সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

উসূলুল হাদিস খবরে আহাদ (خبر آحاد) কি? ও তার প্রকারভেদ।

Habib Bin Tofajjal

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Threads
689
Comments
1,221
Solutions
17
Reactions
6,867
Credits
5,558
খবরে আহাদ (خبر آحاد) হচ্ছে যে হাদিসে মুতাওয়াতিরের শর্তাবলী অবর্তমান।

খবরে আহাদ এর মান: গবেষণাসাপেক্ষ জ্ঞান দান করে। অর্থাৎ, তার গ্রহণ-বর্জনের ব্যাপারটা গবেষণা, বিবেচনা ও যুক্তি-প্রমাণের উপর নির্ভরশীল।

খবরে আহাদ এর প্রকারভেদ:
খবরে ওয়াহেদ তার সুত্রাবলীর সংখ্যা হিসাবে ৩ প্রকার: মাশহুর, আযীয ও গারীব।

১। মাশহুর (প্রসিদ্ধ)
মাশহুর হাদিস কাকে বলে?
- যে হাদিসকে তার সনদের প্রত্যেক স্তরে ৩ বা ততোধিক বর্ণনাকারী বর্ণনা করেছেন। যতক্ষণ তা মুতাওয়াতিরের পর্যায়ে না পৌছে।

মাশহুর হাদিস এর উদাহরণ:
“নিঃসন্দেহে আল্লাহ লোকদের নিকট থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ইল্ম তুলে নেবেন না; বরং উলামা সম্প্রদায়কে তুলে নেওয়ার মাধ্যমে ইল্ম তুলে নেবেন (অর্থাৎ, আলেম দুনিয়া থেকে শেষ হয়ে যাবে।) অবশেষে যখন কোন আলেম বাকি থাকবে না, তখন জনগণ মুর্খ অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদেরকে নেতা বানিয়ে নেবে এবং তাদেরকে ফতোয়া জিজ্ঞাসা করা হবে, আর তারা না জেনে ফতোয়া দেবে, ফলে তারা নিজেরাও পথভুষ্ট হবে এবং অপরকেও পথভুষ্ট করবে।” (বুখারী ৭৩০৭, সুসালিম ৬৯৭১ নং)

মাশহুর হাদিস আবার ২ ভাগে বিভক্ত: মুস্তাফীয ও মাশহুর গায়রুল ইসত্বিলাহী।

(এক) মুস্তাফীয
মুস্তাফীয হাদিস কাকে বলে?
- এর সংজ্ঞায় তিনটি মত আছে।
(ক) এটি মাশহুর হাদিসের প্রতিশব্দ।​
(খ) এটি মাশহুর থেকে খাস। (শর্ত হল, তার সনদের উভয় প্রান্ত সমান হবে। অথচ এ শর্ত মাশহুরে নেই।)​
(গ) এটি মাশহুর থেকে আম। (প্রাগুক্তের বিপরীত।)​

(দুই) মাশহুর গায়র ইসত্তিলাহী
মাশহুর গায়রুল ইসত্বিলাহী হাদিস কাকে বলে?
- যে হাদিস মানুষের মুখে প্রসিদ্ধ, যাতে কোন গণ্য শর্তাবলী নেই।

মাশহুর গায়রুল ইসত্বিলাহী এর প্রকারভেদ
(ক) যা বিশেষ করে আহলুল হাদিসদের মাঝে 'মাশহুর' (প্রসিদ্ধ)​
উদাহরণ: আনাস (রা.)এর হাদিস, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) রি'ল ও যাকওয়ান (গোত্রদ্বয়) এর উপর একমাস বদ্দুআ ক'রে রুকুর পরে কুনুত করেছেন। (বুখারী, মুসলিম)​
(খ) যা আহলুল হাদিস, উলামা ও জনসাধারণের মাঝে 'মাশহুর' (প্রসিদ্ধ)​
উদাহরণ: “প্রকৃত মুসলিম সেই, যার জিভ ও হাত থেকে সকল মুসলমান নিরাপদ থাকে।” (বুখারী ৯ মুসলিম ১৭০৭২)​
(গ) যা ফুকাহাদের মাঝে 'মাশহুর' (প্রসিদ্ধ)।​
উদাহরণ: “আল্লাহর নিকট সবচেয়ে ঘৃণ্য হালাল হল তালাক।” (আবু দাউদ ২১৮০, ইবনে মাজাহ ২০১৮নং, হাদিসটি যয়ীফ)​
(ঘ) অসুলীদের নিকট 'মাশহুর' (প্রসিদ্ধ)​
উদাহরণ: “নিশ্চয় মহান আল্লাহ আমার উম্মতের ভুল, বিস্মৃতি এবং যার উপর তাকে নিরুপায় করা হয়, তার (পাপ)কে মার্জনা করেন।” (ইবনে মাজাহ ২০৪৫নং বাইহাকী! তাবারানী ইবনে হিব্বান)​
(ঙ) নহবীদের মাঝে 'মাশহুর' (প্রসিদ্ধ)​
উদাহরণ: “সুহাইব ভালো বান্দা। যদি সে আল্লাহকে ভয় নাও করত, তবুও তার অবাধ্যাচরণ করত না।” (ভিত্তিহীন)​
(চ) জনসাধারণের মাঝে 'মাশহুর” (প্রসিদ্ধ)​
উদাহরণ: “জলদিবাজি শয়তানের পক্ষ থেকে।” (তিরমিযী ২০ ১২নং)​

মাশহুর হাদিসের মান
মাশহুর ইসত্তিলাহী হাদিসের ব্যাপারে বলা যাবে না যে, তা সহীহ অথবা যয়ীফ। যেহেতু যাচাই-বাছাইয়ের পরই বলা যাবে, তা কী? কখনো তা সহীহ হয়, কখনো হাসান হয়, কখনো যয়ীফ ও মাওযু* হয়। তবে সহীহ হলে সে হাদিস আযীয ও গারীব হাদিসের উপর প্রাধান্য পাওয়ার বৈশিষ্ট্য লাভ করবে।

মাশহুর গায়র ইসত্বিলাহীর মধ্যেও সহীহ-যয়ীফ-হাসান আছে। তার মানগত শ্রেণী বিচার-গবেষণার পরই জানা যেতে পারে।

২। আযীয
আযীয হাদিস কাকে বলে?
- যার সনদের সকল স্তরে বর্ণনাকারী যেন দু'জন থেকে কম না হয়৷

আযীয হাদিস এর উদাহরণ:
“তোমাদের মধ্যে কেউ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি তার নিকট তার পিতা, সন্তান এবং সকল মানুষ অপেক্ষা প্রিয়তম হয়েছি।” (বৃখারী ১৫, মুসলিম ১৭৮)

৩। গারীব
গারীব হাদিস কাকে বলে?
- যে হাদিসের বর্ণনাকারী (যে কোনও স্তরে) মাত্র একজন হয়।

রাবীর গারাবাত বা একাকিত্ব হওয়ার জায়গা হিসাবে গারীব হাদিস দুই শ্রেণীর হয়: গারীব মুত্বলাক্ব ও গারীব নিসবী।

(ক) গারীব মুত্বলাক্ব: গারীব মুত্তলাকু হল সেই হাদিস, যার মূল সনদে গারাবাত থাকে। (বর্ণনাকারী সাহাবী একক হন।)​
উদাহরণ: উমার বিন খাত্তাব (রা.)এর হাদিস, “যাবতীয় কার্য নিয়ত বা সংকল্পের উপর নির্ভরশীল।” (বুখারী ১নং মুসলিম ১৯০৭নং)​
হাদিসটি কেবল উমার ৯ একাই বর্ণনা করেছেন।​
(খ) গারীব নিসবী:গারীব নিসবী হল সেই হাদিস, যে হাদিসের গারাবাত থাকে তার মধ্য সনদে নির্দিষ্ট কোন একটি বর্ণনাকারীর একাকিত্ব খেয়াল করেই এই নাম দেওয়া হয়েছে।​
উদাহরণ: যা মালেক যুহরী থেকে এবং তিনি আনাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নবী ষ্ট নিজ মাথায় শিরস্বাণ পরিহিত অবস্থায় মক্কায় প্রবেশ করেছেন। (বুখারী ১৮৪৬নং)​
উক্ত হাদিসকে যুহরী থেকে মালেক এককভাবে বর্ণনা করেছেন।​

গারীব নিসবীর অন্যান্য প্রকারভেদ:
১। হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য রাবীর একাকিত্ত।
যেমন বলা হয়, হাদিসটিকে অমুক ছাড়া কোন নির্ভরযোগ্য (সিক্বাহ) বর্ণনা করেননি।

২। নির্দিষ্ট রাবী থেকে বর্ণনায় নির্দিষ্ট রাবীর একাকীত্ব।
যেমন বলা হয়, হাদিসটিতে অমুক থেকে বর্ণনায় অমুক একক। যদিও হাদিসটি অমুক ছাড়া অন্য একাধিক সূত্রে বর্ণিত।

৩। কোন শহর বা এলাকাবাসীর রাবীদের একাকিত্ত।
যেমন বলা হয়, হাদিসটিকে এককভাবে মক্কাবাসী অথবা শামবাসী বর্ণনা করেছেন।

৪। কোন শহর বা এলাকাবাসী থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন শহর বা এলাকাবাসীর রাবীদের একাকীত্ব।
যেমন বলা হয়, বাসরাবাসীরা হাদিসটিকে মদীনাবাসীদের থেকে এককভাবে বর্ণনা করেছেন। অথবা শামবাসীরা হিজাযবাসীদের থেকে এককভাবে বর্ণনা করেছেন।

গারীবের অন্য এক প্রকারভেদ:
সনদ অথবা মতনের গারাবাত খেয়াল ক'রে গারীবের প্রকারভেদ

১। সনদ ও মতন উভয়ের দিক থেকে গারীব।
যে হাদিসের মতনকে মাত্র একজন রাবী বর্ণনা করেছেন।

২। মতনের দিক থেকে নয়, কেবল সনদের দিক থেকে গারীব।
যেমন একটি হাদিসের মতনকে সাহাবাগণের একটি জামাআত বর্ণনা করেছেন। কিন্তু (ভিন্ন সুত্রে) সেই মতনকে অন্য এক সাহাবী থেকে একজন এককভাবে বর্ণনা করেছেন।



শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল মাদানী।​
 
Last edited:
COMMENTS ARE BELOW
Threads
0
Comments
16
Reactions
8
Credits
9
খবরে আহাদ (خبر آحاد) হচ্ছে যে হাদিসে মুতাওয়াতিরের শর্তাবলী অবর্তমান।

খবরে আহাদ এর মান: গবেষণাসাপেক্ষ জ্ঞান দান করে। অর্থাৎ, তার গ্রহণ-বর্জনের ব্যাপারটা গবেষণা, বিবেচনা ও যুক্তি-প্রমাণের উপর নির্ভরশীল।

খবরে আহাদ এর প্রকারভেদ:
খবরে ওয়াহেদ তার সুত্রাবলীর সংখ্যা হিসাবে ৩ প্রকার: মাশহুর, আযীয ও গারীব।

১। মাশহুর (প্রসিদ্ধ)
মাশহুর হাদিস কাকে বলে?
- যে হাদিসকে তার সনদের প্রত্যেক স্তরে ৩ বা ততোধিক বর্ণনাকারী বর্ণনা করেছেন। যতক্ষণ তা মুতাওয়াতিরের পর্যায়ে না পৌছে।

মাশহুর হাদিস এর উদাহরণ:
“নিঃসন্দেহে আল্লাহ লোকদের নিকট থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ইল্ম তুলে নেবেন না; বরং উলামা সম্প্রদায়কে তুলে নেওয়ার মাধ্যমে ইল্ম তুলে নেবেন (অর্থাৎ, আলেম দুনিয়া থেকে শেষ হয়ে যাবে।) অবশেষে যখন কোন আলেম বাকি থাকবে না, তখন জনগণ মুর্খ অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদেরকে নেতা বানিয়ে নেবে এবং তাদেরকে ফতোয়া জিজ্ঞাসা করা হবে, আর তারা না জেনে ফতোয়া দেবে, ফলে তারা নিজেরাও পথভুষ্ট হবে এবং অপরকেও পথভুষ্ট করবে।” (বুখারী ৭৩০৭, সুসালিম ৬৯৭১ নং)

মাশহুর হাদিস আবার ২ ভাগে বিভক্ত: মুস্তাফীয ও মাশহুর গায়রুল ইসত্বিলাহী।

(এক) মুস্তাফীয
মুস্তাফীয হাদিস কাকে বলে?
- এর সংজ্ঞায় তিনটি মত আছে।
(ক) এটি মাশহুর হাদিসের প্রতিশব্দ।​
(খ) এটি মাশহুর থেকে খাস। (শর্ত হল, তার সনদের উভয় প্রান্ত সমান হবে। অথচ এ শর্ত মাশহুরে নেই।)​
(গ) এটি মাশহুর থেকে আম। (প্রাগুক্তের বিপরীত।)​

(দুই) মাশহুর গায়র ইসত্তিলাহী
মাশহুর গায়রুল ইসত্বিলাহী হাদিস কাকে বলে?
- যে হাদিস মানুষের মুখে প্রসিদ্ধ, যাতে কোন গণ্য শর্তাবলী নেই।

মাশহুর গায়রুল ইসত্বিলাহী এর প্রকারভেদ
(ক) যা বিশেষ করে আহলুল হাদিসদের মাঝে 'মাশহুর' (প্রসিদ্ধ)​
উদাহরণ: আনাস (রা.)এর হাদিস, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) রি'ল ও যাকওয়ান (গোত্রদ্বয়) এর উপর একমাস বদ্দুআ ক'রে রুকুর পরে কুনুত করেছেন। (বুখারী, মুসলিম)​
(খ) যা আহলুল হাদিস, উলামা ও জনসাধারণের মাঝে 'মাশহুর' (প্রসিদ্ধ)​
উদাহরণ: “প্রকৃত মুসলিম সেই, যার জিভ ও হাত থেকে সকল মুসলমান নিরাপদ থাকে।” (বুখারী ৯ মুসলিম ১৭০৭২)​
(গ) যা ফুকাহাদের মাঝে 'মাশহুর' (প্রসিদ্ধ)।​
উদাহরণ: “আল্লাহর নিকট সবচেয়ে ঘৃণ্য হালাল হল তালাক।” (আবু দাউদ ২১৮০, ইবনে মাজাহ ২০১৮নং, হাদিসটি যয়ীফ)​
(ঘ) অসুলীদের নিকট 'মাশহুর' (প্রসিদ্ধ)​
উদাহরণ: “নিশ্চয় মহান আল্লাহ আমার উম্মতের ভুল, বিস্মৃতি এবং যার উপর তাকে নিরুপায় করা হয়, তার (পাপ)কে মার্জনা করেন।” (ইবনে মাজাহ ২০৪৫নং বাইহাকী! তাবারানী ইবনে হিব্বান)​
(ঙ) নহবীদের মাঝে 'মাশহুর' (প্রসিদ্ধ)​
উদাহরণ: “সুহাইব ভালো বান্দা। যদি সে আল্লাহকে ভয় নাও করত, তবুও তার অবাধ্যাচরণ করত না।” (ভিত্তিহীন)​
(চ) জনসাধারণের মাঝে 'মাশহুর” (প্রসিদ্ধ)​
উদাহরণ: “জলদিবাজি শয়তানের পক্ষ থেকে।” (তিরমিযী ২০ ১২নং)​

মাশহুর হাদিসের মান
মাশহুর ইসত্তিলাহী হাদিসের ব্যাপারে বলা যাবে না যে, তা সহীহ অথবা যয়ীফ। যেহেতু যাচাই-বাছাইয়ের পরই বলা যাবে, তা কী? কখনো তা সহীহ হয়, কখনো হাসান হয়, কখনো যয়ীফ ও মাওযু* হয়। তবে সহীহ হলে সে হাদিস আযীয ও গারীব হাদিসের উপর প্রাধান্য পাওয়ার বৈশিষ্ট্য লাভ করবে।

মাশহুর গায়র ইসত্বিলাহীর মধ্যেও সহীহ-যয়ীফ-হাসান আছে। তার মানগত শ্রেণী বিচার-গবেষণার পরই জানা যেতে পারে।

২। আযীয
আযীয হাদিস কাকে বলে?
- যার সনদের সকল স্তরে বর্ণনাকারী যেন দু'জন থেকে কম না হয়৷

আযীয হাদিস এর উদাহরণ:
“তোমাদের মধ্যে কেউ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি তার নিকট তার পিতা, সন্তান এবং সকল মানুষ অপেক্ষা প্রিয়তম হয়েছি।” (বৃখারী ১৫, মুসলিম ১৭৮)

৩। গারীব
গারীব হাদিস কাকে বলে?
- যে হাদিসের বর্ণনাকারী (যে কোনও স্তরে) মাত্র একজন হয়।

রাবীর গারাবাত বা একাকিত্ব হওয়ার জায়গা হিসাবে গারীব হাদিস দুই শ্রেণীর হয়: গারীব মুত্বলাক্ব ও গারীব নিসবী।

(ক) গারীব মুত্বলাক্ব: গারীব মুত্তলাকু হল সেই হাদিস, যার মূল সনদে গারাবাত থাকে। (বর্ণনাকারী সাহাবী একক হন।)​
উদাহরণ: উমার বিন খাত্তাব (রা.)এর হাদিস, “যাবতীয় কার্য নিয়ত বা সংকল্পের উপর নির্ভরশীল।” (বুখারী ১নং মুসলিম ১৯০৭নং)​
হাদিসটি কেবল উমার ৯ একাই বর্ণনা করেছেন।​
(খ) গারীব নিসবী:গারীব নিসবী হল সেই হাদিস, যে হাদিসের গারাবাত থাকে তার মধ্য সনদে নির্দিষ্ট কোন একটি বর্ণনাকারীর একাকিত্ব খেয়াল করেই এই নাম দেওয়া হয়েছে।​
উদাহরণ: যা মালেক যুহরী থেকে এবং তিনি আনাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নবী ষ্ট নিজ মাথায় শিরস্বাণ পরিহিত অবস্থায় মক্কায় প্রবেশ করেছেন। (বুখারী ১৮৪৬নং)​
উক্ত হাদিসকে যুহরী থেকে মালেক এককভাবে বর্ণনা করেছেন।​

গারীব নিসবীর অন্যান্য প্রকারভেদ:
১। হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য রাবীর একাকিত্ত।
যেমন বলা হয়, হাদিসটিকে অমুক ছাড়া কোন নির্ভরযোগ্য (সিক্বাহ) বর্ণনা করেননি।

২। নির্দিষ্ট রাবী থেকে বর্ণনায় নির্দিষ্ট রাবীর একাকীত্ব।
যেমন বলা হয়, হাদিসটিতে অমুক থেকে বর্ণনায় অমুক একক। যদিও হাদিসটি অমুক ছাড়া অন্য একাধিক সূত্রে বর্ণিত।

৩। কোন শহর বা এলাকাবাসীর রাবীদের একাকিত্ত।
যেমন বলা হয়, হাদিসটিকে এককভাবে মক্কাবাসী অথবা শামবাসী বর্ণনা করেছেন।

৪। কোন শহর বা এলাকাবাসী থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন শহর বা এলাকাবাসীর রাবীদের একাকীত্ব।
যেমন বলা হয়, বাসরাবাসীরা হাদিসটিকে মদীনাবাসীদের থেকে এককভাবে বর্ণনা করেছেন। অথবা শামবাসীরা হিজাযবাসীদের থেকে এককভাবে বর্ণনা করেছেন।

গারীবের অন্য এক প্রকারভেদ:
সনদ অথবা মতনের গারাবাত খেয়াল ক'রে গারীবের প্রকারভেদ

১। সনদ ও মতন উভয়ের দিক থেকে গারীব।
যে হাদিসের মতনকে মাত্র একজন রাবী বর্ণনা করেছেন।

২। মতনের দিক থেকে নয়, কেবল সনদের দিক থেকে গারীব।
যেমন একটি হাদিসের মতনকে সাহাবাগণের একটি জামাআত বর্ণনা করেছেন। কিন্তু (ভিন্ন সুত্রে) সেই মতনকে অন্য এক সাহাবী থেকে একজন এককভাবে বর্ণনা করেছেন।



শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল মাদানী।​
আল্লাহ তাআলা শায়খের প্রতি রহম করুন
 
Top