সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
FORUM BOT

প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন: প্রচলিত বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের কোনো একটিতে যোগ দেওয়া কি একজন মুসলিমের উপর আবশ্যকীয়?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,134
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
34,836
Credits
24,212
উত্তর: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির প্রতিটি কথা ও কাজের অনুসরণ করা আবশ্যকীয় নয়। বরং তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাড়া অন্য সকলের কথা গ্রহণীয় ও বর্জনীয়। ইমাম মালেক (রহঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্ববরের দিকে ইশারা করে বলেন, ‘এ ক্ববরের অধিবাসী ব্যতীত পৃথিবীর সকল ব্যক্তির কথা গ্রহণীয় ও বর্জনীয়’। অর্থাৎ শুধুমাত্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতিটি কথাই গ্রহণীয়। আর নির্দিষ্ট কোনো দল বা সংগঠনে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে আমি বলব, মহান আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল উম্মতকে জামা‘আতবদ্ধভাবে জীবন যাপন করার প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জামা‘আতের সাথে আল্লাহর হাত থাকে’ (তিরমিযী, হা/ ২১৬৭, শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ‘ছহীহ’ বলেছেন)। তিনি আরো বলেন, ‘তোমাদের উপর জামা‘আতবদ্ধ থাকা ফরয করা হল। কেননা নেকড়ে বাঘ একাকী দূরে অবস্থানকারী ছাগলকে খেয়ে ফেলে’ (নাসাঈ, হা/৮৪৭, শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ‘হাসান’ বলেছেন)। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, ‘শয়তান একক ব্যক্তির সঙ্গে থাকে এবং সে দু’জন থেকে দূরে থাকে’ (তিরমিযী, হা/২১৬৫, শায়খ আলবানী হাদীছটিকে ‘ছহীহ’ বলেছেন)। এছাড়া এ প্রসঙ্গে অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। সৎকাজের আদেশ এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ, আল্লাহর পথে দা‘ওয়াত, শার‘ঈ জ্ঞানার্জন, হক ও ধৈর্য্যের উপদেশ ইত্যাদির মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর আনুগত্যের ক্ষেত্রে প্রতিটি মুসলিম ব্যক্তির একে অপরকে সহযোগিতা করা নিঃসন্দেহে শরীআ‘তসম্মত কাজ। আর একতাবদ্ধভাবে এসব কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে শয়তানের কবল থেকে রক্ষা করতে পারে, যা উপরোল্লেখিত হাদীছসমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয়। সংঘবদ্ধভাবে এসব কাজ সম্পাদ মহান আল্লাহ্‌র নিম্নোক্ত বাণীর আওতায়ও পড়ে:
﴿ وَٱلۡعَصۡرِ ١ إِنَّ ٱلۡإِنسَٰنَ لَفِي خُسۡرٍ ٢ إِلَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَتَوَاصَوۡاْ بِٱلۡحَقِّ وَتَوَاصَوۡاْ بِٱلصَّبۡرِ ٣ ﴾ [العصر: ١، ٣]

‘সময়ের কসম! নিশ্চয়ই মানুষ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। তবে তারা ব্যতীত, যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে এবং পরস্পরকে হক ও ধৈর্য্যের উপদেশ দিয়েছে’ (আল-আছর)। তবে কোনো দল বা সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততা বলতে যদি তার প্রতি অন্ধভক্তি ও গোঁড়ামি বুঝায়, অর্থাৎ সে যে সংগঠন করে, সেটিই একমাত্র হকের উপর আছে, পক্ষান্তরে অন্যগুলি ভ্রান্তির মধ্যে আছে বলে মনে করে এবং শুধুমাত্র নিজ সংগঠনের কর্মীদের সাথে আন্তরিকতা বজায় রেখে চলে, আর অন্যদের সাথে শত্রুতা পোষণ করে, তাহলে এটি একদিকে যেমন মহা অন্যায় এবং যুলম। অন্যদিকে তেমনি এগুলি দ্বারা উম্মতের মধ্যে বিভক্তি এবং দুর্বলতা সৃষ্টি ব্যতীত আর কিছুই হয় না। সেজন্য প্রতিটি মুমিন ব্যক্তির উচিৎ, সকল মুমিন ভাইয়ের সাথে বন্ধুত্ব ও আন্তরিকতা বজায় রেখে চলা। মহান আল্লাহ বলেন,
﴿ إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ﴾ [المائ‍دة: ٥٥]

‘তোমাদের বন্ধুতো আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং মুমিনগণ’ (আল-মায়েদাহ ৫৫)। তিনি আরো বলেন,
﴿ إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ إِخۡوَةٞ ﴾ [الحجرات: ١٠]

‘মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই’ (আল-হুজুরাত ১০)। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই’। অতএব, আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের মূলনীতির সাথে ঐক্যমত পোষণকারী দল, জামা‘আত বা সংগঠনগুলির কোনো একটির মধ্যে হক সীমাবদ্ধ বলে মনে করা যাবে না। আল্লাহর পথে দা‘ওয়াতের ক্ষেত্রে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার প্রয়োজন। প্রত্যেকটি মুমিন অন্যান্য মুমিনের সাথে বন্ধুত্ব ও আন্তরিকতা বজায় রেখে চলবে। নিকটের হোক বা দূরের হোক সৎকাজে একে অপরকে সহযোগিতা করবে এবং অন্যায় কাজে সহযোগিতা থেকে বিরত থাকবে।([1])
([1]) শায়খের ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটের নিম্নোক্ত লিঙ্ক থেকে ১০/১২/২০১২ ইং তারিখে লিখাটি সংগ্রহ করা হয়েছে: http://islamqa.info/ar/ref/12491 ------------- শায়খের সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ শায়খ মুহাম্মাদ ছালেহ আল-মুনাজ্জিদ ১৩৮০ হিজরীতে জন্মগ্রহণ করেন। রিয়াদে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তর শেষ করে যাহরান চলে যান এবং সেখানে গিয়ে পড়াশুনা শেষ করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য শিক্ষকগণের মধ্যে শায়খ ইবনে বায, শায়খ উছায়মীন, শায়খ জিবরীন, শাখয় আব্দুর রহমান নাছের আল-বাররাক প্রমুখ আলেমগণ উল্লেখযোগ্য। তিনি সঊদী আরবের খোবার শহরে অবস্থিত ওমর ইবনে আব্দুল আযীয জুম‘আ মসজিদের ইমাম এবং খত্বীব। তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পাঠদান এবং বক্তব্য প্রদান করে থাকেন। রেডিও, টেলিভিশনের বিভিন্ন প্রোগ্রামে তাঁর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ রয়েছে। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছেঃ ১. কূনূ আলাল খয়রি আ‘ওয়ানা ২. মুহাররামাত ইসতাহানা বিহা কাছীরুম মিনান নাস ৩. আল-আসালীব আন নাবাবিয়্যাহ ফী ইলাজিল আখত্বা। তিনি তাঁর নিম্নোক্ত ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে ১৯৯৬ সাল থেকে অদ্যাবধি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসছেন: الإسلام سؤال وجواب সূত্র: ইসলামহাউজ.কম।
 
Top