প্রবন্ধ যিকরুল্লাহ আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় আমল

Habib Bin TofajjalVerified member

If you're in doubt ask الله.
Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Joined
Nov 25, 2022
Threads
690
Comments
1,218
Solutions
17
Reactions
7,104
যিকিরের মাধ্যমে আল্লাহর যত অনুগ্রহ ও ফযিলত অর্জন করা সম্ভব হয়, অন্য কোনো আমলের মাধ্যমে তত অনুগ্রহ ও ফযিলত অর্জন সম্ভব নয়। আবু হুরাইরাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি একশতবার
لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর’

অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকার কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই; রাজত্ব একমাত্র তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও একমাত্র তাঁরই জন্য, আর তিনি সকল বিষয়ের ওপর ক্ষমতাবান —পড়ে সে দশটি গোলাম মুক্ত করার সমান সাওয়াব পায়, তার জন্য একশত সাওয়াব লেখা হয় এবং একশত গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হয়। তাছাড়া ঐদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সে শয়তান হতে সংরক্ষিত থাকে। আর কোনো লোক তার চেয়ে উত্তম কাজ করতে পারেনা; তবে সে ব্যক্তি পারে, যে তার চেয়ে এই দুআটি বেশি পাঠ করে।1

নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,
যে ব্যক্তি দিনে একশতবার 'সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি' বলে, তার পাপ মিটিয়ে দেওয়া হয়, যদিও তার পাপের পরিমাণ সমুদ্রের ফেনা বরাবর হয়।2

আবু হুরাইরাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'যার ওপর সূর্য উদিত হয় অর্থাৎ গোটা দুনিয়া থেকে
سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهِ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ،
'সুবহানাল্লাহ ওয়ালহামদুলিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার' বলা আমার কাছে বেশি প্রিয়।3

আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সকালে বা বিকেলে একবার—
اللَّهُمَّ إِنِّي أَصْبَحْتُ أُشْهِدُكَ وَأُشْهِدُ حَمَلَةَ عَرْشِكَ وَمَلَائِكَتَكَ، وَجَمِيعَ خَلْقِكَ أَنَّكَ أَنْتَ اللهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُكَ وَرَسُولُكَ
‘আল্ল-হুম্মা ইন্নী আসবাহতু উপহিদুকা ওয়া উপহিদু হামালাতা আরশিকা ওয়া মালা-য়িকাতিকা ওয়া জামীঈ খলক্বিকা আননাকা আনতাল্লা-হ লা ইলাহা ইল্লা আনতা ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুকা ওয়া রসুলুকা

অর্থাৎ হে আল্লাহ, আমি সকাল করলাম। তোমার সাক্ষ্য দিচ্ছি, আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি তোমার আরশের বহনকারীদের, তোমার ফেরেশতাদের এবং তোমার সমস্ত সৃষ্টির। নিশ্চয়ই তুমিই আল্লাহ। তুমি ছাড়া সত্য কোনো মাবূদ নেই। আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার বান্দা ও রাসুল।’

দুআটি পড়বে, আল্লাহ তাআলা তার একচতুর্থাংশ জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেবেন। যে ব্যক্তি তা দুই বার পড়বে আল্লাহ তাআলা তার অর্ধেকাংশ জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেবেন। যে ব্যক্তি তা তিনবার পড়বে আল্লাহ তাআলা তার তিন-চতুর্থাশ জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি তা চার বার পড়বে আল্লাহ তাআলা তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেবেন।4

সাওবান রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায়
رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِالإِسْلَامِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا
'রযীতু বিল্লাহি রব্বা ওয়াবিল ইসলামি দ্বীনা ওয়াবি মুহাম্মাদিন রাসুলা’ পাঠ করে, তাকে সন্তুষ্ট করার দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ তাআলা নিয়ে নেন।5

উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি বাজারে প্রবেশ করে এ দুআ পড়ে,
لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ حَيٍّ لاَ يَمُوتُ بِيَدِهِ الْخَيْرُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
“লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ইউহয়ী ওয়া ইউমীতু ওয়াহুওয়া হায়য়ুন, লা ইয়ামূতু বিয়াদিহিল খয়রু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কদীর

অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোনো মাবূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শারীক নেই, তাঁরই রাজত্ব, তাঁরই প্রশংসা, তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু দান করেন, তিনি চিরঞ্জীব, কক্ষনো মৃত্যুবরণ করবেন না। তাঁর হাতেই কল্যাণ এবং তিনি সমস্ত জিনিসের উপর ক্ষমতাশীল। — আল্লাহ তাআলা তার জন্য দশ লক্ষ সওয়াব লিখেন, দশ লক্ষ গুনাহ মিটিয়ে দেন, দশ লক্ষ মর্যাদা বাড়িয়ে দেন এবং তার জন্য জান্নাতে একটি গৃহ নির্মাণ করেন।6

ইমাম ইবনু কাইয়্যিম আল-জাওযিয়াহ
- উস্তায আবদুল্লাহ মাহমূদ​


1. সহীহুল বুখারী, ৩২৯৩; সহীহ মুসলিম, ২৬৯১
2. সহীহ মুসলিম, ২৬৯১
3. সহীহ মুসলিম, ২৬৯৫
4. সুনানু আবি দাউদ, ৫০৬৯; সুনানু তিরমিযী, ৩৫০১; হাদিসটি ইমাম ইবন হাজার আসকালানী হাসান বলেছেন আর ইমাম আলবানী দুর্বল বলেছেন।
5. সুনানুত তিরযিমী, ৩৩৮৯; হাদিসটি ইমাম ইবন হাজার আসকালানী হাসান বলেছেন আর ইমাম আলবানী দুর্বল বলেছেন।
6. সুনানুত তিরমিযী, ৩৪২৮, হাদিসটি হাসান বা গ্রহণযোগ্য।
 
Back
Top