে পতিত হওয়া ছাড়া আর কোনো ভালো পরিণাম নেই। আর যদি একই আমল শুধুমাত্র বিশেষ ঐ দুর্বল দলীলের আলোকে করে থাকে, তাহলে প্রথম কথাই প্রযোজ্য, অর্থাৎ বিদ'আতে লিপ্ত হওয়া ছাড়া আর কোনো ফলাফল নেই।

আর যদি একই আমলটি উভয় দলীলকে (অর্থাৎ ব্যাপক অর্থবোধক সাধারণ দলীল ও বিশেষ দলীল, যা দুর্বল হাদীস দ্বারা প্রমাণিত) বিবেচনায় রেখে করে, তাহলে এই আনুগত্যমূলক কাজটি বিদ'আত সম্বলিত একটি আমল হবে। কারণ, একটি শারঈ ‘ইবাদতকে শরী'আহ বহির্ভূত আমলে রূপান্তরিত করা হয়েছে। সহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব এর ভূমিকায় আল্লামা আলবানী রহিমাহুল্লাহু – এই মাসআলার একটি দীর্ঘ চমৎকার বিশ্লেষণ করেছেন, যার দরকার হয়, সে যেনো সেখান থেকে দেখে নেয়।

 

Create an account or login to comment

You must be a member in order to leave a comment

Create account

Create an account on our community. It's easy!

Log in

Already have an account? Log in here.

Total Threads
13,138Threads
Total Messages
16,794Comments
Total Members
3,506Members
Latest Messages
sk masudLatest member
Top