সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Habib Bin Tofajjal

প্রবন্ধ মানব সৃষ্টি ও তার মর্যাদা

Habib Bin Tofajjal

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Threads
688
Comments
1,217
Solutions
17
Reactions
6,634
Credits
5,445
এই পৃথিবীতে বসবাসের জন্য আল্লাহ তা'য়ালা উপযুক্ত একটি জাতি সৃষ্টি করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই জাতি হলো মানব সম্প্রদায়। আর আল্লাহর হিকমতের দাবি, তিনি মানুষকে যে ধাতু দিয়ে সৃষ্টি করবেন তা হবে মাটি। তাই তিনি তাকে মাটি দিয়ে তৈরী করেন। তারপর তিনি এই সুন্দর আকৃতি দিয়ে তাকে গঠন করলেন, যে আকৃতিতে মানুষ এখন জন্ম গ্রহণ করে। অতঃপর যখন তার আকৃতি পরিপূর্ণ হলো, তখন তিনি তার মধ্যে আত্মা দিলেন। ফলে যখন মানুষ সুন্দর আকৃতি পেয়ে শুনতে, দেখতে, নড়াচড়া করতে ও কথা বলতে আরম্ভ করল তখন তাঁর প্রভু তাঁকে জান্নাতে বসবাস করতে দিলেন। আর তার যা জানা প্রয়োজন সব তাকে শিক্ষা দিলেন। জান্নাতের সব কিছু তার জন্য বৈধ করে দিলেন এবং পরীক্ষা করার জন্য একটি মাত্র গাছের নিকটবর্তী হতে নিষেধ করলেন। অনন্তর আল্লাহ তা'য়ালা তার সম্মান ও মর্যাদা প্রকাশ করতে চাইলেন। তাই ফেরেশতাদেরকে তার জন্য সেজদা করার নির্দেশ দিলেন। সকল ফেরেশতা আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে সেজদা করল; কিন্তু একমাত্র ইবলিস অহঙ্কার ও অবাধ্যতার বশবতী হয়ে সেজদা করা হতে বিরত থাকল। আদেশ অমান্য করার কারণে আল্লাহ তার উপর অসন্তুষ্ট হলেন এবং অহঙ্কারের জন্য তিনি তাঁর রহমত হতে তাকে বঞ্চিত করলেন। এরপর ইবলিস আল্লাহর নিকট কিয়ামত পর্যন্ত তার হায়াত বৃদ্ধি করার জন্য প্রার্থনা করল। তিনি তার এই প্রার্থনা কবুল করে তার আয়ুষ্কাল কিয়ামত পর্যন্ত বৃদ্ধি করলেন।

আদম (আ:) ও তার বংশধরদের মান-মর্যাদা দেখে ইবলিস শয়তান হিংসায় ফেটে পড়ল এবং সে তার রবের শপথ করল; সমস্ত বানী আদমকে সে পথভ্রষ্ট করবে। তাই পথভ্রষ্ট করার জন্য সে তাদের সামনে, পিছনে, ডানে ও বামে সর্বদিক থেকে তাদেরকে কুমন্ত্রণা দিবে বলে সিদ্ধান্ত নিল। কেবলমাত্র আল্লাহর একনিষ্ঠ, সত্যবাদী ও মুত্তাকী বান্দাদেরকে সে পথভ্রষ্ট করতে পারবে না। আল্লাহ তা'য়ালা আদম (আ:)-কে শয়তানের চক্রান্তে পতিত হতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু শয়তান আদম (আ:) ও তার স্ত্রী হাওয়া-কে জন্নাত হতে বিতাড়িত করার জন্য এবং তাদের লজ্জাস্থান যা তাদের পরস্পরের নিকট গোপন রাখা হয়েছিল তা প্রকাশ করার জন্য তার কুমন্ত্রণার জালে আবদ্ধ করল। সে তাদের সামনে শপথ করে বললঃ আমি তোমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী। এই গাছের ফল খেলে তোমরা ফেরেশতা হয়ে যাবে অথবা চিরকাল জান্নাতী হয়ে যাবে; মূলত এ কারণেই আল্লাহ তোমাদেরকে ঐ গাছের নিকটবর্তী হতে নিষেধ করেছেন। ফলে মিথ্যা কুমন্ত্রণার ফাঁদে পড়ে তারা আল্লাহর নিষিদ্ধ গাছের ফল খেলেন। তাই নির্দেশ অমান্য করার কারণে প্রথম শাস্তি হিসেবে তারা বস্ত্রহীন হয়ে পড়লেন। শয়তানের কুমন্ত্রণা হতে সতর্ক করার ব্যাপারটি তিনি তাদেরকে পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিলেন। আদম (আ:) তার ভুলের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি তার তওবা কবুল করেন, তাকে ক্ষমা করে দেন এবং তিনি তাকে নাবী হিসেবে মনোনীত করেন ও হেদায়েত দান করেন। আর দ্বিতীয় শাস্তি হিসেবে তিনি তাকে জান্নাত হতে পৃথিবীতে অবতরণের নির্দেশ দিলেন। কেননা এটাই তার বাসস্থান। এখানে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জীবন কাল অতিবাহিত করতে হবে। আর তিনি তাকে জানিয়ে দেন যে, এ যমীন তথা মাটি থেকে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এখানে জীবন যাপন করবে, এখানেই মৃত্যুবরণ করবে, অবশেষে কিয়ামত দিবসে এই যমীন থেকেই পুনরায় উঠানো হবে। অতঃপর আদম (আ:) ও তার স্ত্রী হাওয়া আল্লাহর নির্দেশে পৃথিবীতে অবতরণ করলেন এবং বসবাস শুরু করলেন। তাদের বংশ বিস্তার লাভ করল। তারা সবাই আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে তাঁর ইবাদত করতেন। আর আদম (আ:) ছিলেন আল্লাহর নবী।

আল্লাহ তা'য়ালা উক্ত সংবাদের বর্ণনা দিয়ে এরশাদ করেন:
"আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর তোমাদেরকে রূপ দান করেছি, তারপর আমি ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিয়েছি— তোমরা আদমকে (আ:) সেজদা কর, তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সেজদা করল, সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হল না। তিনি (আল্লাহ) তাকে (ইবলিসকে) জিজ্ঞেস করলেন: আমি যখন তোমাকে আদমকে সেজদা করতে আদেশ করলাম, তখন কোন বস্তু তোমাকে সেজদা করা হতে নিবৃত্ত করলো? সে উত্তরে বললঃ আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ, আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন কাদামাটি হতে। আল্লাহ বললেনঃ এ স্থান থেকে নেমে যাও! এখান থেকে তুমি অহঙ্কার করবে এটা হতে পারে না; সুতরাং বের হয়ে যাও। নিশ্চয়ই তুমি নীচ ও লাঞ্ছিতদের অন্তর্ভুক্ত। সে বললঃ (হে আল্লাহ) আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত (বেঁচে থাকার) অবকাশ দিন। আল্লাহ বললেনঃ (ঠিক আছে) তোমাকে অবকাশ দেয়া হল। সে বললঃ আপনি যে কারণে আমাকে পথভ্রষ্ট করলেন এ কারণে আমিও শপথ করে বলছিঃ আমি তাদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্য আপনার সরল পথে অবশ্যই ওঁৎ পেতে বসে থাকব। অতঃপর আমি পথভ্রষ্ট করার উদ্দেশ্যে তাদের সম্মুখ দিয়ে, পিছন দিয়ে, ডান দিক দিয়ে এবং বাম দিক দিয়ে তাদের কাছে আসবো, আপনি তাদের অধিকাংশকেই কৃতজ্ঞরূপে পাবেন না। আল্লাহ বললেনঃ তুমি এখান হতে লাঞ্ছিত ও বিতাড়িত হয়ে বের হয়ে যাও। তাদের (বানী আদমের) মধ্যে যারা তোমার অনুসরণ করবে, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সকলের দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করবো। আর হে আদম! তুমি এবং তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর এবং এখানে তোমাদের মনে যা চায় তাই খাও; কিন্তু এই গাছের নিকটবর্তী হয়ো না, অন্যথায় অত্যাচারীদের মধ্যে গণ্য হয়ে পড়বে। অতঃপর তাদের লজ্জাস্থান যা পরস্পরের নিকট গোপন রাখা হয়েছিল তা প্রকাশ করার জন্য শয়তান তাদেরকে কুমন্ত্রণা দিল, আর বললঃ তোমাদের প্রতিপালক এই বৃক্ষের কাছে যেতে নিষেধ করেছেন এর কারণ এ ছাড়া কিছুই নয় যে, তোমরা যেন ফেরশতা হয়ে না যাও অথবা (এই জান্নাতে) চিরন্তন জীবন লাভ করতে না পার। সে তাদের উভয়ের নিকট শপথ করে বললঃ আমি তোমাদের একজন হিতাকাঙ্ক্ষী। সুতরাং সে (ইবলীস) তাঁদের উভয়কে প্রতারণা ও ছলনা দ্বারা নীচে নিয়ে আসল (বিভ্রান্ত করল)। ফলে যখন তারা সেই নিষিদ্ধ গাছের স্বাদ গ্রহণ করে ফেলল, তখন তাদের লজ্জাস্থান তাদের কাছে প্রকাশ হয়ে পড়লো এবং জন্নাতের গাছের পাতা দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত করতে লাগলো। এ সময় তাদের প্রতিপালক তাদেরকে সম্বোধন করে বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে এই বৃক্ষ হতে নিষেধ করিনি? আর শয়তান যে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু তা কি তোমাদেরকে বলিনি? তখন তারা বললঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছি, আপনি যদি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি দয়া না করেন, তাহলে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বো। আল্লাহ বললেনঃ তোমরা একে অন্যের শত্রুরূপে এখান থেকে নেমে যাও, তোমাদের জন্যে পৃথিবীতে এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বসবাস করা এবং তথায় জীবন ধারণের উপযোগী সামগ্রীর ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি আরো বলেনঃ সেই পৃথিবীতে তোমরা জীবন-যাপন করবে, সেখানেই তোমাদের মৃত্যু সংঘটিত হবে এবং তথা হতেইা তোমাদেরকে বের করা হবে। (সূরা আ'রাফ ৭৪ ১১-২৫)

আপনি যখন আল্লাহর মানুষ সৃষ্টির এই মহান বিষয় নিয়ে চিন্তা- ভাবনা করবেন, তখন দেখতে পাবেন; আল্লাহ তাকে সুন্দর আকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। অত:পর মর্যাদার যাবতীয় সম্মানসূচক পোশাক তাকে দান করেছেন। যেমন; বিবেকশক্তি, জ্ঞান, প্রকাশ করার শক্তি, কথা বলার শক্তি, সুন্দর গঠন ও আকৃতি, মাঝারী শরীর, যুক্তি ও বিবেচনা শক্তি দিয়ে জ্ঞানার্জনের দক্ষতা এবং উত্তম চরিত্র যেমন; সততা, আনুগত্য ও আত্মসমর্পণ। সুতরাং সে যখন মায়ের গর্ভের মধ্যে এক বিন্দু তুচ্ছ পানি ছিল তার সেই অবস্থার মাঝে এবং সে যখন পরিপূর্ণ সুন্দর আকৃতির মানুষ হয়ে সৎ আমলকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে আদন নামক জান্নাতবাসী হবে আর তার নিকট ফেরেশতা প্রবেশ করবে তার ঐ অবস্থার মাঝে কতই না তফাৎ! তাই তো তিনি এরশাদ করেন:
"অতএব সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কত মহান!" (সূরা মু'মিনূন ২৩:১৪)

সুতরাং পৃথিবীটা একটি গ্রামের মত, আর মানুষ তার অধিবাসী। সব কিছু তার কাজে ব্যস্ত। তার যাবতীয় কল্যাণ সাধনে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মানুষের খেদমত ও প্রয়োজনের জন্যই এসব কিছু তৈরী করা হয়েছে। তাই তার হেফাজতের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতাগণ দিন-রাত তার হেফাজতের কাজ করে যাচ্ছে। বৃষ্টি ও উদ্ভিদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতাগণ তার রিযিকের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ও কাজ করে যাচ্ছে। কক্ষপথসমূহকে অনুগত করা হয়েছে, তারা তার কল্যাণে চলমান। সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজীকে অনুগত ও চলমান রাখা হয়েছে তার সময়ের হিসাবের জন্য এবং তার সার্বিক জীবনের স্থিতিশীলতা ঠিক রাখার জন্য। আকাশের ভাসমান জগত যেমন বাতাস, মেঘমালা, পাখি ইত্যাদিসহ তাতে যা কিছু আছে সবই তার অনুগত। নিচের সমস্ত জগতও তার অনুগত, তার কল্যাণ সাধনের জন্যেই সৃষ্টি করা হয়েছে। যেমন- যমীন, পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর, নদ-নদী, গাছপালা, ফলমূল, তৃণলতা, জীব-জন্তু ইত্যাদি আরো যা কিছু আছে। যেমন-

"তিনিই আল্লাহ, যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, যিনি আকাশ হতে পানি বর্ষণ করে তার দ্বারা তোমাদের জীবিকার জন্য ফল-মূল উৎপাদন করেন, যিনি নৌযানকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন, যাতে তাঁর হুকুমে ওটা সমুদ্রে বিচরণ করে এবং যিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন নদীসমূহকে। যিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন সূর্য ও চন্দ্রকে, যারা অবিরাম একই নিয়মের অনুবর্তী এবং তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন রাত্রি ও দিবসকে। আর তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন তোমরা তাঁর নিকট প্রত্যেক যা কিছু চেয়েছো। তোমরা আল্লাহর নেয়ামত গণনা করলে ওর সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না। নিশ্চয়ই মানুষ অবশ্যই অতি মাত্রায় যালিম, অকৃতজ্ঞ।" (মিফতাহু দারিস সাআ'দাহ: ১ম খণ্ড; ৩২৭, ৩২৮ নং পৃষ্ঠা; সূরা ইবরাহীম ১৪ : ৩২-৩৪)

মহান আল্লাহ যে মানুষকে পূর্ণ মর্যদা দান করেছেন তার জ্বলন্ত প্রমাণ হল যে, তিনি পার্থিব জীবনে তার প্রয়োজনীয় সব কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং পরকালে উচ্চ আসনে তাকে পৌঁছে দেবে এমন প্রয়োজনীয় মাধ্যমও দান করেছেন; ফলে তিনি তার কাছে কিতাব অবতীর্ণ করেন, অসংখ্য নবী- রাসূল পাঠান, যারা আল্লাহর বিধি-বিধান বর্ণনা করেন এবং তাঁর দিকে আহ্বান করেন। অতঃপর আত্মিক, মানসিক ও শারীরিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে আল্লাহ তা'য়ালা আদম (আ:)-এর জন্য তার আত্মা হতে তার স্ত্রী হাওয়াকে সৃষ্টি করেন। এর ফলে তিনি তার নিকট আরাম, প্রশান্তি, স্থিরতা অনুভব করলেন। তিনি শুধু একা নন; বরং এমন মিলনে তারা উভয়েই পরস্পরের মাঝে প্রশান্তি, তৃপ্তি, ভালবাসা, ও অনুকম্পা অনুভব করলেন। কেননা উভয়ের শারীরিক, আত্মিক ও স্নায়ুবিক সেতু বন্ধনের মাঝে এক ধরণের সাড়া পরিলক্ষিত হয় এবং একজনের অনুপস্থিতি অন্যজনের মধ্যে খেয়াল করা যায়। তাদের ভালবাসা ও ঐক্য শুধুমাত্র একটি নতুন প্রজন্ম গঠনের জন্য। এই সমস্ত আবেগ, অনুভূতি তাদের দু'টি আত্মাকে একত্রিত করেছে এবং ঐ সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই অনুভূতিগুলো আত্মা ও স্নায়ুর জন্য প্রশান্তি, শরীর ও অন্তরের জন্য আরামদায়ক, জীবন ও জীবিকার স্থিরতা এবং রূহ ও অন্তরসমূহের মিলনস্বরূপ। এক কথায় পুরুষ ও নারীর সমানভাবে প্রশান্তির জন্য। আল্লাহ তা'য়ালা মানব সন্তানের মধ্য হতে মুমিন বান্দাদেরকে বাছাই করে তার বন্ধু বানিয়েছেন এবং তাঁর আনুগত্যে তাদেরকে নিয়োজিত রেখেছেন। তারা তার বিধি মোতাবেক কাজ করে থাকেন। যাতে করে তারা জান্নাতে আল্লাহর সান্নিধ্যে থাকতে পারেন। আর তাদের মধ্য হতেই নবী, রাসূল, ওলী,ও শহীদগণকে চয়ন করে তাদেরকে এই পৃথিবীতে সব চেয়ে বড় নেয়া'মত দান করেন, যা দ্বারা জীবন সুখকর হয়। আর তা হলো আল্লাহর ইবাদত, তাঁর আনুগত্য এবং তাঁর সঙ্গে গোপনে কথা বলার সুযোগ অর্থাৎ মোনাজাত। এ ছাড়া আরো অনেক নেয়ামত দিয়ে তাদেরকে ধন্য করেছেন, যেগুলো অন্য কেউ অর্জন করতে পারে না। যেমন- নিরাপত্তা, প্রশান্তি লাভ ও সাফল্য ইত্যাদি। বরং এসবের চেয়ে বড় নেয়ামত হল- তারা সত্যকে জানতে পেরেছেন যা নবী-রাসূলগণ নিয়ে এসেছেন। আর তিনি তাঁর প্রতি তাদের বিশ্বাস স্থাপন ও একনিষ্ঠতার বদৌলতে আখেরাতে গচ্ছিত রেখেছেন জান্নাতের চিরস্থায়ী সুখ এবং আল্লাহর দয়ার মানানসই মহা সাফল্য। বরং তিনি তাদেরকে তাঁর অনুগ্রহে এর চেয়ে আরো অনেক বেশী দেবেন।


 
COMMENTS ARE BELOW
Top