- Views: 901
- Replies: 3
- Thread starter
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
অনেকেই “আহলে কিতাব” তথা “কিতাবী” বলতে কাদের বুঝানো হয় তা বুঝেন না । আবার অনেকেই বুঝলেও কিছু ভূল ভ্রান্তি তাদের মধ্যে রয়েছে, আজকে এই বিষয়টা নিয়েই আলোচনা করবো । বি ইজনজল্লাহিল কারীম ।
সংক্ষেপে বলতে গেলে দাড়াবে :
اسْمٌ يُطْلَقُ على اليَهُودِ أو النَّصَارى
এটি এমন একটি নাম যা ইয়াহুদী বা নাসারা অতবা তাদের উভয়দের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় ।
ব্যাখ্যা :
الكُفَّارُ ثَلاثَةُ أَقْسامٍ: 1- أَهْلُ كِتابٍ: وهم اليَهودُ والنَّصارَى ومَن وافَقَهُم في أُصُولِ دِياناتَهِم مِن فِرِقَهِم المُخْتَلِفَةِ، سَواءً كان أَحَدُهُم حَرْبِيّاً أو ذِمِّيّاً مِن العَجِمِ، أو مِن العَرَبِ، وسَواءً كان أَبَواهُ كِتابِيينِ، أو غَيْرَ كِتابِيَيْنِ، أو أَحُدهُما كِتابِيٌّ دون الآخَرِ. 2- قِسْمٌ لَهُم شُبْهَةُ كِتابٍ، وهُم المَجُوسُ. 3- قِسْمٌ لا كِتابَ لَهُم ولا شُبْهَةَ كِتابٍ: وهُم مَن عَدا هَذَيْنِ القِسْمَيْنِ مِن عَبَدَةِ الأَوْثانِ والمُنافِقِينَ والزَّنادِقَةِ وغَيْرِهِم. والمُرادُ بِاليَهودِيِّ هو مَن تَدَيَّنَ بِالدِّيانَةِ اليَهودِيَّةِ المُحَرَّفَةِ المَنْسُوبَةِ إلى مُوسَى عليه السَّلامُ، وهُم فِرَقٌ كَثِيرَةٌ، مِنْهُم: الفَرِيسِيُّونَ، والصِّدْقِيُّونَ، والسَّامِرِيُّونَ، وغَيْرُهُم. وأمَّا النَّصْرانِيُّ فهو مَن تَدَيَّنَ بِالدِّيانَةِ المَسِيحِيَّةِ النَّصْرانِيَّةِ المُحَرَّفَةِ المَنْسُوبَةِ إلى عِيسَى عليه السَّلامُ، وهُم فِرَقٌ كَثِيرَةٌ، مِنْهُم: المَلْكانِيَّةُ، والنَّسْطُورِيَّةُ، واليَعْقُوبِيَّةُ، وغَيْرُهُم. واشْتَرَطَ بعض العُلَماءِ الْتِزامَ الكِتابِيِّ بِعَقِيدَتِهِ وأَحْكامِ دِينِهِ، فإذا جَحَدَهُ وأَلْحَدَ فليس كتابِيّاً كَبَعْضِ المُنْتَسِبِينَ لِلنَّصْرانِيَّةِ في عَصْرِنا مِن المُلْحِدِينَ.
কাফেররা তিন প্রকার :
১. আহলে কিতাব : আর তারা হলো ইয়াহুদী ও নাসারা এবং তাদের বিভিন্ন দল থেকে যারা তাদের দীনের মূলনীতির সাথে একমত পোষণ করে তারা । চাই তাদের কেউ হারবী হোক বা জিম্মি আরবী হোক বা অনারবী । আর চাই তাদের মাতা-পিতা কিতাবী হোক বা গাইরে কিতাবি বা তাদের একজন কিতাবী ।
২. আরেক প্রকার হলো যাদের কিতাবের সদৃশ রয়েছে। আর তারা হলো মুজুসী ।
৩.যাদের কোন কিতাব নাই এবং কোন কিতাবের সদৃশ নাই । তারা এ দুই প্রকার ছাড়া অন্যান্য মুর্তি পুজারী, মুনাফিক, যিন্দিক ইত্যাদি । ইয়াহুদী দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মুসা আলাইহিস সালামের বিকৃত দীনের উপর ঈমান আনায়নকারীগণ । তাদের অনেক দল রয়েছে, তাদের কতক হলো: ফরিসীইউন, সিদকীইউন, সামেরীইউন ইত্যাদি । আন নাসরানী হলো, যে ব্যক্তি ঈসা আলাইহিস সালামের প্রতি সম্বোধিত বিকৃত নাসরানী মাসীহি দীনের উপর ঈমান আনায়নকারীগণ । তাদেরও অনেক দল রয়েছে, তাদের মধ্য হতে হলো : মালকানিয়্যাহ, নাসতূরীয়্যাহ, ইয়া‘কৃবীয়্যাহ ইত্যাদি । কিতাবী হওয়ার জন্য কতক আলেম এ শর্ত আরোপ করেছেন যে, কিতাবীকে অবশ্যই কিতাবের আকীদা ও তার দীনের বিধান মানতে হবে । যদি তা অস্বীকার করে এবং নাস্তিকতা অবলম্বন করে তা হলে সে কিতাবী নয় । যেমন, আমাদের যুগে অনেক নাস্তিক নাসরানী দাবি করে থাকে ।
“কিতাবী”রা কী ঈমানদার ?
উত্তর হলো না । কখনোই না । প্রমাণস্বরূপ উক্ত হাদীসখনা দেখতে পারেন :
عن ابن عباس رضي الله عنهما : أن رسول الله صلى الله عليه وسلم لما بعث معاذا إلى اليمن قال له: "إنك تأتي قوما من أهل الكتاب، فليكن أولَ ما تدعوهم إليه شهادة أن لا إله إلا الله" -وفي رواية: "إلى أن يوحدوا الله-، فإن هم أطاعوك لذلك فأعلمهم أن الله افترض عليهم خمس صلوات في كل يوم وليلة، فإن هم أطاعوك لذلك فأعلمهم أن الله افترض عليهم صدقة تؤخذ من أغنيائهم فَتُرَدُّ على فقرائهم، فإن هم أطاعوك لذلك فإياك وكَرَائِمَ أموالِهم، واتق دعوة المظلوم فإنه ليس بينها وبين الله حجاب"
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মু‘আয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে (ইয়ামানের শাসকরূপে) প্রেরণ করেন, তখন তিনি তাকে বলেছিলেন,
“তুমি আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের নিকট যাচ্ছ। সুতরাং তুমি তাদেরকে সর্বপ্রথম ‘আল্লাহ ব্যতীত কোনো সত্য উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল’ এ কথার সাক্ষ্যদানের প্রতি দাওয়াত দেবে। যদি তারা এ কথা মেনে নেয়, তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দেবে, আল্লাহ তাদের উপর প্রতি দিন ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয করেছেন। তারা যদি এ কথা মেনে নেয়, তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দেবে যে, আল্লাহ তাদের সম্পদের ওপর সাদকাহ (যাকাত) ফরয করেছেন। তাদের মধ্যে যারা সম্পদশালী তাদের থেকে যাকাত উসূল ক’রে যারা দরিদ্র তাদের মাঝে বিতরণ করা হবে। যদি তারা এ কথা মেনে নেয়, তাহলে তুমি (যাকাত নেওয়ার সময়) তাদের উৎকৃষ্ট মাল নেওয়া থেকে দূরে থাকবে। আর অত্যাচারিতের বদ্দুআ থেকে বাঁচবে। কারণ, তার বদ্দুআ এবং আল্লাহর মাঝে কোনো পর্দা নেই (অর্থাৎ, শীঘ্র কবুল হয়ে যায়)।”
এর থেকেই বুঝ যায় তারা ঈমানদার নয় । তবে তাদের জন্য স্পেশাল সুসংবাদও রয়েছে যদি তারা ঈমান আনে । উক্ত হাদীসে :
عن أبي موسى الأشعري رضي الله عنه مرفوعاً: «ثلاثة لهم أجْرَان: رجُلٌ من أهل الكتاب آمن بِنَبِيِّه، وآمَن بمحمد، والعَبْد المملوك إذا أَدَّى حَقَّ الله، وحَقَّ مَوَالِيه، ورجل كانت له أمَة فأدَّبَها فأحسن تَأدِيبَها، وَعَلَّمَهَا فأحسن تَعْلِيمَهَا، ثم أعْتَقَها فتزوجها؛ فله أجران»
আবূ মূসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে মরফূ হিসেবে বর্ণিত, “তিন লোকের জন্য দ্বিগুণ বিনিময় রয়েছে :
১. আহলে কিতাবের যে ব্যক্তি তার নবীর উপর ঈমান এনেছে এবং মুহাম্মাদের উপরও ঈমান এনেছে।
২. যে ক্রীতদাস আল্লাহর হক আদায় করে এবং তার মালিকের হকও আদায় করে।
৩. যে তাঁ বাঁদীকে সুন্দরভাবে আদব-কায়দা শিক্ষা দিয়েছে এবং ভালোভাবে দীনি ইলম শিক্ষা দিয়েছে অতঃপর তাকে আযাদ করে বিয়ে করেছে, তার জন্যও দু’টি পুরস্কার রয়েছে।
যারা আরবি বুঝেন তারা এই শব্দ কোথায় ব্যাবহার করতে পারবেন আর কোথায় পারবেন না এ বিষয়ে কিছু কথা (যা সাধারণ জনগণের জানার কোন প্রয়োজন নেই বলে মনে করি) :
تَوَسَّعَ الحَنَفِيَّةُ فقالوا: إنَّ أَهْلَ الكِتابِ هُم كُلُّ مَن يُؤْمِنُ بِنَبِيٍّ ويُقِرُّ بِكِتابٍ سَماوِيٍّ، فيَشْمَلُ اليَهودَ والنَّصارَى، ومَن آمَنَ بِزَبُورِ داوُدَ وصُحُفِ إِبْرَاهِيمَ وشِيثَ عليهِم السَّلامُ، وذلك؛ لأنَّهُم يَعْتَقِدونَ دِيناً سَماوِيّاً مُنَزَّلاً بِكِتابٍ، وأَلْحَقَ بَعْضُهُم المَجُوسَ، وأَكْثَرُ الفُقَهاءِ على أنَّ الكِتابِيَّ هو مَن كان مِن اليَهودِ أو النَّصارَى فقط، وأمَّا المَجوسُ وغَيْرُهُم فَلَيْسُوا مِن أَهْلِ الكِتابِ، لكنّ المَجوسَ يُعامَلُونَ مُعامَلَةَ أَهْلِ الكِتابِ في أَخْذِ الجِزْيَةِ، ويَبْقَوْنَ على الأَصْلِ في غَيْرِها مِن الأحكامِ، كالنِّكاحِ والذَّبائِحِ ونَحْوِ ذلك.
উৎস :
مقاييس اللغة : (5/158) - مختار الصحاح : (ص 266) - المنتقى شرح الموطأ : (3/112) - أحكام أهل الذمة : (ص 513) - بدائع الصنائع في ترتيب الشرائع : (5/75) - الـمغني لابن قدامة : (13/228) - تبيين الحقائق شرح كنز الدقائق : (3/115) - رد المحتار على الدر المختار : (3/268) - المصباح المنير في غريب الشرح الكبير : (2/524) -
Last edited: