সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

যারা যাকাতের হকদার

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি নিচু করলে উপরে তোলার কেউ নেই, আর তিনি উপরে উঠালে নিচু করার কেউ নেই। তিনি দান করলে বাধা দেওয়ার কেউ নেই, তিনি নিষেধ করলে দেওয়ার কেউ নেই। তিনি যে সম্পর্ক ঠিক রেখেছেন তা কাটার কারও ক্ষমতা নেই, তিনি যে সম্পর্ক কর্তন করেছেন তা জোড়া দেওয়ার কেউ নেই। সুতরাং কতই না পবিত্র তিনি! তিনি মহা পরিচালক, প্রাজ্ঞ ও দয়ালু ইলাহ, তাঁর প্রাজ্ঞতার কারণেই ক্ষতি অনুষ্ঠিত হয় আর তার রহমতেই উপকার সাধিত হয়। আমি তাঁর সকল কর্মকাণ্ডের উপর তাঁর প্রশংসা করি, তার প্রশস্ত ব্যাপক দানের কারণে তার শুকরিয়া আদায় করি।

আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই, যা শরীয়ত হিসেবে দিয়েছেন তা দক্ষতার সাথে দিয়েছেন, যা তৈরী করেছেন সম্পূর্ণ নতুনভাবে তা করেছেন। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল, যাকে তিনি এমন সময় পাঠিয়েছেন যখন কুফরি উপরে উঠেছিল এবং উঁচু হয়ে গিয়েছিল, আক্রমণ করেছিল, জমায়েত হয়েছিল, কিন্তু তিনি সে ঊঁচু অবস্থান থেকে সেটাকে নীচে নামিয়ে রেখেছিলেন এবং দমন করেছিলেন, আর যারা ক্ষতি করার জন্য একত্রিত হয়েছিল তিনি তাদেরকে শতধা বিভক্ত করে দিয়েছেন।

আল্লাহ তাঁর উপর সালাত পেশ করুন, অনুরূপ তাঁর সাথী আবু বকরের উপর, যার বীরত্বের তারকা মুরতাদদের সাথে যুদ্ধে দেখা দিয়েছিল এবং উদিত হয়েছিল। আর ‘উমারের উপর, যার দ্বারা আল্লাহ ইসলামকে করেছেন সম্মানিত ও অপ্রতিরোধ্য। তদ্রূপ ‘উসমানের উপর, যিনি মাযলুমভাবে নিহত হয়েছিলেন। অনুরূপ আলীর উপর, যিনি তাঁর জিহাদ দ্বারা কুফরিকে করেছেন বিনষ্ট ও দমন। তাছাড়া রাসূলের সকল পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবীর উপর, যতদিন সালাত আদায়কারীরা সিজদা ও রুকু করবে। আর আল্লাহ তাঁদের উপর যথাযথ সালামও পেশ করুন।

প্রিয় ভাইয়েরা! আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿إِنَّمَا ٱلصَّدَقَٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَٱلۡمَسَٰكِينِ وَٱلۡعَٰمِلِينَ عَلَيۡهَا وَٱلۡمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمۡ وَفِي ٱلرِّقَابِ وَٱلۡغَٰرِمِينَ وَفِي سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِيلِۖ فَرِيضَةٗ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٞ ٦٠ ﴾ [التوبة: ٦٠]​

‘নিশ্চয়ই ফকীর, মিসকীন, যাকাত আদায়ে নিযুক্ত কর্মচারী, (ইসলামের প্রতি অমুসলিমদের) হৃদয় আকৃষ্ট করার জন্য, দাস মুক্তি, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লাহর পথে জিহাদে রত এবং মুসাফিরগণ যাকাতের হকদার, এ বিধান আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, আল্লাহ জ্ঞানী ও প্রজ্ঞাময়।’ (সূরা আত-তাওবা, আয়াত: ২০)

এ মহতী আয়াতে: আল্লাহ তা‘আলা যাকাত ব্যয়ের খাত ও তার হকদারদের বিষয়টি তাঁর জ্ঞান, প্রজ্ঞা, ইনসাফ ও দয়া অনুসারে ওই আট প্রকারে সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছেন।

তিনি আরও বর্ণনা করেছেন যে, এদের মাঝেই যাকাত বণ্টন করা আবশ্যকীয় ফরয। আর এ বণ্টন আল্লাহর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা থেকে উত্থিত। সুতরাং এর ব্যতিক্রম করা ও যাকাতকে অন্য খাতে ব্যবহার করা জায়েয নেই। কারণ, আল্লাহ তা‘আলাই তাঁর সৃষ্টির কল্যাণ সম্পর্কে সবচেয়ে ভালো জানেন এবং প্রত্যেক বিষয়কে তার যথাস্থানে রাখতে তিনিই শ্রেষ্ঠ প্রজ্ঞার অধিকারী।

﴿ وَمَنۡ أَحۡسَنُ مِنَ ٱللَّهِ حُكۡمٗا لِّقَوۡمٖ يُوقِنُونَ ٥٠ ﴾ [المائ‍دة: ٥٠]​

“আর নিশ্চিত বিশ্বাসী কওমের জন্য বিধান প্রদানে আল্লাহর চেয়ে কে অধিক উত্তম? (সূরা আল-মায়িদাহ্‌, আয়াত: ৫০)

প্রথম ও দ্বিতীয় প্রকার হকদার: ফকীর ও মিসকীন

এরা হলো ওই সকল লোক, যাদের পরিবারের ভরণ-পোষণ ও অন্যান্য প্রয়োজন মেটানোর জন্য তাদের নগদ অর্থ, বেতন ভাতা, প্রতিষ্ঠিত শিল্প ও আয় রোজগার যথেষ্ট নয়। অন্যের সাহায্য সহায়তার প্রয়োজন হয়।

উলামায়ে কেরামের মতে, এদেরকে এ পরিমাণ যাকাতের অংশ দেয়া উচিত, যাতে সামনের বছর যাকাতের সময় আসা পর্যন্ত আর অর্থের প্রয়োজন না হয়।
গরীবদের বিবাহ সম্পাদনে বিয়ের প্রয়োজন পূরণে যাকাত দেওয়া যাবে। গরীব দ্বীনী প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের কিতাব ক্রয়েও দেওয়া যাবে। গরীব চাকরীজীবি, যাদের বেতন ভাতা নিজের ও পরিবারের জন্য যথেষ্ট নয়, এদেরকে প্রয়োজন পূরণে যথেষ্ট পরিমাণ যাকাত দেয়া উচিত।

পক্ষান্তরে যার আয়-রোজগার নিজের ও পরিবারের জন্য যথেষ্ট, তাকে যাকাত দেয়া যাবে না। তাকে বরং এ অবৈধ যাচনা থেকে বিরত থাকার উপদেশ প্রদান করাই কর্তব্য।

এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একাধিক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। যেমন,

আবদুল্লাহ ইবন ‘উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

««لَا تَزَالُ الْمَسْأَلَةُ بِأَحَدِكُمْ حَتَّى يَلْقَى اللهَ، وَلَيْسَ فِي وَجْهِهِ مُزْعَةُ لَحْمٍ»​

‘মানুষের কাছে ব্যক্তি চাইতে থাকে, এমনকি কিয়ামতের দিন তাকে এমন অবস্থায় উঠানো হবে যে তার চেহারায় কোনো মাংস অবশিষ্ট থাকবে না।’[1]

অনুরূপ আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«مَنْ سَأَلَ النَّاسَ أَمْوَالَهُمْ تَكَثُّرًا، فَإِنَّمَا يَسْأَلُ جَمْرًا فَلْيَسْتَقِلَّ أَوْ لِيَسْتَكْثِرْ»​

‘যে ব্যক্তি নিজের সম্পদ বৃদ্ধির জন্য অন্যের কাছে ভিক্ষা চায়, সে মূলত আগুনের টুকরাই চায়, এখন সে ভিক্ষা চাওয়া বাড়াতেও পারে বা কমাতেও পারে।’[2]

হাকীম ইবন হিযাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِنَّ هَذَا المَالَ خَضِرَةٌ حُلْوَةٌ، فَمَنْ أَخَذَهُ بِسَخَاوَةِ نَفْسٍ بُورِكَ لَهُ فِيهِ، وَمَنْ أَخَذَهُ بِإِشْرَافِ نَفْسٍ لَمْ يُبَارَكْ لَهُ فِيهِ، كَالَّذِي يَأْكُلُ وَلاَ يَشْبَعُ، اليَدُ العُلْيَا خَيْرٌ مِنَ اليَدِ السُّفْلَى»​

‘এই সম্পদ হলো আকর্ষণীয় মিষ্ট ভোগ উপকরণ। সুতরাং যে একে গ্রহণ করে অন্তরের বদান্যতার সঙ্গে তার জন্য তাতে বরকত দেয়া হয়। আর যে একে গ্রহণ করে আগ্রহ আতিশয্যের সঙ্গে তার জন্য তাতে বরকত দেয়া হয় না। যেমন ওই ব্যক্তি যে খায় কিন্তু তৃপ্ত হয় না। উচু হাত নিচু হাতের চেয়ে শ্রেয়।’[3]

আবদুর রহমান ইবন ‘আউফ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« وَلا يَفْتَحُ عَبْدٌ بَابَ مَسْأَلَةٍ إِلا فَتَحَ اللَّهُ عَلَيْهِ بَابَ فَقْرٍ»​

‘যে ব্যক্তি ভিক্ষার পথ অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য অভাবের দরজা খুলে দেন।’[4]

যদি অপরিচিত লোক যাকাত প্রার্থনা করে যার মধ্যে ধনাঢ্যতার ছাপ স্পষ্ট, তাকে দান করা যাবে। তবে তাকে এ কথা জানিয়ে দিতে হবে যে ধনী এবং কামাই করতে সক্ষমদের জন্য যাকাতে কোনো অংশ নাই। কেননা,

হাদীসে আছে, একবার দু’জন লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে যাকাতের অর্থ থেকে কিছু চাইলো। তিনি তাদের দেখে বুঝতে পারলেন তারা সামর্থ্যবান। তাদের তিনি বললেন,

«إِنَّ شِئْتُمَا أَعْطَيْتُكُمَا، وَلَا حَظَّ فِيهَا لِغَنِيٍّ، وَلَا لِقَوِيٍّ مُكْتَسِبٍ»​

‘তোমরা চাইলে তোমাদের দেব; তবে জেনে রেখো, ধনী ও সামর্থ্যবানদের জন্য যাকাতে কোনো অংশ নেই।’[5]

তৃতীয় প্রকার: যাকাত আদায়ের কাজে নিয়োজিত কর্মচারী

এরা হলেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাকাত আদায়, সংরক্ষণ ও যথাস্থানে ব্যয় করার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ। তাদের নিজ নিজ কর্ম ও শ্রম অনুপাতে যাকাতের অর্থ প্রদান করা হবে, যদিও তারা ধনী হয়। তবে ব্যক্তিগতভাবে যদি কেউ কোনো লোককে তার যাকাত বণ্টনের কাজে ওকিল বা প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ করে, তাহলে সে যাকাতের কর্মচারী বলে বিবেচিত হবে না। সুতরাং তাকে ওকালতির কাজে যাকাতের কোনো অংশ দেওয়া যাবে না।

এ ওকিল বা প্রতিনিধিগণ যদি বিশ্বস্ততা ও শ্রম ব্যয় করে হকদারদের মধ্যে এ কাজ বিনা পারিশ্রমিকে সওয়াবের আশায় করে তবে অবশ্যই তারা যাকাতদাতার সওয়াবে শরীক হবেন। কারণ;
বুখারীতে এসেছে, আবূ মুসা আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«إِنَّ الْخَازِنَ الْمُسْلِمَ الْأَمِينَ الَّذِي يُنْفِذُ - وَرُبَّمَا قَالَ يُعْطِي - مَا أُمِرَ بِهِ، فَيُعْطِيهِ كَامِلًا مُوَفَّرًا، طَيِّبَةً بِهِ نَفْسُهُ، فَيَدْفَعُهُ إِلَى الَّذِي أُمِرَ لَهُ بِهِ - أَحَدُ الْمُتَصَدِّقَيْنِ»​

‘বিশ্বস্ত মুসলিম কোষাধ্যক্ষ, যিনি তাকে যা নির্দেশ করা হয় তা সুন্দর ও পরিপূর্ণভাবে যথাযথ ও সন্তুষ্টচিত্তে; যাকে দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তার জন্য তা বাস্তবায়ণ করেন -অথবা বলেছেন: প্রদান করেন, সেও দুই সদকাকারীর একজন।’[6]
আর যদি এ ওকিল বা প্রতিনিধিগণ বিনা পারিশ্রমিকে এ বণ্টনের দায়িত্ব গ্রহণ করতে না চায়, তবে সম্পদের মালিক তাকে নিজ সম্পদ থেকে পারিশ্রমিক প্রদান করবেন, যাকাত থেকে নয়।

চতুর্থ প্রকার: যাদের হৃদয় আকর্ষণ করা প্রয়োজন

তারা হচ্ছে এমন নতুন মুসলিম যাদের অন্তর এখনো দোদুল্যমান অথবা এমন লোক যাদের ক্ষতির আশংকা করা হয়; তাই তাদের ঈমানকে মজবুত করার জন্য অথবা তাদের ক্ষতি প্রতিহত করার জন্য তাদেরকে যাকাত থেকে প্রদান করা যাবে; যদি তাদের ক্ষতি প্রতিহত করার অন্য উপায় না থাকে।

পঞ্চম প্রকার: দাস মুক্তির জন্য

যে সকল দাস-দাসী আপন মুনিবের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে নিজেদের মুক্তির ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে, তাদের যাকাত থেকে এ পরিমাণ অর্থ দেয়া যাবে, যাতে তারা এর মাধ্যমে মুক্তিলাভ করতে পারে।
অনুরূপভাবে যাকাতের অর্থ দিয়ে সাধারণ দাস-দাসী ক্রয় করেও মুক্ত করা যাবে। তাছাড়া মুসলিম কয়েদিদেরকেও মুক্ত করা যাবে। কারণ এটাও দাসমুক্তির ব্যাপক নির্দেশের অন্তর্ভুক্ত।

ষষ্ঠ প্রকার: যারা ঋণের বোঝা বহন করছে

যারা ঋণের বোঝা বহন করে তারা দু’প্রকার:

১) যে ব্যক্তি সমাজে পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ এবং সমাজ থেকে বিশৃঙ্খলার আগুন নেভাতে গিয়ে ঋণের শিকার হয়েছে, যাকাতের অর্থ থেকে তাকে ঋণ পরিমাণ অর্থ প্রদান করা যাবে। যেন সে এমন মহতী কাজে আরও উৎসাহিত হয়, যাতে সমাজে বিশৃঙ্খলা ও হিংসা-বিবাদ দূর হয়ে মুসলিমদের মধ্যে পরস্পর সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়।

কাবীসা ইবন মুখারিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

تَحَمَّلْتُ حَمَالَةً فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَسْأَلُهُ فِيهَا فَقَالَ: «أَقِمْ يَا قَبِيصَةُ حَتَّى تَأْتِيَنَا الصَّدَقَةُ، فَنَأْمُرَ لَكَ» قَالَ: ثُمَّ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا قَبِيصَةُ إِنَّ الصَّدَقَةَ لَا تَحِلُّ إِلَّا لِأَحَدِ ثَلَاثَةٍ: رَجُلٍ تَحَمَّلَ حَمَالَةً، فَحَلَّتْ لَهُ الْمَسْأَلَةُ حَتَّى حَتَّى يُصِيبَهَا ثُمَّ يُمْسِكَ...»​

‘একবার আমি অপরের ভার (ঋণ বা সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব) নিজের উপর নিয়ে নিলাম। অতঃপর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বিষয়টি জানিয়ে এ বিষয়ে সহযোগিতা চাইলাম। তখন তিনি বললেন, ‘হে কাবীসা! তুমি আমার নিকট অবস্থান কর; যাতে আমার কাছে যাকাতের মাল আসে। যখন সেটা আসবে তখন আমি তোমাকে তা প্রদান করার নির্দেশ দেব। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে কাবীসা! সাদাকা কেবল তিন ব্যক্তির জন্য হালাল: (তাদের মধ্যে একজন) ওই ব্যক্তি যে পরোপকার করতে গিয়ে ঋণী হয়েছে ফলে তার জন্য চাওয়া বৈধ; যাতে তা পরিশোধ করতে পারে। অতঃপর যাচ্ঞা থেকে বিরত থাকে।...’[7]

২) যে ব্যক্তি নিজের বা পরিবারের প্রয়োজন পূরণে ঋণগ্রস্ত হয়েছে, কিন্তু তার ঋণ পরিশোধ করার কোনো ব্যবস্থা নেই, তাকে ঋণ শোধ পরিমাণ অর্থ যাকাত থেকে প্রদান করা যাবে; যদিও তার পরিমাণ বেশি হয়। অথবা তলবকৃত ব্যক্তি (ঋণী)র কাছে না দিয়ে সরাসরি তলবকারীকে অর্থ দিয়ে দেয়া যাবে। কারণ তলবকারীর কাছে অর্থ হস্তান্তরের মাধ্যমেই তলবকৃত ব্যক্তি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি লাভ করবে।

সপ্তম প্রকার: আল্লাহর রাস্তায়

‘আল্লাহর রাস্তায়’ বলতে ‘জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ’ বুঝায়; যে জিহাদের একমাত্র উদ্দেশ্য আল্লাহর বাণীকে সমুন্নত করা। নিজের বীরত্ব বা শ্রেষ্ঠত্ব অথবা দলীয় কিংবা গোত্রীয় গোড়ামী প্রদর্শনের জন্য নয়। সুতরাং এ নিয়্যতে যে জিহাদ করবে সে মুজাহিদকে যাকাত থেকে এমন অর্থ প্রদান করা যাবে যা জিহাদের পথে তার প্রয়োজন পূরণে যথেষ্ট হবে। অথবা ইসলামের সাহায্য ও তার শত্রুদের বিতাড়ন এবং আল্লাহর বাণীকে বিজয়ী করার জন্য আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী মুজাহিদদের জন্য যাকাতের অর্থ থেকে যুদ্ধাস্ত্র ও যুদ্ধ সামগ্রী কেনা যাবে।

অষ্টম প্রকার: মুসাফির

যে মুসাফিরের আসবাবপত্র শেষ হয়ে গেছে, যাকাত থেকে তাকে এ পরিমাণ অর্থ দেওয়া যাবে যাতে সে সফর পূর্ণ করে নিজ আবাসে পৌঁছুতে পারে।
এ জাতীয় মুসাফির যদি তার নিজ দেশে ধনী লোকও হয় এবং এমন কাউকে পাওয়া যায় যে তাকে ঋণও প্রদান করবে, তারপরও তাকে যাকাত থেকে প্রদান করা যাবে।
তবে এভাবে যাকাতের টাকা নেওয়ার মানসিকতা নিয়ে অল্প-পরিমাণ টাকা-পয়সা নিয়ে সফরে বের হওয়া মুসাফিরের জন্য উচিত নয়।

আর কোনো ক্রমেই যাকাতের সম্পদ কাফিরদেরকে দেয়া যাবে না। তবে যদি তাদের মন আকৃষ্ট করার জন্য হয় তাহলে তা ভিন্ন কথা। অনুরূপভাবে কোনো ধনী লোক, যার কাছে তার প্রয়োজন পূরণের ব্যবস্থা রয়েছে, যেমন ব্যবসায়ী, কারিগর, শিল্পী এবং নিয়মিত বেতনভোগী, প্রচুর ফসলের মালিক অথবা অত্যাবশ্যক খরচ মেটানোর ব্যবস্থা রয়েছে এমন ব্যক্তি, তাদের কাউকেই যাকাতের সম্পদ থেকে দেয়া বৈধ হবে না। তবে তারা যদি যাকাত সংগ্রহের জন্য রাষ্ট্র কর্তৃক নিযুক্ত কর্মচারী হয় অথবা যদি তারা আল্লাহর পথে জিহাদকারী হয় অথবা কোনো ধনী ব্যক্তি যদি সামাজিক সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে যায়, তবে ধনী হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে যাকাতের সম্পদ থেকে দেয়া যাবে।

উপরে বর্ণিত কাজগুলো ব্যতীত অন্য কোনো ওয়াজিব কাজ সম্পাদনের জন্য যাকাত থেকে ব্যয় করা যাবে না। সুতরাং কোনো মেহমানকে মেহমানদারীর জন্য যাকাত থেকে দেওয়া যাবে না। অনুরূপভাবে যাদের খোর-পোষ তার উপর ওয়াজিব, যেমন স্ত্রী বা নিকটাত্মীয়, তাদেরকে তাদের জন্য খরচের পরিবর্তে যাকাত থেকে দেওয়া যাবে না। তবে স্ত্রী ও নিকটাত্মীয়ের ওয়াজিব খরচ বাদে অন্য কাজে তাদের প্রয়োজনে যাকাত থেকে দেওয়া যাবে। সুতরাং স্বামী যাকাত থেকে তার স্ত্রীর একান্ত ঋণ, যা সে পরিশোধ করতে অক্ষম, তা পরিশোধ করতে পারবে। অনুরূপভাবে কেউ তার পিতা-মাতা বা নিকটাত্মীয়ের ঋণ যা তারা পরিশোধ করতে পারছে না সেটাও যাকাত থেকে পরিশোধ করতে পারবে।

অনুরূপভাবে নিকটাত্মীয়দের সম্পদ যদি তাদের খরচ মেটাতে অপ্রতুল হয়, তবে তাদের খরচ মেটানোর জন্য তাদেরকে যাকাত থেকে দেওয়া যাবে; যদি তাদের খরচ মেটানোর দায়িত্ব যাকাতদাতার উপর ওয়াজিব না হয়।

তদ্রূপ কোনো স্ত্রী তার স্বামীকে ঋণ পরিশোধ বা এ জাতীয় কাজের জন্য যাকাতের সম্পদ থেকে দিতে পারবে। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা যাকাতের হকদার করার বিষয়টি এমন সাধারণ গুণাগুণের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন যা তাদেরকে ও অন্যান্যদেরকে সমভাবে সম্পৃক্ত করে। সুতরাং নস তথা কুরআন ও সুন্নাহর ভাষ্য অথব ইজমা ব্যতীত তাদেরকে হকদারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যাবে না। তাছাড়া এর সপক্ষে হাদীসও রয়েছে। যেমন,

বুখারী ও মুসলিমে ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর পত্নী যায়নাব সাকাফিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের সাদাকাহ দেয়ার নির্দেশ দিলেন। তখন যায়নাব রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন,

«يَا نَبِيَّ اللَّهِ، إِنَّكَ أَمَرْتَ اليَوْمَ بِالصَّدَقَةِ، وَكَانَ عِنْدِي حُلِيٌّ لِي، فَأَرَدْتُ أَنْ أَتَصَدَّقَ بِهِ، فَزَعَمَ ابْنُ مَسْعُودٍ: أَنَّهُ وَوَلَدَهُ أَحَقُّ مَنْ تَصَدَّقْتُ بِهِ عَلَيْهِمْ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صَدَقَ ابْنُ مَسْعُودٍ، زَوْجُكِ وَوَلَدُكِ أَحَقُّ مَنْ تَصَدَّقْتِ بِهِ عَلَيْهِمْ»​

“হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কিছু গহনা আছে, আমি এটা দ্বারা সাদাকা করতে চাই। এদিকে ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু মনে করলেন তিনিই সাদাকার যোগ্য হকদার। বিষয়টি জেনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইবন মাসঊদ ঠিকই বলেছেন; তুমি যাদের কাছে তা সাদাকা করবে তাদের মধ্যে তোমার স্বামী ও সন্তানরাই এর অধিক হকদার।’[8]

সালমান ইবন আমের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« الصَّدَقَةُ عَلَى الْمِسْكِينِ صَدَقَةٌ وَهِى عَلَى ذِى الرَّحِمِ ثْنَتَانِ صَدَقَةٌ وَصِلَةٌ ».​

‘ফকীর-মিসকীনকে সাদাকাহ দিলে শুধু সাদাকাই করা হয় আর আত্মীয়দের সাদাকাহ দিলে দুটি কাজ হয়: সাদাকাহও দেওয়া হয় আবার আত্মীয়তার সম্পর্কও রক্ষা করা হয়।’[9]

কোনো দরিদ্র লোকের কাছে প্রাপ্য ঋণ মাফ করে দিয়ে যাকাতের নিয়ত করলে যাকাত আদায় হবে না। কারণ, যাকাত হলো গ্রহণ ও প্রদানের সমষ্টি।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿خُذۡ مِنۡ أَمۡوَٰلِهِمۡ صَدَقَةٗ تُطَهِّرُهُمۡ وَتُزَكِّيهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَيۡهِمۡۖ إِنَّ صَلَوٰتَكَ سَكَنٞ لَّهُمۡۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ١٠٣ ﴾ [التوبة: ١٠٣]​

‘আপনি তাদের সম্পদ থেকে সদাকা নিন, এর মাধ্যমে তাদেরকে আপনি পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবেন। আর তাদের জন্য দো‘আ করুন, নিশ্চয় আপনার দো‘আ তাদের জন্য প্রশান্তিকর। আর আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’ (সূরা আত-তাওবা, আয়াত: ১০৩)

আর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« أَنَّ اللَّهَ قَدْ فَرَضَ عَلَيْهِمْ زَكَاةً تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ فَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ ».​

‘আল্লাহ তাদের সম্পদে যাকাত ফরয করেছেন, ধনীদের থেকে তা নেয়া হবে আর দরিদ্রদের দেয়া হবে।’[10]

আর ঋণ মাফ করার মধ্যে যেহেতু এ আদান-প্রদান নেই, সেহেতু তা দিয়ে যাকাত আদায় হবে না।

তাছাড়া ফকীরের যিম্মায় যে ঋণ রয়েছে তা অনুপস্থিত ঋণ, যাতে কোনো কিছু করার নেই, তাই সেটা উপস্থিত সম্পদ যাতে কিছু করার আছে সেটার জন্য তা যথেষ্ট হবে না।
অনুরূপভাবে ঋণের ব্যাপারটি উপস্থিত সম্পদের চেয়ে অন্তরে কমই প্রভাব ফেলে, তাই সেটা দিয়ে ঋণ দেওয়া যেন ভালোর বদলে মন্দ প্রদান করা।

আর যদি যাকাতদাতা তার প্রচেষ্টা চালানোর পর যাকাতের হকদার মনে করে কাউকে যাকাত দেয়, তারপর জানতে পারে যে সে যাকাতের হকদার নয়, এমতাবস্থায় যাকাতদাতার যাকাত আদায় হয়ে যাবে। কারণ সে তার সাধ্যানুসারে চেষ্টা করেছে ও আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করেছে। আর আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের বাইরে কষ্ট দেন না।

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত লম্বা হাদীসের অংশবিশেষ হলো:

«قَالَ رَجُلٌ لأَتَصَدَّقَنَّ اللَّيْلَةَ بِصَدَقَةٍ فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فَوَضَعَهَا فِى يَدِ غَنِىٍّ فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ تُصُدِّقَ عَلَى غَنِىٍّ. قَالَ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ عَلَى غَنِىٍّ لأَتَصَدَّقَنَّ بِصَدَقَةٍ. فَأُتِىَ فَقِيلَ لَهُ أَمَّا صَدَقَتُكَ فَقَدْ قُبِلَتْ وَلَعَلَّ الْغَنِىَّ يَعْتَبِرُ فَيُنْفِقُ مِمَّا أَعْطَاهُ اللَّهُ ».​

‘(পূর্ববর্তী উম্মতদের মধ্য হতে) এক ব্যক্তি শপথ করে বলল, আজ রাতে আমি সাদাকাহ্‌ করব... তাতে এসেছে, “পরে সে এক ধনী লোককে (না জেনে) সাদাকাহ্‌ দিয়ে বসল। এতে লোকেরা তার সমালোচনা করে বলতে লাগলো যে ধনীকে সাদাকাহ দেওয়া হয়েছে। লোকটি বলল, হে আল্লাহ আপনার প্রশংসা, যদিও আমি ধনীকে দিয়েছি।... অতঃপর লোকটিকে স্বপ্নে এসে জানানো হলো যে, ওই ধনী লোক সম্ভবত এ থেকে শিক্ষা নেবে এবং তাকে আল্লাহ যে সম্পদ দান করেছেন তা থেকে সে দান করবে।’[11] সহীহ মুসলিমের অপর বর্ণনায় স্পষ্ট এসেছে যে, তাকে স্বপ্নে এসে বলা হলো যে, তোমার সাদাকাহ্‌ গৃহীহ হয়েছে। ... আর ওই ধনী লোক...।

মা‘আন ইবন ইয়াযীদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

«كَانَ أَبِى يَزِيدُ أَخْرَجَ دَنَانِيرَ يَتَصَدَّقُ بِهَا فَوَضَعَهَا عِنْدَ رَجُلٍ فِى الْمَسْجِدِ ، فَجِئْتُ فَأَخَذْتُهَا فَأَتَيْتُهُ بِهَا فَقَالَ وَاللَّهِ مَا إِيَّاكَ أَرَدْتُ . فَخَاصَمْتُهُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - فَقَالَ « لَكَ مَا نَوَيْتَ يَا يَزِيدُ ، وَلَكَ مَا أَخَذْتَ يَا مَعْنُ » .​

‘আমার বাবা ইয়াযীদ দান করার উদ্দেশে স্বর্ণমুদ্রা মসজিদে এক ব্যক্তির কাছে রাখলেন। অতঃপর আমি সেখানে গিয়ে তা গ্রহণ করলাম, তারপর সেটা নিয়ে তার কাছে এলাম। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম, আমি তো তোমাকে দেব এমন নিয়ত করিনি। তখন আমি এর সমাধানের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলাম। তিনি বললেন, ‘হে ইয়াযীদ তুমি যা নিয়ত করেছ তাই পাবে আর হে মা‘আন তুমি যা গ্রহণ করেছে তাই তোমার’।’[12]
ভাই সকল! যাকাত ততক্ষণ আদায় হবে না যতক্ষণ না তা তার সঠিক ও উপযুক্ত স্থান যেখানে আল্লাহ দিতে বলেছেন সেখানে দেওয়া হবে।

সুতরাং, আল্লাহ তোমাদেরকে রহমত করুন, তোমরা সকলে যাকাতকে তার সঠিক ও যথাযথ স্থানে দেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাও ও যত্নবান হও; যাতে তোমরা দায়িত্বমুক্ত হও, তোমাদের সম্পদ পবিত্র হয়, তোমাদের রবের নির্দেশ বাস্তবায়িত হয় এবং তোমাদের সাদাকাসমূহ কবুল হয়। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন। আমীন।আর সকল প্রশংসা সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহর জন্য, আল্লাহ সালাত ও সালাম পেশ করুন আমাদের নবী মুহাম্মাদ, তার পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবীর উপর।


[1] বুখারী: ১৪৭৪; মুসলিম: ১০৪০।
[2] মুসলিম: ১০৪১।
[3] বুখারী: ১৪৭২; মুসলিম: ১০৩৫।
[4] তিরমিযী: ২৩২৫; মুসনাদ আহমাদ: ১৬৭৪
[5] আহমাদ ৪/২২৪; আবূ দাউদ: ১৬৩৩; নাসাঈ: ২৫৯৭।
[6] বুখারী: ১৪৩৮; মুসলিম: ১০২৩।
[7] মুসলিম: ১০৪০।
[8] বুখারী: ১৪৬২।
[9] ইবন মাজাহ: ১৪৮৮; নাসাঈ: ২৫৮২।
[10] বুখারী: ১৩৯৫; মুসলিম: ৩৩২।
[11] বুখারী: ১৪২১; মুসলিম: ১০২২।
[12] বুখারী: ১৪২২।

 
ভূমিকা: নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য; আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি, তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি, তাঁর কাছেই তাওবা করি; আর আমরা আমাদের নফসের জন্য ক্ষতিকর এমন সকল খারাপি এবং আমাদের সকল প্রকার মন্দ আমল থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। সুতরাং আল্লাহ যাকে পথ প্রদর্শন...

Book Chapters

Overview
  • Views: 421
রমযান মাসের ফযীলত
  • Views: 146
হাদীসে বর্ণিত পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের বিশ্লেষণ
  • Views: 192
সিয়ামের ফযীলতের বর্ণনা
  • Views: 158
সিয়াম পালনের অন্যতম ফযীলত
  • Views: 259
সিয়ামের বিধান
  • Views: 135
সিয়াম ফরয হয়েছে দুটি পর্যায়ে
  • Views: 168
দু’টি বিষয়ের কোনো একটি ঘটলে রমযানের আগমন বুঝা যাবে
  • Views: 148
রমযানে কিয়ামুল লাইলের বিধান
  • Views: 127
এসব নফল সালাতের অন্যতম
  • Views: 89
বিতর সালাতসহ তারাবীর সংখ্যা কত
  • Views: 218
কুরআন তিলাওয়াতের ফযীলত
  • Views: 109
কুরআনের সুনির্দিষ্ট সূরার ফযীলতের ব্যাপারেও অনেক হাদীস বর্ণিত রয়েছে
  • Views: 98
সিয়ামের বিধানের দিক থেকে মানুষের প্রকারভেদ
  • Views: 171
সিয়াম পালনের ক্ষেত্রে মানুষের দশটি প্রকার
  • Views: 191
সিয়ামের বিধানের দিক থেকে মানুষের প্রকারভেদের অবশিষ্ট আলোচনা
  • Views: 103
সিয়াম পালন এবং এর কাযার বিধানের দিক থেকে মানুষের প্রকারভেদের অবশিষ্ট আলোচনা
  • Views: 188
সিয়াম পালন এবং এর কাযার বিধানের দিক থেকে মানুষের প্রকারভেদের অবশিষ্ট আলোচনা - দশম প্রকার
  • Views: 173
সিয়াম পালনের হিকমত বা তাৎপর্যসমূহ
  • Views: 227
সিয়াম ফরয হওয়ার হিকমত ও তাৎপর্য সমূহ
  • Views: 167
সিয়াম পালনের ফরয আদবসমূহ
  • Views: 140
সিয়ামের অন্যতম ওয়াজিব আদব
  • Views: 143
সিয়ামের মুস্তাহাব আদবসমূহ
  • Views: 181
সিয়ামের মুস্তাহাব আদবের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, তাড়াতাড়ি ইফতার করা
  • Views: 148
সিয়ামের মুস্তাহাব আদবের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত করা, যিকির করা, দো‘আ করা, সালাত আদায় করা ও দান-সাদকা করা
  • Views: 124
সিয়ামের মুস্তাহাব আদবের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামতের কথা অন্তরে সদা জাগরুক রাখা।
  • Views: 117
কুরআন তিলাওয়াতের দ্বিতীয় প্রকার
  • Views: 182
কুরআন তিলাওয়াতের আদব
  • Views: 124
সিয়াম ভঙ্গের কারণসমূহ
  • Views: 152
সিয়াম ভঙ্গের কারণসমূহ ৭ প্রকার
  • Views: 164
সিয়াম ভঙ্গের শর্তাবলি এবং যে কাজে সিয়াম ভাঙে না আর সাওম পালনকারীর জন্য যা করা জায়েয
  • Views: 331
যাকাত
  • Views: 178
চার ধরনের সম্পদে যাকাত ফরয
  • Views: 188
যারা যাকাতের হকদার
  • Views: 231
বদর যুদ্ধ
  • Views: 144
মক্কা বিজয় (আল্লাহ এ নগরকে সম্মানিত করুন)
  • Views: 157
আল্লাহর সাহায্য প্রাপ্তির প্রকৃত কারণসমূহ
  • Views: 178
আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার জন্য অপরিহার্য গুণাবলি
  • Views: 185
রমযানের শেষ দশ দিনের ফযিলত
  • Views: 147
ইতিকাফ রমযানের শেষ ১০ দিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য
  • Views: 174
ইতিকাফের উদ্দেশ্য ও ই‘তিকাফকারী মসজিদ থেকে সারা শরীর নিয়ে বের হওয়া
  • Views: 119
রমযানের শেষ দশকের ইবাদত ও লাইলাতুল ক্বদর
  • Views: 157
জান্নাতের বর্ণনা [আল্লাহ আমাদেরকে তার অধিবাসী করুন]
  • Views: 126
হাদীসে জান্নাতের বিবরণ
  • Views: 279
জান্নাতীদের বৈশিষ্ট্যাবলি ও গুণাবলি
  • Views: 193
কুরআন ও হাদিসে জাহান্নামের বর্ণনা
  • Views: 175
জাহান্নামে প্রবেশের কারণ
  • Views: 214
মুনাফিকদের আলামত
  • Views: 141
জাহান্নামে প্রবেশের আরো কিছু কারণ
  • Views: 221
যাকাতুল ফিতর
  • Views: 196
তওবা সম্পর্কে
  • Views: 191
রমযান মাসের সমাপ্তি
  • Views: 174
Top