If you're in doubt ask الله.
Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
দলীল-৩ আল্লাহ তাআলা বলেন:
এ আয়াতটি কখন নাযিল হয়েছিল তার বিবরণ কুরআন মাজীদে এভাবে এসেছে:
আলোচ্য আয়াত দুটি থেকে প্রমাণিত হলো, ১) সালাতুল জুমু'আর জন্য আযান দেওয়া হতো, ২) জুমু'আর দিনটিতে কোনো বিশেষ সালাত ছিল, যার জন্য লোকেরা জমা হতো। অথচ এ দুটি আমলের ব্যাপারে (উক্ত আয়াতগুলোর পূর্বের) কোনো হুকুম কুরআন মাজীদে নেই। অর্থাৎ এ দুটি আমল এমন কোনো হুকুম দ্বারা পালন করা হচ্ছিল, যা কুরআন মাজীদে নাযিল হয়নি। বরং তা কুরআন মাজীদের হুকুম থেকে স্বতন্ত্র ছিল। সেই স্বতন্ত্র হুকুমের বিরোধী আমল হওয়াতেই আল্লাহ তাআলা উপরিউক্ত আয়াতগুলোর মাধ্যমে সতর্ক করেন। সুতরাং প্রমাণিত হলো, এই হুকুমের উপর আমল আল্লাহর নাযিলকৃত আরেক প্রত্যাদেশ তথা হাদীসের বদৌলতে চলছিল। সুতরাং হাদীস ওহি।
আয়াতটি হাদীসের বিরোধী আমল করার ব্যাপারে সতর্কতা স্বরূপ নাযিল হয়। এ থেকে হাদীসের আহকামের গুরুত্বও সুস্পষ্ট হয়।
দলীল-৪ আল্লাহ তাআলা বলেন:
আয়াতটি থেকে বোঝা যায় যে, নিরাপদ ও শান্তির অবস্থায় কোনো সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সালাত আদায় করা হতো। আর ঐ পদ্ধতি সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে “যেভাবে তোমাদের শেখানো হয়েছে”। সমস্ত কুরআন মাজীদে সালাতের কোনো পদ্ধতি পাওয়া যাবে না। অর্থাৎ অন্য কোনো মাধ্যমে সালাত শেখানো হয়েছে। আর সেই মাধ্যমটিকেই হাদীস বলা হয়। সুতরাং হাদীসও আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত।
[সংযোজন: এ পর্যায়ে কোনো কোনো মুনকিরীনে হাদীসের বক্তব্য নিম্নরূপ: মুনকিরীনে হাদীসদের মন্তব্য: সালাত কত রাকআত এবং কুরআনে কি রাকআতের কথা আছে?- বলে প্রশ্ন করা হয়। আসলে সালাত সব ওয়াক্তেই দুই রাকআত দেখুন: সূরা নিসা – ১০২ আয়াত। এখানে দেখা যায় মুমিনদের - একদল এক রাকআত পড়ার পর চলে গেলেন এবং অন্যদল এসে এক রাকআত পড়ার পর সালাত শেষ হলো এবং রাসূল উভয় ক্ষেত্রে ইমামতিতে বহাল থেকে দুই রাকআত পড়লেন যার থেকে অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, সব ওয়াক্তের সালাতই দুই রাকআত।
বিশ্লেষণ: আলোচ্য আয়াতটি পূর্বাপর বর্ণনাসহ লক্ষ্য করুন:
আমরা যদি সহীহ হাদীস দ্বারা আয়াতগুলোর ব্যাখ্যা গ্রহণ না করা হয়, সেক্ষেত্রে আলোচ্য আয়াতগুলোর দাবি হবে নিম্নরূপ:
১) সফরের সালাত কসর বা হ্রাস করা যায়। হ্রাস করা বা না করাতে কোনো গুনাহ নেই। কিন্তু কত রাকআত হ্রাস করা যায় সে কথা বর্ণনা করা হয়নি। তাছাড়া রুকু, কওমা ও জলসা ছাড়া কেবল কিয়াম ও সিজদা করাই যথেষ্ট বলেই আয়াতের ধারাবাহিকতা থেকে বোঝা যায়। আর এটাও সালাত হ্রাস করার একটি উপায়।
২) শত্রুর আক্রমণের ভয় থাকলে মুসলিমদের একপক্ষ ইমামের সাথে সালাতে দাঁড়াবে এবং দ্বিতীয় পক্ষ পাহারাতে থাকবে। প্রথম পক্ষ সালাত হ্রাস কল্পে কেবল কিয়াম ও সিজদা সম্পন্ন করে ফিরে (এসে পাহারাতে) যাবে। তখন দ্বিতীয় পক্ষ ইমামের সাথে সালাতে শরীক হয়ে প্রথমপক্ষের ন্যায় হ্রাসকৃত সালাত তথা কেবল কিয়াম ও সিজদা আদায় করবে। সালাতের অন্যান্য রুকনের কোনো বর্ণনা আয়াতগুলোতে আসেনি।
৩) এ প্রক্রিয়ায় সংক্ষেপে সালাত আদায়ের পর যিকির অব্যাহত রাখতে হবে এবং শত্রুর আক্রমণের ভয় না থাকলে সালাতগুলোকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পুনরায় সঠিক পন্থায় পড়তে হবে। অর্থাৎ উক্ত পন্থাটি স্থায়ী নয়। নিচের আয়াতটি থেকেও এই দাবিই প্রমাণিত হয়। এ মর্মে আল্লাহ তাআলা বলেন:
সুতরাং প্রমাণিত হলো, সালাতুল খওফ বা ভয়-ভীতির সালাত কোনো সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে আদায়ের বাধ্যবাধকতা নেই।৬ এমনকী হাটাচলা অবস্থাতেও আদায় করা যায়। আর তখন রুকু, সিজদা ও জলসা এর কোনোটিরই প্রয়োজন। আর এটাও সালাত হ্রাস করার একটি পদ্ধতি মাত্র। এ কারণে সালাতুল খওফ (সূরা নিসা: ১০২ আয়াত) দ্বারা সর্বাবস্থায় সালাত দুই রাকআত প্রমাণিত হয় না। কেননা সালাতুল খওফের ব্যাপারে সূরা বাকারার ২৩৮-৩৯ নং আয়াতটি সাধ্যমতো যে-কোনো ভাবে ঐ মুহূর্তের সালাত আদায় করতে বলা হয়েছে।
সুতরাং “যেভাবে তোমাদের শেখানো হয়েছে” এ কথাটি স্বতন্ত্র কোনো পদ্ধতিকে বোঝানো হয়েছে যা কুরআনে উল্লেখ করা হয়নি। আর সেটাই হলো হাদীস।৭ – [সংকলক]
১. সূরা জুমু'আ: ৯।
২. সূরা জুমু'আ: ১১।
৩. সূরা বাকারা: ২৩৮-৩৯।
৪. সূরা নিসা: ১০১-১০৩।
৫. সূরা বাকারা: ২৩৯।
৬. হাদীসে সালাতুল খওফের বিভিন্ন পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে, যেখানে কুরআনের উক্ত দাবির বিস্তারিত বর্ণনাও প্রেক্ষাপটের সমর্থন মেলে। পক্ষান্তরে হাদীস অস্বীকারকারীগণ ভয়-ভীতির সালাতের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতির দাবি তুলে স্বয়ং কুরআনেরই বিরোধিতা করছে। এ থেকে প্রমাণিত হয় হাদীসই কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যা।
৭. এ পর্যায়ে প্রতি রাকআতে দুই বার রুকু করার স্বপক্ষে যেসব দলীল উপস্থাপন করা হয়েছে। যেমন: সাক্ষী দুই, চোখ দুই, কান দুই, নাকের ছিদ্র দুই, জোড়া জোড়া সৃষ্টি প্রভৃতি। এর কোনোটি দ্বারাই সালাতের প্রতি রাকআতে দুই বার রুকু করার প্রমাণ হয় না। উক্ত বিষয়গুলো দুই দুই বা জোড়া হওয়ার বাস্তব প্রমাণ রয়েছে। সালাতের একটি বড়ো রুকন হলো রুকু করা। ১৪০০ বছর পূর্বে যে সালাত আদায় শুরু হয় তাতে দুই বার রুকু করার প্রমাণের জন্য কমছে কম দুটি সুস্পষ্ট দলীল উপস্থাপন করা সম্ভব হলো না? হায় আফসোস! হাদীস অস্বীকারকারীদের অপচেষ্টার জন্য।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
“হে মুমিনগন! যখন জুমু'আর দিন সালাতের জন্য আহবান করা (আযান দেওয়া) হয়, তখন দ্রুত আল্লাহর যিকিরের দিকে আসো এবং ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বুঝে থাকো।”১এ আয়াতটি কখন নাযিল হয়েছিল তার বিবরণ কুরআন মাজীদে এভাবে এসেছে:
وَإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْواً انفَضُّوا إِلَيْهَا وَتَرَكُوكَ قَائِماً قُلْ مَا عِندَ اللَّهِ خَيْرٌ مِّنَ اللَّهْوِ وَمِنَ التَّجَارَةِ وَاللَّهُ خَيْرُ الرَّازِقِينَ
“আর যখন লোকেরা বাণিজ্য ও ক্রীড়াকৌতুক দেখে তখন আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে যায়। বলুন: আল্লাহর কাছে যা আছে তা ক্রীড়াকৌতুক ও বাণিজ্য অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বোত্তম রিযিকদাতা।”২আলোচ্য আয়াত দুটি থেকে প্রমাণিত হলো, ১) সালাতুল জুমু'আর জন্য আযান দেওয়া হতো, ২) জুমু'আর দিনটিতে কোনো বিশেষ সালাত ছিল, যার জন্য লোকেরা জমা হতো। অথচ এ দুটি আমলের ব্যাপারে (উক্ত আয়াতগুলোর পূর্বের) কোনো হুকুম কুরআন মাজীদে নেই। অর্থাৎ এ দুটি আমল এমন কোনো হুকুম দ্বারা পালন করা হচ্ছিল, যা কুরআন মাজীদে নাযিল হয়নি। বরং তা কুরআন মাজীদের হুকুম থেকে স্বতন্ত্র ছিল। সেই স্বতন্ত্র হুকুমের বিরোধী আমল হওয়াতেই আল্লাহ তাআলা উপরিউক্ত আয়াতগুলোর মাধ্যমে সতর্ক করেন। সুতরাং প্রমাণিত হলো, এই হুকুমের উপর আমল আল্লাহর নাযিলকৃত আরেক প্রত্যাদেশ তথা হাদীসের বদৌলতে চলছিল। সুতরাং হাদীস ওহি।
আয়াতটি হাদীসের বিরোধী আমল করার ব্যাপারে সতর্কতা স্বরূপ নাযিল হয়। এ থেকে হাদীসের আহকামের গুরুত্বও সুস্পষ্ট হয়।
দলীল-৪ আল্লাহ তাআলা বলেন:
حَفِظُوا عَلَى الصَّلَوَتِ وَالصَّلوةِ الْوُسْطَى * وَقُومُوا لِلَّهِ قَنِتِيْنَ ﴿۸۳۲﴾ فَإِنْ خِفْتُمْ فَرِجَالًا أَوْرَكْبَانًا فَإِذَا أَمِنْتُمْ فَاذْكُرُوا اللَّهَ كَمَا عَلَّمَكُمْ مَّا لَمْ تَكُوْنُوْا تَعْلَمُوْنَ (٣٢)
“সালাতসমূহের হিফাজাত করো এবং মধ্যবর্তী সালাতের। আর আল্লাহ তাআলার সামনে খুবই বিনীতভাবে দাঁড়াও। অতঃপর যদি তোমাদের কারো (শত্রুর) ব্যাপারে ভয় হয়, তাহলে পদচারী অবস্থায় ও সওয়ারি উপরে আদায় করে নাও। তারপর যখন তোমরা নিরাপত্তা পাবে, তখন আল্লাহর যিকির করো, যেভাবে তোমাদের শেখানো হয়েছে, যা তোমরা ইতঃপূর্বে জানতে না।”৩আয়াতটি থেকে বোঝা যায় যে, নিরাপদ ও শান্তির অবস্থায় কোনো সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সালাত আদায় করা হতো। আর ঐ পদ্ধতি সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে “যেভাবে তোমাদের শেখানো হয়েছে”। সমস্ত কুরআন মাজীদে সালাতের কোনো পদ্ধতি পাওয়া যাবে না। অর্থাৎ অন্য কোনো মাধ্যমে সালাত শেখানো হয়েছে। আর সেই মাধ্যমটিকেই হাদীস বলা হয়। সুতরাং হাদীসও আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত।
[সংযোজন: এ পর্যায়ে কোনো কোনো মুনকিরীনে হাদীসের বক্তব্য নিম্নরূপ: মুনকিরীনে হাদীসদের মন্তব্য: সালাত কত রাকআত এবং কুরআনে কি রাকআতের কথা আছে?- বলে প্রশ্ন করা হয়। আসলে সালাত সব ওয়াক্তেই দুই রাকআত দেখুন: সূরা নিসা – ১০২ আয়াত। এখানে দেখা যায় মুমিনদের - একদল এক রাকআত পড়ার পর চলে গেলেন এবং অন্যদল এসে এক রাকআত পড়ার পর সালাত শেষ হলো এবং রাসূল উভয় ক্ষেত্রে ইমামতিতে বহাল থেকে দুই রাকআত পড়লেন যার থেকে অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, সব ওয়াক্তের সালাতই দুই রাকআত।
বিশ্লেষণ: আলোচ্য আয়াতটি পূর্বাপর বর্ণনাসহ লক্ষ্য করুন:
وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِى ٱلْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَقْصُرُوا۟ مِنَ ٱلصَّلَوٰةِ إِنْ خِفْتُمْ أَن يَفْتِنَكُمُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓا۟ ۚ إِنَّ ٱلْكَـٰفِرِينَ كَانُوا۟ لَكُمْ عَدُوًّۭا مُّبِينًۭا ١٠١وَإِذَا كُنتَ فِيهِمْ فَأَقَمْتَ لَهُمُ ٱلصَّلَوٰةَ فَلْتَقُمْ طَآئِفَةٌۭ مِّنْهُم مَّعَكَ وَلْيَأْخُذُوٓا۟ أَسْلِحَتَهُمْ فَإِذَا سَجَدُوا۟ فَلْيَكُونُوا۟ مِن وَرَآئِكُمْ وَلْتَأْتِ طَآئِفَةٌ أُخْرَىٰ لَمْ يُصَلُّوا۟ فَلْيُصَلُّوا۟ مَعَكَ وَلْيَأْخُذُوا۟ حِذْرَهُمْ وَأَسْلِحَتَهُمْ ۗ وَدَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لَوْ تَغْفُلُونَ عَنْ أَسْلِحَتِكُمْ وَأَمْتِعَتِكُمْ فَيَمِيلُونَ عَلَيْكُم مَّيْلَةًۭ وَٰحِدَةًۭ ۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ إِن كَانَ بِكُمْ أَذًۭى مِّن مَّطَرٍ أَوْ كُنتُم مَّرْضَىٰٓ أَن تَضَعُوٓا۟ أَسْلِحَتَكُمْ ۖ وَخُذُوا۟ حِذْرَكُمْ ۗ إِنَّ ٱللَّهَ أَعَدَّ لِلْكَـٰفِرِينَ عَذَابًۭا مُّهِينًۭا ١٠٢ فَإِذَا قَضَيْتُمُ ٱلصَّلَوٰةَ فَٱذْكُرُوا۟ ٱللَّهَ قِيَـٰمًۭا وَقُعُودًۭا وَعَلَىٰ جُنُوبِكُمْ ۚ فَإِذَا ٱطْمَأْنَنتُمْ فَأَقِيمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ ۚ إِنَّ ٱلصَّلَوٰةَ كَانَتْ عَلَى ٱلْمُؤْمِنِينَ كِتَـٰبًۭا مَّوْقُوتًۭا ١٠٣
“যখন তোমরা সফর করো, তখন সালাত কসর (হ্রাস) করলে তোমাদের কোনো গুনাহ নেই। যদি তোমরা ভয় করো যে, কাফিররা তোমাদের উত্যক্ত করবে। নিশ্চয় কাফিররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। যখন আপনি তাদের মধ্যে থাকেন, অতঃপর সালাতে দাঁড়ান, তখন যেন একদল দাঁড়ায় আপনার সাথে এবং তারা যেন স্বীয় অস্ত্র সাথে নেয়। অতঃপর যখন তারা সিজদা সম্পন্ন করে, তখন আপনার কাছ থেকে যেন সরে যায় এবং অন্য দল যেন আসে, যারা সালাত পড়েনি। অতঃপর তারা যেন আপনার সাথে সালাত পড়ে এবং আত্মরক্ষার হাতিয়ার সাথে নেয়। কাফিররা চায় যে, তোমরা কোনোরূপে অসতর্ক থাকো, যাতে তারা একযোগে তোমাদেরকে আক্রমণ করে বসে। যদি বৃষ্টির কারণে তোমাদের কষ্ট হয় অথবা তোমরা অসুস্থ হও, তবে স্বীয় অস্ত্র পরিত্যাগ করায় তোমাদের কোনো গুনাহ নেই এবং সাথে নিয়ে নাও তোমাদের আত্মরক্ষার অস্ত্র। নিশ্চয় আল্লাহ কাফিরদের জন্য অপমানকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। অতঃপর যখন তোমরা সালাত সম্পন্ন করো, তখন দণ্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহর যিকির করো। অতঃপর যখন বিপদমুক্ত হয়ে যাও, তখন সালাত ঠিক করে পড়। নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে আদায় করা ফরয।”৪আমরা যদি সহীহ হাদীস দ্বারা আয়াতগুলোর ব্যাখ্যা গ্রহণ না করা হয়, সেক্ষেত্রে আলোচ্য আয়াতগুলোর দাবি হবে নিম্নরূপ:
১) সফরের সালাত কসর বা হ্রাস করা যায়। হ্রাস করা বা না করাতে কোনো গুনাহ নেই। কিন্তু কত রাকআত হ্রাস করা যায় সে কথা বর্ণনা করা হয়নি। তাছাড়া রুকু, কওমা ও জলসা ছাড়া কেবল কিয়াম ও সিজদা করাই যথেষ্ট বলেই আয়াতের ধারাবাহিকতা থেকে বোঝা যায়। আর এটাও সালাত হ্রাস করার একটি উপায়।
২) শত্রুর আক্রমণের ভয় থাকলে মুসলিমদের একপক্ষ ইমামের সাথে সালাতে দাঁড়াবে এবং দ্বিতীয় পক্ষ পাহারাতে থাকবে। প্রথম পক্ষ সালাত হ্রাস কল্পে কেবল কিয়াম ও সিজদা সম্পন্ন করে ফিরে (এসে পাহারাতে) যাবে। তখন দ্বিতীয় পক্ষ ইমামের সাথে সালাতে শরীক হয়ে প্রথমপক্ষের ন্যায় হ্রাসকৃত সালাত তথা কেবল কিয়াম ও সিজদা আদায় করবে। সালাতের অন্যান্য রুকনের কোনো বর্ণনা আয়াতগুলোতে আসেনি।
৩) এ প্রক্রিয়ায় সংক্ষেপে সালাত আদায়ের পর যিকির অব্যাহত রাখতে হবে এবং শত্রুর আক্রমণের ভয় না থাকলে সালাতগুলোকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পুনরায় সঠিক পন্থায় পড়তে হবে। অর্থাৎ উক্ত পন্থাটি স্থায়ী নয়। নিচের আয়াতটি থেকেও এই দাবিই প্রমাণিত হয়। এ মর্মে আল্লাহ তাআলা বলেন:
فَإِنْ خِفْتُمْ فَرِجَالاً أَوْ رُكْبَاناً فَإِذَا أَمِنتُمْ فَاذْكُرُوا اللَّهَ كَمَا عَلَّمَكُم مَّا لَمْ تَكُونُوا تَعْلَمُونَ
“আর যদি তোমাদের কারো (শত্রুর) ব্যাপারে ভয় হয়, তাহলে পদচারী অবস্থায় ও সওয়ারির উপরে পড়ে নাও। তারপর যখন তোমরা নিরাপত্তা পাবে, তখন আল্লাহর যিকির করো, যেভাবে তোমাদের শেখানো হয়েছে, যা তোমরা ইতঃপূর্বে জানতে না।”৫সুতরাং প্রমাণিত হলো, সালাতুল খওফ বা ভয়-ভীতির সালাত কোনো সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে আদায়ের বাধ্যবাধকতা নেই।৬ এমনকী হাটাচলা অবস্থাতেও আদায় করা যায়। আর তখন রুকু, সিজদা ও জলসা এর কোনোটিরই প্রয়োজন। আর এটাও সালাত হ্রাস করার একটি পদ্ধতি মাত্র। এ কারণে সালাতুল খওফ (সূরা নিসা: ১০২ আয়াত) দ্বারা সর্বাবস্থায় সালাত দুই রাকআত প্রমাণিত হয় না। কেননা সালাতুল খওফের ব্যাপারে সূরা বাকারার ২৩৮-৩৯ নং আয়াতটি সাধ্যমতো যে-কোনো ভাবে ঐ মুহূর্তের সালাত আদায় করতে বলা হয়েছে।
সুতরাং “যেভাবে তোমাদের শেখানো হয়েছে” এ কথাটি স্বতন্ত্র কোনো পদ্ধতিকে বোঝানো হয়েছে যা কুরআনে উল্লেখ করা হয়নি। আর সেটাই হলো হাদীস।৭ – [সংকলক]
আরও পড়ুন - হাদীস কেন মানতে হবে?
১. সূরা জুমু'আ: ৯।
২. সূরা জুমু'আ: ১১।
৩. সূরা বাকারা: ২৩৮-৩৯।
৪. সূরা নিসা: ১০১-১০৩।
৫. সূরা বাকারা: ২৩৯।
৬. হাদীসে সালাতুল খওফের বিভিন্ন পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে, যেখানে কুরআনের উক্ত দাবির বিস্তারিত বর্ণনাও প্রেক্ষাপটের সমর্থন মেলে। পক্ষান্তরে হাদীস অস্বীকারকারীগণ ভয়-ভীতির সালাতের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতির দাবি তুলে স্বয়ং কুরআনেরই বিরোধিতা করছে। এ থেকে প্রমাণিত হয় হাদীসই কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যা।
৭. এ পর্যায়ে প্রতি রাকআতে দুই বার রুকু করার স্বপক্ষে যেসব দলীল উপস্থাপন করা হয়েছে। যেমন: সাক্ষী দুই, চোখ দুই, কান দুই, নাকের ছিদ্র দুই, জোড়া জোড়া সৃষ্টি প্রভৃতি। এর কোনোটি দ্বারাই সালাতের প্রতি রাকআতে দুই বার রুকু করার প্রমাণ হয় না। উক্ত বিষয়গুলো দুই দুই বা জোড়া হওয়ার বাস্তব প্রমাণ রয়েছে। সালাতের একটি বড়ো রুকন হলো রুকু করা। ১৪০০ বছর পূর্বে যে সালাত আদায় শুরু হয় তাতে দুই বার রুকু করার প্রমাণের জন্য কমছে কম দুটি সুস্পষ্ট দলীল উপস্থাপন করা সম্ভব হলো না? হায় আফসোস! হাদীস অস্বীকারকারীদের অপচেষ্টার জন্য।