If you're in doubt ask الله.
Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
সালাতে সতর ঢাকা
সালাতে দাড়ানোর পূর্বে একজন মহিলার সর্বপ্রথম করণীয় হলো, সতর ঢেকে নেওয়া। কেননা সতর ঢাকা সালাতের একটি অন্যতম শর্ত। এ জন্যই উলঙ্গের সালাত অথবা যে তার লজ্জাস্থান পরিপূর্ণভাবে ঢাকে না, তার সালাত শুদ্ধ হবে না।
সালাতে সতর ঢাকা ওয়াজিব। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন,
আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, স্ত্রীলোকেরা উলঙ্গ অবস্থায় বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করত এবং বলত, কে আমাকে একটি কাপড় ধার দিবে? এর দ্বারা উদ্দেশ্য স্বীয় লজ্জাস্থান ঢাকা। আর এটাও বলত, আজ খুলে যাচ্ছে কিয়দংশ বা পূর্ণাংশ। তবে যে অংশটা খুলে গেছে সে অংশটা আমি আর কখনো হালাল করব না। এর প্রেক্ষিতে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়, ‘হে আদম সন্তান! তোমার প্রত্যেক সালাতের সময় তোমাদের সৌন্দর্য (পোশাক) গ্রহণ করো।’
ইমাম ইবন হাযম (রাহি) বলেন, ‘এ ব্যাপারে সবাই একমত যে, আয়াতে উল্লিখিত ‘সৌন্দর্য গ্রহণ করা’ দ্বারা উদ্দেশ্য সতর ঢাকা।’ শব্দের ব্যাপকতা ও আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষাপট থেকে এমনটিই বোঝা যায়।
উম্মু আতিয়া (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) ঈদের দিনে ঋতুমতী ও পর্দানশীন নারীদের বের করে আনার আদেশ দেন; যাতে তারা মুসলিমদের জামাআত ও দুআয় অংশগ্রহণ করতে পারে। অবশ্য ঋতুমতী নারীগণ সালাতের জায়গা হতে দূরে অবস্থান করবে। এক মহিলা বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কারো কারো ওড়না নেই।’ তিনি বললেন, ‘তার সাথির উচিত তাকে নিজের ওড়না পরিয়ে দেওয়া।’
ইমাম বুখারী (রাহি) এ হাদীসের জন্য এভাবে অধ্যায় রচনা করেছেন: সালাতের জন্য কাপড় পরিধান করা ওয়াজিব।
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন,
‘প্রাপ্তবয়স্কা মেয়ে খিমার পরিধান ছাড়া সালাত পড়লে, আল্লাহ তার সালাত কবুল করবেন না।’
এসব হাদীস প্রমাণ করে, সালাতে নারীদের সতর ঢাকা ওয়াজিব।
সালাতে নারীদের সতরের পরিমাণ
চেহারা ও দুহাতের তালু ব্যতীত নারীর শরীরের সর্বাঙ্গ সতর। কাজেই চেহারা ও দুই হাতের তালু ব্যতীত তাদের গোটা শরীর ঢাকতে হবে। এ ব্যাপারে আমার ‘জিলবাবুল মারআতিল মুসলিমা’ নামক গ্রন্থে বিস্তারিত দলীল-আদিল্লা উল্লেখ করেছি। এখানে পুনরায় উল্লেখ করার প্রয়োজন বোধ করছি না।
মহিলাদের এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে যে, তার দুপায়ের ওপরের অংশও সতরের অন্তর্ভুক্ত। তাই তা ঢাকা ওয়াজিব। এর প্রমাণ উম্মুল মুমিনীন সালামা (রা)এর হাদীস। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! মহিলারা তাদের কাপড়ের প্রান্ত বা আঁচল কীভাবে সামলাবে?’ তিনি বললেন, ‘তারা (গোড়ালি হতে) এক বিঘত পরিমাণ ওপরে রাখবে।’ উম্মু সালামা (রা) বললেন, ‘এতে তো তাদের পা উন্মুক্ত হয়ে যাবে।’ তিনি বললেন, ‘তবে তারা এক হাত পরিমাণ নিচ পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখবে; কিন্তু এর বেশি না।’
সালাতে নারীর পোশাক
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে, নারীরা সালাতে এমন পোশাক পরিধান করবে যা তাদের পরিপূর্ণ সতর ঢেকে ফেলবে। তবে সালাতে তাদের পোশাক কেমন হবে, তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।
মুআযা আল-আদাবিয়া বলেন, একদিন উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা) একটি জামা ও খিমার পরিধান করে সালাতে দাঁড়ান। অতঃপর এক দাসী এসে তার ওপর আরো একটি কাপড় জড়িয়ে দেন।
উমার (রা) ইবনুল খাত্তাব (রা) বলেন, ‘মহিলারা (সর্বনিম্ন) তিন কাপড়ে সালাত আদায় করবে।’ আবদুল্লাহ ইবন উমার (রা) বলেন, ‘কোনো মহিলা যখন সালাত আদায় করবে, তখন সে যেন তার শরীর জামা, ওড়না ও চাদর দিয়ে পরিপূর্ণভাবে ঢেকে নিয়ে সালাত আদায় করে।’
এই তিন কাপড়ে সালাত আদায় করা মূলত সতর ঢাকার ব্যাপারে পরিপূর্ণতা। তবে তারা যদি এমন একটি লম্বা কাপড় পরিধান করে সালাত আদায় করে যা দ্বারা তাদের সতর ঢেকে যাবে, তাহলে মাত্র এক কাপড়ে সালাত আদায় করা বৈধ হবে। কেননা তাদেরকে সালাতে সতর ঢাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে; কিন্তু কী দিয়ে বা কতটি কাপড় দিয়ে ঢাকতে হবে, তা উল্লেখ করা হয়নি।
ইমাম ইবনুল মুনযির নাইসাবুরী (রাহি) বলেন, ‘সালাতে মহিলাদের ওপর ওয়াজিব হলো, নিজেদের চেহারা ও হাতের তালু ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখা। এ ক্ষেত্রে তারা এক বা দুই বা ততোধিক কাপড়ে সালাত আদায় করতে পারে। মোটকথা, সালাতে যে অঙ্গগুলো ঢেকে রাখা ওয়াজিব, সেসব অঙ্গ ঢেকে রাখলেই হবে। আমার মতে সালাফদের থেকে তিন কাপড়ে বা চার কাপড়ে নারীদেরকে সালাত আদায় করার যে নির্দেশ পাওয়া যায়, তা মূলত মুস্তাহাব ও সতর্কতার জন্য ছিল। আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন। আমি এমন কারো কথা জানি না, যিনি বলেছেন যে, কোনো মহিলা যদি এক কাপড়ে গোটা শরীর ঢেকে সালাত আদায় করে, তবুও তাকে পুনরায় সালাত আদায় করতে হবে।’
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত একটি হাদীস এ মতকে আরো শক্তিশালী করে। তিনি বলেন, ‘মুমিন মহিলারা নিজেদের শরীর চাদর দিয়ে আবৃত করে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে ফজরের সালাতে অংশ গ্রহণ করতেন।’
এখান থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, মহিলারা নবী (ﷺ) -এর সাথে মাত্র এক কাপড় (চাদর) পরিধান করে সালাত আদায় করতেন। এ হাদীস থেকে প্রমাণ হয়, তারা একটি চাদর দিয়ে শরীর মুড়িয়ে নেওয়াটাই যথেষ্ট মনে করতেন।
ইমাম বুখারী (রাহি) এ হাদীসের জন্য এভাবে অধ্যায় রচনা করেন: ‘নারীরা কত কাপড়ে সালাত আদায় করবে। ইকরিমা বলেছেন, যদি একটি কাপড়ে মহিলার সমস্ত শরীর ঢেকে যায়, তাহলে তাতেই সালাত আদায় করা যথেষ্ট হবে।’
ইকরিমা (রাহি)-এর এ উক্তিটি ইমাম আবদুর রাযযাক তার মুসান্নাফ (৫০৩৩ নং) গ্রন্থে সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন।
সালাতে অনিচ্ছাকৃতভাবে সামান্য সতর খুলে গেলে করণীয়
সালাতে অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনো নারীর যদি সতরের কোনো অংশ প্রকাশ পেয়ে যায়, যেমন কিছু চুল অথবা নলা বা বাহুর কিছু অংশ, তাহলে তাতে কোনো সমস্যা নেই। এ কারণে তাকে পাকড়াও করা হবে না, ইনশাআল্লাহ। তবে তা হতে হবে অনিচ্ছাকৃতভাবে, না জানার কারণে।
এর প্রমাণ হচ্ছে সালামা আল-জুরমী (রা)-এর হাদীস। তিনি বলেন, আমি ছয় কিংবা সাত বছর বয়সে ইমামতি করতাম। আমার একটি চাদর ছিল। যখন আমি সাজদায় যেতাম তখন চাদরটি আমার গায়ের সঙ্গে জড়িয়ে ওপরের দিকে উঠে যেত। তখন গোত্রের জনৈকা মহিলা বলল, ‘তোমরা আমাদের দৃষ্টি থেকে তোমাদের কারীর নিতম্ব আবৃত করে দাও না কেন?’ তারা কাপড় খরিদ করে আমাকে একটি জামা তৈরি করে দিলো। এ জামা পেয়ে আমি এত খুশি হয়েছিলাম যে, আর কিছুতে এত খুশি হইনি।
এটাই হলো ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বাল (রাহি)-এর মত; যেমনটি মাসায়িল আবদুল্লাহ (২২৫) গ্রন্থে রয়েছে।
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবন তাইমিয়া (রাহি) বলেন, ‘সালাতাবস্থায় যদি কোনো মহিলার সামান্য চুল বা শরীরের কিছু অংশ অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রকাশ পেয়ে যায়, তাহলে তাকে পুনরায় সালাত আদায় করতে হবে না। এটিই ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বাল-সহ অধিকাংশ আলিমের মত। কিন্তু যদি অনেক বেশি প্রকাশ পেয়ে যায়, তাহলে ওয়াক্ত শেষ না-হলে তাকে সালাত পুনরায় আদায় করতে হবে। এটাই চার ইমাম-সহ অন্যান্যদের মত।’
সালাতে দাড়ানোর পূর্বে একজন মহিলার সর্বপ্রথম করণীয় হলো, সতর ঢেকে নেওয়া। কেননা সতর ঢাকা সালাতের একটি অন্যতম শর্ত। এ জন্যই উলঙ্গের সালাত অথবা যে তার লজ্জাস্থান পরিপূর্ণভাবে ঢাকে না, তার সালাত শুদ্ধ হবে না।
সালাতে সতর ঢাকা ওয়াজিব। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَابَنِي آدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِنْدَ كُلِّ مَسْجِدٍ
হে আদম সন্তান! তোমার প্রত্যেক সালাতের সময় তোমাদের সৌন্দর্য (পোশাক) গ্রহণ করো।আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, স্ত্রীলোকেরা উলঙ্গ অবস্থায় বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করত এবং বলত, কে আমাকে একটি কাপড় ধার দিবে? এর দ্বারা উদ্দেশ্য স্বীয় লজ্জাস্থান ঢাকা। আর এটাও বলত, আজ খুলে যাচ্ছে কিয়দংশ বা পূর্ণাংশ। তবে যে অংশটা খুলে গেছে সে অংশটা আমি আর কখনো হালাল করব না। এর প্রেক্ষিতে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়, ‘হে আদম সন্তান! তোমার প্রত্যেক সালাতের সময় তোমাদের সৌন্দর্য (পোশাক) গ্রহণ করো।’
ইমাম ইবন হাযম (রাহি) বলেন, ‘এ ব্যাপারে সবাই একমত যে, আয়াতে উল্লিখিত ‘সৌন্দর্য গ্রহণ করা’ দ্বারা উদ্দেশ্য সতর ঢাকা।’ শব্দের ব্যাপকতা ও আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষাপট থেকে এমনটিই বোঝা যায়।
উম্মু আতিয়া (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) ঈদের দিনে ঋতুমতী ও পর্দানশীন নারীদের বের করে আনার আদেশ দেন; যাতে তারা মুসলিমদের জামাআত ও দুআয় অংশগ্রহণ করতে পারে। অবশ্য ঋতুমতী নারীগণ সালাতের জায়গা হতে দূরে অবস্থান করবে। এক মহিলা বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কারো কারো ওড়না নেই।’ তিনি বললেন, ‘তার সাথির উচিত তাকে নিজের ওড়না পরিয়ে দেওয়া।’
ইমাম বুখারী (রাহি) এ হাদীসের জন্য এভাবে অধ্যায় রচনা করেছেন: সালাতের জন্য কাপড় পরিধান করা ওয়াজিব।
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন,
‘প্রাপ্তবয়স্কা মেয়ে খিমার পরিধান ছাড়া সালাত পড়লে, আল্লাহ তার সালাত কবুল করবেন না।’
এসব হাদীস প্রমাণ করে, সালাতে নারীদের সতর ঢাকা ওয়াজিব।
সালাতে নারীদের সতরের পরিমাণ
চেহারা ও দুহাতের তালু ব্যতীত নারীর শরীরের সর্বাঙ্গ সতর। কাজেই চেহারা ও দুই হাতের তালু ব্যতীত তাদের গোটা শরীর ঢাকতে হবে। এ ব্যাপারে আমার ‘জিলবাবুল মারআতিল মুসলিমা’ নামক গ্রন্থে বিস্তারিত দলীল-আদিল্লা উল্লেখ করেছি। এখানে পুনরায় উল্লেখ করার প্রয়োজন বোধ করছি না।
মহিলাদের এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে যে, তার দুপায়ের ওপরের অংশও সতরের অন্তর্ভুক্ত। তাই তা ঢাকা ওয়াজিব। এর প্রমাণ উম্মুল মুমিনীন সালামা (রা)এর হাদীস। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! মহিলারা তাদের কাপড়ের প্রান্ত বা আঁচল কীভাবে সামলাবে?’ তিনি বললেন, ‘তারা (গোড়ালি হতে) এক বিঘত পরিমাণ ওপরে রাখবে।’ উম্মু সালামা (রা) বললেন, ‘এতে তো তাদের পা উন্মুক্ত হয়ে যাবে।’ তিনি বললেন, ‘তবে তারা এক হাত পরিমাণ নিচ পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখবে; কিন্তু এর বেশি না।’
সালাতে নারীর পোশাক
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে, নারীরা সালাতে এমন পোশাক পরিধান করবে যা তাদের পরিপূর্ণ সতর ঢেকে ফেলবে। তবে সালাতে তাদের পোশাক কেমন হবে, তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।
মুআযা আল-আদাবিয়া বলেন, একদিন উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা) একটি জামা ও খিমার পরিধান করে সালাতে দাঁড়ান। অতঃপর এক দাসী এসে তার ওপর আরো একটি কাপড় জড়িয়ে দেন।
উমার (রা) ইবনুল খাত্তাব (রা) বলেন, ‘মহিলারা (সর্বনিম্ন) তিন কাপড়ে সালাত আদায় করবে।’ আবদুল্লাহ ইবন উমার (রা) বলেন, ‘কোনো মহিলা যখন সালাত আদায় করবে, তখন সে যেন তার শরীর জামা, ওড়না ও চাদর দিয়ে পরিপূর্ণভাবে ঢেকে নিয়ে সালাত আদায় করে।’
এই তিন কাপড়ে সালাত আদায় করা মূলত সতর ঢাকার ব্যাপারে পরিপূর্ণতা। তবে তারা যদি এমন একটি লম্বা কাপড় পরিধান করে সালাত আদায় করে যা দ্বারা তাদের সতর ঢেকে যাবে, তাহলে মাত্র এক কাপড়ে সালাত আদায় করা বৈধ হবে। কেননা তাদেরকে সালাতে সতর ঢাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে; কিন্তু কী দিয়ে বা কতটি কাপড় দিয়ে ঢাকতে হবে, তা উল্লেখ করা হয়নি।
ইমাম ইবনুল মুনযির নাইসাবুরী (রাহি) বলেন, ‘সালাতে মহিলাদের ওপর ওয়াজিব হলো, নিজেদের চেহারা ও হাতের তালু ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখা। এ ক্ষেত্রে তারা এক বা দুই বা ততোধিক কাপড়ে সালাত আদায় করতে পারে। মোটকথা, সালাতে যে অঙ্গগুলো ঢেকে রাখা ওয়াজিব, সেসব অঙ্গ ঢেকে রাখলেই হবে। আমার মতে সালাফদের থেকে তিন কাপড়ে বা চার কাপড়ে নারীদেরকে সালাত আদায় করার যে নির্দেশ পাওয়া যায়, তা মূলত মুস্তাহাব ও সতর্কতার জন্য ছিল। আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন। আমি এমন কারো কথা জানি না, যিনি বলেছেন যে, কোনো মহিলা যদি এক কাপড়ে গোটা শরীর ঢেকে সালাত আদায় করে, তবুও তাকে পুনরায় সালাত আদায় করতে হবে।’
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত একটি হাদীস এ মতকে আরো শক্তিশালী করে। তিনি বলেন, ‘মুমিন মহিলারা নিজেদের শরীর চাদর দিয়ে আবৃত করে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে ফজরের সালাতে অংশ গ্রহণ করতেন।’
এখান থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, মহিলারা নবী (ﷺ) -এর সাথে মাত্র এক কাপড় (চাদর) পরিধান করে সালাত আদায় করতেন। এ হাদীস থেকে প্রমাণ হয়, তারা একটি চাদর দিয়ে শরীর মুড়িয়ে নেওয়াটাই যথেষ্ট মনে করতেন।
ইমাম বুখারী (রাহি) এ হাদীসের জন্য এভাবে অধ্যায় রচনা করেন: ‘নারীরা কত কাপড়ে সালাত আদায় করবে। ইকরিমা বলেছেন, যদি একটি কাপড়ে মহিলার সমস্ত শরীর ঢেকে যায়, তাহলে তাতেই সালাত আদায় করা যথেষ্ট হবে।’
ইকরিমা (রাহি)-এর এ উক্তিটি ইমাম আবদুর রাযযাক তার মুসান্নাফ (৫০৩৩ নং) গ্রন্থে সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন।
সালাতে অনিচ্ছাকৃতভাবে সামান্য সতর খুলে গেলে করণীয়
সালাতে অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনো নারীর যদি সতরের কোনো অংশ প্রকাশ পেয়ে যায়, যেমন কিছু চুল অথবা নলা বা বাহুর কিছু অংশ, তাহলে তাতে কোনো সমস্যা নেই। এ কারণে তাকে পাকড়াও করা হবে না, ইনশাআল্লাহ। তবে তা হতে হবে অনিচ্ছাকৃতভাবে, না জানার কারণে।
এর প্রমাণ হচ্ছে সালামা আল-জুরমী (রা)-এর হাদীস। তিনি বলেন, আমি ছয় কিংবা সাত বছর বয়সে ইমামতি করতাম। আমার একটি চাদর ছিল। যখন আমি সাজদায় যেতাম তখন চাদরটি আমার গায়ের সঙ্গে জড়িয়ে ওপরের দিকে উঠে যেত। তখন গোত্রের জনৈকা মহিলা বলল, ‘তোমরা আমাদের দৃষ্টি থেকে তোমাদের কারীর নিতম্ব আবৃত করে দাও না কেন?’ তারা কাপড় খরিদ করে আমাকে একটি জামা তৈরি করে দিলো। এ জামা পেয়ে আমি এত খুশি হয়েছিলাম যে, আর কিছুতে এত খুশি হইনি।
এটাই হলো ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বাল (রাহি)-এর মত; যেমনটি মাসায়িল আবদুল্লাহ (২২৫) গ্রন্থে রয়েছে।
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবন তাইমিয়া (রাহি) বলেন, ‘সালাতাবস্থায় যদি কোনো মহিলার সামান্য চুল বা শরীরের কিছু অংশ অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রকাশ পেয়ে যায়, তাহলে তাকে পুনরায় সালাত আদায় করতে হবে না। এটিই ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বাল-সহ অধিকাংশ আলিমের মত। কিন্তু যদি অনেক বেশি প্রকাশ পেয়ে যায়, তাহলে ওয়াক্ত শেষ না-হলে তাকে সালাত পুনরায় আদায় করতে হবে। এটাই চার ইমাম-সহ অন্যান্যদের মত।’
মুসলিম নারীর পূর্ণাঙ্গ মাসাইল
মূল: আল্লামা মুহাদ্দিস আমর আবদুল মুনঈম সালিম
অনুবাদ ও সম্পাদনা: উস্তায আব্দুল্লাহ মাহমুদ
মূল: আল্লামা মুহাদ্দিস আমর আবদুল মুনঈম সালিম
অনুবাদ ও সম্পাদনা: উস্তায আব্দুল্লাহ মাহমুদ
Last edited: