সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রবন্ধ ঋতুবতী মহিলার স্বয়ং কুরআন তিলাওয়াত করার হুকুম

Joynal Bin Tofajjal

Student Of Knowledge

Forum Staff
Moderator
Uploader
Exposer
HistoryLover
Salafi User
Threads
344
Comments
479
Reactions
5,019
Credits
3,406
বেশিরভাগ ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে, ঋতুবতী মহিলার পক্ষে উচ্চারণ করে কুরআন তিলাওয়াত করা নাজায়েয এবং নিষিদ্ধ। তবে যদি শুধু চোখ দিয়ে দেখে অথবা মুখ দিয়ে উচ্চারণ ব্যতীত শুধু মনে মনে পড়ে তাহলে কোনো অসুবিধা নেই। যেমন, কুরআন মাজীদ চোখের সামনে আছে অথবা কুরআন মাজীদের আয়াত সম্বলিত কোনো বোর্ড সামনে আছে। এমতাবস্থায় ঋতুবতী নারী যদি আয়াতগুলোর দিকে তাকায় এবং মনে মনে পড়ে তাহলে এটা জায়েয হওয়ার পিছনে কারো কোনো দ্বিমত নেই বলে ইমাম নাওয়াওয়ী শারহুল মুহায্যাব ২য় খণ্ডের ৩৭২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন।

ইমাম বুখারী, ইবন জারীর তাবারী এবং ইবনুল মুনযির বলেছেন, এটা জায়েয। ফাতহুল বারী ১ম খণ্ডের ৩০৮ পৃষ্ঠায় ইমাম মালেক ও ইমাম শাফেঈর (পুরাতন অভিমতের) উদ্ধৃতি দিয়ে এবং বুখারী মাজীদে ইবরাহীম নাখ‘ঈর উদ্ধৃতি পেশ করে বলা হয়েছে যে, ঋতুবতী নারীর কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করার মধ্যে কোনো অসুবিধা নেই।

শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. (ফাতাওয়া গ্রন্থে মাজমূআ ইবন কাসেম ২৬তম খণ্ডের ১৯১ পৃষ্ঠায়) বলেন, ‘ঋতুবতী নারীর পক্ষে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করা নিষিদ্ধ, এ ব্যাপারে কোনোই প্রমাণ নেই। কেননা ‘ঋতুবতী নারী এবং অপবিত্র ব্যক্তি কুরআন মাজীদ থেকে কিছুই পড়তে পারবে না” বলে যে হাদীসটি রয়েছে তা হাদীস বিশেষজ্ঞ ওলামায়ে কেরামের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুর্বল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগেও নারীদের রক্তস্রাব আসতো। এখন যদি এই রক্তস্রাবের কারণে সালাতের মতো কুরআন মাজীদের তিলাওয়াতও তাদের জন্য হারাম হয়ে থাকতো তাহলে নিশ্চয় সাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের বৃহত্তর স্বার্থে তা বর্ণনা করতেন এবং তাঁর পবিত্র স্ত্রীগণকে এ ব্যাপারে শিক্ষা দিতেন এবং কেউ না কেউ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ ব্যাপারে হাদীস বর্ণনা করতেন। কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ঋতুবতী নারীর কুরআন তিলাওয়াত হারাম প্রসঙ্গে কেউই কোনো কিছু বর্ণনা করেন নি। সুতরাং কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই যেখানে সে ক্ষেত্রে হায়েয অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াতকে হারাম হিসেবে গণ্য করা জায়েয হবে না। আর যেহেতু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে নারীদের হায়েয হওয়া সত্বেও তাদেরকে কুরআন তিলাওয়াত করতে নিষেধ করেন নি। তাই সাব্যস্ত হলো যে, আসলে তা হারাম নয়।’

এ প্রসঙ্গে ওলামায়ে কেরামের বিভিন্ন মতামত সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর এখন এটিই বলা উচিৎ হবে যে, ঋতুবতী নারীর পক্ষে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া উচ্চারণ করে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত না করাই উত্তম। তবে বিশেষ প্রয়োজন হলে যেমন, শিক্ষিকা নারী ছাত্রীদেরকে শিখানোর উদ্দেশ্যে মুখে উচ্চারণ করে কুরআন মাজীদ পড়তেই হবে। এমনিভাবে পরীক্ষার্থীনী পরীক্ষা দিতে গিয়ে প্রয়োজনের তাগিদে হায়েয অবস্থায়ও কুরআন মাজীদ পড়তে পারবে।
 
Top