প্রবন্ধ ঋতুবতী মহিলার সাওম পালন করার হুকুম

Joined
Jan 12, 2023
Threads
827
Comments
1,075
Solutions
19
Reactions
12,045
ঋতুবতী নারীর পক্ষে ফরয-নফল সর্ব প্রকার সাওম রাখা হারাম এবং সাওম রাখাও তার জন্য জায়েয হবে না। কিন্তু ফরয সাওমের কাযা তার ওপর ওয়াজিব। কেননা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

»كَانَ يُصِيْبُنَا ذَلِكَ, تَعْنِيْ الْحَيْضَ فَنُؤْمَرُ بِقَضَاءِ الصَّوْمِ وَلاَ نُؤْمَرُ بِقَضَاءِ الصَّلاَة»​

“আমাদের যখন রক্তস্রাব হতো তখন আমাদেরকে শুধু সাওমের কাযা করার আদেশ দেওয়া হতো। কিন্তু সালাতের কাযা করার আদেশ দেওয়া হতো না।”[1]

সাওম অবস্থায় রক্তস্রাব আসলে তাহলে সাওম নষ্ট হয়ে যায়। যদিও রক্তস্রাব সূর্যাস্তের সামান্য পূর্বে এসে থাকে। তবে ঐ সাওমটি ফরয হয়ে থাকলে তার কাযা ওয়াজিব। কিন্তু সাওম পালনকারীনী মহিলা যদি সাওম অবস্থায় সূর্যাস্তের পূর্বে লজ্জাস্থানের বেদনা অনুভব করে এবং প্রকৃতপক্ষে রক্তস্রাব সূর্যাস্তের পরেই আরম্ভ হয়ে থাকে তাহলে উক্ত নারীর সাওম পরিপূর্ণ হয়ে যাবে এবং বিশুদ্ধ অভিমত অনুসারে সাওম নষ্ট হবে না। কারণ পেটের অভ্যন্তরের রক্তের কোনো হুকুম নেই। এর প্রমাণ, পুরুষের ন্যায় স্বপ্নদোষ হয় এমন একজন মহিলা সম্পর্কে যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করা হলো যে, “তার ওপর কি গোসল করা ফরয? উত্তরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: হ্যাঁ, যদি সে বীর্য দেখতে পায়।” উক্ত হাদীসে গোসল ফরয হবে কি না এ হুকুমটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বীর্য দেখা ও না দেখার সঙ্গে সম্পর্কিত করেছেন। এমনিভাবে বের না হওয়া পর্যন্ত বা দেখা না দেওয়া পর্যন্ত হায়েযেরও বিধি-বিধান কার্যকরী হবে না, বরং কার্যকরী তখনই হবে যখন রক্ত দেখা দিবে।

হায়েয অবস্থায় ফজরের সময় শুরু হলে ঐ দিনের সাওম রাখা জায়েয নয়। যদিও ফজরের সামান্য সময় পরে পবিত্র হয়ে থাকে। আর যদি ফজরের একটু আগে রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে যায় এবং বন্ধ হওয়ার পর সাওম রাখে তাহলে তা জায়েয আছে। এমতাবস্থায় গোসল ফজরের পরে করলেও কোনো দোষ নেই। যেমন, বীর্যস্খলন হেতু শরীর অপবিত্র হওয়ার পর কোনো ব্যক্তি যদি অপবিত্রাবস্থায় সাওমের নিয়ত করে এবং গোসল ফজরের পরে করে তাতে কোনো দোষ নেই। তার সাওম শুদ্ধ হয়ে যাবে।

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা কর্তৃক বর্ণিত স্পষ্ট হাদীস রয়েছে:

»َانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصْبِحُ جُنُبًا مِنْ جِمَاعٍ غَيْرِ احْتِلاَمٍ ثُمَّ يَصُوْمُ فِيْ رَمَضَانَ»​

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নদোষ ব্যতীত স্ত্রী সহবাসের কারণে অপবিত্র অবস্থায় ভোরে উঠে রমাযানের সাওম রাখতেন।”[2]

নারীর প্রাকৃতিক রক্তস্রাব
শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উসাইমীন
অনুবাদ: মীযানুর রহমান আবুল হুসাইন
সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া​

[1] সহীহ বুখারী ও মুসলিম।
[2] সহীহ বুখারী ও মুসলিম।
 
Back
Top