যদি কোন মসজিদের মধ্যে কবর পাওয়া যায়। তবে দেখতে হবে কোনটি প্রথম নির্মিত হয়েছে। যদি মসজিদই সর্ব প্রথম নির্মিত হয়ে থাকে এবং পরবর্তীতে মসজিদের মধ্যে মৃতকে দাফন করা হয় তবে ঐ কবর খুঁড়ে সেখান থেকে লাশ বা লাশের অবশিষ্ট হাড়-হাড্ডিগুলো বের করে মুসলমানদের কবরস্থানে পুনরায় দাফন করা অপরিহার্য। যারা এভাবে দাফন করেছিল এটি তাদের দায়িত্ব। তারা না করলে মুসলিম সরকারের জন্য তা করা অপরিহার্য। যত দিন কবর খুঁড়ে লাশ বা হাড়-হাড্ডি বাইরে বের করা না হবে ততদিন মসজিদ কর্তৃপক্ষ গুনাহগার হতে থাকবে। তবে এই মসজিদে মুসল্লীদের সালাত আদায় করা বৈধ হবে এই শর্তে যে, তারা সালাতের সময় যেন কবরকে সরাসরি সামনে না রাখে। কেননা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবরে দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন।
পক্ষান্তরে যদি কবরই পূর্বে থেকে থাকে; পরবর্তীতে তার উপর মসজিদ নির্মিত হয় তবে মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা আবশ্যক হবে মসজিদ নির্মানকারীর উপর অন্যথায় মুসলিম সরকার সেটা বাস্তবায়ন করবে। এ ধরণের কবরওয়ালা মসজিদ পরিত্যাগ করা আবশ্যক এবং তাতে সালাত আদায় করা জায়েয নয়। কেননা, হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,
আয়েশা (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন (মৃত্যু শয্যায়) অসুস্থ ছিলেন, তখন তিনি একটি চাদর স্বীয় চেহারা মুবারকে রাখতেন,অসুবিধা বোধ করলে তা সরিয়ে নিতেন। এমতাবস্থায় তিনি বললেন, “ইহুদী ও নাসারাদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত। কেননা তারা তাদের নবীদের কবরগুলোকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করেছে।” তিনি স্বীয় উম্মতকে সেই ইহুদী-নাসারাদের কর্ম হতে সতর্ক করার জন্যই তা বলেছেন।[1] অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে ঐ সমস্ত লোকদের কৃতকর্ম হতে তাঁর উম্মতকে সতর্ক করেছেন। কারণ তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, অচিরেই তিনি মৃত্যু বরণ করবেন এবং দূর ভবিষ্যতে হলেও এ ধরণের কাজ সংঘটিত হবে।
তাঁকে ঘরে দাফন করার পিছনে একটি কারণ হল, তিনি নিজেই হাদীছ শুনিয়েছিলেন যে,
“নবীকে তাঁর মৃত্যুর স্থান থেকে স্থানান্তর করা যাবে না। বরং যেখানে তিনি মৃত্যু বরণ করবেন সেখানেই তাঁকে দাফন করা হবে।” অত:পর
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইন্তিকালের পর সাহাবীগণ তার বিছানা সরিয়ে সেখানেই কবর খনন করলেন।”[2]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কবর মসজিদে নব্বীর মধ্যে থাকার ব্যাপারে একটি সংশয়ের জবাব:
আমরা দেখি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কবর বর্তমানে তো মসজিদে নব্বীর মধ্যে। এর জবাব কি?
এর জবাব কয়েক ভাবে দেওয়া যায় :
১. মসজিদটি মূলত: কবরের উপর নির্মাণ করা হয়নি বরং এ মসজিদ নির্মিত হয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবদ্দশায়।
২. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মসজিদেই দাফন করা হয় নি। কাজেই একথা বলার অবকাশ নেই যে, ইহাও সৎ ব্যক্তিদেরকে মসজিদে দাফন করায় কুপ্রথার অন্তর্ভুক্ত। বরং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাঁর ঘরে দাফন করা হয়েছে।
৩. রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ঘরগুলোকে- যার অন্যতম হল আয়েশার ঘরটি (যেখানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শায়িত রয়েছেন) মসজিদে প্রবেশ করানো সাহাবীদের যৌথ সিদ্ধান্তে হয়নি বরং তাদের অধিকাংশের মৃত্যুর পর হয়েছে। তখন তাঁদের অল্প কয়েকজন মাত্র বেঁচে ছিলেন। উহা ঘটেছিল ৯৪ হিজরী সনে মসজিদ সম্প্রসারণ কালে। বস্তুত: এই কাজটি সাহাবীদের অনুমতি বা তাদের যৌথ সিদ্ধান্তে হয়নি। তাদের কেউ কেউ উহাতে দ্বিমতও পোষণ করেছিলেন এবং বাধা দিয়েছিলেন। তাবেঈনদের মধ্যে সাঈদ বিন মুসাইয়েব তাদের অন্যতম।
৪. কবরটি মূলত: মসজিদে নেই। কারণ উহা মসজিদ হতে সম্পূর্ণ পৃথক রুমে রয়েছে। আর মসজিদকে ওর উপর বানানো হয় নি। এজন্যই এই স্থানটিকে তিনটি প্রাচীর দ্বারা সংরক্ষিত ও বেষ্টিত করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রাচীরকে এমন একটি দিকে রাখা হয়েছে যা কিবলা হতে বিপরীত পার্শে রয়েছে এবং উহার এক সাইড উল্টা দিকে রয়েছে,যাতে করে কোন সানুষ নামায পড়া কালীন উহাকে সম্মুখীন না করতে পারে কারণ উহা কিবলা হতে এক পার্শে রয়েছে।
আশাকরি উক্ত আলোচনা দ্বারা ঐ সমস্যা দূরীভূত হয়েছে যা দ্বারা কবর পন্থীগণ দলীল গ্রহণ করে এই মর্মে যে,নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কবরে মসজিদ বানানো রয়েছে।[3]
[1] বুখারী ও মুসলিম
[2] ইবনে আবী শায়বা-আবু বকর সিদ্দীক রা. হতে বর্ণিত
[3] তাওহীদ (সিলেবাস), লেভেল-২ অনুবাদক, শাইখ আবদুল্লাহ আল কাফী
পক্ষান্তরে যদি কবরই পূর্বে থেকে থাকে; পরবর্তীতে তার উপর মসজিদ নির্মিত হয় তবে মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা আবশ্যক হবে মসজিদ নির্মানকারীর উপর অন্যথায় মুসলিম সরকার সেটা বাস্তবায়ন করবে। এ ধরণের কবরওয়ালা মসজিদ পরিত্যাগ করা আবশ্যক এবং তাতে সালাত আদায় করা জায়েয নয়। কেননা, হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,
لَمَّا نَزَلَ بِرَسُولِ اللَّهِ طَفِقَ يَطْرَحُ خَمِيصَةً لَهُ عَلَى وَجْهِهِ، فَإِذَا اغْتَمَّ بِهَا كَشَفَهَا عَنْ وَجْهِهِ، فَقَالَ: " وَهُوَ كَذَلِكَ، لَعْنَةُ اللَّهِ عَلَى الْيَهُودِ وَالنَّصَارَى اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ يُحَذِّرُ مَا صَنَعُوا
আয়েশা (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন (মৃত্যু শয্যায়) অসুস্থ ছিলেন, তখন তিনি একটি চাদর স্বীয় চেহারা মুবারকে রাখতেন,অসুবিধা বোধ করলে তা সরিয়ে নিতেন। এমতাবস্থায় তিনি বললেন, “ইহুদী ও নাসারাদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত। কেননা তারা তাদের নবীদের কবরগুলোকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করেছে।” তিনি স্বীয় উম্মতকে সেই ইহুদী-নাসারাদের কর্ম হতে সতর্ক করার জন্যই তা বলেছেন।[1] অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে ঐ সমস্ত লোকদের কৃতকর্ম হতে তাঁর উম্মতকে সতর্ক করেছেন। কারণ তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, অচিরেই তিনি মৃত্যু বরণ করবেন এবং দূর ভবিষ্যতে হলেও এ ধরণের কাজ সংঘটিত হবে।
তাঁকে ঘরে দাফন করার পিছনে একটি কারণ হল, তিনি নিজেই হাদীছ শুনিয়েছিলেন যে,
إِنَّ النَّبِيَّ لا يُحَوَّلُ مِنْ مَكَانِهِ ، يُدْفَنُ حَيْثُ يَمُوتُ
“নবীকে তাঁর মৃত্যুর স্থান থেকে স্থানান্তর করা যাবে না। বরং যেখানে তিনি মৃত্যু বরণ করবেন সেখানেই তাঁকে দাফন করা হবে।” অত:পর
فَنَحَّوْا فِرَاشَهُ ، وَحَفَرُوا لَهُ فِي مَوْضِعِ فِرَاشِهِ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইন্তিকালের পর সাহাবীগণ তার বিছানা সরিয়ে সেখানেই কবর খনন করলেন।”[2]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কবর মসজিদে নব্বীর মধ্যে থাকার ব্যাপারে একটি সংশয়ের জবাব:
আমরা দেখি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কবর বর্তমানে তো মসজিদে নব্বীর মধ্যে। এর জবাব কি?
এর জবাব কয়েক ভাবে দেওয়া যায় :
১. মসজিদটি মূলত: কবরের উপর নির্মাণ করা হয়নি বরং এ মসজিদ নির্মিত হয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবদ্দশায়।
২. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মসজিদেই দাফন করা হয় নি। কাজেই একথা বলার অবকাশ নেই যে, ইহাও সৎ ব্যক্তিদেরকে মসজিদে দাফন করায় কুপ্রথার অন্তর্ভুক্ত। বরং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাঁর ঘরে দাফন করা হয়েছে।
৩. রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ঘরগুলোকে- যার অন্যতম হল আয়েশার ঘরটি (যেখানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শায়িত রয়েছেন) মসজিদে প্রবেশ করানো সাহাবীদের যৌথ সিদ্ধান্তে হয়নি বরং তাদের অধিকাংশের মৃত্যুর পর হয়েছে। তখন তাঁদের অল্প কয়েকজন মাত্র বেঁচে ছিলেন। উহা ঘটেছিল ৯৪ হিজরী সনে মসজিদ সম্প্রসারণ কালে। বস্তুত: এই কাজটি সাহাবীদের অনুমতি বা তাদের যৌথ সিদ্ধান্তে হয়নি। তাদের কেউ কেউ উহাতে দ্বিমতও পোষণ করেছিলেন এবং বাধা দিয়েছিলেন। তাবেঈনদের মধ্যে সাঈদ বিন মুসাইয়েব তাদের অন্যতম।
৪. কবরটি মূলত: মসজিদে নেই। কারণ উহা মসজিদ হতে সম্পূর্ণ পৃথক রুমে রয়েছে। আর মসজিদকে ওর উপর বানানো হয় নি। এজন্যই এই স্থানটিকে তিনটি প্রাচীর দ্বারা সংরক্ষিত ও বেষ্টিত করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রাচীরকে এমন একটি দিকে রাখা হয়েছে যা কিবলা হতে বিপরীত পার্শে রয়েছে এবং উহার এক সাইড উল্টা দিকে রয়েছে,যাতে করে কোন সানুষ নামায পড়া কালীন উহাকে সম্মুখীন না করতে পারে কারণ উহা কিবলা হতে এক পার্শে রয়েছে।
আশাকরি উক্ত আলোচনা দ্বারা ঐ সমস্যা দূরীভূত হয়েছে যা দ্বারা কবর পন্থীগণ দলীল গ্রহণ করে এই মর্মে যে,নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কবরে মসজিদ বানানো রয়েছে।[3]
আরও জানতে ডাউনলোড করুন - মৃত্যু ও কবর সম্পর্কে করণীয় ও বর্জনীয়
[1] বুখারী ও মুসলিম
[2] ইবনে আবী শায়বা-আবু বকর সিদ্দীক রা. হতে বর্ণিত
[3] তাওহীদ (সিলেবাস), লেভেল-২ অনুবাদক, শাইখ আবদুল্লাহ আল কাফী