কিছু আধা-পাকা অথবা পূর্ণ পাকা (শুকনা) খেজুর দিয়ে এবং তা না পাওয়া গেলে পানি দিয়ে ইফতার করা সুন্নত।
আনাস (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) নামাযের পূর্বে কিছু আধা-পাকা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তা না পেলে পূর্ণ পাকা (শুকনা) খেজুর দিয়ে এবং তাও না পেলে কয়েক ঢোক পানি খেয়ে নিতেন।’[1]
তিনি আরো বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, "যে ব্যক্তি খেজুর পায়, সে যেন তা দিয়ে ইফতার করে। যে ব্যক্তি তা না পায়, সে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কারণ, তা হল পবিত্র।" [2]
ইবনুল কাইয়েম (রঃ) বলেন, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) খেজুর দ্বারা ইফতার করতে এবং তা না পাওয়া গেলে পানি দ্বারা ইফতার করতে উৎসাহিত করতেন। আর এ হল উম্মতের প্রতি তাঁর পরিপূর্ণ দয়া ও হিতাকাঙ্খার নিদর্শন। পেট খালি থাকা অবস্থায় প্রকৃতি (পাকস্থলী)কে মিষ্টি জিনিস দিলে তা অধিকরূপে গ্রহণ করে এবং তদ্দবারা বিভিন্ন শক্তিও উপকৃত হয়; বিশেষ করে দৃষ্টিশক্তি এর দ্বারা বৃদ্ধি পায়। মদ্বীনার মিষ্টি হল খেজুর। খেজুর মদ্বীনাবাসীর মিষ্টান্ন। খেজুরের উপরই তাদের লালন-পালন। খেজুর তাদের প্রধান খাদ্য এবং তা-ই তাদের সহযোগী খাদ্য। আর অর্ধপক্ক খেজুর তাদের ফলস্বরূপ।
পক্ষান্তরে পানিও (এ সময়ে বড় গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।) রোযার ফলে কলিজায় এক প্রকার শুষ্কতা আসে। সুতরাং তা প্রথমে পানি দিয়ে আর্দ্র করলে তারপর খাদ্য দ্বারা উপকার পরিপূর্ণ হয়। এ জন্য পিপাসার্ত ও ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য উত্তম হল, প্রথমে একটু পানি পান করে তারপরে খেতে শুরু করা। এ ছাড়া খেজুর ও পানিতে এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে, হার্টের উপকারিতায় যার প্রভাবের কথা কেবল ডাক্তারগণই জানেন।’[4]
বলা বাহুল্য, কারো কাছে পানি ও মধু থাকলে, পানিকে প্রাধান্য দিয়ে পানি দ্বারা ইফতার করবে। কেননা রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘--- যে ব্যক্তি তা না পায়, সে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কারণ, তা হল পবিত্র।’’ অবশ্য পানি পান করার পর মধু খাওয়া দোষাবহ নয়।[5]
এই ভিত্তিতেই খালি পেটে উপকারী বলে দাবী করে প্রথমে আদা-লবণ অথবা (খেজুর ছাড়া) অন্য কোন জিনিস মুখে নিয়ে ইফতার করা সুন্নতের প্রতিকূল। অবশ্য প্রথমে এক ঢোক পানি খেয়ে তারপর ঐ সব খেতে দোষ নেই।
ইফতার করার সময় খাওয়ার মত কোন জিনিস না পাওয়া গেলে মনে মনে ইফতারের নিয়ত করাই যথেষ্ট। এ ক্ষেত্রে আঙ্গুল চোষার প্রয়োজন নেই - যেমন কিছু সাধারণ লোক করে থাকে। যেমন রুমালকে থুথু দিয়ে ভিজিয়ে তা চোষাও বিধেয় নয়।[6]
জ্ঞাতব্য যে, অনেক লোকেই এই মাসের ইফতারের সময় বড় লম্বা-চওড়া দস্তরখান বিছিয়ে থাকে। যাতে সাজানো হয় (চর্ব্য-চোষ্য-লেহ্য-পেয়) নানা রকম পানাহার সামগ্রী। কখনো কখনো সাধ্যের বাইরে নানান ধরনের মাংস, শাক-সব্জি, ফল-মূল, শরবত-জুস ও ক্ষীর-সামাই-পিঠা-পুরি ইত্যাদির সম্ভার প্রস্ত্তত করা হয়। যার অনেকাংশ প্রয়োজনের অতিরিক্ত; বিধায় তা ফেলে দিতে হয়। যা নিঃসন্দেহে হারাম। রমাযান আমাদের কাছে তা চায় না। তাছাড়া অপচয় শরীয়তে নিষিদ্ধ ও নিন্দিত। মহান আল্লাহ বলেন,
(وَكُلُوْا وَاشْرَبُوْا وَلاَ تُسْرِفُوْا، إِنَّهُ لاَ يُحِبُّ الْمُسْرِفِيْنَ)
অর্থাৎ, তোমরা খাও এবং পান কর। আর অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীকে পছন্দ করেন না। (কুরআনুল কারীম ৭/৩১)
(وَلاَ تُبَذِّرْ تَبْذِيْراً، إِنَّ الْمُبَذِّرِيْنَ كَانُوْا إِخْوَانَ الشَّيَاطِيْنَ)
অর্থাৎ, তোমরা কিছুতেই অপব্যয় করো না। কারণ, অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। (কুরআনুল কারীম ১৭/২৬-২৭)
বলা বাহুল্য, এ ব্যাপারে আমাদেরকে মধ্যবর্তী পন্থা অবলম্বন করা উচিৎ। উচিৎ নয়, নিষিদ্ধ কৃপণদের পথ অবলম্বন করা। যেমন উচিৎ নয়, অপচয় ও অপব্যয়ের হারাম পথ গ্রহণ করা।[7]
আনাস (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) নামাযের পূর্বে কিছু আধা-পাকা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তা না পেলে পূর্ণ পাকা (শুকনা) খেজুর দিয়ে এবং তাও না পেলে কয়েক ঢোক পানি খেয়ে নিতেন।’[1]
তিনি আরো বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, "যে ব্যক্তি খেজুর পায়, সে যেন তা দিয়ে ইফতার করে। যে ব্যক্তি তা না পায়, সে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কারণ, তা হল পবিত্র।" [2]
ইবনুল কাইয়েম (রঃ) বলেন, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) খেজুর দ্বারা ইফতার করতে এবং তা না পাওয়া গেলে পানি দ্বারা ইফতার করতে উৎসাহিত করতেন। আর এ হল উম্মতের প্রতি তাঁর পরিপূর্ণ দয়া ও হিতাকাঙ্খার নিদর্শন। পেট খালি থাকা অবস্থায় প্রকৃতি (পাকস্থলী)কে মিষ্টি জিনিস দিলে তা অধিকরূপে গ্রহণ করে এবং তদ্দবারা বিভিন্ন শক্তিও উপকৃত হয়; বিশেষ করে দৃষ্টিশক্তি এর দ্বারা বৃদ্ধি পায়। মদ্বীনার মিষ্টি হল খেজুর। খেজুর মদ্বীনাবাসীর মিষ্টান্ন। খেজুরের উপরই তাদের লালন-পালন। খেজুর তাদের প্রধান খাদ্য এবং তা-ই তাদের সহযোগী খাদ্য। আর অর্ধপক্ক খেজুর তাদের ফলস্বরূপ।
পক্ষান্তরে পানিও (এ সময়ে বড় গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।) রোযার ফলে কলিজায় এক প্রকার শুষ্কতা আসে। সুতরাং তা প্রথমে পানি দিয়ে আর্দ্র করলে তারপর খাদ্য দ্বারা উপকার পরিপূর্ণ হয়। এ জন্য পিপাসার্ত ও ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য উত্তম হল, প্রথমে একটু পানি পান করে তারপরে খেতে শুরু করা। এ ছাড়া খেজুর ও পানিতে এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে, হার্টের উপকারিতায় যার প্রভাবের কথা কেবল ডাক্তারগণই জানেন।’[4]
বলা বাহুল্য, কারো কাছে পানি ও মধু থাকলে, পানিকে প্রাধান্য দিয়ে পানি দ্বারা ইফতার করবে। কেননা রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘--- যে ব্যক্তি তা না পায়, সে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কারণ, তা হল পবিত্র।’’ অবশ্য পানি পান করার পর মধু খাওয়া দোষাবহ নয়।[5]
এই ভিত্তিতেই খালি পেটে উপকারী বলে দাবী করে প্রথমে আদা-লবণ অথবা (খেজুর ছাড়া) অন্য কোন জিনিস মুখে নিয়ে ইফতার করা সুন্নতের প্রতিকূল। অবশ্য প্রথমে এক ঢোক পানি খেয়ে তারপর ঐ সব খেতে দোষ নেই।
ইফতার করার সময় খাওয়ার মত কোন জিনিস না পাওয়া গেলে মনে মনে ইফতারের নিয়ত করাই যথেষ্ট। এ ক্ষেত্রে আঙ্গুল চোষার প্রয়োজন নেই - যেমন কিছু সাধারণ লোক করে থাকে। যেমন রুমালকে থুথু দিয়ে ভিজিয়ে তা চোষাও বিধেয় নয়।[6]
জ্ঞাতব্য যে, অনেক লোকেই এই মাসের ইফতারের সময় বড় লম্বা-চওড়া দস্তরখান বিছিয়ে থাকে। যাতে সাজানো হয় (চর্ব্য-চোষ্য-লেহ্য-পেয়) নানা রকম পানাহার সামগ্রী। কখনো কখনো সাধ্যের বাইরে নানান ধরনের মাংস, শাক-সব্জি, ফল-মূল, শরবত-জুস ও ক্ষীর-সামাই-পিঠা-পুরি ইত্যাদির সম্ভার প্রস্ত্তত করা হয়। যার অনেকাংশ প্রয়োজনের অতিরিক্ত; বিধায় তা ফেলে দিতে হয়। যা নিঃসন্দেহে হারাম। রমাযান আমাদের কাছে তা চায় না। তাছাড়া অপচয় শরীয়তে নিষিদ্ধ ও নিন্দিত। মহান আল্লাহ বলেন,
(وَكُلُوْا وَاشْرَبُوْا وَلاَ تُسْرِفُوْا، إِنَّهُ لاَ يُحِبُّ الْمُسْرِفِيْنَ)
অর্থাৎ, তোমরা খাও এবং পান কর। আর অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীকে পছন্দ করেন না। (কুরআনুল কারীম ৭/৩১)
(وَلاَ تُبَذِّرْ تَبْذِيْراً، إِنَّ الْمُبَذِّرِيْنَ كَانُوْا إِخْوَانَ الشَّيَاطِيْنَ)
অর্থাৎ, তোমরা কিছুতেই অপব্যয় করো না। কারণ, অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। (কুরআনুল কারীম ১৭/২৬-২৭)
বলা বাহুল্য, এ ব্যাপারে আমাদেরকে মধ্যবর্তী পন্থা অবলম্বন করা উচিৎ। উচিৎ নয়, নিষিদ্ধ কৃপণদের পথ অবলম্বন করা। যেমন উচিৎ নয়, অপচয় ও অপব্যয়ের হারাম পথ গ্রহণ করা।[7]
[1] (আহমাদ, মুসনাদ ৩/১৬৪, আবূ দাঊদ ২৩৫৬, তিরমিযী ৬৯৬, ইবনে মাজাহ ২০৬৫, দারাকুত্বনী, সুনান ২৪০, হাকেম, মুস্তাদ্রাক ১/৪৩২, বাইহাকী ৪/২৩৯, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৯২২নং)
[2] (সহীহুল জামেউস সাগীর ৬৫৮৩)
[4] (যাদুল মা‘আদ ২/৫০-৫১)
[5] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৪৪২)
[6] (আশ্শারহুল মুমতে’)
[7] (তাওজীহাতুন অফাওয়াএদ লিসসা-য়েমীনা অসসায়েমাত ৩৩-৩৪পৃঃ)
রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী