সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
abdulazizulhakimgrameen

সংশয় নিরসন জাহান্নামের উত্তাপের কারণে কীভাবে জ্বর হতে পারে?

abdulazizulhakimgrameen

Altruistic

Uploader
Salafi User
LV
12
 
Awards
23
Credit
17,640
এ সংক্রান্ত হাদিসঃ

، فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ الْحُمَّى مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ فَأَبْرِدُوهَا بِالْمَاءِ ‏"‏‏.‏ .‏​

অর্থঃ “... কারণ, আল্লাহর রসূল(ﷺ) বলেছেন, জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে বা উত্তাপের কারণে হয়। অতঃপর তোমরা তা পানি দিয়ে ঠাণ্ডা কর।

ইসলামবিরোধীরা প্রশ্ন তোলে - কীভাবে জাহান্নামের উত্তাপের কারণে জ্বর হতে পারে?

এ সংক্রান্ত ব্যাখ্যায় ইমাম ইবন হাজার আসকালানী(র.) বলেছেন,

(من فيح أو فوج جهنم بمعنى سطوع حرها ووهجه، واختلف في نسبتها إلى جهنم فقيل حقيقة، واللهب الحاصل في جسم المحموم قطعة من جهنم وقد قدر الله ظهورها بأسباب تقتضيها ليعتبر العباد بذلك، كما أن أنواع اللذة والفرح من نعيم الجنة أظهرها في هذه الدار عبرة ودلالة. وقيل بل الخبر مورد التشبيه والمعنى أن حر الحمى شبيه بحر جهنم تنبيهاً للنفوس على شدة حر النار وأن هذه الحرارة الشديدة شبيهة بفيحها وهو ما يصيب من قرب منها من حرها).​

অর্থঃ জাহান্নামের "ফাইহি অথবা ফাউজি" এর অর্থ হল - এর (জাহান্নামের) আভা ও প্রভাব (তীব্রতা)। জাহান্নামের দিকে এটি সম্পৃক্ত করার কারণের ব্যাপারে মতভেদ আছে। (কেউ কেউ) বলেছেন, এটা বাস্তবিক অর্থেই বলা হয়েছে। জ্বরাক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে গরমের যে প্রচণ্ডতা এসেছে তা জাহান্নামের একটি অংশ। আল্লাহ তার প্রকাশ (গরমের তীব্রতা) করা এমন কিছু কারণে নির্ধারন করেছেন যাতে বান্দাকে উপদেশ গ্রহণ করতে দাবি করে (ভাবিয়ে তোলে) যেমন (দুনিয়ার) মজা-আনন্দ জান্নাতের নেয়ামতের(অংশ)। (আল্লাহ এই নেয়ামতকে) এই দুনিয়ায় প্রকাশ করেছেন উপদেশ গ্রহণ ও নির্দেশনা হিসাবে।

আবার (কেউ কেউ) বলেছেন, বরং সংবাদটি (হাদিসটি) বর্ণিত হয়েছে উদাহরণ হিসাবে। (এর) অর্থ হল, জ্বরের উত্তাপের তীব্রতা জাহান্নামের উত্তাপের সাথে সাদৃশ্য রাখে। (আর তা এই জন্য যে,) মানুষকে জাহান্নামের উত্তাপের তীব্রতা থেকে সতর্ক করা। আর এই তীব্র উত্তাপ জাহান্নামের প্রখরতার সাথে সাদৃশ্য রাখে। সে তার জাহান্নামের উত্তাপ থেকে কিছু অংশ প্রাপ্ত হয়।
[ফাতহুল বারী-১০/১৭৫]

এটা না বললেই নয় যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ‘ওহী’, তা ‘মাতলু’ হোক বা ‘গায়রে মাতলু’ হোক - কোন বিষয়ের Metaphysical Cause বর্ণনার জন্যই হয়ে থাকে।

কেননা Physical Cause মানুষ নিজস্ব জ্ঞানবুদ্ধি খাটিয়ে বের করতে পারবে কিন্তু Metaphysical Cause "ওহী" ছাড়া জানা সম্ভব নয়। এখন কেউ যদি মেটা Physical Causeকে ফিজিক্যাল রিয়েলিটি দিয়ে ব্যাখ্যা করে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করে, সে হয় বোকা না হয় অজ্ঞ।

মনে করুন আপনি রাস্তায় এক ব্যক্তিকে ঘুষি মেরে নাক ভোঁতা করতে দেখলেন আরেক ব্যক্তিকে। শুধু এতটুকু পর্যবেক্ষণ দ্বারা আপনি নাক ভোঁতা হওয়ার Physical Cause হল ঘুষি মারা বুঝতে পারবেন কিন্তু কেন ঘুষি মারা হল এটি ঐ দুই ব্যক্তির কোন একজনের বর্ণনা ছাড়া শুধু ঘটনা দেখার দ্বারা জানা সম্ভব নয়।

এখন আপনি যখন প্রথম ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলেন কেন ঘুষি মেরেছেন তখন সে জানাল ঐ ব্যক্তিটি তার পকেট কাটতে গিয়ে ধরা পড়েছে। পুলিশের কাছে দিলে জেল হবে বা কঠিন শাস্তি হবে তাই ঘুষি মেরে হালকা শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দিলাম। এই যে জেলে না দেওয়া বা কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা না করা এটা হল Metaphysical Cause। এখন কিছু অজ্ঞ ব্যক্তি আছে তারা পুরো বিষয়টি না বুঝে চেঁচিয়ে উঠে জেলে না দেওয়া কিভাবে মানুষের নাক ভোঁতা করতে পারে, এটি অসম্ভব, অবাস্তব, বিজ্ঞানবিরোধী...এই জাতীয় কথা বলতে পারে।

এবার চলুন হাদিস থেকে মিলিয়ে নিই।

বান্দা যখন পাপ কাজ করে তখন তার জন্য জাহান্নামের শাস্তি তথা আগুন উৎপন্ন করা হয় যেভাবে পূণ্যের কাজ করলে জান্নাতে নিয়ামত উৎপন্ন করা হয়।

এখন জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে রেহাইয়ের জন্য বান্দাকে এই দুনিয়াতেই লঘু শাস্তি তথা বিভিন্ন প্রকার কষ্ট দান করেন আল্লাহ তা’আলা। যা নিম্নের হাদিস থেকে প্রমাণিত হয়ঃ

قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَا مِنْ مُصِيبَة تُصِيبُ الْمُسْلِمَ إِلاَّ كَفَّرَ اللَّهُ بِهَا عَنْهُ، حَتَّى الشَّوْكَةِ يُشَاكُهَا ‏"‏‏.‏​

অর্থ- আয়িশাহ(রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ "মুসলিম ব্যক্তির উপর যে সকল বিপদ-আপদ আসে এর দ্বারা আল্লাহ তার পাপ দূর করে দেন। এমনকি যে কাঁটা তার শরীরে ফোটে এর দ্বারাও।"

সুতরাং জ্বরের কষ্ট হোক বা শীত-গ্রীষ্মের তীব্রতার কষ্ট - এই কষ্টগুলো হচ্ছে লঘু শাস্তি যার দ্বারা জাহান্নামের কঠিন শাস্তি তথা আগুন কমানো হয়।

নিম্নোক্ত উক্তি এবং হাদিস দ্বারা বিষয়টি একেবারেই পরিষ্কার হয়ে যায়। যেমনঃ

১/ قَالَ نَافِعٌ وَكَانَ عَبْدُ اللهِ يَقُوْلُ اكْشِفْ عَنَّا الرِّجْزَ.

অর্থঃ নাফি‘ (রহঃ) বলেন, ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) তখন (জ্বরের সময়) বলতেনঃ আমাদের উপর থেকে শাস্তিকে হালকা কর।

২/ " الحمى حظ المؤمن من النار يوم القيامة "

অর্থঃ জ্বর হল ঈমানদারের জন্য কিয়ামতের দিনের জাহান্নামের আগুনের বদলা বা অংশ।

সারকথা হলঃ কোনো কোনো হাদিস বিশারদের মতে ব্যাপারটি বাস্তবিক অর্থেই হয়। কিন্তু ব্যাপারটি গায়েবের বিষয়। জ্বরের উত্তাপের দরুণ মানুষ জাহান্নামের উত্তাপের তীব্রতা থেকে সতর্ক হতে পারে। জ্বরের এই তীব্র গরম জাহান্নামের প্রখরতার সাথে কিছুটা হলেও সাদৃশ্য রাখে। সে তার জাহান্নামের উত্তাপ থেকে কিছু অংশ প্রাপ্ত হয়। অন্যান্য হাদিস থেকে এটি প্রমাণিত যে, জ্বরের দ্বারা বান্দাকে লঘু শাস্তি প্রদান করে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে আল্লাহ বাঁচিয়ে দেন।

এবং আল্লাহ ভালো জানেন।জাহান্নামের উত্তাপের কারণে কীভাবে জ্বর হতে পারে?
 
Last edited:

SalafiForum

Administrator

Forum Staff
Salafi User
LV
16
 
Awards
23
Credit
256
সোর্স উল্লেখ্য করবেন ইনশাআল্লাহ
 

Create an account or login to comment

You must be a member in order to leave a comment

Create account

Create an account on our community. It's easy!

Log in

Already have an account? Log in here.

Total Threads
13,349Threads
Total Messages
17,209Comments
Total Members
3,678Members
Latest Messages
Md. Nur HabibLatest member
Top