Joynal Bin Tofajjal
Student Of Knowledge
Forum Staff
Moderator
Uploader
Exposer
HistoryLover
Salafi User
- Joined
- Nov 25, 2022
- Threads
- 344
- Comments
- 475
- Reactions
- 5,426
- Thread Author
- #1
জাদুটোনার চিকিৎসায় সোনামুখীর রস পান
ভূমিকা
আল্লাহর রাসূল (ﷺ) থেকে বর্ণিত ওষুধগুলোর মধ্যে সোনামুখীর রেচক সবচেয়ে উপকারি। জাদুটোনায় ব্যবহৃত জিনিসপত্র বা তাবিজ-কবচ যদি রোগীর পেটের মধ্যে থেকে থাকে তাহলে সম্ভব হলে এগুলো দ্রুত রোগীকে বমি করানোর মাধ্যমে বের করে আনতে হবে। আর রোগী যদি বমি করতে না পারে, তাহলে তাকে সোনামুখীর রস পান করতে দিতে হবে। জাদুটোনায় আক্রান্ত অনেকেই এটা পরীক্ষা করে দেখেছেন এবং আল্লাহর রহমতে বেশ ভালো উপকার পেয়েছেন।
সোনমুখীর গুণাগুণ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। আসমা বিনতে উমাইস থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) একবার তাকে জিজ্ঞেস করলেন:
“রেচক ওষুধ হিসেবে তুমি কী ব্যবহার কর?”
তিনি বললেন: “স্পার্জ”। আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেন:
“এটা গরম, গরম”।
তিনি বলেন: এরপর আমি রেচক হিসেবে সোনামুখীর রস ব্যবহার করলাম। আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এ সম্পর্কে বলেন:
“মৃত্যু থেকে নিরাময় লাভের জন্য যদি কোনো ওষুধ থাকত, তাহলে তা হত সোনামুখী।” [আত্-তিরমিযী, ৬/২৫৪, ২৫৬। আল আলবানি বলেন: এই হাদিসটি যঈফ। যঈফুল জামি, হাদিস নং-৪৮০৭]
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেন,
“তোমরা যেসব ওষুধ ব্যবহার কর, তার মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট হল, যা তোমরা মুখের পাশ দিয়ে লাগাও, নাকের ড্রপ, কাপিং ও রেচক।” [ইমাম আত-তিরমিযী হাদিসটি হাসান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আল তিব্ব আল নববী গ্রন্থে আল হাকিম ও আবু নাঈম কর্তৃক হাসান হিসেবে বর্ণিত হয়েছে।]
মুখের পাশ দিয়ে ওষুধ লাগানো (লাদুদ): এর মানে হল, হাতের আঙ্গুল দিয়ে ওষুধ প্রয়োগ করা। আরবি শব্দ লাদুদ এসেছে লাদীদুল ওয়াদি (উপত্যকার পাশ থেকে) বাক্য থেকে। নাকের ড্রপ মানে হল, যে ওষুধ নাকের মধ্যে লাগানো হয় অথবা যা মুখের ভেতর দিয়ে টেনে নেয়া হয়। আর রেচক ওষুধ প্রয়োগ করা হয় মলত্যাগ স্বাভাবিক করার জন্য।
আসমা বিনতে উমাইস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আল্লাহর রাসূল (ﷺ) তার গৃহে প্রবেশ করলেন। তখন তিনি স্পার্জ গাছের পাতা পিষছিলেন। তখন এটা দেখে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বললেনঃ
“ওটা দিয়ে তুমি কী তৈরি করছ?”
তিনি বললেন: এটা আমরা পান করি। রাসূল (ﷺ) সাল) বললেন:
“মৃত্যুকে দূরে সরানো বা মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার জন্য যদি কোন ওষুধ থাকত, তাহলে তা হত সোনামুখী পাতা।” [মুসতাদরাক আল হাকীম, ওমর বিন আল খাত্তাব (রা.) বর্ণিত হাদিস থেকে নেয়া]
আল হাকীম বলেন: হাদীসটির সনদ সহীহ। আল যাহাবি তার সঙ্গে একমত হয়েছেন।
ইবনে মাজাহ তার সুনানের কিতাবুল তিব্বে (ওষুধ অধ্যায়) বর্ণনা করেছেন, ইবরাহিম বিন আবু আবলাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু উবাই বিন উম্ম হারামকে বলতে শুনেছি, তিনি আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করেছিলেন, তারা উভয়েই কিবলামুখী ছিলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেন:
“তোমরা সোনামুখী পাতা ও মধু ব্যবহার করবে, কারণ এ দুটিতে আল সাম ব্যতীত সব রোগের জন্য নিরাময় রয়েছে।”
তখন বলা হল: হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) আল সাম কী?
তিনি বললেন; “মৃত্যু”।
যেভাবে পানীয় তৈরি করবেন
অসুস্থ ব্যক্তি কিছু সোনামুখী পাতা সংগ্রহ করে আনবেন এবং এগুলোকে এক লিটার পানি ভর্তি পাত্রে রাখবেন। অতঃপর পাত্রটি উনুনে বসিয়ে আগুনে সেদ্ধ করবেন এবং পরে ছেকে নিয়ে ঠাণ্ডা করবেন। এরপর রোগী এখান থেকে খালি পেটে তিন কাপ পান করবেন। মিষ্টি স্বাদের জন্য এর সঙ্গে মধু মিশ্রিত করা যেতে পারে। এটা পান করার পর রোগী তার অন্ত্রে একটু ঢিলেঢালাভাব অনুভব করবেন। পানীয়ের কার্যকারিতা টের পাওয়া যাবে সাত ঘণ্টার মধ্যে এবং এর কার্যকারিতা থাকবে বাইশ ঘণ্টা। পর্যন্ত। এ সময় পেটে মৃদু ব্যথা হতে পারে, তবে অন্ত্রে কোনো ইনফেকশন হবে না। সোনামুখীর রসের কার্যকারিতা শুরু হলে অন্ত্র এর সকল দূষিত পদার্থ বের করে দেবে এবং আল্লাহ চাইলে একই সঙ্গে জাদুটোনার সকল তাবিজ-কবচও বের হয়ে যাবে।
এটা অনেক ক্ষেত্রেই পরীক্ষা করা হয়েছে এবং আল্লাহর রহমতে ভালো উপকার পাওয়া গেছে।
ড. আলী আল বার হাদীস অনুসারে সোনামুখী পাতা ও এর গুণাগুণের উপর একটি নিবন্ধ লিখেছেন এবং এ নিবন্ধে তিনি সোনামুখী পাতার অনেক ভেষজ গুণের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন:
সোনামুখী পাতাকে মল নরম করার রেচক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এবং এটি মোটেও ক্ষতিকর নয়। এটা সরাসরি মলাশয়ে কাজ করে। সোনামুখী উত্তম রেচক, উৎকৃষ্ট মানের ওষুধ, এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই এবং এটি ভারসাম্যপূর্ণ ও শুষ্ক। এর উপকারি গুণাগুণগুলো হল, বিষন্নতা আনয়নকারী চিন্তার বিরুদ্ধে কাজ করে, পা ফাটা, পেশীর প্রসারণ বা টান, চুলের স্ফিতি, উকুন, খোস-পাঁচড়া, ফুসকুড়ি ও শরীরে চুলকানির। বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে। জলপাইয়ের তেলের সঙ্গে গরম করে এটি পান করা হয় এবং এটি শরীরের দূষিত পদার্থ বের করে দেয়। এছাড়া এটি পিঠের ও কটিদেশের ব্যথার বিরুদ্ধেও কাজ করে।
সোনামুখীর আরেকটি ভালো গুণ হল এটি কালো পাচক রস ও কাশির শ্লেষ্মা বের করে দেয় এবং হৃদপিণ্ডকে শক্তিশালী করে। দীর্ঘস্থায়ী ও তীব্র মাথা ব্যথা এবং মৃগীরোগের ক্ষেত্রেও এটি কাজ করে। এটা হেমোরয়েড দুর করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে এটিকে ব্যবহার করা হয় পায়খানা নরমকারক রেচক হিসেবে। পায়খানা নরমকারক এমন কোনো ওষুধ পাওয়া যাবে না, যাতে উপাদান হিসেবে সোনামুখীর রস নেই। সোনামুখী সর্বোৎকৃষ্ট রেচক এতে কোনো সন্দেহ নেই। [ড. মোহাম্মাদ আলী আল বার, আল সিনা ওয়াল সানুত]
জাদুটোনা দ্বারা যদি মাথা আক্রান্ত হয়, অর্থাৎ কবচ যদি কোনো পারফিউমের ঘ্রাণের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করানো হয়, এ কবচের উদ্দেশ্য হল, দৃষ্টিবিভ্রম, হ্যালুসিনেশন, পাগলামি অথবা অন্যান্য অসুস্থতা তৈরির মাধ্যমে মাথা আক্রান্ত করা, তাহলে এক্ষেত্রে এ জাদুটোনার জন্য কাপিং থেরাপি উপযুক্ত মাধ্যম। আল্লাহ চাইলে এ থেরাপি ভালো কাজ করবে।