প্রবন্ধ কুরআন ও সুন্নাহ বোঝার ক্ষেত্রে সালাফদের বুঝের গুরুত্ব

Habib Bin TofajjalVerified member

If you're in doubt ask الله.
Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Joined
Nov 25, 2022
Threads
672
Comments
1,229
Solutions
17
Reactions
7,210
সামগ্রিকভাবে সকল মুসলিমের জন্য জায়েয নয় এবং খাসভাবে দাঈদের জন্য জায়েয নয় যে, কুরআন ও সুন্নাহ বোঝার জন্য কেবল আরবী ভাষা জানা ও নাসিখ-মানসূখ বোঝার মতো অন্যান্য আবশ্যকীয় মাধ্যমের ওপরই কেবল নির্ভর করা। বরং সব কিছুর পূর্বে সেই দিকে ফিরে যেতে হবে এবং তার ওপরই নির্ভর করতে হবে, যার ওপর সাহাবীগণ ছিলেন। কারণ, তাদের আসার ও জীবনচরিত থেকে প্রমাণ হয়, তারা ছিলেন ইবাদতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে খালিস এবং কিতাব ও সুন্নাহর বোঝার ক্ষেত্রে সবচেয়ে জ্ঞানী। এছাড়াও তাদের আরো অনেক প্রশংসনীয় গুণাবলি রয়েছে।

উপরিউক্ত হাদীসটি ফলাফল ও ফায়েদার দিক থেকে সুনানগ্রন্থে বর্ণিত ‘খুলাফায়ে রাশিদীন’ সংক্রান্ত হাদীসের সঙ্গে পরিপূর্ণ মিল রয়েছে। হাদীসটি ইরবায ইবন সারিয়া (রা.) বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন:

صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ يَوْمٍ، ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا فَوَعَظَنَا مَوْعِظَةً بَلِيغَةً ذَرَفَتْ مِنْهَا الْعُيُونُ وَوَجِلَتْ مِنْهَا الْقُلُوبُ، فَقَالَ قَائِلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ كَأَنَّ هَذِهِ مَوْعِظَةُ مُوَدِّعٍ، فَمَاذَا تَعْهَدُ إِلَيْنَا؟ فَقَالَ أُوصِيكُمْ بِتَقْوَى اللَّهِ وَالسَّمْعِ وَالطَّاعَةِ، وَإِنْ عَبْدًا حَبَشِيًّا، فَإِنَّهُ مَنْ يَعِشْ مِنْكُمْ بَعْدِي فَسَيَرَى اخْتِلَافًا كَثِيرًا، فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الْمَهْدِيِّينَ الرَّاشِدِينَ، تَمَسَّكُوا بِهَا وَعَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ، وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ، فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ، وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ​

একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে সঙ্গে নিয়ে সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষে আমাদের দিকে ফিরে আমাদের উদ্দেশ্য জ্বালাময়ী ভাষণ দিলেন। ভাষণ শোনে চোখগুলো অশ্রুসিক্ত হলো এবং অন্তরগুলো বিগলিত হলো। তখন এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, এ যেন বিদায়ী ভাষণ! অতএব, আপনি আমাদেরকে কী নির্দেশ দিবেন? তিনি বলেন, আমি তোমাদেরকে আল্লাহভীতির, শ্রবণ ও আনুগত্যের উপদেশ দিচ্ছি, যদিও সে (আমীর) একজন হাবশী গোলাম হয়। কারণ, তোমাদের মধ্যে যারা আমার পরবর্তী কালে জীবিত থাকবে তারা অচিরেই প্রচুর মতবিরোধ দেখবে। তখন তোমরা অবশ্যই আমার সুন্নাহ এবং আমার হিদায়াতপ্রাপ্ত খলীফাগণের সুন্নাহ অনুসরণ করবে, তা দাঁত দিয়ে কামড়ে আঁকড়ে থাকবে। সাবধান! (ধর্মে) প্রতিটি নব-আবিষ্কার সম্পর্কে! কারণ, প্রতিটি নব-আবিষ্কার বিদআত আর প্রতিটি বিদআত ভ্রষ্টতা।[1]

এই হাদীস এবং পূর্বোক্ত হাদীসে নবী ﷺ-এর জবাব থেকে আমাদের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে, তিনি তাঁর উম্মাহকে ও তাঁর সাহাবীদেরকে তাঁর সুন্নাহ আঁকড়ে ধরতে উৎসাহিত করেছেন। এরপর তিনি শুধু তাঁর সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরাতে সীমাবদ্ধ থাকেননি বরং বলেছেন, ‘আমার হিদায়াতপ্রাপ্ত খলীফাগণের সুন্নাহ অনুসরণ করবে, তা দাঁত দিয়ে কামড়ে আঁকড়ে থাকবে।’

সুতরাং আমরা যদি আমাদের আকীদা, ইবাদত, আখলাক, চাল-চলন প্রভৃতি বুঝতে চাই, তাহলে সর্বদা আমাদেরকে এই মূল মূলনীতিকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে। অতএব, কেউ যদি মুক্তিপ্রাপ্ত দলের অন্তর্ভুক্ত হতে চায়, তাহলে মুসলিমদের জন্য আবশ্যকীয় এসব বিষয় বোঝার জন্য সালাফে সালিহীনদের মানহাজের দিকে ফিরে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা নেই।

পূর্বের আয়াতের মর্ম ও খুলাফায়ে রাশিদীন সংক্রান্ত হাদীসে তাৎপর্য-এর দিকে ভ্রুক্ষেপ না করার ও গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে নতুন ও পুরাতন সকল ফিরকা ও জামাআত বিভ্রান্ত হয়ে গিয়েছে। সুতরাং স্বতঃসিদ্ধ বিষয় হচ্ছে- কুরআন, সুন্নাহ ও সালাফে সালিহীনের মানহাজ থেকে তাদের পূর্ববর্তীরা যেমন বিচ্যুত হয়ে গিয়েছিল বর্তমানে প্রশ্নে উল্লিখিত ব্যক্তিরাও বিচ্যুত হয়ে যাবে।


[1] সুনানু আবী দাউদ, ৪৬০৭; সুনানুত তিরমিযী, ২৬৭৬, হাদীসটি সহীহ
 
Similar threads Most view View more
Back
Top