সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

অন্যান্য নারীদের তারাবী'র নামায পড়ার বিধান

Threads
19
Comments
29
Reactions
331
Credits
141
তারাবীর নামায সুন্নতে মুয়াক্কাদা। নারীদের জন্যে কিয়ামুল লাইল (রাতের নামায) ঘরে পড়া উত্তম। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “নারীদেরকে মসজিদে যেতে বাধা দিও না। তবে, তাদের জন্য ঘরই উত্তম।”[হাদিসটি আবু দাউদ তাঁর ‘সুনান’ গ্রন্থে, ‘নারীদের মসজিদে যাওয়া’ শীর্ষক পরিচ্ছেদ ও ‘এ বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ’ শীর্ষক পরিচ্ছেদে সংকলন করেছেন। হাদিসটি ‘সহিহুল জামে’ গ্রন্থে (৭৪৫৮) সংকলিত হয়েছে]

নারীর নামাযের স্থান যতবেশী নির্জনে হবে, যতবেশি ব্যক্তিগত হবে সেটাই উত্তম। যেহেতু নবী সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “মহিলাদের জন্য শোয়ার ঘরে নামায আদায় করা বৈঠকখানায় নামায আদায় করার চেয়ে উত্তম। তাদের জন্য গোপন প্রকোষ্ঠে নামায করা শোয়ার ঘরে নামায আদায় করার চেয়ে উত্তম।”[আবু দাউদ তাঁর ‘সুনান’ নামক গ্রন্থের, ‘কিতাবুস সালাত’ অধ্যায়ের ‘মহিলাদের মসজিদে যাওয়া’ শীর্ষক পরিচ্ছেদে হাদিসটি সংকলন করেছেন। হাদিসটি ‘সহিহুল জামে’ গ্রন্থে (৩৮৩৩) রয়েছে]

আবু হুমাইদ আল-সায়েদি এর স্ত্রী উম্মে হুমাইদ থেকে বর্ণিত তিনি একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমি আপনার সাথে নামায আদায় করতে পছন্দ করি। তখন তিনি বললেন: আমি জেনেছি আপনি আমার সাথে নামায পড়া পছন্দ করেন। কিন্তু, আপনি আপনার শোয়ার ঘরে নামায আদায় করা বৈঠক ঘরে নামায আদায় করার চেয়ে উত্তম। আপনি আপনার বৈঠক ঘরে নামায আদায় করা বাড়ীর উঠোনে নামায আদায় করার চেয়ে উত্তম। আপনি আপনার বাড়ীর উঠোনে নামায আদায় করা গোত্রীয় মসজিদে নামায আদায় করার চেয়ে উত্তম। আপনি আপনার গোত্রীয় মসজিদে নামায আদায় করা আমার মসজিদে নামায আদায় করার চেয়ে উত্তম। বর্ণনাকারী বলেন: ফলে তিনি তার ঘরের একেবারে ভিতরে অন্ধকার স্থানে তার জন্য নামাযের জায়গা বানানোর নির্দেশ দিলেন। তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সে জায়গায় নামায আদায় করেছেন।”[মুসনাদে আহমাদ, হাদিসটির বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য]

তবে উল্লেখিত ফযিলত নারীদেরকে মসজিদে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক নয়। যেমনটি আব্দুল্লাহ্‌ বিন উমর (রাঃ) কর্তৃক হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন: যদি নারীরা তোমাদের কাছে মসজিদে যেতে অনুমতি চায় তাহলে তোমরা তাদেরকে মসজিদে যেতে বাধা দিও না। বর্ণনাকারী বলেন, তখন বিলাল বিন আব্দুল্লাহ্‌ (বিন উমর) বলল: আল্লাহ্‌র শপথ, অবশ্যই আমরা তাদেরকে বাধা দিব। বর্ণনাকারী বলেন: তখন আব্দুল্লাহ্‌ তার দিকে এগিয়ে এসে তাকে তীব্র গালমন্দ করলেন; আমি তাঁর কাছ থেকে এমন কথা আর কখনও শুনিনি। এবং তিনি বললেন: আমি তোমাকে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে হাদিস জানাচ্ছি। আর তুমি বল: আল্লাহ্‌র শপথ, অবশ্যই আমরা তাদেরকে বাধা দিব।” [সহিহ মুসলিম (৬৬৭)]

কিন্তু, কোন নারী মসজিদে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত শর্ত রয়েছে:

১। পরিপূর্ণ হিজাব থাকতে হবে ।

২। সুগন্ধি লাগিয়ে যাবে না ।

৩। স্বামীর অনুমতি লাগবে ।

এবং এ বের হওয়ার ক্ষেত্রে অন্য আরেকটি হারাম যেন সংঘটিত না হয়; যেমন একাকী ড্রাইভারের সাথে বের হওয়া।

যদি কোন নারী উল্লেখিত শর্তগুলোর কোনটি ভঙ্গ করে সেক্ষেত্রে নারীর স্বামী কিংবা অভিভাবক তাকে মসজিদে যেতে বাধা দিতে পারবেন; বরং বাধা দেওয়া আবশ্যক হবে।

আমাদের শাইখ আব্দুল আযিযকে জনৈক নারী তারাবীর নামায সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন যে, নারীর জন্য কি তারাবীর নামায মসজিদে গিয়ে পড়া উত্তম? তিনি না-সূচক জবাব দেন। কারণ মহিলাদের ঘরে নামায পড়া সংক্রান্ত হাদিসগুলো সাধারণ; যা তারাবী নামাযসহ অন্য সকল নামাযকে শামিল করবে। আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন।

আমরা আল্লাহ্‌র কাছে আমাদের জন্য ও সকল মুসলিম ভাইদের জন্য ইখলাস ও কবুলিয়তের প্রার্থনা করছি। তিনি যেন, আমাদের আমলগুলো তাঁর পছন্দ ও সন্তুষ্টি মোতাবেক সম্পন্ন করান। আমাদের নবী মুহাম্মদের উপর আল্লাহ্‌র রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক।

উৎস : islamqa.info​
 
Top