- Awards
- 22
- Credit
- 14,168
- Thread starter
- #1
অনেকেই প্রশ্ন করেন, আল্লাহ্ সাকার নাকি নিরাকার?! সহীহ আকীদার দাবীদার কাউকে কাউকে দেখা যায় জোর দিয়ে "সাকার" বলতে।আর হিন্দুয়ানী আকীদা প্রভাবিত কেউ কেউ দ্রুত বলে দেয়, নিরাকার ।
বস্তুত আকীদার পরিভাষায় এ জাতীয় শব্দ "আলফাজে মুজমালাহ" (ব্যাখ্যাসাপেক্ষ বাক্য) এর অন্তর্ভুক্ত । যার উত্তর এক কথায় দেওয়া যায় না।
আর তাই সাকার কিংবা নিরাকার কোনোটিই সরাসরি না বলে প্রশ্নকর্তাকে জিজ্ঞেস করতে হবে, তার উদ্দেশ্য কী?
যদি সে সাকার বলে বুঝাতে চায়, আল্লাহর জন্য প্রশ্নকর্তার জানাশোনা কোনো আকার রয়েছে, তবে সে অর্থে সাকার বলা যাবে না ।
আর যদি বলে, আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আল্লাহ্ র সত্তাগত গুণ যেমন কুরআন ও হাদীসে আসা তাঁর হাত, পা ও চোখ ইত্যাদি কোনোরূপ ধরণ নির্ধারণ না করে যেমনটি রাব্বুল আলামীনের জন্য উপযুক্ত তেমন সাব্যস্ত করা, তবে তা অবশ্যই সাব্যস্ত করতে হবে। আর প্রশ্নকর্তাকে বলতে হবে, আপনি সাকার বা নিরাকার কোনোটিই না বলে কুরআন ও হাদীসে যা এসেছে তা বলুন। অথবা আল্লাহর গুণ বলুন।
কারণ কুরআন ও হাদীসে কোথাও সাকার কিংবা নিরাকার কোনোটাই আসেনি। সাকারের আরবী প্রতিশব্দ হচ্ছে "শেকেল"। অবশ্য কেউ যদি আল্লাহর জন্য "সূরত" গুণ সাব্যস্ত করতে চায় এবং বলে যে আল্লাহর সূরত রয়েছে, তবে তা বলতে পারবে। কারণ তা হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে।
কিন্তু 'সূরত' অর্থ সাকার বলা যাবে না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
(خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ عَلَى صُورَتِهِ ..)
‘আল্লাহ তাআলা আদম আলাইহিস সালামকে তাঁর সূরতে সৃষ্টি করেছেন।’ বুখারী, হাদীস নং ৬২২৭।
অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
(إذا قاتل أحدكم أخاه، فليجتنب الوجه، فإن الله خلق آدم على صورته)
‘যখন তোমরা তোমাদের ভাইকে আঘাত করবে তখন চেহারায় আঘাত করা থেকে বেঁচে থাকবে; কারণ আল্লাহ তা’আলা আদম আলাইহিস সালামকে তাঁর সূরতে সৃষ্টি করেছেন।’ মুসলিম, হাদীস নং ৬৬৫৬।
তাহলে বুঝা গেল যে, আল্লাহর “সূরত” আছে। এটি আল্লাহর একটি গুণ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম এবং সালাফগণ আল্লাহর সূরত সাব্যস্ত করেছেন।
তবে এটাও জানতে হবে যে, আল্লাহ তাআলার সূরত সাব্যস্ত করলেই তাশবিহ বা সাদৃশ্য দেওয়া হয় না। আল্লাহর জন্য এটি তেমনি ভাবে সাব্যস্ত হবে যেভাবে অন্যান্য গুণগুলো সাব্যস্ত করা হয়। অর্থাৎ আল্লাহ শোনেন, দেখেন, কথা বলেন, আল্লাহর জ্ঞান এগুলোকে আমরা কোনো প্রকার ধরণ নির্ধারণ এবং সাদৃশ্য প্রদান ছাড়াই সাব্যস্ত করি, তেমনিভাবে আল্লাহর সূরত এবং অন্যান্য গুণগুলোও কোনো প্রকার ধরণ নির্ধারণ ও মানুষের সাথে সাদৃশ্য দেওয়া ব্যতিতই সাব্যস্ত করতে হবে।
আর এটাও জানতে হবে যে, আল্লাহকে সাকার কিংবা নিরাকার কিছুই বলা যাবে না। কারণ, কুরআন ও সুন্নায় তা আসেনি। আর যা কুরআন ও সুন্নায় আসেনি তা আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত কিংবা অসাব্যস্ত কোনোটিই করা যাবে না। সাকার এর আরবী প্রতিশব্দ হচ্ছে شكل, যা কুরআন বা সুন্নায় আল্লাহর জন্য ব্যবহৃত হয়নি। সুতরাং তা আলফাযে মুজমালাহ বা ব্যাখ্যাসাপেক্ষ্য শব্দের অন্তর্ভুক্ত। আর আলফাজে মুজমালাহ এর ব্যাপারে নিয়ম হচ্ছে তা এককথায় সাব্যস্তও করা যায় না, অসাব্যস্তও করা যায় না। বরং ব্যাখ্যা চাইতে হবে, সে ব্যাখ্যা অনুযায়ী তা সাব্যস্ত করা বা অসাব্যস্ত করা হবে।
এখন যদি কেউ বলে, হাদীসে তো আল্লাহর জন্য “সূরত” সাব্যস্ত করা হয়েছে, আর তার অর্থ তো আকার।
আমরা বলব, না তা সঠিক নয়। কারণ,
১) ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ সূরত এর অর্থ চেহারা করেছেন এবং এ ব্যাপারে হাদীস দিয়ে দলীল দিয়েছেন।
২) তাছাড়া বাংলা ভাষাতেও বলা হয়, চেহারা-সূরত। এখানে সূরত শব্দটি চেহারার সমার্থক হিসেবে ধরা হয়েছে যেমনিভাবে বলা হয় কথা-বার্তা। এখানেও বার্তা শব্দটি চেহারা শব্দের সমার্থক।
৩) বাংলা ভাষায় “আকার” বললে সুনির্দিষ্ট জানা কোনো চিত্রকে বুঝানো হয়। যা এঁকে দেখানো যায়। “সাকার” বললে মূর্তিকে বুঝানো হয়ে থাকে। যেকোনো হিন্দুকে সাকার পূজা কাকে বলে জিজ্ঞেস করলে সে আপনাকে বলবে তা হচ্ছে মূর্তিপূজা।
আল্লাহকে সাকার বললে আপনি তাকে তাদের মূর্তি বানালেন। আর আল্লাহর তখন “কাইফিয়াত” বা ধরণ নির্ধারণ করলেন।
আর “নিরাকার” বলে বুঝায় যার কোনো সাব্যস্তকৃত গুণ নেই, যার কোনো ধরণ নেই। এটা বলে হিন্দুরা তাদের পরম ব্রহ্মের দিকে ইঙ্গিত করে থাকে। সুতরাং নিরাকার বললেও বিপদ।
৪) যদি বলেন “সুরত” শব্দের অর্থ বাংলা অভিধানে আকার আকৃতি রয়েছে। তবে আমরা বলবো, অভিধানে আসা সব শব্দই আল্লাহর জন্য ব্যবহার করা যায় না। দেখতে হবে কোনটি আল্লাহর সাথে বলা যায় কেবল সেটিই বলতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলি, আল্লাহর নাম “জাওয়াদ” এসেছে। “জাওয়াদ” শব্দটির অর্থ অভিধানে “সাখী” এসেছে, কিন্তু আল্লাহকে “সাখী” বলা নিষেধ।
৫) যদি বলেন যে, বাংলা ভাষায় সূরত শব্দটি থাকলেও আমি এ শব্দটির দ্বারা চেহারা না বুঝে সেটা ব্যবহার না করে একেবারে অভিধান থেকে তা অনুবাদ করে বুঝতে চাই, তাহলে আপনি “সূরত” এর অর্থ “রূপ” করতে পারেন। কারণ অভিধানে তা এসেছে। আর এটি ব্যবহারের সুবিধা হচ্ছে আকার আকৃতি বললে যে সমস্যা হয় সেটি
তখন থাকে না।
আল্লাহ আমাদের বুঝার তৌফিক দান করুন।
বস্তুত আকীদার পরিভাষায় এ জাতীয় শব্দ "আলফাজে মুজমালাহ" (ব্যাখ্যাসাপেক্ষ বাক্য) এর অন্তর্ভুক্ত । যার উত্তর এক কথায় দেওয়া যায় না।
আর তাই সাকার কিংবা নিরাকার কোনোটিই সরাসরি না বলে প্রশ্নকর্তাকে জিজ্ঞেস করতে হবে, তার উদ্দেশ্য কী?
যদি সে সাকার বলে বুঝাতে চায়, আল্লাহর জন্য প্রশ্নকর্তার জানাশোনা কোনো আকার রয়েছে, তবে সে অর্থে সাকার বলা যাবে না ।
আর যদি বলে, আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আল্লাহ্ র সত্তাগত গুণ যেমন কুরআন ও হাদীসে আসা তাঁর হাত, পা ও চোখ ইত্যাদি কোনোরূপ ধরণ নির্ধারণ না করে যেমনটি রাব্বুল আলামীনের জন্য উপযুক্ত তেমন সাব্যস্ত করা, তবে তা অবশ্যই সাব্যস্ত করতে হবে। আর প্রশ্নকর্তাকে বলতে হবে, আপনি সাকার বা নিরাকার কোনোটিই না বলে কুরআন ও হাদীসে যা এসেছে তা বলুন। অথবা আল্লাহর গুণ বলুন।
কারণ কুরআন ও হাদীসে কোথাও সাকার কিংবা নিরাকার কোনোটাই আসেনি। সাকারের আরবী প্রতিশব্দ হচ্ছে "শেকেল"। অবশ্য কেউ যদি আল্লাহর জন্য "সূরত" গুণ সাব্যস্ত করতে চায় এবং বলে যে আল্লাহর সূরত রয়েছে, তবে তা বলতে পারবে। কারণ তা হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে।
কিন্তু 'সূরত' অর্থ সাকার বলা যাবে না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
(خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ عَلَى صُورَتِهِ ..)
‘আল্লাহ তাআলা আদম আলাইহিস সালামকে তাঁর সূরতে সৃষ্টি করেছেন।’ বুখারী, হাদীস নং ৬২২৭।
অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
(إذا قاتل أحدكم أخاه، فليجتنب الوجه، فإن الله خلق آدم على صورته)
‘যখন তোমরা তোমাদের ভাইকে আঘাত করবে তখন চেহারায় আঘাত করা থেকে বেঁচে থাকবে; কারণ আল্লাহ তা’আলা আদম আলাইহিস সালামকে তাঁর সূরতে সৃষ্টি করেছেন।’ মুসলিম, হাদীস নং ৬৬৫৬।
তাহলে বুঝা গেল যে, আল্লাহর “সূরত” আছে। এটি আল্লাহর একটি গুণ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম এবং সালাফগণ আল্লাহর সূরত সাব্যস্ত করেছেন।
তবে এটাও জানতে হবে যে, আল্লাহ তাআলার সূরত সাব্যস্ত করলেই তাশবিহ বা সাদৃশ্য দেওয়া হয় না। আল্লাহর জন্য এটি তেমনি ভাবে সাব্যস্ত হবে যেভাবে অন্যান্য গুণগুলো সাব্যস্ত করা হয়। অর্থাৎ আল্লাহ শোনেন, দেখেন, কথা বলেন, আল্লাহর জ্ঞান এগুলোকে আমরা কোনো প্রকার ধরণ নির্ধারণ এবং সাদৃশ্য প্রদান ছাড়াই সাব্যস্ত করি, তেমনিভাবে আল্লাহর সূরত এবং অন্যান্য গুণগুলোও কোনো প্রকার ধরণ নির্ধারণ ও মানুষের সাথে সাদৃশ্য দেওয়া ব্যতিতই সাব্যস্ত করতে হবে।
আর এটাও জানতে হবে যে, আল্লাহকে সাকার কিংবা নিরাকার কিছুই বলা যাবে না। কারণ, কুরআন ও সুন্নায় তা আসেনি। আর যা কুরআন ও সুন্নায় আসেনি তা আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত কিংবা অসাব্যস্ত কোনোটিই করা যাবে না। সাকার এর আরবী প্রতিশব্দ হচ্ছে شكل, যা কুরআন বা সুন্নায় আল্লাহর জন্য ব্যবহৃত হয়নি। সুতরাং তা আলফাযে মুজমালাহ বা ব্যাখ্যাসাপেক্ষ্য শব্দের অন্তর্ভুক্ত। আর আলফাজে মুজমালাহ এর ব্যাপারে নিয়ম হচ্ছে তা এককথায় সাব্যস্তও করা যায় না, অসাব্যস্তও করা যায় না। বরং ব্যাখ্যা চাইতে হবে, সে ব্যাখ্যা অনুযায়ী তা সাব্যস্ত করা বা অসাব্যস্ত করা হবে।
এখন যদি কেউ বলে, হাদীসে তো আল্লাহর জন্য “সূরত” সাব্যস্ত করা হয়েছে, আর তার অর্থ তো আকার।
আমরা বলব, না তা সঠিক নয়। কারণ,
১) ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ সূরত এর অর্থ চেহারা করেছেন এবং এ ব্যাপারে হাদীস দিয়ে দলীল দিয়েছেন।
২) তাছাড়া বাংলা ভাষাতেও বলা হয়, চেহারা-সূরত। এখানে সূরত শব্দটি চেহারার সমার্থক হিসেবে ধরা হয়েছে যেমনিভাবে বলা হয় কথা-বার্তা। এখানেও বার্তা শব্দটি চেহারা শব্দের সমার্থক।
৩) বাংলা ভাষায় “আকার” বললে সুনির্দিষ্ট জানা কোনো চিত্রকে বুঝানো হয়। যা এঁকে দেখানো যায়। “সাকার” বললে মূর্তিকে বুঝানো হয়ে থাকে। যেকোনো হিন্দুকে সাকার পূজা কাকে বলে জিজ্ঞেস করলে সে আপনাকে বলবে তা হচ্ছে মূর্তিপূজা।
আল্লাহকে সাকার বললে আপনি তাকে তাদের মূর্তি বানালেন। আর আল্লাহর তখন “কাইফিয়াত” বা ধরণ নির্ধারণ করলেন।
আর “নিরাকার” বলে বুঝায় যার কোনো সাব্যস্তকৃত গুণ নেই, যার কোনো ধরণ নেই। এটা বলে হিন্দুরা তাদের পরম ব্রহ্মের দিকে ইঙ্গিত করে থাকে। সুতরাং নিরাকার বললেও বিপদ।
৪) যদি বলেন “সুরত” শব্দের অর্থ বাংলা অভিধানে আকার আকৃতি রয়েছে। তবে আমরা বলবো, অভিধানে আসা সব শব্দই আল্লাহর জন্য ব্যবহার করা যায় না। দেখতে হবে কোনটি আল্লাহর সাথে বলা যায় কেবল সেটিই বলতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলি, আল্লাহর নাম “জাওয়াদ” এসেছে। “জাওয়াদ” শব্দটির অর্থ অভিধানে “সাখী” এসেছে, কিন্তু আল্লাহকে “সাখী” বলা নিষেধ।
৫) যদি বলেন যে, বাংলা ভাষায় সূরত শব্দটি থাকলেও আমি এ শব্দটির দ্বারা চেহারা না বুঝে সেটা ব্যবহার না করে একেবারে অভিধান থেকে তা অনুবাদ করে বুঝতে চাই, তাহলে আপনি “সূরত” এর অর্থ “রূপ” করতে পারেন। কারণ অভিধানে তা এসেছে। আর এটি ব্যবহারের সুবিধা হচ্ছে আকার আকৃতি বললে যে সমস্যা হয় সেটি
তখন থাকে না।
আল্লাহ আমাদের বুঝার তৌফিক দান করুন।
শাইখ আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া হাফিজাহুল্লাহ