সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন: রিয়া বা মানুষকে দেখানো ও শুনানোর নিয়তে ইবাদাত করার বিধান কী?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,149
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,699
Credits
24,212
উত্তর: যে ইবাদাত ‘রিয়া’ মিশ্রিত হয় তা তিন প্রকার: প্রথম প্রকার: ইবাদাত মূলতঃ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যেই করা হয়। যেমন দৃষ্টি আকর্ষণ এবং মানুষের প্রশংসা পাওয়ার উদ্দেশ্যে ‘সালাত’ আদায় করা। ইহা শির্ক এবং এ প্রকার ইবাদাত বাতিল। দ্বিতীয় প্রকার: ইবাদাত করার মধ্যবর্তী অবস্থায় ‘রিয়ায়’ পতিত হওয়া। অর্থাৎ যেমন ইবাদাত শুরুর সময় একনিষ্ঠভাবে আরম্ভ করে কিন্তু ইবাদাতের মধ্যবর্তী সময়ে ‘রিয়া’ সৃষ্টি হয়। এ ধরণের ইবাদত দু’অবস্থা হতে খালি নয়: প্রথম অবস্থা: যদি উক্ত ইবাদতের প্রথমাংশ শেষাংশের সাথে সম্পৃক্ত না থাকে তাহলে প্রথমাংশ শুদ্ধ হবে এবং দ্বিতীয় অংশ বাতিল হবে। এর উদাহরণ হলো: যেমন, কোনো ব্যক্তি একশত টাকা দান করার ইচ্ছা পোষণ করল। এর মধ্যে ৫০টাকা দান করল খালেস নিয়তে। বাকী ৫০টাকা দান করল লোক দেখানোর নিয়তে। পরের ৫০টাকা দান করার সময় রিয়া মিশ্রিত হওয়ার কারণে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। দ্বিতীয় অবস্থা: যদি ইবাদাতটির শেষাংশ প্রথমাংশের ওপর ভিত্তিশীল হয় তবে এর দু‘টি অবস্থা: (ক) ইবাদাতকারী ব্যক্তি ‘রিয়া’-কে প্রতিহত করবে এবং ‘রিয়া’-এর ওপর সিহর হবে না। এমতাবস্থায় ‘রিয়া’ ইবাদাতে কোনো প্রকার প্রভাব ফেলবে না অথবা কোনো ক্ষতিও করবে না। যেমন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “নিশ্চয় আল্লাহ আমার উম্মতের মনে যে সমস্ত কথা উদিত হয় সেগুলোকে ক্ষমা করে দিবেন। যদি তা কাজে পরিণত না করে বা মুখে তা উচ্চারণ না করে”।[1] (খ) অপর অবস্থাটি হলো: ইবাদাতকারী ‘রিয়া’-এর প্রতি তুষ্ট থাকবে এবং ‘রিয়া’-কে অন্তরে প্রতিহত করবে না। এমতাবস্থাহায় তার পূর্ণ ইবাদাতটি বাতিল হয়ে যাবে। কেননা ইবাদাতের শেষাংশ প্রথমাংশের ওপর ভিত্তিশীল। যেমন, কোনো ব্যক্তি ‘সালাতে’ দাড়াল ইখলাসের সাথে, অতঃপর দ্বিতীয় রাকাতে তার অন্তরে ‘রিয়া’-এর উদয় হলো এবং উক্ত ব্যক্তি ‘রিয়া’-এর প্রতি তুষ্ট থাকল (অন্তরে ‘রিয়া’-কে প্রতিহত করল না) এমতাবস্থায় পূর্ণ ‘সালাত’ বাতিল হয়ে যাবে। কেননা সালাতের শেষাংশের সাথে প্রথমাংশ সম্পৃক্ত রয়েছে। তৃতীয় প্রকার: ইবাদাত সমাপ্ত করার পর যদি ইবাদাতকারীর অন্তরে ‘রিয়া’-এর উদ্ভব ঘটে, তবে তা ইবাদাতে কোনো প্রকার প্রভাব ফেলবে না বা ইবাদতটি বাতিলও হবে না। কারণ, বিশুদ্ধভাবে তা সম্পাদিত হয়েছে। সম্পাদিত হওয়ার পর রিয়ার কারণে তা নষ্ট হবেনা। ইবাদাত দেখে কেউ প্রশংসা করলে এবং তাতে ইবাদাতকারী খুশী হলে তা রিয়ার অন্তর্গত হবে না। কারণ, এটি ইবাদাত সমাপ্ত হওয়ার পর প্রকাশিত হয়েছে। আনুগত্যের কাজ করার পর মানুষ খুশী হবে, এটাই স্বাভাবিক; বরং এটি তার ঈমানের প্রমাণ বহন করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«مَنْ سَرَّتْهُ حَسَنَتُهُ وَسَاءَتْهُ سَيِّئَتُهُ فَذَلِكُمُ الْمُؤْمِنُ»

“নেকীর কাজ করে যে খুশী হয় এবং পাপের কাজকে যে খারাপ মনে করে, সেই প্রকৃত মুমিন।”[2] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«تِلْكَ عَاجِلُ بُشْرَى الْمؤْمِنِ»

“ইহা মুমিনদের আগাম শুভ সংবাদ”।[3]
সূত্র: ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম। লেখক: শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)।
 
Top