Tanzeel Tashrik
Member
- Joined
- Feb 18, 2023
- Threads
- 3
- Comments
- 8
- Reactions
- 45
- Thread Author
- #1
টিকটিকি না কি গিরগিটি?
উত্তর: হ্যাঁ, তা টিকটিকি। এটাই সর্বাধিক বিশুদ্ধ কথা।
উল্লেখ্য, অনেকেই গিরগিটি (কোন কোন এলাকায় কাঁকলাস, ডাহিন, রক্তচোষা বলে) মারতে বলেন। এটা ঠিক নয়। কারণ হাদিসে وزغ শব্দ এসেছে যার অর্থ টিকটিকি।‘আল-ওয়াযাগ’ (اَلْوَزَغُ) শব্দের উর্দু অনুবাদ ‘ছিপকলী’ এর অর্থ টিকটিকি। (ফ‘রহঙ্গ-ই-রববানী; পৃঃ ২৬০; ফরহঙ্গ-এ-জাদীদ (উর্দু-বাংলা অভিধান)। আর গিরগিটির আরবি হ’ল حرباء [আল-মুনজিদ, পৃ: ১২৫; আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব দ্র:]
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মা আয়েশা রা. ঘরের মধ্যে টিকটিকি মারার জন্য একটি বর্শা রাখতেন। যেমন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
ফাকিহা ইবনুল মুহীরার আাজাদ কৃত দাসী সাইবা থেকে বর্ণিত, তিনি আয়েশা রা.-এর নিকট প্রবেশ করে তার ঘরে একটি বর্শা রক্ষিত দেখতে পান। তিনি জিজ্ঞেস করেন, হে উম্মুল মুমিনীন! আপনারা এটা দিয়ে কী করেন?
তিনি বলেন, আমরা এই বর্শা দিয়ে এসব টিকটিকি হত্যা করি। কারণ আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের অবহিত করেছেন যে, ইবরাহিম আ.-কে যখন অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হলো তখন পৃথিবীর বুকে এমন কোন প্রাণী ছিলো না, যা আগুন নিভাতে চেষ্টা করেনি, টিকটিকি ব্যতীত। সে বরং আগুনে ফুঁ দিয়েছিল। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটিকে হত্যা করার নির্দেশ দেন।” [সুনান ইবনে মাজাহ ২২/ শিকার,পরিচ্ছেদ: ২২/১২. টিকটিকি নিধন, সহীহাহ ১৫৮১]
এখান থেকেও বুঝা যাচ্ছে, এটি ঘরে থাকা টিকটিকি; বাইরের গাছ-গাছালি বন-জঙ্গলে থাকা গিরগিটি, কাঁকলাস, ডাহিন বা রক্তচোষা নয়।
টিকটিকি মারার সওয়াব:
আবু হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি প্রথম আঘাতে একটি টিকটিকি হত্যা করবে, তার জন্য এরূপ সওয়াব রয়েছে। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় আঘাতে এটি হত্যা করবে, তার জন্য এরূপ এরূপ সওয়াব রয়েছে, যা প্রথম আঘাতে মারার তুলনায় কম। আর যে ব্যক্তি তৃতীয় আঘাতে তা হত্যা করবে, তার জন্য এরূপ এরূপ সওয়াব রয়েছে, যা দ্বিতীয় আঘাতে হত্যার চেয়ে কম।” [সুনানে আবু দাউদ, অধ্যায়: শিষ্টাচার, অনুচ্ছেদ-১৭৬ টিকটিকি হত্যা করা সম্পর্কে, হা/৫২৬৩-সনদ সহিহ]
অন্য বর্ণনায় এসেছে:
“যে ব্যক্তি প্রথম আঘাতেই একটি টিকটিকি মারবে, তার জন্য রয়েছে একশ সওয়াব, দ্বিতীয় আঘাতে মারলে রয়েছে তার চেয়ে কম সওয়াব, আর তৃতীয় আঘাতে মারলে রয়েছে তার চাইতেও কম সওয়াব।” [সহিহ মুসলিম ৫৯৮৩-৫৯৮৪ নাম্বার]
অন্য বর্ণনায় প্রথম আঘাতে হত্যা করলে ৭০ সওয়াবের কথা এসেছে:
আবু হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত, নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “প্রথম আঘাতে মারতে পারলে তার জন্য সত্তর সওয়াব রয়েছে।” [সুনানে আবু দাউদ, অধ্যায়: শিষ্টাচার, অনুচ্ছেদ-১৭৬ টিকটিকি হত্যা করা সম্পর্কে, হা/৫২৬৪-সনদ সহিহ]
টিকটিকি মারতে উৎসাহিত করার কারণ কী?
১. এর প্রধান কারণ হল, এটি অনিষ্টকারী ও ক্ষতিকারক:
সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস রা. বলেন,
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম টিকটিকি মারার আদেশ দিয়েছেন এবং একে ‘অন্যায়-অনিষ্টকারী’ বলে অভিহিত করেছেন।” [মুসলিম, মিশকাত হা/৪১২০]।
উল্লেখ্য যে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ছাড়া আরও ৫টি প্রাণীকে অন্যায়-অনিষ্টকারী হিসেবে হত্যা করতে নির্দেশ দিয়েছেন- যদিও সেগুলো হারাম সীমানার মধ্যে থাকে। যেমন: আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“পাঁচ প্রকার প্রাণী বেশি অনিষ্টকারী। এদেরকে হারাম সীমানার মধ্যেও মেরে ফেলতে হবে। এগুলো হল:
“ইঁদুর, বিচ্ছু, চিল, কাক এবং পাগলা কুকুর।” [সহিহ বুখারি, অধ্যায়: ৪৯/ সৃষ্টির সূচনা, অনুচ্ছেদ: পাঁচ শ্রেণির অনিষ্টকারী প্রাণীকে হারাম শরীফেও হত্যা করা যাবে।]
২. এটি সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। এটি ঘরের কোঠা, দেয়াল, খাট, চেয়ার, টেবিল, ফ্রিজ এবং অন্যান্য আসবাপত্রের উপর চলাফেরা করে এবং বিশেষ করে খাবার পাতিলে বা খাদ্যদ্রব্যের উপর মল মূত্র ত্যাগ করে। আর তা মানব দেহের জন্য বিষাক্ত ও রোগ-ব্যাধির কারণ এতে কোন সন্দেহ নাই।
ডাক্তারগণ বলেন: “টিকটিকির মল বিষাক্ত হওয়ার কারণে খাবারের সাথে পেটে গেলে আপনার পেটে অসুখ, পেট খারাপ, পাতলা পায়খানা, পেটব্যথা, বমি ইত্যাদি হতে পারে।” [ উৎস: Dr. Khadega,উৎস: maya ডট কম ডট বিডি]
আল নিহায়া গ্রন্থে বলা হয়েছে: هِيَ الَّتِي يُقَالُ لَهَا سَامُّ أَبْرَصَ “এটিকেই বলা হয়, শ্বেত বিষাক্ত।”
ইবনুল মালিক বলেন: এর নেশা হল, খাবার নষ্ট করা। বিশেষ করে লবণ। যদি সে পর্যন্ত পৌঁছার রাস্তা না পায় তাহলে ঘরের কোঠায় উঠে যায় এবং তার ঠিক নিচ বরাবর বিষ্ঠা নিক্ষেপ করে। হাদিসের বিবরণ থেকে বুঝা যায়, এটি সৃষ্টিগতভাবে ক্ষতিকারক। (মিরকাতুল মাফাতিহ ৭/২৬৭১)
৩. এটি যে নিকৃষ্ট স্বভাবের প্রাণী তা বুঝার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, যখন ইবরাহীম আ. কে নমরুদ আগুনে নিক্ষেপ করার জন্য বিশাল অগ্নিকুণ্ড বানিয়েছিল তখন সে আগুনে ফুঁ দিয়েছিলো। [সহিহ বুখারি]
৪. এটি ঘরময় রাজত্ব করে এবং বিভিন্ন সময় ‘টিকটিক’ করে আওয়াজ করে উঠে। ফলে তা বিরক্তি ও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
৫. এর লেজে মাদকতা রয়েছে। নেশাখোররা এর লেজ আগুনে পুড়িয়ে নেশা করে। এটি একদিকে নানাভাবে মানুষের জন্য ক্ষতিকর অন্য দিকে মরণ ব্যাধি নেশার উৎস। তাই ঘরকে এ থেকে যথাসাধ্য মুক্ত রাখার চেষ্টা করা উচিৎ।
৬. টিকটিকি মারার ক্ষেত্রে এক আঘাতে মারলে বেশি সওয়াব (১০০ সওয়াব, অন্য বর্ণনায় ৭০টি) হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ এতে তার কষ্ট কম হবে। যত বেশি আঘাতে মারা হবে তত বেশি কষ্ট হবে। ফলে এতে সওয়াবও কমে যাবে।
৭. সর্বোপরি কথা হল, এটি ইসলামের নির্দেশ। আর ইসলামের প্রতিটি বিধানের পেছনে কোনো না কোনো হেকমত বা রহস্য লুকিয়ে আছে। আমরা মানবিক জ্ঞানে কখনো তা উপলব্ধি করতে পারি আর কখনো তা পারি না। সুতরাং সর্ববস্থায় আল্লাহর বিধানকে বিনা প্রশ্নে মানার মধ্যে রয়েছে মানবজাতির কল্যাণ।
মহান আল্লাহ আমাদেরকে এই ক্ষতিকর প্রাণীর ক্ষতি থেকে রক্ষা করুন। আমিন।
উত্তর: হ্যাঁ, তা টিকটিকি। এটাই সর্বাধিক বিশুদ্ধ কথা।
উল্লেখ্য, অনেকেই গিরগিটি (কোন কোন এলাকায় কাঁকলাস, ডাহিন, রক্তচোষা বলে) মারতে বলেন। এটা ঠিক নয়। কারণ হাদিসে وزغ শব্দ এসেছে যার অর্থ টিকটিকি।‘আল-ওয়াযাগ’ (اَلْوَزَغُ) শব্দের উর্দু অনুবাদ ‘ছিপকলী’ এর অর্থ টিকটিকি। (ফ‘রহঙ্গ-ই-রববানী; পৃঃ ২৬০; ফরহঙ্গ-এ-জাদীদ (উর্দু-বাংলা অভিধান)। আর গিরগিটির আরবি হ’ল حرباء [আল-মুনজিদ, পৃ: ১২৫; আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব দ্র:]
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মা আয়েশা রা. ঘরের মধ্যে টিকটিকি মারার জন্য একটি বর্শা রাখতেন। যেমন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ سَائِبَةَ، - مَوْلاَةِ الْفَاكِهِ بْنِ الْمُغِيرَةِ - أَنَّهَا دَخَلَتْ عَلَى عَائِشَةَ فَرَأَتْ فِي بَيْتِهَا رُمْحًا مَوْضُوعًا فَقَالَتْ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ مَا تَصْنَعِينَ بِهَذَا قَالَتْ نَقْتُلُ بِهِ هَذِهِ الأَوْزَاغَ فَإِنَّ نَبِيَّ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَخْبَرَنَا أَنَّ إِبْرَاهِيمَ لَمَّا أُلْقِيَ فِي النَّارِ لَمْ تَكُنْ فِي الأَرْضِ دَابَّةٌ إِلاَّ أَطْفَأَتِ النَّارَ غَيْرَ الْوَزَغِ فَإِنَّهَا كَانَتْ تَنْفُخُ عَلَيْهِ فَأَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِقَتْلِهِ .
ফাকিহা ইবনুল মুহীরার আাজাদ কৃত দাসী সাইবা থেকে বর্ণিত, তিনি আয়েশা রা.-এর নিকট প্রবেশ করে তার ঘরে একটি বর্শা রক্ষিত দেখতে পান। তিনি জিজ্ঞেস করেন, হে উম্মুল মুমিনীন! আপনারা এটা দিয়ে কী করেন?
তিনি বলেন, আমরা এই বর্শা দিয়ে এসব টিকটিকি হত্যা করি। কারণ আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের অবহিত করেছেন যে, ইবরাহিম আ.-কে যখন অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হলো তখন পৃথিবীর বুকে এমন কোন প্রাণী ছিলো না, যা আগুন নিভাতে চেষ্টা করেনি, টিকটিকি ব্যতীত। সে বরং আগুনে ফুঁ দিয়েছিল। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটিকে হত্যা করার নির্দেশ দেন।” [সুনান ইবনে মাজাহ ২২/ শিকার,পরিচ্ছেদ: ২২/১২. টিকটিকি নিধন, সহীহাহ ১৫৮১]
এখান থেকেও বুঝা যাচ্ছে, এটি ঘরে থাকা টিকটিকি; বাইরের গাছ-গাছালি বন-জঙ্গলে থাকা গিরগিটি, কাঁকলাস, ডাহিন বা রক্তচোষা নয়।
টিকটিকি মারার সওয়াব:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ قَتَلَ وَزَغَةً فِي أَوَّلِ ضَرْبَةٍ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً وَمَنْ قَتَلَهَا فِي الضَّرْبَةِ الثَّانِيَةِ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً أَدْنَى مِنَ الأَوَّلِ وَمَنْ قَتَلَهَا فِي الضَّرْبَةِ الثَّالِثَةِ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً أَدْنَى مِنَ الثَّانِيَةِ " .
আবু হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি প্রথম আঘাতে একটি টিকটিকি হত্যা করবে, তার জন্য এরূপ সওয়াব রয়েছে। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় আঘাতে এটি হত্যা করবে, তার জন্য এরূপ এরূপ সওয়াব রয়েছে, যা প্রথম আঘাতে মারার তুলনায় কম। আর যে ব্যক্তি তৃতীয় আঘাতে তা হত্যা করবে, তার জন্য এরূপ এরূপ সওয়াব রয়েছে, যা দ্বিতীয় আঘাতে হত্যার চেয়ে কম।” [সুনানে আবু দাউদ, অধ্যায়: শিষ্টাচার, অনুচ্ছেদ-১৭৬ টিকটিকি হত্যা করা সম্পর্কে, হা/৫২৬৩-সনদ সহিহ]
অন্য বর্ণনায় এসেছে:
مَنْ قَتَلَ وَزَغًا فِى أَوَّلِ ضَرْبَةٍ كُتِبَتْ لَهُ مِائَةُ حَسَنَةٍ وَفِى الثَّانِيَةِ دُونَ ذَلِكَ وَفِى الثَّالِثَةِ دُونَ ذَلِكَ
“যে ব্যক্তি প্রথম আঘাতেই একটি টিকটিকি মারবে, তার জন্য রয়েছে একশ সওয়াব, দ্বিতীয় আঘাতে মারলে রয়েছে তার চেয়ে কম সওয়াব, আর তৃতীয় আঘাতে মারলে রয়েছে তার চাইতেও কম সওয়াব।” [সহিহ মুসলিম ৫৯৮৩-৫৯৮৪ নাম্বার]
অন্য বর্ণনায় প্রথম আঘাতে হত্যা করলে ৭০ সওয়াবের কথা এসেছে:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " فِي أَوَّلِ ضَرْبَةٍ سَبْعِينَ حَسَنَةً " .
আবু হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত, নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “প্রথম আঘাতে মারতে পারলে তার জন্য সত্তর সওয়াব রয়েছে।” [সুনানে আবু দাউদ, অধ্যায়: শিষ্টাচার, অনুচ্ছেদ-১৭৬ টিকটিকি হত্যা করা সম্পর্কে, হা/৫২৬৪-সনদ সহিহ]
টিকটিকি মারতে উৎসাহিত করার কারণ কী?
১. এর প্রধান কারণ হল, এটি অনিষ্টকারী ও ক্ষতিকারক:
সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস রা. বলেন,
أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِقَتْلِ الْوَزَغِ وَسَمَّاهُ فُوَيْسِقًا
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম টিকটিকি মারার আদেশ দিয়েছেন এবং একে ‘অন্যায়-অনিষ্টকারী’ বলে অভিহিত করেছেন।” [মুসলিম, মিশকাত হা/৪১২০]।
উল্লেখ্য যে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ছাড়া আরও ৫টি প্রাণীকে অন্যায়-অনিষ্টকারী হিসেবে হত্যা করতে নির্দেশ দিয়েছেন- যদিও সেগুলো হারাম সীমানার মধ্যে থাকে। যেমন: আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“পাঁচ প্রকার প্রাণী বেশি অনিষ্টকারী। এদেরকে হারাম সীমানার মধ্যেও মেরে ফেলতে হবে। এগুলো হল:
الْفَأْرَةُ، وَالْعَقْرَبُ، وَالْحُدَيَّا، وَالْغُرَابُ، وَالْكَلْبُ الْعَقُورُ
“ইঁদুর, বিচ্ছু, চিল, কাক এবং পাগলা কুকুর।” [সহিহ বুখারি, অধ্যায়: ৪৯/ সৃষ্টির সূচনা, অনুচ্ছেদ: পাঁচ শ্রেণির অনিষ্টকারী প্রাণীকে হারাম শরীফেও হত্যা করা যাবে।]
২. এটি সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। এটি ঘরের কোঠা, দেয়াল, খাট, চেয়ার, টেবিল, ফ্রিজ এবং অন্যান্য আসবাপত্রের উপর চলাফেরা করে এবং বিশেষ করে খাবার পাতিলে বা খাদ্যদ্রব্যের উপর মল মূত্র ত্যাগ করে। আর তা মানব দেহের জন্য বিষাক্ত ও রোগ-ব্যাধির কারণ এতে কোন সন্দেহ নাই।
ডাক্তারগণ বলেন: “টিকটিকির মল বিষাক্ত হওয়ার কারণে খাবারের সাথে পেটে গেলে আপনার পেটে অসুখ, পেট খারাপ, পাতলা পায়খানা, পেটব্যথা, বমি ইত্যাদি হতে পারে।” [ উৎস: Dr. Khadega,উৎস: maya ডট কম ডট বিডি]
আল নিহায়া গ্রন্থে বলা হয়েছে: هِيَ الَّتِي يُقَالُ لَهَا سَامُّ أَبْرَصَ “এটিকেই বলা হয়, শ্বেত বিষাক্ত।”
قَالَ ابْنُ الْمَلَكِ: وَمِنْ شَغَفِهَا إِفْسَادُ الطَّعَامِ خُصُوصًا الْمِلْحَ، فَإِنَّهَا إِذَا لَمْ تَجِدْ طَرِيقًا إِلَى إِفْسَادِهِ ارْتَقَتِ السَّقْفَ وَأَلْقَتْ خَرَأَهَا فِي مَوْضِعٍ يُحَاذِيهِ. وَفِي الْحَدِيثِ بَيَانُ أَنَّ جِبِلَّتَهَا عَلَى الْإِسَاءَةِ." انتهى من "مرقاة المفاتيح" (7/2671)
ইবনুল মালিক বলেন: এর নেশা হল, খাবার নষ্ট করা। বিশেষ করে লবণ। যদি সে পর্যন্ত পৌঁছার রাস্তা না পায় তাহলে ঘরের কোঠায় উঠে যায় এবং তার ঠিক নিচ বরাবর বিষ্ঠা নিক্ষেপ করে। হাদিসের বিবরণ থেকে বুঝা যায়, এটি সৃষ্টিগতভাবে ক্ষতিকারক। (মিরকাতুল মাফাতিহ ৭/২৬৭১)
৩. এটি যে নিকৃষ্ট স্বভাবের প্রাণী তা বুঝার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, যখন ইবরাহীম আ. কে নমরুদ আগুনে নিক্ষেপ করার জন্য বিশাল অগ্নিকুণ্ড বানিয়েছিল তখন সে আগুনে ফুঁ দিয়েছিলো। [সহিহ বুখারি]
৪. এটি ঘরময় রাজত্ব করে এবং বিভিন্ন সময় ‘টিকটিক’ করে আওয়াজ করে উঠে। ফলে তা বিরক্তি ও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
৫. এর লেজে মাদকতা রয়েছে। নেশাখোররা এর লেজ আগুনে পুড়িয়ে নেশা করে। এটি একদিকে নানাভাবে মানুষের জন্য ক্ষতিকর অন্য দিকে মরণ ব্যাধি নেশার উৎস। তাই ঘরকে এ থেকে যথাসাধ্য মুক্ত রাখার চেষ্টা করা উচিৎ।
৬. টিকটিকি মারার ক্ষেত্রে এক আঘাতে মারলে বেশি সওয়াব (১০০ সওয়াব, অন্য বর্ণনায় ৭০টি) হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ এতে তার কষ্ট কম হবে। যত বেশি আঘাতে মারা হবে তত বেশি কষ্ট হবে। ফলে এতে সওয়াবও কমে যাবে।
৭. সর্বোপরি কথা হল, এটি ইসলামের নির্দেশ। আর ইসলামের প্রতিটি বিধানের পেছনে কোনো না কোনো হেকমত বা রহস্য লুকিয়ে আছে। আমরা মানবিক জ্ঞানে কখনো তা উপলব্ধি করতে পারি আর কখনো তা পারি না। সুতরাং সর্ববস্থায় আল্লাহর বিধানকে বিনা প্রশ্নে মানার মধ্যে রয়েছে মানবজাতির কল্যাণ।
মহান আল্লাহ আমাদেরকে এই ক্ষতিকর প্রাণীর ক্ষতি থেকে রক্ষা করুন। আমিন।
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব