সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Mahmud ibn Shahidullah

ফাযায়েলে আমল রামাযানে দান-ছাদাক্বাহ

Mahmud ibn Shahidullah

Knowledge Sharer

ilm Seeker
Q&A Master
Salafi User
LV
10
 
Awards
18
Credit
3,455
ভূমিকা :

বরকত, রহমত ও মাগফিরাতের অনন্য মাস হল রামাযান। আল্লাহ তা‘আলা এ মাসে বরকতের দুয়ার উন্মুক্ত করে দেন, রহমতের দরজা খুলে দেন। ফলে চতুর্দিকে শান্তির সমীরণ প্রবাহিত হয়। তাই বিভিন্ন ইবাদতে ভরপুর এ মাসে মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্ট অর্জনের জন্য নানাবিধ ইবাদতে মশগুল থাকে। তন্মধ্যে দান-ছাদাক্বাহ অন্যতম। মুসলিম জীবনে দান-ছাদাক্বাহর গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহর জন্য দান-ছাদাক্বাহকারী পাপ থেকে যেমন মুক্ত হবে, তেমনি পরকালে জান্নাতের অধিবাসী হয়ে ধন্য হবে।

দান-ছাদাক্বাহর ফযীলত :


রামযান মাসের গুরুত্ব ও ফযীলত এত বেশি যে, বান্দার নেক আমলের ছওয়াব অধিকহারে বৃদ্ধি করা হয় এবং তাকে তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ থেকে পরিত্রাণ দেয়া হয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيْمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ‘যে ব্যক্তি ঈমান সহকারে নেকীর আশায় রামাযানে সিয়াম পালন করে, তার অতীতের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়’।[১]

রামাযান মাসে দান, ছাদাক্বাহ এবং সৎকর্মের ফযীলত অত্যধিক। কেননা আল্লাহ তা‘আলা সকল নেক কর্মকে কর্য হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন,

مَنۡ ذَا الَّذِیۡ یُقۡرِضُ اللّٰہَ قَرۡضًا حَسَنًا فَیُضٰعِفَہٗ لَہٗۤ اَضۡعَافًا کَثِیۡرَۃً وَ اللّٰہُ یَقۡبِضُ وَ یَبۡصُۜطُ وَ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ​

‘এমন ব্যক্তি কে আছে, যে আল্লাহকে উত্তম কর্য প্রদান করবে? তাহলে তার সেই কর্যকে তার জন্য আল্লাহ বহু গুণ বর্ধিত করে দিবেন। আর আল্লাহই সীমিত ও প্রসারিত করে থাকেন এবং তার দিকেই তোমরা ফিরে যাবে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৪৫)। ইমাম বাগাবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, কর্য অর্থ আল্লাহর আনুগত্যে খরচ করা।[২]

হাফেয ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

يحث تعالى عباده على الإنفاق في سبيله​

‘আল্লাহ তা‘আলা বান্দাদেরকে তাঁর রাস্তায় খরচ করার প্রতি উৎসাহিত করেছেন’।[৩]

অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ اَقۡرِضُوا اللّٰہَ قَرۡضًا حَسَنًا وَ مَا تُقَدِّمُوۡا لِاَنۡفُسِکُمۡ مِّنۡ خَیۡرٍ تَجِدُوۡہُ عِنۡدَ اللّٰہِ ہُوَ خَیۡرًا وَّ اَعۡظَمَ اَجۡرًا​

‘আর তোমরা আল্লাহকে কর্য দাও উত্তম কর্য। তোমরা যা কিছু কল্যাণ নিজেদের জন্য আগে পাঠাবে, তা আল্লাহ্র নিকট (সঞ্চিত) পাবে, সেটাই উত্তম এবং পুরস্কার হিসাবে খুব বড়’ (সূরা আল-মুয্যাম্মিল : ২০)।

আল্লাহ তা‘আলা তার রাস্তায় দান করার ফযীলত বর্ণনা করে বলেন,

مَثَلُ الَّذِیۡنَ یُنۡفِقُوۡنَ اَمۡوَالَہُمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ کَمَثَلِ حَبَّۃٍ اَنۡۢبَتَتۡ سَبۡعَ سَنَابِلَ فِیۡ کُلِّ سُنۡۢبُلَۃٍ مِّائَۃُ حَبَّۃٍ ؕ وَ اللّٰہُ یُضٰعِفُ لِمَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰہُ وَاسِعٌ عَلِیۡمٌ​

‘যারা আল্লাহ্র পথে নিজেদের মাল ব্যয় করে, তাদের (দানের) তুলনা সেই বীজের মত, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়, প্রত্যেক শীষে একশ’ করে দানা এবং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন, বর্ধিতহারে দিয়ে থাকেন। বস্তুত আল্লাহ প্রাচুর্যের অধিকারী, প্রজ্ঞাময়’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৬১)।

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন উম্মতে মুহাম্মাদীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বোত্তম দানশীল। রামাযান মাসে আগমন ঘটলে তিনি আরও দানশীল হতেন। হাদীসে এসেছে,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَجْوَدَ النَّاسِ وَكَانَ أَجْوَدُ مَا يَكُوْنُ فِىْ رَمَضَانَ حِيْنَ يَلْقَاهُ جِبْرِيْلُ وَكَانَ يَلْقَاهُ فِىْ كُلِّ لَيْلَةٍ مِنْ رَمَضَانَ فَيُدَارِسُهُ الْقُرْآنَ فَلَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَجْوَدُ بِالْخَيْرِ مِنَ الرِّيْحِ الْمُرْسَلَةِ​

ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল। রামাযানে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন, যখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। আর রামাযানের প্রতি রাতেই জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং তাঁরা একে অপরকে কুরআন তিলাওয়াত করে শোনাতেন। নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রবাহিত বায়ু অপেক্ষাও অধিক দানশীল ছিলেন’।[৪]

অন্যান্য মাসের তুলনায় রামাযান মাসের ইবাদত আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় এবং মর্যাদাকর। বান্দার প্রত্যেক সৎকর্ম কয়েকগুণে বর্ধিত হয়। একটি নেকী দশগুণ থেকে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি হয়, কিন্তু সিয়ামপালনকারীর নেকী ব্যতীত। কেননা তার নেকী আল্লাহ নিজ হাতে প্রদান করবেন, যত খুশি তত। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ يُضَاعَفُ الْحَسَنَةُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ إِلاَّ الصَّوْمَ فَإِنَّهُ لِىْ وَأَنَا أَجْزِى بِهِ​

আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আদম সন্তানের প্রতিটি নেক কাজের ছওয়াব দশ গুণ থেকে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। মহান আল্লাহ বলেন, আদম সন্তানের যাবতীয় আমল তার নিজের জন্য কিন্তু সিয়াম বিশেষ করে আমার জন্যই রাখা হয়। আর আমি নিজেই এর প্রতিদান দিব।[৫] অন্য হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الصِّيَامُ جُنَّةٌ فَلَا يَرْفُثْ وَلَا يَجْهَلْ وَإِنِ امْرُؤٌ قَاتَلَهُ أَوْ شَاتَمَهُ فَلْيَقُلْ إِنِّىْ صَائِمٌ مَرَّتَيْنِ وَالَّذِى نَفْسِىْ بِيَدِهِ لَخُلُوْفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ تَعَالَى مِنْ رِيْحِ الْمِسْكِ يَتْرُكُ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ وَشَهْوَتَهُ مِنْ أَجْلِىْ الصِّيَامُ لِىْ وَأَنَا أَجْزِى بِهِ وَالْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا​

আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সিয়াম ঢালস্বরূপ। সুতরাং অশ্লীলতা করবে না এবং মূর্খের মত কাজ করবে না। যদি কেউ তার সাথে ঝগড়া করতে চায় অথবা তাকে গালি দেয়, তবে সে যেন দুইবার বলে, আমি সিয়াম পালন করছি। ঐ সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ, অবশ্যই সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহ্র নিকট মিশকে আম্বারের সুগন্ধির চাইতেও উৎকৃষ্ট। সে আমার জন্য আহার, পান ও কামাচার পরিত্যাগ করে। সিয়াম আমারই জন্য। তাই এর পুরস্কার আমি নিজেই দান করব। আর প্রত্যেক নেক কাজের বিনিময় দশ গুণ।[৬]

তাই রামাযান মাসে বেশি বেশি দান-ছাদাক্বাহ করা উচিত। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ মাসে প্রবাহিত বায়ুর চেয়ে দ্রুত গতিতে দান করতেন। কেননা অন্যান্য মাসের তুলনায় রামাযানে প্রত্যেক আমলের বিনিময়ে দশ গুণ নেকি প্রদান করা হয়।

ছাদাক্বাহ প্রদানের গুরুত্ব ও ফযীলত :

আল্লাহর ইবাদত হিসাবে তাঁর সন্তুষ্টির জন্য দান-ছাদাক্বাহ করার গুরুত্ব ও ফযীলত অত্যধিক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ مَاۤ اَنۡفَقۡتُمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ فَہُوَ یُخۡلِفُہٗ وَ ہُوَ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ ‘তোমরা যা কিছু (সৎ কাজে) ব্যয় করবে তিনি তার বিনিময় প্রদান করবেন। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা’ (সূরা সাবা : ৩৯)। তিনি আরও বলেন,

وَ مَا تُنۡفِقُوۡا مِنۡ خَیۡرٍ فَلِاَنۡفُسِکُمۡ وَ مَا تُنۡفِقُوۡنَ اِلَّا ابۡتِغَآءَ وَجۡہِ اللّٰہِ وَ مَا تُنۡفِقُوۡا مِنۡ خَیۡرٍ یُّوَفَّ اِلَیۡکُمۡ وَ اَنۡتُمۡ لَا تُظۡلَمُوۡنَ​

‘তোমরা যা কিছু ধন-সম্পদ দান কর, তা নিজেদের উপকারের জন্যই। আল্লাহ্র সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে তোমরা দান কর না। আর তোমরা যা দান কর, তার পুরস্কার পূর্ণভাবে প্রদান করা হবে এবং তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৭২)।

পাপমুক্ত করে

দান-ছাদাক্বাহ মানুষকে পাপমুক্ত করে। বান্দা যখন ছাদাক্বাহ করে, তখন সেই ছাদাক্বাহ তার পদচি‎হ্ন মুছে ফেলে। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ مَثَلُ الْبَخِيْلِ وَالْمُنْفِقِ كَمَثَلِ رَجُلَيْنِ عَلَيْهِمَا جُبَّتَانِ مِنْ حَدِيْدٍ مِنْ ثُدِيِّهِمَا إِلَى تَرَاقِيْهِمَا فَأَمَّا الْمُنْفِقُ فَلَا يُنْفِقُ إِلَّا سَبَغَتْ أَوْ وَفَرَتْ عَلَى جِلْدِهِ حَتَّى تُخْفِىَ بَنَانَهُ وَتَعْفُوَ أَثَرَهُ وَأَمَّا الْبَخِيْلُ فَلّا يُرِيْدُ أَنْ يُنْفِقَ شَيْئًا إِلَّا لَزِقَتْ كُلُّ حَلْقَةٍ مَكَانَهَا فَهُوَ يُوَسِّعُهَا وَلَا تَتَّسِعُ​

আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছেন, কৃপণ ও দানশীলের দৃষ্টান্ত এমন দুই ব্যক্তির মত, যাদের পরিধানে দু’টি লোহার বর্ম রয়েছে। যা তাদের বুক থেকে কণ্ঠনালী পর্যন্ত বিস্তৃত। সুতরাং দানশীল যখন দান করে, তখনই সেই বর্ম তার সারা দেহে বিস্তৃত হয়ে যায়, এমনকি (তার ফলে) তা তার আঙ্গুলগুলোকেও ঢেকে ফেলে এবং তার পদচি‎‎‎‎‎হ্ন (পাপ বা ত্রুটি) মুছে দেয়। পক্ষান্তরে কৃপণ যখনই কিছু দান করার ইচ্ছা করে, তখনই বর্মের প্রতিটি আংটা যথাস্থানে এঁটে যায়। সে তা প্রশস্ত করতে চাইলেও তা প্রশস্ত হয় না।[৭]

উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

أن الصدقة تستر خطاياه​

‘ছাদাক্বাহ পাপসমূহকে গোপন করে বা ঢেকে রাখে’।[৮]

মুহাল্লাব বলেন, ‘ছাদাক্বাহ প্রদান করার জন্য আল্লাহ তা‘আলা ছাদাক্বাহ প্রদানকারীর সম্পদ বৃদ্ধি করে দেন। খরচকারীর মাথা থেকে পা পর্যন্ত আচ্ছাদন করে রাখেন তার দান করার কারণে, তার দুনিয়ার সমস্ত দোষ-ত্রুটিও ঢেকে রাখেন এবং আখেরাতে তার জন্য প্রতিদানের ব্যবস্থা রয়েছে’।[৯]

অন্য হাদীসে এসেছে, মু‘আয বিন জাবাল (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন,

أَلَا أَدُلُّكَ عَلَى أَبْوَابِ الْخَيْرِ الصَّوْمُ جُنَّةٌ وَالصَّدَقَةُ تُطْفِئُ الْخَطِيئَةَ كَمَا يُطْفِئُ النَّارَ الْمَاءُ​

‘আমি কি তোমাকে কল্যাণের দরজাগুলো সম্পর্কে সংবাদ প্রদান করব না? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘সিয়াম ঢাল স্বরূপ। ছাদাক্বাহ মানুষের গোনাহকে মুছে দেয় যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে দেয়’।[১০]

পুরস্কার লাভ

আল্লাহ্র পথে ব্যয় করলে সম্পদ ধ্বংস হয় না কিংবা শেষও হয়ে যায় না। বরং তা আমাদেরই উপকারে আসবে এবং এর প্রতিদান আমরাই পাব। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ مَاۤ اَنۡفَقۡتُمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ فَہُوَ یُخۡلِفُہٗ وَ ہُوَ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ​

‘তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে তিনি তার বিনিময় প্রদান করবেন’ (সূরা সাবা : ৩৯)। অন্যত্র তিনি বলেন,

وَ مَا تُنۡفِقُوۡا مِنۡ خَیۡرٍ فَلِاَنۡفُسِکُمۡ وَ مَا تُنۡفِقُوۡنَ اِلَّا ابۡتِغَآءَ وَجۡہِ اللّٰہِ وَ مَا تُنۡفِقُوۡا مِنۡ خَیۡرٍ یُّوَفَّ اِلَیۡکُمۡ وَ اَنۡتُمۡ لَا تُظۡلَمُوۡنَ​

‘তোমরা যা কিছু ধন-সম্পদ দান কর, তা নিজেদের উপকারের জন্যই। আল্লাহ্র সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে তোমরা দান করো না। আর তোমরা যা দান কর, তার পুরস্কার পূর্ণভাবে প্রদান করা হবে এবং তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৭২)। তাছাড়া ছাদাক্বাহ যদি কোন ফাসিক্ব বা অনুরূপ কোন অসৎ ব্যক্তির হাতে পড়ে, তবুও দাতা এর প্রতিদান পাবে। অথচ ছাদাক্বাহ প্রদানকারী অবগত নয় যে, তার ছাদাক্বাহ ফাসিক্ব ব্যক্তি গ্রহণ করেছে।[১১]

ছাদাক্বাহ প্রদানের মাধ্যমে জান্নাত লাভ করা যায়। আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল ‘আছ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

أَرْبَعُوْنَ خَصْلَةً أَعْلَاهُنَّ مَنِيْحَةُ الْعَنْزِ مَا مِنْ عَامِلٍ يَعْمَلُ بِخَصْلَةٍ مِنْهَا رَجَاءَ ثَوَابِهَا وَتَصْدِيْقَ مَوْعُوْدِهَا إِلَّا أَدْخَلَهُ اللهُ بِهَا الْجَنَّةَ​

‘চল্লিশটি সৎকর্ম আছে, তার মধ্যে উচ্চতম হল, দুধ পানের জন্য (কোন দরিদ্রকে) ছাগল সাময়িকভাবে দান করা। যে কোন আমলকারী এর মধ্য হতে যে কোন একটি সৎকর্মের উপর প্রতিদানের আশা করে ও তার প্রতিশ্রুত পুরস্কারকে সত্য জেনে আমল করবে, তাকে আল্লাহ তার বিনিময়ে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন’।[১২] অন্য একটি হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

إِنَّ فِى الْجَنَّةِ غُرَفًا تُرَى ظُهُوْرُهَا مِنْ بُطُوْنِهَا وَبُطُوْنُهَا مِنْ ظُهُوْرِهَا فَقَامَ أَعْرَابِىٌّ فَقَالَ لِمَنْ هِىَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِمَنْ أَطَابَ الْكَلَامَ وَأَطْعَمَ الطَّعَامَ وَأَدَامَ الصِّيَامَ وَصَلَّى لِلهِ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ​

‘জান্নাতে এমন একটি ঘর রয়েছে, উহার ভিতর থেকে বাহির এবং বাহির থেকে ভিতর দেখা যাবে। তখন এক আরাবী (মরুবাসী) দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! এটা কার জন্য? তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ঐ ব্যক্তির জন্য যে উত্তম কথা বলে, লোকদের খাদ্য খাওয়ায়, সর্বদা সিয়াম পালন করে এবং রাত্রিতে সালাত আদায় করে, যখন মানুষ ঘুমিয়ে পড়ে’।[১৩]

এমনকি দান-ছাদাক্বাহ জাহান্নাম থেকে বাঁচারও অন্যতম মাধ্যম। ‘আদী ইবনু হাতেম (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি,

اتَّقُوا النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ​

‘তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো, যদিও খেজুরের এক টুকরা ছাদাক্বাহ করে হয়’।[১৪]

নেকি বৃদ্ধির উপায়

সম্পদ বৃদ্ধির উপায় হল- আল্লাহ্র রাস্তায় দান-ছাদাক্বাহ। হাদীসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

مَنْ تَصَدَّقَ بِعَدْلِ تَمْرَةٍ مِنْ كَسْبٍ طَيِّبٍ وَلَا يَقْبَلُ اللهُ إِلَّا الطَّيِّبَ وَإِنَّ اللهَ يَتَقَبَّلُهَا بِيَمِيْنِهِ ثُمَّ يُرَبِّيْهَا لِصَاحِبِهِ كَمَا يُرَبِّى أَحَدُكُمْ فَلُوَّهُ حَتَّى تَكُوْنَ مِثْلَ الْجَبَل​

‘যে ব্যক্তি (তার) বৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ থেকে একটি খেজুর পরিমাণও কিছু দান করে। আর আল্লাহ তো বৈধ অর্থ ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণই করেন না। সে ব্যক্তির ঐ দানকে আল্লাহ ডান হাতে গ্রহণ করেন। অতঃপর তা ঐ ব্যক্তির জন্য লালন-পালন করেন। যেমন তোমাদের কেউ তার অশ্ব-শাবককে লালন-পালন করে থাকে। পরিশেষে তা পাহাড়ের মত হয়ে যায়’।[১৫] হাদীসে কুদসীতে ‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

قَالَ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَا ابْنَ آدَمَ أَنْفِقْ أُنْفِقْ عَلَيْكَ. وَقَالَ يَمِينُ اللهِ مَلأَى وَقَالَ ابْنُ نُمَيْرٍ مَلآنُ سَحَّاءُ لَا يَغِيضُهَا شَىْءٌ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ​

‘হে আদম সন্তান! তোমরা অকাতরে দান করতে থাক, আমিও তোমাদের উপর ব্যয় করব’। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেন, ‘আল্লাহ্র ডান হাত প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ। রাত-দিন অনবরত ব্যয় করলেও তা মোটেই (বান্দার সম্পদ) কমছে না’।[১৬] আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

مَا نَقَصَتْ صَدَقَةٌ مِنْ مَالٍ وَمَا زَادَ اللهُ عَبْدًا بِعَفْوٍ إِلَّا عِزًّا وَمَا تَوَاضَعَ أَحَدٌ لِلهِ إِلَّا رَفَعَهُ اللهُ​

‘ছাদাক্বাহ প্রদান করলে মাল কমে যায় না এবং ক্ষমা করার বিনিময়ে আল্লাহ (ক্ষমাকারীর) সম্মান বৃদ্ধি করেন। আর কেউ আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য বিনয়ী হলে, আল্লাহ তা‘আলা তার মর্যাদা উঁচু করেন’।[১৭]

ফেরেশতাদের কল্যাণকর দু‘আ লাভ

দানকারীর জন্য প্রত্যেক দিন ফেরেশতারা কল্যাণের দু‘আ করেন। আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

مَا مِنْ يَوْمٍ يُصْبِحُ الْعِبَادُ فِيْهِ إِلَّا مَلَكَانِ يَنْزِلَانِ فَيَقُوْلُ أَحَدُهُمَا اَللَّهُمَّ أَعْطِ مُنْفِقًا خَلَفًا وَيَقُوْلُ الآخَرُ اَللَّهُمَّ أَعْطِ مُمْسِكًا تَلَفًا​

‘প্রতিদিন সকালে দু’জন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাদের একজন বলেন, হে আল্লাহ! দাতাকে তার দানের উত্তম প্রতিদান দিন আর অপরজন বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস করে দিন’।[১৮]

মানসিক রোগ থেকে মুক্ত করে

ছাদাক্বাহর মাধ্যমে মানসিক রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

إِنْ أَرَدْتَ أَنْ يَلِيْنَ قَلْبُكَ فَأَطْعِمِ الْمِسْكِيْنَ وَامْسَحْ رَأْسَ الْيَتِيْمِ​

‘তুমি যদি তোমার অন্তরকে নরম করতে চাও, তাহলে তুমি মিসকীনকে খাদ্য দাও এবং ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলিয়ে দাও’।[১৯]

দরিদ্র ব্যক্তির ছাদাক্বাহ :

عَنْ سَعِيْدِ بْنِ أَبِىْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ صَدَقَةٌ قِيْلَ أَرَأَيْتَ إِنْ لَمْ يَجِدْ قَالَ يَعْتَمِلُ بِيَدَيْهِ فَيَنْفَعُ نَفْسَهُ وَيَتَصَدَّقُ قَالَ قِيْلَ أَرَأَيْتَ إِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ قَالَ يُعِيْنُ ذَا الْحَاجَةِ الْمَلْهُوْفَ قَالَ قِيْلَ لَهُ أَرَأَيْتَ إِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ قَالَ يَأْمُرُ بِالْمَعْرُوْفِ أَوِ الْخَيْرِ قَالَ أَرَأَيْتَ إِنْ لَمْ يَفْعَلْ قَالَ يُمْسِكُ عَنِ الشَّرِّ فَإِنَّهَا صَدَقَةٌ​

সাঈদ ইবনু আবু বুরদাহ (রাহিমাহুল্লাহ) তার পিতার সূত্রে তার দাদা থেকে, বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রত্যেক মুসলিমের উপর ছাদাক্বাহ প্রদান করা ওয়াজিব। প্রশ্ন করা হল, যদি ছাদাক্বাহ করার জন্য কিছু না পায়! তিনি বললেন, তবে সে নিজ হাতে উপার্জন করবে এবং নিজে উপকৃত হবে ও ছাদাক্বাহ করবে। পুনরায় জিজ্ঞেস করা হল, যদি সে এতেও সক্ষম না হয় তবে কী করবে? তিনি বললেন, তাহলে সে অসহায় আর্ত মানুষের সাহায্য করবে। রাবী বলেন, আবার জিজ্ঞেস করা হল, যদি সে এতেও সক্ষম না হয়? তিনি বললেন, তাহলে সৎ কাজের কিংবা কল্যাণের আদেশ করবে। আবার জিজ্ঞেস করা হল, যদি সে তাও সক্ষম না হয়? তিনি বললেন, তবে মন্দ কাজ করা থেকে বিরত থাকবে। কেননা এটাই ছাদাক্বাহ।[২০]

ছাদাক্বাহ প্রদানকারীর বিশেষ ফযীলত :

আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

مَنْ أَنْفَقَ زَوْجَيْنِ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ نُودِىَ فِى الْجَنَّةِ يَا عَبْدَ اللهِ هَذَا خَيْرٌ فَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّلَاةِ دُعِىَ مِنْ بَابِ الصَّلَاةِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجِهَادِ دُعِىَ مِنْ بَابِ الْجِهَادِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّدَقَةِ دُعِىَ مِنْ بَابِ الصَّدَقَةِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصِّيَامِ دُعِىَ مِنْ بَابِ الرَّيَّانِ قَالَ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيْقُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا عَلَى أَحَدٍ يُدْعَى مِنْ تِلْكَ الأَبْوَابِ مِنْ ضَرُوْرَةٍ فَهَلْ يُدْعَى أَحَدٌ مِنْ تِلْكَ الأَبْوَابِ كُلِّهَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَعَمْ وَأَرْجُو أَنْ تَكُوْنَ مِنْهُمْ .​

‘যে ব্যক্তি নিজ সম্পদ থেকে আল্লাহর রাস্তায় জোড়া জোড়া খরচ করে, জান্নাতে তাকে এই বলে ডাকা হবে যে, ওহে আল্লাহর বান্দা! এখানে আসো, এখানে তোমার জন্য কল্যাণ রয়েছে। যে ব্যক্তি সালাত আদায়কারী তাকে সালাতের দরজা থেকে ডাকা হবে। যে ব্যক্তি মুজাহিদ তাকে জিহাদের দরজা থেকে ডাকা হবে। ছাদাক্বাহ প্রদানকারীকে ছাদাক্বাহর দরজা থেকে ডাকা হবে এবং সিয়াম পালনকারীকে রাইয়ান দরজা থেকে ডাকা হবে। আবুবকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কোন ব্যক্তিকে কি সবগুলো দরজা থেকে ডাকা হবে? অর্থাৎ এমন কোন ব্যক্তি হবে কি, যাকে সবগুলো দরজা দিয়েই ডাকা হবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ, আর আমি আশা করি তুমিই হবে তাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি’।[২১]

অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর আরশের ছায়াতলে আশ্রয় দিবেন। তার মধ্যে একজন ঐ ব্যক্তি, যে এতটা গোপনে দান করে, তার ডান হাত কী দান করে তা তার বাম হাত টের পায় না’।[২২]

উপসংহার :

ইসলামের অন্যতম নিদর্শন হল- আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য দান-ছাদাক্বাহ করা। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এই দান-ছাদাক্বাহ যেমন অপরিসীম ভূমিকা রাখে, অনুরূপ পরকালীন জীবনের জন্য জান্নাত লাভের এক অনন্য মাধ্যমও বটে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের বরকত, রহমত ও মাগফিরাতের এই মাসে হালাল সম্পদ থেকে ছাদাক্বাহ করার করার তাওফীক দান করুন-আমীন!!


তথ্যসূত্র :
[১]. সহীহ বুখারী, হা/৩৮; সহীহ মুসলিম, হা/৭৬০; আবূ দাঊদ, হা/১৩৭২; ইবনু মাজাহ, হা/১৬৪১; নাসাঈ, হা/২২০৩; মিশকাত, হা/১৯৫৮।
[২]. তাফসীরে বাগাবী, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৯৪- القرض اسم لكل ما يعطيه الإنسان ليجازى عليه ।
[৩]. তাফসীর ইবনু কাছীর, ১ম খণ্ড, পৃঃ ৬৬২।
[৪]. সহীহ বুখারী, হা/৬; আল-আদাবুল মুফরাদ, হা/২৯২; নাসাঈ, হা/২০৯৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৪৮৭।
[৫]. সহীহ বুখারী, হা/১৯০৪; সহীহ মুসলিম, হা/১১৫১।
[৬]. সহীহ বুখারী, হা/১৯৯৪।
[৭]. সহীহ বুখারী, হা/১৪৪৩; সহীহ মুসলিম, হা/১০২১।
[৮]. ফাৎহুল বারী, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩০৬।
[৯]. ইবনে বাত্তাল, শারহ সহীহ বুখারী, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৪৪১।
[১০]. তিরমিযী, হা/২৬১৬; ইবনু মাজাহ, হা/৩৯৭৩; সহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৯৮৩, সনদ হাসান।
[১১]. সহীহ মুসলিম, হা/১০২২; মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৫০৫।
[১২]. সহীহ বুখারী, হা/২৬৩১; আবূ দাঊদ, হা/১৬৬৩; সহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৭১৩।
[১৩]. তিরমিযী, হা/১৯৮৪; সহীহ ইবনু খুযায়মাহ, হা/২১৩৬, সনদ হাসান।
[১৪]. সহীহ বুখারী, হা/১৪১৭; সহীহ মুসলিম, হা/১০১৬; মিশকাত হা/৫৮৫৭।
[১৫]. সহীহ বুখারী, হা/১৪১০; সহীহ মুসলিম, হা/১০১৪; মিশকাত, হা/১৮৮৮।
[১৬]. সহীহ মুসলিম হা/৯৯৩।
[১৭]. সহীহ মুসলিম, হা/২৫৮৮; তিরমিযী, হা/২০২৯; মিশকাত, হা/১৮২৯।
[১৮]. সহীহ বুখারী, হা/১৪৪২।
[১৯]. মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৫৬৬; সনদ হাসান, সিলসিলা সহীহাহ, হা/৮৫৪।
[২০]. সহীহ মুসলিম, হা/১০০৮; নাসাঈ, হা/২৫৩৮।
[২১]. সহীহ বুখারী, হা/১৮৯৭, ৩৬৬৬; সহীহ মুসলিম, হা/১০২৭।
[২২]. সহীহ বুখারী, হা/৬৬০; সহীহ মুসলিম, হা/১০৩১।



সূত্র: আল-ইখলাছ।​
 
Last edited:

Create an account or login to comment

You must be a member in order to leave a comment

Create account

Create an account on our community. It's easy!

Log in

Already have an account? Log in here.

Total Threads
13,347Threads
Total Messages
17,205Comments
Total Members
3,676Members
Latest Messages
Tanvir Bin MofirulLatest member
Top