উত্তর: নিম্নে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হল:
❑ ওজুর পর দু রাকআত সালাতে মর্যাদা:
এ বিষয়ে দুটি হাদিস পেশ করা হল:
◍ ১. উসমান রা. এর আজাদকৃত দাস হুমরান থেকে বর্ণিত। তিনি উসমান রা. কে দেখেছেন যে, উসমান রা. পানির পাত্র আনতে নির্দেশ দিলেন। অতঃপর তিনি দু কব্জির উপর তিনবার পানি ঢেলে উভয়টি ধুয়ে নিলেন। তারপর তাঁর ডান হাত পাত্রের ভিতর প্রবেশ করিয়ে কুলি ও নাক পরিষ্কার করলেন। তারপর তাঁর মুখমণ্ডল ধৌত করলেন তিনবার। দু হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করলেন তিনবার। তারপর মাথা মাসেহ করলেন। এরপর উভয় পা ধুলেন তিনবার।
অতপর বললেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
◍ ২. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাতের সময় বেলাল রা. কে বলেন,
বর্ণনাকারী বলেন, বেলাল রা. বলেন,
ওজুর পর সালাত পড়া সংক্রান্ত উপরোক্ত হাদিস সমূহের ভাষা ও এ সংক্রান্ত আলেমদের ব্যাখ্যার আলোকে প্রমাণিত হয় যে, ওজু করার পরপরই অনতিবিলম্বে ওজুর দু রাকআত সালাত পড়া মুস্তাহাব। ওজুর পর বিভিন্ন কর্মব্যস্ততা দ্বারা বিলম্ব করা সঙ্গত নয়।
❑ নিম্নে এ বিষয়ে আলেমদের অভিমত তুলে ধরা হল:
➧ হাফেজ ইবনে হাজার রহ. তাহিয়্যাতুল অজু সংক্রান্ত হাদিস উল্লেখ্য করার পর বলেন,
➧ ইমাম নববী রহ. বলেন,
➧ শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন,
➧ আল্লামা যাকারিয়া আল আনসারী রহ. বলেন,
➧ তানাযী শাফেঈ রহ. বলেন,
আল্লাহু আলাম।
উল্লেখ্য যে, মসজিদে প্রবেশের পর দুখুলুল মসজিদ/তাহিয়াতুল মসজিদের সাথে ওজুর দু রাকআত সালাতের নিয়ত করলে আল্লাহ তায়ালা উভয় সালাতের সওয়াব দান করবেন ইনশাআল্লাহ
❑ ওজুর পর দু রাকআত সালাতে মর্যাদা:
এ বিষয়ে দুটি হাদিস পেশ করা হল:
◍ ১. উসমান রা. এর আজাদকৃত দাস হুমরান থেকে বর্ণিত। তিনি উসমান রা. কে দেখেছেন যে, উসমান রা. পানির পাত্র আনতে নির্দেশ দিলেন। অতঃপর তিনি দু কব্জির উপর তিনবার পানি ঢেলে উভয়টি ধুয়ে নিলেন। তারপর তাঁর ডান হাত পাত্রের ভিতর প্রবেশ করিয়ে কুলি ও নাক পরিষ্কার করলেন। তারপর তাঁর মুখমণ্ডল ধৌত করলেন তিনবার। দু হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করলেন তিনবার। তারপর মাথা মাসেহ করলেন। এরপর উভয় পা ধুলেন তিনবার।
অতপর বললেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
" مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ لاَ يُحَدِّثُ فِيهِمَا نَفْسَهُ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
“যে ব্যক্তি আমার মত ওজু করে দু রাকআত সালাত আদায় করবে এমনভাবে যে যাতে সে মনে মনে ভিন্ন কোনও চিন্তা-ভাবনা করবে না তার পূর্ববতী সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।” [সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) অধ্যায়: ২/ তাহারাত (পবিত্রতা হাসিল, পরিচ্ছেদঃ ৩. ওজু করার নিয়ম ও ওজুর পূর্ণতা]◍ ২. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাতের সময় বেলাল রা. কে বলেন,
يَا بِلاَلُ حَدِّثْنِي بِأَرْجَى عَمَلٍ عَمِلْتَهُ عِنْدَكَ فِي الإِسْلاَمِ مَنْفَعَةً فَإِنِّي سَمِعْتُ اللَّيْلَةَ خَشْفَ نَعْلَيْكَ بَيْنَ يَدَىَّ فِي الْجَنَّةِ
“হে বেলাল, তুমি আমাকে বল, ইসলামের পর তুমি এমন কোন আমল করেছ যার উপকারের ব্যাপারে তুমি বেশি আশাবাদী? কেননা আজ রাতে (মিরাজের রাতে) আমি জান্নাতে আমার সামনে তোমার জুতার আওয়াজ শুনেছি।বর্ণনাকারী বলেন, বেলাল রা. বলেন,
مَا عَمِلْتُ عَمَلاً فِي الإِسْلاَمِ أَرْجَى عِنْدِي مَنْفَعَةً مِنْ أَنِّي لاَ أَتَطَهَّرُ طُهُورًا تَامًّا فِي سَاعَةٍ مِنْ لَيْلٍ وَلاَ نَهَارٍ إِلاَّ صَلَّيْتُ بِذَلِكَ الطُّهُورِ مَا كَتَبَ اللَّهُ لِي أَنْ أُصَلِّيَ
“ইসলামের মধ্যে এর চেয়ে বেশি লাভের আশা আমি অন্য কোন আমলে করতে পারি না যে, আমি দিন-রাত যখনই পূর্ণ ওজু করি, তখনই আল্লাহ তাআলা আমার ভাগ্যে যতক্ষন লিখেছেন, ততক্ষণ ঐ ওজু দিয়ে সালাত আদায় করে থাকি।” [সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), অধ্যায়: ৪৬/ সাহাবী (রাঃ) গণের ফযিলত, পরিচ্ছেদঃ ২১. বিলাল (রাঃ) এর ফযিলত]ওজুর পর সালাত পড়া সংক্রান্ত উপরোক্ত হাদিস সমূহের ভাষা ও এ সংক্রান্ত আলেমদের ব্যাখ্যার আলোকে প্রমাণিত হয় যে, ওজু করার পরপরই অনতিবিলম্বে ওজুর দু রাকআত সালাত পড়া মুস্তাহাব। ওজুর পর বিভিন্ন কর্মব্যস্ততা দ্বারা বিলম্ব করা সঙ্গত নয়।
❑ নিম্নে এ বিষয়ে আলেমদের অভিমত তুলে ধরা হল:
➧ হাফেজ ইবনে হাজার রহ. তাহিয়্যাতুল অজু সংক্রান্ত হাদিস উল্লেখ্য করার পর বলেন,
فيه استحباب صلاة ركعتين عقب الوضوء
"এই হাদিসে ওজুর পরপরই দু রাকআত সালাত আদায় করা মুস্তাহাব হওয়ার দলিল রয়েছে।"➧ ইমাম নববী রহ. বলেন,
يستحب ركعتان عقب الوضوء للأحاديث الصحيحة فيها-المجموع شرح المهذب (3 /545)
"একাধিক বিশুদ্ধ হাদিস থাকায় প্রমাণিত হয়, অজুর পরপরই দুই রাকাত নামাজ পড়া মুস্তাহাব।" (আল মাজমু শারহিল মুহাযযাব ৩/৫৪৫)➧ শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন,
وَيُسْتَحَبُّ أَنْ يُصَلِّيَ رَكْعَتَيْنِ عَقِبَ الْوُضُوءِ وَلَوْ كَانَ وَقْتَ النَّهْيِ ، وَقَالَهُ الشَّافِعِيَّةُ ” انتهى . (الفتاوى الكبرى 4/345)
“ওজুর পরপরই দু রাকআত সালাত পড়া মুস্তাহাব যদিও তা নিষিদ্ধ সময়ে হয়। এমনটি বলেছেন শাফেয়ীগণ।" [আল ফাতাওয়া আল কুবরা ৪/৩৪৫]➧ আল্লামা যাকারিয়া আল আনসারী রহ. বলেন,
“وَنُدِبَ لِمَنْ تَوَضَّأَ أَنْ يُصَلِّيَ عَقِيبَ وُضُوئِهِ رَكْعَتَيْنِ فِي أَيِّ وَقْتٍ كَانَ ” انتهى .(أسنى المطالب 1/44)
“যে ব্যক্তি ওজু করবে তার জন্য ওজুর পরপরই দু রাকআত সালাত পড়া মুস্তাহাব-তা যে কোনও সময় হোক না কেন।" [আসনাল মাতালিব ১/৪৪]➧ তানাযী শাফেঈ রহ. বলেন,
ومنه صلاة سنة الوضوء عقب الفراغ منه وقبل طول الفصل والإعراض
"এই হাদিস থেকে ওজু শেষ করার পর এবং দীর্ঘ সময়ের ব্যবধান ও অমনোযোগী (অন্য কাজে ব্যস্ত) হওয়ার পূর্বে ওজুর দু রাকআত সুন্নত পড়ার দলিল পাওয়া যায়।" [নেহায়তুয যায়ন/১০৪]আল্লাহু আলাম।
উল্লেখ্য যে, মসজিদে প্রবেশের পর দুখুলুল মসজিদ/তাহিয়াতুল মসজিদের সাথে ওজুর দু রাকআত সালাতের নিয়ত করলে আল্লাহ তায়ালা উভয় সালাতের সওয়াব দান করবেন ইনশাআল্লাহ
উত্তর প্রদানে: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব
Last edited by a moderator: