Abdul fattah
Well-known member
- Joined
- Mar 16, 2023
- Threads
- 64
- Comments
- 66
- Solutions
- 1
- Reactions
- 512
- Thread Author
- #1
হাকীম ইবন হিযাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! ঈমান আনয়নের পূর্বে (সাওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে) আমি সদকা প্রদান, দাসমুক্ত করা ও আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করার ন্যায় যতো ভালো কাজ করেছি সে গুলোতে সাওয়াব হবে কি? তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যে সব ভালো কাজ করেছ তা নিয়েই ইসলাম গ্রহন করেছ (তুমি সেসব কাজের সাওয়াব পাবে)”।
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৪৩৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২৩।
অন্য বর্ণনায় এসেছে, “হাকীম ইবন হিযাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু জাহিলী যুগে একশ গোলাম আযাদ করেছিলেন এবং আরোহণের জন্য একশ উট দিয়েছিলেন। যখন তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন, তখনও একশ উট বাহন হিসাবে দান করেন এবং একশ গোলাম আযাদ করলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে আসলেন। অতঃপর পূর্বের হাদীসের ন্যায় ঘটনা বর্ণনা করেন”।
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৪৩৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২৩।
অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেছেন,
“আল্লাহর কসম! আমি জাহেলী যুগে যেসব ভালো কাজ করেছি, ইসলাম গ্রহণের পরেও সেসব ভালো কাজ করবো”।
সহীহ, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২৩।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, «أَسْلَمْتَ عَلَى مَا سَلَفَ مِنْ خَيْرٍ» এর ব্যাখ্যা অধিকাংশ আলেম ব্যাখা করেছেন। ইমাম হারবী রহ. বলেছেন, ইসলাম পূর্বে যেসব ভালো কাজ করেছে ইসলাম গ্রহণের পরে সেসব ভালো আমল তার থেকে যাবে। যেমন কেউ বলে, আমি একশ দিরহামের বিনিময়ে ইসলাম গ্রহণ করেছি। এর অর্থ হলো আমি একশ দিরহাম নিজের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছি। ইমাম কুরতবী রহ. বলেন, ইমাম হারবী রহ. যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা সবচেয়ে উত্তম ও সুন্দর।
আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন কোনো ব্যক্তি উত্তমরূপে ইসলাম গ্রহণ করে, তখন আল্লাহ তা‘আলা তার ঐ সকল সৎকর্ম লিখে নেন, যা সে পূর্বে করেছিল, আর সেই সকল পাপ মুছে ফেলেন যাতে অতীতে লিপ্ত হয়েছিল। এরপর তার হিসাব এভাবে লিখিত হয় যে, তার প্রত্যেক সাওয়াবের পরিবর্তে দশ হতে সাতশত গুণ পর্যন্ত সাওয়াব লেখা হয়। আর প্রত্যেক পাপ শুধু অতটুকুই লেখা হয়, যা সে করে; যদি আল্লাহ ক্ষমা না করেন”।
সহীহ, নাসায়ী, হাদীস নং ৪৯৯৮; শু‘আবুল ঈমান, লিলবাইহাকী, হাদীস নং ২৪।
ইমাম বুখারী এ হাদীসটিকে কিতাবুল ঈমানে (৪১) মালিক রহ. থেকে মু‘আল্লাক সূত্রে বর্ণনা করেছেন। অন্য কোথাও তিনি হাদীসটিকে মুত্তাসিল করেন নি। তবে তিনি «كَتَبَ اللَّهُ لَهُ كُلَّ حَسَنَةٍ كَانَ أَزْلَفَهَا» বাদ দিয়েছেন। কেননা একথাটি কায়েদার সাথে বৈপরীত। কেননা কুফুরী ও শির্কী অবস্থায় একজন কাফের যেসব ভালো কাজ করে তাতে সাওয়াব হয় না। কেননা নৈকট্যের শর্ত হচ্ছে যার নৈকট্য প্রত্যাশী তার সম্পর্কে জানা। আর কাফির ব্যক্তির অবস্থা এরূপ নয়। ইমাম মাযেরী রহ. ও অন্যরা একথা বলেছেন। কাযী ‘ইয়াদ্ব রহ. এ বিপরীতমুখী কথার জবাবে ইমাম মাযেরী রহ. এর অনুসরণ করেছেন। কিন্তু ইমাম নাওয়াওয়ী রহ. এ মতকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, অধিকাংশ মুহাক্কিকের মত হলো – বরং এ মতের ওপর ইজমা বর্ণিত আছে- “কোনো কাফির ভালো কাজ যেমন, সদকা, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় ইত্যাদি করলে, অতঃপর ইসলাম গ্রহণ করলে এবং ইসলামের উপর মারা গেলে তার সেসব সাওয়াব লিপিবদ্ধ করা হবে”।
হাফেয ইবন হাজার আসকালানী রহ. বলেছেন, এ কথার অনেকগুলো ব্যাখ্যা হতে পারে। সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাখ্যা হলো: “প্রকৃতপক্ষে মুসলিমের ইসলাম অবস্থায় ভালো আমল আল্লাহর মেহেরবানী ও ইহসানে লিখিত হওয়া মানে কাফির অবস্থায় তার কৃত ভালো আমল কবুল হওয়াকে অত্যাবশ্যকীয় করে না। কেননা হাদীসে সাওয়াব লেখার কথা বলা হয়েছে, কবুল হওয়ার কথা নয়। হতে পারে কাফির ব্যক্তির ভালো আমল ইসলাম গ্রহণের সাথে সম্পৃক্ত। সে ইসলাম গ্রহণ করলে তার ভালো আমল কবুল করা হবে। আর ইসলাম গ্রহণ না করলে কবুল করা হবে না। ফাতহুল বারী, ১/৯৯।
আমি মনে করি- সংকলক- ইতোপূর্বে উল্লিখিত হাকিম ইবন হিযাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর হাদীস এ মতকে সমর্থন করে।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, «أَزْلَفَهَا» এর অর্থ বিগত, পূর্বের কৃত
عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَرَأَيْتَ أَشْيَاءَ كُنْتُ أَتَحَنَّثُ بِهَا فِي الجَاهِلِيَّةِ مِنْ صَدَقَةٍ أَوْ عَتَاقَةٍ، وَصِلَةِ رَحِمٍ، فَهَلْ فِيهَا مِنْ أَجْرٍ؟ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَسْلَمْتَ عَلَى مَا سَلَفَ مِنْ خَيْرٍ».
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৪৩৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২৩।
وفي رواية: أَنَّ حَكِيمَ بْنَ حِزَامٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَعْتَقَ فِي الجَاهِلِيَّةِ مِائَةَ رَقَبَةٍ، وَحَمَلَ عَلَى مِائَةِ بَعِيرٍ، فَلَمَّا أَسْلَمَ حَمَلَ عَلَى مِائَةِ بَعِيرٍ، وَأَعْتَقَ مِائَةَ رَقَبَةٍ، ثم أتى النبي صلى الله عليه وسلم، فذكر نحو حديثه.
অন্য বর্ণনায় এসেছে, “হাকীম ইবন হিযাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু জাহিলী যুগে একশ গোলাম আযাদ করেছিলেন এবং আরোহণের জন্য একশ উট দিয়েছিলেন। যখন তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন, তখনও একশ উট বাহন হিসাবে দান করেন এবং একশ গোলাম আযাদ করলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে আসলেন। অতঃপর পূর্বের হাদীসের ন্যায় ঘটনা বর্ণনা করেন”।
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৪৩৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২৩।
অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেছেন,
«فَوَاللهِ، لَا أَدَعُ شَيْئًا صَنَعْتُهُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ إِلَّا فَعَلْتُ فِي الْإِسْلَامِ مِثْلَهُ».
“আল্লাহর কসম! আমি জাহেলী যুগে যেসব ভালো কাজ করেছি, ইসলাম গ্রহণের পরেও সেসব ভালো কাজ করবো”।
সহীহ, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২৩।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, «أَسْلَمْتَ عَلَى مَا سَلَفَ مِنْ خَيْرٍ» এর ব্যাখ্যা অধিকাংশ আলেম ব্যাখা করেছেন। ইমাম হারবী রহ. বলেছেন, ইসলাম পূর্বে যেসব ভালো কাজ করেছে ইসলাম গ্রহণের পরে সেসব ভালো আমল তার থেকে যাবে। যেমন কেউ বলে, আমি একশ দিরহামের বিনিময়ে ইসলাম গ্রহণ করেছি। এর অর্থ হলো আমি একশ দিরহাম নিজের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছি। ইমাম কুরতবী রহ. বলেন, ইমাম হারবী রহ. যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা সবচেয়ে উত্তম ও সুন্দর।
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا أَسْلَمَ الْعَبْدُ فَحَسُنَ إِسْلَامُهُ، كَتَبَ اللَّهُ لَهُ كُلَّ حَسَنَةٍ كَانَ أَزْلَفَهَا، وَمُحِيَتْ عَنْهُ كُلُّ سَيِّئَةٍ كَانَ أَزْلَفَهَا، ثُمَّ كَانَ بَعْدَ ذَلِكَ الْقِصَاصُ، الْحَسَنَةُ بِعَشْرَةِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ، وَالسَّيِّئَةُ بِمِثْلِهَا إِلَّا أَنْ يَتَجَاوَزَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ عَنْهَا».
আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন কোনো ব্যক্তি উত্তমরূপে ইসলাম গ্রহণ করে, তখন আল্লাহ তা‘আলা তার ঐ সকল সৎকর্ম লিখে নেন, যা সে পূর্বে করেছিল, আর সেই সকল পাপ মুছে ফেলেন যাতে অতীতে লিপ্ত হয়েছিল। এরপর তার হিসাব এভাবে লিখিত হয় যে, তার প্রত্যেক সাওয়াবের পরিবর্তে দশ হতে সাতশত গুণ পর্যন্ত সাওয়াব লেখা হয়। আর প্রত্যেক পাপ শুধু অতটুকুই লেখা হয়, যা সে করে; যদি আল্লাহ ক্ষমা না করেন”।
সহীহ, নাসায়ী, হাদীস নং ৪৯৯৮; শু‘আবুল ঈমান, লিলবাইহাকী, হাদীস নং ২৪।
ইমাম বুখারী এ হাদীসটিকে কিতাবুল ঈমানে (৪১) মালিক রহ. থেকে মু‘আল্লাক সূত্রে বর্ণনা করেছেন। অন্য কোথাও তিনি হাদীসটিকে মুত্তাসিল করেন নি। তবে তিনি «كَتَبَ اللَّهُ لَهُ كُلَّ حَسَنَةٍ كَانَ أَزْلَفَهَا» বাদ দিয়েছেন। কেননা একথাটি কায়েদার সাথে বৈপরীত। কেননা কুফুরী ও শির্কী অবস্থায় একজন কাফের যেসব ভালো কাজ করে তাতে সাওয়াব হয় না। কেননা নৈকট্যের শর্ত হচ্ছে যার নৈকট্য প্রত্যাশী তার সম্পর্কে জানা। আর কাফির ব্যক্তির অবস্থা এরূপ নয়। ইমাম মাযেরী রহ. ও অন্যরা একথা বলেছেন। কাযী ‘ইয়াদ্ব রহ. এ বিপরীতমুখী কথার জবাবে ইমাম মাযেরী রহ. এর অনুসরণ করেছেন। কিন্তু ইমাম নাওয়াওয়ী রহ. এ মতকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, অধিকাংশ মুহাক্কিকের মত হলো – বরং এ মতের ওপর ইজমা বর্ণিত আছে- “কোনো কাফির ভালো কাজ যেমন, সদকা, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় ইত্যাদি করলে, অতঃপর ইসলাম গ্রহণ করলে এবং ইসলামের উপর মারা গেলে তার সেসব সাওয়াব লিপিবদ্ধ করা হবে”।
হাফেয ইবন হাজার আসকালানী রহ. বলেছেন, এ কথার অনেকগুলো ব্যাখ্যা হতে পারে। সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাখ্যা হলো: “প্রকৃতপক্ষে মুসলিমের ইসলাম অবস্থায় ভালো আমল আল্লাহর মেহেরবানী ও ইহসানে লিখিত হওয়া মানে কাফির অবস্থায় তার কৃত ভালো আমল কবুল হওয়াকে অত্যাবশ্যকীয় করে না। কেননা হাদীসে সাওয়াব লেখার কথা বলা হয়েছে, কবুল হওয়ার কথা নয়। হতে পারে কাফির ব্যক্তির ভালো আমল ইসলাম গ্রহণের সাথে সম্পৃক্ত। সে ইসলাম গ্রহণ করলে তার ভালো আমল কবুল করা হবে। আর ইসলাম গ্রহণ না করলে কবুল করা হবে না। ফাতহুল বারী, ১/৯৯।
আমি মনে করি- সংকলক- ইতোপূর্বে উল্লিখিত হাকিম ইবন হিযাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর হাদীস এ মতকে সমর্থন করে।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, «أَزْلَفَهَا» এর অর্থ বিগত, পূর্বের কৃত