মুআবিয়া (রা:) এর সহনশীলতা, উদারতা, প্রজ্ঞা

  • Thread Author
সাহাবী মুআবিয়া (রাদিআল্লাহু আনহু)-এর সাথে সাহাবী ইবনে যুবাইর (রাদিআল্লাহু আনহু)-এর পূর্ব থেকেই কোন ব্যাপারে মনোমালিন্য ছিল। মুআবিয়া ছিলেন ঠান্ডা-প্রকৃতির ধীর-মস্তিষ্কের সহনশীল সাহাবী। পক্ষান্তরে ইবনে যুবাইর ততটা ধৈর্যশীল ছিলেন না। মুআবিয়া ছিলেন সম্রাট। আর ইবনে যুবাইর ছিলেন তাঁরই একজন প্রজা। মদীনায় উভয়ের জমি বা বাগান ছিল পাশাপাশি। একদা মুআবিয়ার কিছু কর্মচারী ইবনে যুবাইরের জমিতে প্রবেশ করে। তাতে ইবনে যুবাইর রাগান্বিত হয়ে মুআবিয়াকে এই বলে চিঠি লিখেন :

“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। রাসূলের সাহায্যকারী শিষ্য ও দুই ফিতা-ওয়ালীর পুত্র আব্দুল্লাহ বিন যুবাইরের পক্ষ থেকে কলিজাখাকী হিন্দের পুত্র মুআবিয়ার প্রতি।

অতঃপর জানাই যে, আপনার কর্মচারীদল আমার জমিতে প্রবেশ করেছে। সেই আল্লাহর কসম যিনি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই! যদি আপনি তাদেরকে নিষেধ না করেন, তাহলে জরুর আপনার সাথে আমার অপ্রীতিকর কিছু ঘটবে!”

মুআবিয়া (রাদিআল্লাহু আনহু) চিঠি পড়ে বেপরোয়া ছেলে ইয়াযিদকে ডেকে তা পড়তে দিলেন। অতঃপর তার রায় নিতে জিজ্ঞাসা করলেন, বলতো এর জবাব কি হতে পারে?

ইয়াযিদ বললেন, আমার মতে এমন বিশাল সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করা হোক, যার অগ্রভাগ থাকবে মদীনায় এবং পশ্চাদভাগ থাকবে আপনার কাছে (দামেস্কে)। তারা আপনার নিকট তার মাথা কেটে আনবে!

কিন্তু দূরদর্শী মুআবিয়া (রাদিআল্লাহু আনহু) বললেন, না। বরং আমাদের এমন জবাব দেওয়া উচিত, যা অধিকতর উত্তম ও প্রীতিকর। অতএব তিনি তার জবাবে লিখলেন :

“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। আবূ সুফিয়ানের পুত্র মুআবিয়ার পক্ষ থেকে রাসূলের সাহায্যকারী শিষ্যের ও দুই ফিতা-ওয়ালীর পুত্র আব্দুল্লাহ বিন যুবাইরের প্রতি।

আসসালামু আলাইকুম অরাহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহ।অতঃপর জানাই যে, এ পৃথিবী যদি অর্ধেক আমার এবং অর্ধেক আপনার হতো, অতঃপর আপনি যদি আমার ভাগটি আমার কাছে চাইতেন, তাহলে তাও আমি দিয়ে দিতাম। অতএব আমার এই পত্র আপনার নিকট পৌছা মাত্র আপনি আমার জমি ও কর্মচারী আপনার জমি ও কর্মচারীর সাথে যোগ করে নিন! সে সব আপনারই! অসসালাম।”

এত বড় উদারতার কথা পড়ে ইবনে যুবাইর (রাদিআল্লাহু আনহু) আর নিজেকে সংবরণ করতে না পেরে কেঁদে ফেলে সেই চিঠি ভিজিয়ে দিলেন। পরবর্তীতে দামেশকে এসে তিনি মুআবিয়ার মাথা চুমে প্রশংসা না করে পারেন নি।

— সুখের সন্ধান, শাইখ আব্দুল হামীদ ফাইজী আল মাদানী; ওয়াহীদিয়া ইসলামিয়া লাইব্রেরি
 
Last edited:
Back
Top