এই অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ লিস্ট:
- একশতবার তাসবীহ পাঠ
- আয়াতুল কুরসী
- সূরা বাকারার শেষ দু আয়াত
- সূরা কাফিরূন
- সূরা ইখলাস
- সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস
- ঘুমানোর আগে পঠিত সূরাসমূহ
- ঘুমানোর জিকিরসমূহ
- তাহাজ্জুদের নিয়্যাতসহ ঘুমাতে যাওয়া
- ঘুমের মধ্যে পার্শ্বপরিবর্তনের দুআ
- ঘুম থেকে ওঠার পর জিকির (রাত্রে)
- ঘুম থেকে উঠে আল্লাহ্কে স্মরণ করা
- নিদ্রাবস্থায় ভালো বা মন্দ স্বপ্ন দেখলে করণীয়
- স্বপ্ন বিষয়ক দুআ
ঘুমানোর জিকিরসমূহ
হুযায়ফাহ্ (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ﷺ) যখন রাতে শয্যা গ্রহণ করতেন তখন তিনি তাঁর হাত গালের নীচে রাখতেন। অতঃপর বলতেন -اَللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوْتُ وَأَحْيَا
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা বিসমিকা আমূতু ওয়া আহ্ইয়া-
অনুবাদঃ হে আল্লাহ্! আমি তোমার নামে মৃত্যুবরণ করি এবং তোমার নামেই জীবিত হই।
রেফারেন্স: বুখারীঃ ৬৩১৪
ঘুমানোর জিকিরসমূহ #২
بِاسْمِكَ اَللَّهُمَّ أَمُوْتُ وَأَحْيَا
উচ্চারণঃ বিসমিকা, আল্লা-হুম্মা, আমূতু ওয়া আ’হইয়া-
অনুবাদঃ আপনারই নামে, হে আল্লাহ্, আমি মৃত্যুবরণ করি এবং জীবিত হই।
হুযাইফা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ঘুমানোর এরাদা করলে এ জিকিরটি বলতেন।
রেফারেন্স: বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ১১/১১৩, নং ৬৩২৪; মুসলিম ৪/২০৮৩, নং ২৭১১
ঘুমানোর জিকিরসমূহ #৩
আব্দুল্লাহ ইবনু ওম্র (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) রাত্রে যখন শয্যা গ্রহণ করতেন তখন বলতেন -
اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِى كَفَانِى وَآوَانِى وَأَطْعَمَنِى وَسَقَانِى وَالَّذِى مَنَّ عَلَىَّ فَأَفْضَلَ وَالَّذِى أَعْطَانِى فَأَجْزَلَ اَلْحَمْدُ لِلَّهِ عَلَى كُلِّ حَالٍ، اَللَّهُمَّ رَبَّ كُلِّ شَىْءٍ وَمَلِيْكَهُ وَإِلَهَ كُلِّ شَىْءٍ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ النَّارِ
উচ্চারণঃ আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযি কাফা-নী ওয়া আ-ওয়ানী ওয়া আত্‘আমানী ওয়া সাক্কা-নী ওয়াল্লাযী মান্না ‘আলাইয়্যা ফাআফদ্বালা ওয়াল্লাযী আ‘ত্বা-নী ফাআজ্ঝালাল-হামদু লিল্লা-হি ‘আলা- কুল্লি হা-ল্, আল্লা-হুম্মা রব্বা কুল্লি শাই’ইন্ ওয়া মালিকাহূ ওয়া ইলা-হা কুল্লি শাই’ইন্ আ‘উযুবিকা মিনান না-র
অনুবাদঃ সকল প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা আল্লাহ্র জন্য, যিনি আমার প্রয়োজন পুরা করলেন, আমাকে মুক্তি দিলেন, আমাকে পানাহার করালেন, যিনি আমার প্রতি অসীম দয়াবান এবং আমাকে দান করলেন। সুতরাং সর্বাবস্থায় আল্লাহ্র প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা। হে আল্লাহ্! প্রত্যেক বস্তুর রব ও অধিকারী এবং প্রত্যেক জিনিসের ইলাহ্! আমি আপনার নিকট জাহান্নামের শাস্তি হতে আশ্রয় চাই।
রেফারেন্স: সহিহ। আবু দাউদঃ ৫০৫৮
ঘুমানোর জিকিরসমূহ #৪
اَللَّهُمَّ إِنَّكَ خَلَقْتَ نَفْسِي وَأَنْتَ تَوَفَّاهَا، لَكَ مَمَاتُهَا وَمَحْيَاهَا، إِنْ أَحْيَيْتَهَا فَاحْفَظْهَا، وَإِنْ أَمَتَّهَا فَاغْفِرْ لَهَا، اَللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা খালাক্কতা নাফসী ওয়া আন্তা তাওয়াফ্ফা-হা-। লাকা মামা-তুহা- ওয়া মাহ্ইয়া-হা-। ইন্ আহ্ইয়াইতাহা- ফাহ্ফায্হা- ওয়াইন আমাত্তাহা- ফাগফির লাহা-। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাল ‘আ-ফিয়াহ
অনুবাদঃ হে আল্লাহ্! নিশ্চয় আপনি আমার আত্মাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আপনি তার মৃত্যু ঘটাবেন। তার মৃত্যু ও তার জীবন আপনার মালিকানায়। যদি তাকে বাঁচিয়ে রাখেন তাহলে আপনি তার হেফাযত করুন, আর যদি তার মৃত্যু ঘটান তবে তাকে মাফ করে দিন। হে আল্লাহ্! আমি আপনার কাছে নিরাপত্তা চাই।
রেফারেন্স: মুসলিমঃ ২৭১২
ঘুমানোর জিকিরসমূহ #৫
اَللَّهُمَّ أَنْتَ الْأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْآخِرُ فَلَيسَ بَعْدَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَيْءٌ، اِقْضِ عَنَّا الدَّيْنَ وَأَغْنِنَا مِنَ الْفَقْرِ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা আনতাল আউওয়ালু ফালাইসা ক্বাবলাকা শাইউন। ওয়া আনতাল আ-খিরু ফালাইসা বা‘দাকা শাইউন। ওয়া আনতায যা-হিরু ফালাইসা ফাওক্বাকা শাইউন। ওয়া আনতাল বা-ত্বিনু ফালাইসা দূনাকা শাইউন। ইক্বদ্বি ‘আন্নাদ্-দাইনা ওয়া আগনিনা- মিনাল ফাক্বর
অনুবাদঃ হে আল্লাহ্! আপনিই প্রথম, আপনার পূর্বে কিছুই ছিল না; আপনি সর্বশেষ, আপনার পরে কোনো কিছু থাকবে না; আপনি সব কিছুর উপরে, আপনার উপরে কিছুই নেই; আপনি সর্বনিকটে, আপনার চেয়ে নিকটবর্তী কিছু নেই, আপনি আমাদের সমস্ত ঋণ পরিশোধ করে দিন এবং আমাদেরকে অভাবগ্রস্ততা থেকে অভাবমুক্ত করুন।
রেফারেন্স: মুসলিমঃ ২৭১৩
ঘুমানোর জিকিরসমূহ #৬
اَللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَوَاتِ السَّبْعِ وَرَبَّ الْأَرْضِ، وَرَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَيْءٍ، فَالِقَ الْحَبِّ وَالنَّوَى، وَمُنْزِلَ التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ، وَالْفُرْقَانِ، أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ شَيْءٍ أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهِ، اَللَّهُمَّ أَنْتَ الْأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْآخِرُ فَلَيسَ بَعْدَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَيْءٌ، اقْضِ عَنَّا الدَّيْنَ وَأَغْنِنَا مِنَ الْفَقْرِ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা রব্বাস্ সামা-ওয়া-তিস্ সাব‘ই ওয়া রব্বাল আরদ্ব, ওয়া রাব্বাল ‘আরশিল ‘আযীম, রাব্বানা ওয়া রব্বা কুল্লি শাই’ইন্, ফা-লিক্বাল হাব্বি ওয়ান-নাওয়া, ওয়া মুনঝিলাত্-তাওরা-তি ওয়াল ইনজীলি ওয়াল ফুরক্বা-ন, আ‘উযু বিকা মিন শাররি কুল্লি শাই’ইন্ আনতা আ-খিযুম-বিনা-সিয়াতিহি। আল্লা-হুম্মা আনতাল আউওয়ালু ফালাইসা ক্বাবলাকা শাইউন। ওয়া আনতাল আ-খিরু ফালাইসা বা‘দাকা শাইউন। ওয়া আনতায যা-হিরু ফালাইসা ফাওক্বাকা শাইউন। ওয়া আনতাল বা-ত্বিনু ফালাইসা দূনাকা শাইউন। ইক্বদ্বি ‘আন্নাদ্-দাইনা ওয়া আগনিনা মিনাল ফাক্বর
অনুবাদঃ হে আল্লাহ্! হে সপ্ত আকাশের রব্ব, যমিনের রব্ব, মহান ‘আরশের রব্ব, আমাদের রব্ব ও প্রত্যেক বস্তুর রব্ব, হে শস্য-বীজ ও আঁটি বিদীর্ণকারী, হে তাওরাত, ইনজীল ও কুরআন নাযিলকারী, আমি প্রত্যেক এমন বস্তুর অনিষ্ট থেকে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি, যার (মাথার) অগ্রভাগ আপনি ধরে রেখেছেন (নিয়ন্ত্রণ করছেন)। হে আল্লাহ্! আপনিই প্রথম, আপনার পূর্বে কিছুই ছিল না; আপনি সর্বশেষ, আপনার পরে কোনো কিছু থাকবে না; আপনি সব কিছুর উপরে, আপনার উপরে কিছুই নেই; আপনি সর্বনিকটে, আপনার চেয়ে নিকটবর্তী কিছু নেই, আপনি আমাদের সমস্ত ঋণ পরিশোধ করে দিন এবং আমাদেরকে অভাবগ্রস্ততা থেকে অভাবমুক্ত করুন।
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদেরকে বিছানায় শয়ন করার পরে (ডান কাতে শুয়ে) এ মুনাজাতটি পাঠ করতে শিক্ষা দিতেন। অন্য বর্ণনায় তিনি বলেন, ফাতিমা (রাঃ) তাঁর কাছে খাদিমা চাইলে তিনি তাঁকে দুআটি শিখিয়ে দেন।
রেফারেন্স: মুসলিমঃ ২৭১৩, সহীহ। তিরমিযীঃ ৩৪৮১
ঘুমানোর জিকিরসমূহ #৭
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন: তোমাদের কেউ ঘুমের মধ্যে ভয় পেলে সে যেন বলে -
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ (التَّامَّاتِ) مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وَ(مِنْ) شَرِّ عِبَادِهِ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ وَأَنْ يَحْضُرُوْنِ
উচ্চারণঃ আ‘উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি (তা-ম্মা-তি) মিন ‘গাদ্বাবিহী ওয়া ‘ইক্বা-বিহী ওয়া (মিন) শার্রি ‘ইবা-দিহী, ওয়া মিন হামাযা-তিশ শায়া-তীনি ওয়া আন ইয়া’হদ্বুরূন
অনুবাদঃ আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি আল্লাহ্র পরিপূর্ণ বাক্যাবলির, তাঁর গযব-ক্রোধ থেকে, তার শাস্তি থেকে, তাঁর সৃষ্টির অকল্যাণ থেকে, শয়তানের তাড়না বা প্ররোচনা থেকে এবং আমার কাছে তাদের উপস্থিতি থেকে।
রেফারেন্স: হাসান। তিরমিযিঃ ৩৫২৮
ঘুমানোর জিকিরসমূহ #৮
بِاسْمِكَ رَبِّي وَضَعْتُ جَنْبِي، وَبِكَ أَرْفَعُهُ، فَإِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَارْحَمْهَا، وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا، بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ
উচ্চারণঃ বিসমিকা রব্বী ওয়াদ্বা‘তু জাম্বী, ওয়া বিকা আরফা‘উহু। ফাইন্ আম্সাকতা নাফ্সী ফার’হামহা, ওয়াইন আরসালতাহা- ফা’হ্ফায্হা- বিমা তা’হ্ফাযু বিহী ‘ইবা-দাকাস সা-লিহীন
অনুবাদঃ আমার রব্ব! আপনার নামে আমি আমার পার্শ্বদেশ রেখেছি (শুয়েছি) এবং আপনারই নাম নিয়ে আমি তা উঠাবো। যদি আপনি (ঘুমন্ত অবস্থায়) আমার প্রাণ আটকে রাখেন, তবে আপনি তাকে দয়া করুন। আর যদি আপনি তা ফেরত পাঠিয়ে দেন, তাহলে আপনি তার হেফাযত করুন যেভাবে আপনি আপনার সৎকর্মশীল বান্দাগণকে হেফাযত করে থাকেন।
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, তোমরা যখন বিছানায় শয়ন করতে যাবে তখন নিজের পোশাক দিয়ে হলেও বিছানাটি ঝেড়ে নেবে ... এরপর বলবে: (দুআটি উপরে উল্লেখিত হয়েছে)
রেফারেন্স: বুখারী, ফাতহুল বারীসহ ১১/১২৬, নং ৬৩২০; মুসলিম ৪/২০৮৪, নং ২৭১৪
ঘুমানোর জিকিরসমূহ #৯
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন তাঁর ডান হাত তাঁর গালের নীচে রাখতেন, তারপর এ দুআটি বলতেন -
اَللَّهُمَّ قِنِي عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ক্বিনী ‘আযা-বাকা ইয়াওমা তাব‘আছু ‘ইবা-দাক
অনুবাদঃ হে আল্লাহ্! আমাকে আপনার আযাব থেকে রক্ষা করুন, যেদিন আপনি আপনার বান্দাদেরকে পুনর্জীবিত করবেন।
রেফারেন্স: সহিহ। তিরমিযীঃ ৩৩৯৮
ঘুমানোর জিকিরসমূহ #১০
بِاسْمِكَ رَبِّي وَضَعْتُ جَنْبِيْ فَاغْفِرْ لِي ذَنْبِيْ
উচ্চারণঃ বিসমিকা রাব্বী, ওয়াদ্বা’অ্তু জানবী, ফাগফির লী যাম্বী
অনুবাদঃ হে আমার প্রভু, আপনারই নামে শয়ন করলাম। আপনি আমার গোনাহ ক্ষমা করে দিন।
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, নবীজী (ﷺ) যখন বিছানায় ঘুমের জন্য শয়ন করতেন, তখন উপরোল্লেখিত দুআটি বলতেন।
রেফারেন্স: হাসান (শুয়াইব আল-আরনাঊত)। মুসনাদ আহমদঃ ৬৬২০
ঘুমানোর জিকিরসমূহ #১১
اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنَا وَسَقَانَا وَكَفَانَا وَآوَانَا، فَكَمْ مِمَّنْ لَا كَافِيَ لَهُ وَلَا مُؤْوِيَ
উচ্চারণঃ আল’হামদু লিল্লা-হিল্লাযী আত্ব’আমানা- ওয়া সাক্বা-না-, ওয়াকাফা-না- ওয়া আ-ওয়া-না-। ফাকাম মিম্মান লা- কা-ফিয়া লাহু ওয়ালা-মু’উইয়া
অনুবাদঃ সকল প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য, যিনি আমাদেরকে খাদ্য দান করেছেন, পানীয় দান করেছেন, সকল অভাব মিটিয়েছেন এবং আশ্রয় দান করেছেন। কত মানুষ আছে, যাদের অভাব মেটানোর বা আশ্রয় প্রদানের কেউ নেই।
আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন বিছানায় শয়ন করতেন তখন এ দুআটি বলতেন।
রেফারেন্স: মুসলিম ৪/২০৮৫, নং ২৭১৫
ঘুমানোর জিকিরসমূহ #১২
اَللَّهُمَّ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ رَبَّ كُلِّ شَيْءٍ وَمَلِيْكَهُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِيْ وَمِنْ شَرِّ الشَّيْطَانِ وَ شِرْكِهِ وَأَنْ أَقْتَرِفَ عَلَى نَفْسِيْ سُوءًا، أَوْ أَجُرَّهُ إِلَى مُسْلِمٍ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা, ‘আ-লিমাল গাইবি ওয়াশ শাহা-দাতি, ফা-তিরাস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্ব, রাব্বা কুল্লি শাই’ইন্ ওয়া মালীকাহু, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লা-আনতা, আ‘উযু বিকা মিন শার্রি নাফ্সী, ওয়া মিন শার্রিশ শাইত্বা-নি ওয়া শিরকিহী, ওয়া আন আক্বতারিফা ‘আলা- নাফ্সী সূআন আও আজুর্রাহু ইলা- মুসলিম
অনুবাদঃ হে আল্লাহ্, গোপন (গায়েব) ও প্রকাশ্য সকল জ্ঞানের অধিকারী, আসমান ও জমিনের সৃষ্টিকর্তা, সকল কিছুর প্রভু ও মালিক, আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, আপনি ছাড়া কোন প্রকৃত মাবুদ নেই। আমি আপনার আশ্রয় গ্রহণ করছি আমার নিজের অকল্যাণ থেকে এবং শাইতানের অকল্যাণ ও তার শিরক থেকে। আমি আপনার আশ্রয় চাচ্ছি, আমি এমন কোনো কর্ম না করি যাতে আমার নিজের কোনো ক্ষতি বা অমঙ্গল হয়, অথবা কোনো মুসলমানের জীবনে ক্ষতি বা অমঙ্গল বয়ে আনে।
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এ দুআটি সকালে, সন্ধ্যায় ও শয়নের পরে পাঠের জন্য শিক্ষা দিয়েছিলেন।
রেফারেন্স: সহিহ। তিরমিযীঃ ৩৩৯২
ঘুমানোর জিকিরসমূহ #১৩
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ الَّتِي لَا يُجَاوِزُهُنَّ بَرٌّ وَلَا فَاجِرٌ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ، وبَرَأَ وَذَرَأَ، وَمِنْ شَرِّ مَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ، وَمِنْ شَرِّ مَا يَعْرُجُ فِيهَا، وَمِنْ شَرِّ مَا ذَرَأَ فِي الْأَرْضِ، وَمِنْ شَرِّ مَا يَخْرُجُ مِنْهَا، وَمِنْ شَرِّ فِتَنِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَمِنْ شَرِّ كُلِّ طَارِقٍ إِلَّا طَارِقًا يَطْرُقُ بِخَيْرٍ يَا رَحْمَنُ
উচ্চারণঃ আ‘উযু বিকালিমা-তিল্লাহিত তা-ম্মা-তিল্লাতী লা- ইউজা-ওয়িঝুহুন্না বার্রুন ওয়ালা- ফা-জিরুন, মিন শার্রি মা- খালাক্বা ওয়া বারাআ ওয়া যারাআ, ওয়া মিন শার্রি মা- ইয়ানঝিলু মিনাস সামা-য়ি ওয়া মিন শার্রি মা- ইয়া’অ্রুজু ফীহা-, ওয়া মিন শার্রি মা- যারাআ ফিল আরদ্বি, ওয়া মিন শার্রি মা- ইয়া’খরুজু মিন্হা-, ওয়া মিন শার্রি ফিতানিল্লাইলি ওয়ান নাহা-রি, ওয়া মিন শার্রি কুল্লি ত্বা-রিক্কিন ইল্লা- ত্বারিক্বান ইয়াত্বরুক্বু বিখাইরিন ইয়া- রা’হমা-ন
অনুবাদঃ আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি আল্লাহ্র পরিপূর্ণ বাক্যাবলির, যেগুলোকে অতিক্রম করতে পারে না কোনো পুণ্যবান বা কোনো পাপী, তিনি যা কিছু সৃষ্টি করেছেন, বানিয়েছেন ও ছড়িয়ে দিয়েছেন তার অনিষ্ট থেকে, যা কিছু আসমান থেকে অবতরণ করে তার অনিষ্ট থেকে, যা কিছু আসমানে উঠে তার অনিষ্ট থেকে, যা কিছু যমিনে ছড়ানো তার অনিষ্ট থেকে যা কিছু যমিন থেকে বের হয় তার অনিষ্ট থেকে, রাত ও দিনের ফিতনার অনিষ্ট থেকে এবং সকল আগন্তুকের অনিষ্ট থেকে, শুধু যে আগম্ভক কল্যাণ-সহ আগমন করে সে ব্যতীত, হে মহা-দয়াময়।
আব্দুর রাহমান ইবনু খানবাশ (রাঃ) বলেন, “এক রাতে শয়তান জিনগণ আগুন নিয়ে মরুপ্রান্তরে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে আক্রমন করতে এগিয়ে আসে। তখন জিবরাঈল (আঃ) এসে তাঁকে এ দুআটি শিখিয়ে দেন। দুআটি পাঠের সাথে সাথে শয়তানদের আগুন নিভে যায় এবং তারা পালিয়ে যায়।”
রেফারেন্স: সহিহ (আরনাঊত্ব)। আহমদঃ ১৫৪৯৯
ঘুমানোর জিকিরসমূহ #১৪
بِسْمِ اللَّهِ وَضَعْتُ جَنْبِى اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِيْ وَأَخْسِئْ شَيْطَانِيْ وَفُكَّ رِهَانِيْ وَاجْعَلْنِيْ فِي النَّدِىِّ الْأَعْلَى
উচ্চারণঃ বিস্মিল্লা-হি ওয়াদ্বা'অ্তু জানবী। আল্লা-হুম্মা’গ্ফির্ লী যানবী, ওয়া আখ্সিঅ্ শাইত্বা-নী, ওয়া ফুক্কা রিহা-নী, ওয়াজ্’আল্নী ফিন্ নাদিইয়্যিল আ’অ্লা
অনুবাদঃ আল্লাহ্র নামে আমি আমার দেহ (বিছানায়) রাখলাম। হে আল্লাহ্ আপনি ক্ষমা করুন আমার পাপ, লাঞ্ছিত-অক্ষম করুন আমার শয়তানকে, মুক্ত করুন আমাকে আমার বাঁধন থেকে এবং আমাকে সর্বোচ্চ পরিষদের অন্তর্ভুক্ত করে দিন।
আবুল আযহার আনমারী (রাঃ) বলেন, “রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) রাতে যখন বিছানায় শয়ন করতেন তখন এ কথাগুলো বলতেন।”
রেফারেন্স: সহিহ। আবু দাউদঃ ৫০৫৪
ঘুমানোর জিকিরসমূহ #১৫
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, “যখন তুমি বিছানা গ্রহণ করবে, তখন নামাযের মতো ওযূ করবে, তারপর তোমার ডান পার্শ্বদেশে শুয়ে পড়বে। তারপর বলো -
اَللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِي إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ، وَوَجَّهْتُ وَجْهِيْ إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ، رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ، لَا مَلْجَأَ وَلَا مَنْجَا مِنْكَ إِلَّا إِلَيْكَ، آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ، وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা আস্লামতু নাফ্সী ইলাইকা, ওয়া ফাউওয়াদ্বতু আমরী ইলাইকা, ওয়া ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহি ইলাইকা, ওয়াআলজা’তু যাহ্রী ইলাইকা, রাগবাতান ওয়া রাহবাতান ইলাইকা। লা মালজা’আ ওয়ালা মান্জা- মিনকা ইল্লা ইলাইকা। আ-মানতু বিকিতা-বিকাল্লাযী আনযালতা ওয়াবিনাবিয়্যিকাল্লাযী আরসালতা
অনুবাদঃ হে আল্লাহ্! আমি নিজেকে আপনার কাছে সঁপে দিলাম। আমার যাবতীয় বিষয় আপনার কাছেই সোপর্দ করলাম, আমার চেহারা আপনার দিকেই ফিরালাম, আর আমার পৃষ্ঠদেশকে আপনার দিকেই ন্যস্ত করলাম; আপনার প্রতি অনুরাগী হয়ে এবং আপনার ভয়ে ভীত হয়ে। একমাত্র আপনার নিকট ছাড়া আপনার (পাকড়াও) থেকে বাঁচার কোনো আশ্রয়স্থল নেই এবং কোনো মুক্তির উপায় নেই। আমি ঈমান এনেছি আপনার নাযিলকৃত কিতাবের উপর এবং আপনার প্রেরিত নবীর উপর।
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যাকে এ দুআটি শিক্ষা দিলেন, তাকে বলেন: “যদি তুমি ঐ রাতে মারা যাও তবে ‘ফিতরাত’ তথা দীন ইসলামের উপর মারা গেলে।”
রেফারেন্স: বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ১১/১১৩, নং ৬৩১৩; মুসলিম ৪/২০৮১, নং ২৭১০