সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Aliuzzaman
Reactions
1

Profile posts Latest activity Postings Awards About

  • কুরআন মাজীদের উপর বিদ‘আতের আবরণ: পর্ব ২

    (২) কুরআন দিয়ে তাবীযের ব্যবসা :

    দেশের অধিকাংশ প্রকাশনী কুরআনের শুরুতে বা শেষে তাবীযের নকশা সংযুক্ত করে কুরআন ছাপিয়েছে। আর বিদ‘আতী খত্বীব ও মোল্লারা এই তাবীয দিয়ে ব্যবসা করছে এবং মানুষকে ধোঁকা দেয়। মসজিদের ইমাম ও খত্বীবরা হারাম উপার্জন করে থাকে। এমনিতেই তাবীয বাঁধা শিরক। অন্যদিকে পবিত্র কুরআনকে ব্যবসার মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করে এবং এই অপবিত্র আবর্জনাকে কুরআনের সাথে সংযুক্ত করেছে আরো জঘন্য অপরাধ। এজন্য ঈমান-আমল সবই নষ্ট বাতিল হয়ে যাবে। শরীরে তাবীয থাকা অবস্থায় সালাত, ছিয়াম, হজ্জ, যাকাতসহ কোন ইবাদতই কবুল হবে না। এই অবস্থায় মারা গেলে শিরককারী হিসাবে আল্লাহর ক্ষমাও পাবে না। অথচ এই তাবীযকে কুরআনের নামে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। নিম্নের হাদীছগুলো বুঝার অনুরোধ করছি-

    عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ الْجُهَنِيِّ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ৎ أَقْبَلَ إِلَيْهِ رَهْطٌ فَبَايَعَ تِسْعَةً وَأَمْسَكَ عَنْ وَاحِدٍ فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ بَايَعْتَ تِسْعَةً وَتَرَكْتَ هَذَا قَالَ إِنَّ عَلَيْهِ تَمِيْمَةً فَأَدْخَلَ يَدَهُ فَقَطَعَهَا فَبَايَعَهُ وَقَالَ مَنْ عَلَّقَ تَمِيْمَةً فَقَدْ أَشْرَكَ

    উক্ববা বিন আমের আল-জুহানী বলেন, একদা রাসূল (ﷺ)-এর কাছে একটি কাফেলা আগমন করল। অতঃপর তিনি নয়জনকে বায়‘আত করালেন আর একজনকে বাদ দিলেন। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! নয়জনকে বায়‘আত করালেন আর একে ছেড়ে দিলেন কেন? রাসূল (ﷺ) বললেন, তার শরীরে তাবীয বাঁধা আছে। অতঃপর লোকটি শরীরের ভিতরে হাত দিয়ে তাবীয ছিঁড়ে ফেলল। তারপর রাসূল (ﷺ) তাকে বায়‘আত করালেন এবং বললেন, ‘যে ব্যক্তি তাবীয বাঁধল সে শিরক করল’।[আহমাদ হা/১৭৪৫৮; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৪৯২।]

    উক্ত হাদীছ থেকে বুঝা যায় যে শরীরে তাবীয বেঁধে রাখা অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ। ইসলাম গ্রহণ করারও সুযোগ থাকে না। অন্য হাদীছে রাসূল (ﷺ) বলেন, إِنَّ الرُّقَى وَالتَّمَائِمَ وَالتِّوَلَةَ شِرْكٌ ‘নিশ্চয় ঝাড়ফুঁক করা, তাবীয বাঁধা, যাদুটোনা শিরক’।[আবুদাঊদ হা/৩৮৮৩; মিশকাত হা/৪৫৫২; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৩৫৩, ৮ম খণ্ড, পৃঃ ২৭২-২৭৩, ‘চিকিৎসা ও মন্ত্র’ অনুচ্ছেদ।] রাসূল (ﷺ) আরো বলেন, لاَ يُبْقَيَنَّ فِى رَقَبَةِ بَعِيرٍ قِلاَدَةٌ مِنْ وَتَرٍ وَلاَ قِلاَدَةٌ إِلاَّ قُطِعَتْ ‘কোন উটের গলায় যদি মালা বা বালা জাতীয় কিছু থাকে, তাহলে তা কেটে ফেলতে হবে’।[ছহীহ বুখারী হা/৩০০৫।] তিনি আরো বলেন,

    أَنَّهُ مَنْ عَقَدَ لِحْيَتَهُ أَوْ تَقَلَّدَ وَتَرًا أَوْ اسْتَنْجَى بِرَجِيعِ دَابَّةٍ أَوْ عَظْمٍ، فَإِنَّ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْهُ بَرِيءٌ

    ‘যে ব্যক্তি তার দাড়িতে গিঁঠ দিল বা পেচিয়ে রাখল অথবা সূতার মালা পরিধান করল অথবা পশুর মল বা হাড্ডি দিয়ে ইস্তিনজা করল, মুহাম্মাদ (ﷺ) তার জিম্মাদারী থেকে মুক্ত’।[আবুদাঊদ হা/৩; মিশকাত হা/৩৫১।] অন্য হাদীছে এসেছে,

    عَنْ عِيْسَى بْنِ حَمْزَةَ قَالَ دَخَلْتُ عَلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عُكَيْمٍ وَبِهِ حُمْرَةٌ فَقُلْتُ أَلَا تُعَلِّقُ تَمِيْمَةً؟ فَقَالَ نَعُوْذُ بِاللَّهِ مِنْ ذَلِكَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ৎ مَنْ تَعَلَّقَ شَيْئًا وُكِلَ إِلَيْهِ

    ঈসা বিন হামযা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি একদা আব্দুল্লাহ বিন উকাইম-এর কাছে গেলাম। তখন তার শরীরের লাল রঙের তাবীয বাঁধা ছিল। আমি বললাম, তুমি তাবীয বেঁধে রেখেছ? আমরা আল্লাহর কাছে এটা থেকে পরিত্রাণ চাচ্ছি। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শরীরে কোনকিছু বাঁধবে, তাকে সে দিকেই সোপর্দ করা হবে’। অর্থাৎ আল্লাহর নিরাপত্তা থেকে সে বেরিয়ে যাবে।[তিরমিযী হা/২০৭২; সনদ হাসান, ছহীহ তারগীব হা/৩৪৫৬; মিশকাত হা/৪৫৫৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৩৫৭, ৮ম খণ্ড, পৃঃ ২৭৪।]

    উল্লেখ্য যে, কুরআনের আয়াত ও হাদীছে বর্ণিত দু‘আ দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা শরী‘আত সম্মত। এছাড়া শিরক মিশ্রিত কোন মন্ত্র দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা হারাম।[ছহীহ মুসলিম হা/২২০০, ২/২২৪ পৃঃ, ‘সালাম’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২২; মিশকাত হা/৪৫৩০; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৩৩১, ৮ম খণ্ড, পৃঃ ২৬৭।] রাসূল (ﷺ) সূরা ফাতেহা, সূরা ফালাক্ব, নাস প্রভৃতি সূরা ও আয়াত দ্বারা ফুঁক দিয়েছেন, শরীর মাসাহ করেছেন এবং ক্ষতস্থান হলে তাতে থুথু দিয়েছেন।[ছহীহ বুখারী হা/৫৭৩৫-৫৭৩৭, ২/৮৫৪ পৃঃ, ‘চিকিৎসা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৩২, ৩৩, ৩৪।]
    Hasan Ali
    Hasan Ali
    আলহামদুলিল্লাহ
    কুরআন মাজীদের উপর বিদ‘আতের আবরণ: পর্ব ১

    কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করা অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ ইবাদত। এর সবচেয়ে বড় মু‘জিযা হল, এটি আল্লাহর কালাম। তাই এর প্রত্যেকটি অক্ষর, শব্দ, বাক্য ও আয়াত রহমত, বরকত, হেদায়াত, প্রশান্তি ও নেকীতে পরিপূর্ণ। কিন্তু ধর্মব্যবসায়ী কুরআনের সাথে অসংখ্য বিদ‘আতের প্রচলন করেছে এবং একে ব্যবসার পুঁথি বানিয়েছে। আর এই নোংরা বিদ‘আতই কষ্টের সৎ আমলগুলোকে নষ্ট করে দিচ্ছে। কারণ হল শিরক-বিদ‘আত আর যত মিথ্যা-জাল আমল সমাজে প্রচলিত আছে, সবই ইবলীস শয়তানের কুমন্ত্রণায় সৃষ্টি হয়েছে।[সূরা আন‘আম ১১২ ও ১২১; বুখারী হা/৩২১০, ৪৭০১, ৬২১৩।] সৎ আমলের সাথে অপবিত্র ইবলীসী আমল মিশ্রিত হলে কস্মিনকালেও আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না (সূরা বাক্বারাহ ৪২; মায়েদাহ ৫)। কারণ আল্লাহর কাছে কেবল পবিত্র আমলই কবুল হয়।[সূরা ফাত্বির ১০; মুসলিম হা/১০১৫]

    (১) বাংলা উচ্চারণ করে কুরআন তেলাওয়াত করা :

    কুরআন তেলাওয়াত করতে পারে না এমন অবসরপ্রাপ্ত ও বৃদ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যেই বাংলা কিংবা ইংরেজী ভাষায় উচ্চারণ করা কুরআন পড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এ বিষয়ে ধর্মব্যবসায়ীরা তাদেরকে উৎসাহিত করে থাকে। অথচ তারা নেকী তো পাবেই না, বরং হারাম কাজ করার কারণে পাপী হবে। কারণ কুরআন মাজীদ সরাসরি আল্লাহর কালাম। অন্য কোন ভাষায় উচ্চারণ করে তেলাওয়াত করা হারাম। এতে সঠিক উচ্চারণ প্রকাশ পায় না। ফলে অর্থ বিকৃত হয়ে যায়। কুরআনুল কারীমকে আরবী ভাষায় অবতীর্ণ করা হয়েছে। তাই আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় তিলাওয়াত করা যাবে না। তবে অন্য ভাষায় অনুবাদ করাতে কোন সমস্যা নেই।[ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৩/১২০-১২১ পৃ.।] ইমাম যারকাশী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় কুরআনুল কারীমকে তিলাওয়াত করা হারাম’।[আল-ইতক্বান, ২/১৭১ পৃ.। ] ইমাম ইবনু হাজার আল-হাইছামী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, কুরআনুল কারীমকে আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষার অক্ষরে লেখা হারাম’।[ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-৩২৩০০।] শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা তাঁর পবিত্র কুরআনকে আরবী ভাষাতেই অবতীর্ণ করেছেন। এটি আরবী কুরআন। সুতরাং এটিকে আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় পাঠ করা জায়েয নয়। সালাতের মধ্যে এবং বাইরে উভয় অবস্থাতেই কুরআনুল কারীম আরবীতেই তিলাওয়াত করতে হবে। তবে যেকোন ভাষায় কুরআনের অনুবাদ করা যাবে। যাতে কুরআনের মূলভাব ও বিধি-বিধান সম্পর্কে অবগত হতে পারে।[ফাতাওয়া নূরুন ‘আলাদ দারব ইবনু বায, তাঁর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, https://binbay.org.sa/fatwas/29156।] শায়খ মুহাম্মাদ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘আরবী ভাষা ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় কুরআনকে প্রকাশ করা অবৈধ।[ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১৯১৪৯৭।]

    উল্লেখ্য যে, শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ), শাযখ আব্দুর রাযযাক আফিফী (রাহিমাহুল্লাহ) এবং আরো অনেক বড় বড় আলিমের উপস্থিতিতে এ সম্পর্কে একটি আন্তর্জাতিক ইসলামী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। উক্ত সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোকে পরবর্তীতে একটি স্বতন্ত্র গ্রন্থরূপে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। যার নামকরণ করা হয়েছে, تحريم كتابة القرآن الكريم بحروف غير عربية ‘কুরআনুল কারীমকে আরবী ভাষার অক্ষর ব্যতীত অন্য ভাষায় লিপিবদ্ধ করা হারাম’ নামে। সেখানে বলা হয়েছে, উক্ত বিষয়ে অধ্যয়ন, আলোচনা ও মতবিনিময়ের পর ঊলামা পরিষদের ঐকমত্যানুসারে এই সিদ্ধান্ত সংগৃহীত হল যে, ‘ল্যাটিন অক্ষরে বা অন্য কোন ভাষার অক্ষরে কুরআনুল কারীমকে লিপিবদ্ধ করা হারাম’।[তাহরীমু কিতাবাতিল কুরআনিল কারীম বি হুরূফি গাইরি আরাবিয়্যাহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৬। ] যারা উচ্চারণ করা কুরআন প্রিন্ট করে বাজারে ব্যবসা করছে তারা অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ করছে।[ফাতাওয়া লাজনাহ আদ-দায়েমাহ ৫/৩৩০ পৃঃ; নববী, আল-মাজমূ‘উ ৩/৩৭৯।] আল্লাহ তাদেরকে হেদায়াত দান করুন! প্রত্যেক মুসলিমের উচিত এ সমস্ত প্রকাশনীকে প্রত্যাখ্যান করা।

    তাই প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অপরিহার্য দায়িত্ব হল, কুরআন শিক্ষা করা, বেশী বেশী তেলাওয়াত করা এবং এর অর্থ ও ভাব বুঝার চেষ্টা করা। অন্যথা কবরে ফেরেশতাদের প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব হবে না।[আবুদাঊদ হা/৪৭৫৩, সনদ ছহীহ।]
    • Like
    Reactions: Habib Bin Tofajjal
    Habib Bin Tofajjal
    Habib Bin Tofajjal
    আসসালামু আলাইকুম,
    ফোরামে প্রোফাইল পোস্টে রিচ কম।
    আপনি চাইলে পোস্টগুলো ফোরামের উপযুক্ত ক্যাটাগরিতে করতে পারেন রিচ বেশী হবে ইনশাআল্লাহ।
  • Loading…
  • Loading…
  • Loading…
  • Loading…
Total Threads
12,902Threads
Total Messages
16,403Comments
Total Members
3,337Members
Latest Messages
Emon11Latest member
Top