১. আরব উপদ্বীপে গাছগাছালি ও নদীনালার প্রত্যাবর্তন :
আবু হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, 'ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতদিন না সম্পদের আধিক্য ও প্রাচুর্য ঘটবে। এমনকি মানুষ জাকাতের সম্পদ বের করে দান করার জন্য লোক খুঁজবে, কিন্তু কোনো গ্রহণকারী খুঁজে পাবে না। এমনকি আরবভূমিতে গাছগাছালি ও নদীনালা ফিরে আসবে। – সহিহু মুসলিম; মিশকাতুল মাসাবীহ
আরব ভূমিতে গাছগাছালি ও নদীনালা ফিরে আসার পেছনে কারণ হতে পারে আরবের লোকেরা কূপ খুঁড়ে পানি বের করে চাষাবাদ করবে। অথবা এমন কিছু হবে, যেটা বর্তমানে ঘটছে। অথবা হতে পারে পরিবেশ ও আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে আরবভূমিতে সবুজ-শ্যামল বাগান ও নদীনালা প্রকাশ পাবে। পরিবেশের পরিবর্তনে গরম আবহাওয়া সুবিমল আবহাওয়াতে পরিণত হবে। আর তখন আল্লাহ নদীনালা ও ঝরনা সৃষ্টি করবেন, যা আমাদের অনুর্বর ভূমিকে উর্বর ভূমিতে পরিণত করবে, আর শুকনো লতাগুলাহীন ভূমিকে সবুজ-শ্যামল করে দেবে। এটা তো স্পষ্টই। এ হাদিস আরব অঞ্চলের পূর্বেকার অবস্থায় ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে জানান দিচ্ছে।
২. নতুন চাঁদের ফুলে ওঠা :
কিয়ামতের নিকটবর্তিতার একটি দলিল হলো, মানুষ দেখবে, নতুন চাঁদ ওঠার সময় বড় হয়ে উঠছে। এমনকি এর সময়ের ব্যাপারে বলা হয়েছে যে, সদ্য ওঠা চাঁদকে মনে হবে দু-তিন দিনের পুরোনো চাঁদ। ইবনে মাসউদ (রাদিআল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, কিয়ামতের নিকটবর্তিতার আলামত হলো, নতুন চাঁদের বড় হয়ে ওঠা। – সহিহুল জামি আস সগির : ৫/২১৩; আল মুজামুল কাবির
আনাস (রাদিআল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, কিয়ামতের নিকটবর্তিতার আলামত হলো, মানুষ নতুন চাঁদকে বড় হয়ে উঠতে দেখবে। সদ্য ওঠা চাঁদের ব্যাপারে বলা হবে, দুরাত পুরোনো চাঁদ। মানুষ মসজিদকে যাতায়াতের পথ হিসেবে গ্রহণ করবে। হঠাৎ মৃত্যু বেড়ে যাবে। – সহিহুল জামি : ৬/২১৪; আল আওসাত
৩. আহলাম, দাহমা ও দুহাইমার ফিতনা :
আব্দুল্লাহ বিন উমর (রাদিআল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিনের কথা। আমরা রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর পাশে বসা ছিলাম। তিনি ফিতনা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। ফিতনা সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করলেন। এমনকি আহলাসের ফিতনার কথা উল্লেখ করলেন। তখন জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, “আহলাসের ফিতনা কী?” রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জবাব দিলেন, "পলায়ন ও লুটতরাজের ফিতনা।” এরপর আসবে সাররা (সচ্ছলতা ও ফূর্তির) ফিতনা। এরপর অন্ধকারময় ধোঁয়া বের হবে আমার বংশের এক লোকের পায়ের নিচ থেকে। সে দাবি করবে, সে আমার অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আদতে সে আমার অন্তর্ভুক্ত হবে না। কারণ আমার বন্ধু হলো মুত্তাকিগণ। এরপর মানুষ এক লোকের অধীনে একত্র হবে, যে হবে পাঁজরের ওপর কোমরের হাড়ের মতো (শাসকপদের অনুপযুক্ত)। এরপর আসবে দুহাইমার (ঘন অন্ধকারময়) ফিতনা। এ ফিতনা উম্মাহর সবাইকে চপেটাঘাত করবে। যখন বলা হবে এ ফিতনার অবসান হয়েছে, দেখা যাবে, তখন তা প্রসারিত হয়েছে। এ ফিতনাকালে মানুষ সকালে মুমিন থাকবে, সন্ধ্যায় কাফির হয়ে যাবে। এমনকি মানুষ দুটো শিবিরে বিভক্ত হয়ে যাবে। একটি হবে ইমানের শিবির, যাতে কোনো নিফাকি থাকবে না। অপরটি নিফাকের শিবির, যাতে কোনো ইমান থাকবে না। যেদিন এমনটা ঘটবে, সেদিন বা তার পরের দিন দাজ্জালের অপেক্ষায় থেকো। – ফাতহুল বারি : ১৩/৭৮
আহলাস হলো, উটের পিঠে জিনের নিচে বেঁধে দেওয়া কাপড়। এটার সাথে এ ফিতনার সাদৃশ্য দেওয়ার কারণ হলো, আহলাসের কাপড়টি যেমন উটের সাথে সব সময় লেগে থাকে, তেমন এ ফিতনা শুরু হওয়ার পর মানুষের সাথে লেগে থাকবে। খাত্তাবি (রহ:) বলেন, এ সম্ভাবনাও রয়েছে যে, এ ফিতনাকে আহলাসের সাথে সাদৃশ্য দেওয়ার কারণ হলো, তার কালো রং ও অন্ধকারচ্ছন্নতা।
সম্পদ ও সুস্থতার প্রাচুর্য মানুষকে যে আনন্দ দেয়, সেটা হলো সাররা। কিন্তু এর দিকে ফিতনাকে যুক্ত করার কারণ হলো, এ সচ্ছলতাই ফিতনার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। কারণ, মানুষ তখন বিপদ ও অভাব মুক্ত থাকবে, তাই তারা পাপ ও গুনাহ করতে দ্বিধা করবে না।
'পাঁজরের ওপর কোমরের হাড়ের মতো' -এখানে উপমা দেওয়া হয়েছে। পাজরের ওপর কোমরের হাড় যেমন অসংলগ্ন ও অযথার্থ স্থানে স্থাপিত, তেমনই সে শাসকও হবে অনুপযুক্ত।
দুহাইমা অর্থ হলো, এমন দুর্যোগ, যা হঠাৎ এসে তার অনিষ্টতা নিয়ে আঘাত হানে মানুষের ওপর।
— মৃত্যু থেকে মহাপ্রলয়, চতুর্থ পরিচ্ছেদ, ড. উমর সুলাইমান আল আশকার; রুহামা পাবলিকেশন
বি. দ্র : রুহামা পাবলিকেশন সালাফী প্রকাশনী নয়। সকলকে সাবধানতা অবলম্বনের অনুরোধ করছি। কোনো বিষয়ে সন্দেহ হলে সম্মানিত সালাফী আলেমদের শরণাপন্ন হোন।
আবু হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, 'ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতদিন না সম্পদের আধিক্য ও প্রাচুর্য ঘটবে। এমনকি মানুষ জাকাতের সম্পদ বের করে দান করার জন্য লোক খুঁজবে, কিন্তু কোনো গ্রহণকারী খুঁজে পাবে না। এমনকি আরবভূমিতে গাছগাছালি ও নদীনালা ফিরে আসবে। – সহিহু মুসলিম; মিশকাতুল মাসাবীহ
আরব ভূমিতে গাছগাছালি ও নদীনালা ফিরে আসার পেছনে কারণ হতে পারে আরবের লোকেরা কূপ খুঁড়ে পানি বের করে চাষাবাদ করবে। অথবা এমন কিছু হবে, যেটা বর্তমানে ঘটছে। অথবা হতে পারে পরিবেশ ও আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে আরবভূমিতে সবুজ-শ্যামল বাগান ও নদীনালা প্রকাশ পাবে। পরিবেশের পরিবর্তনে গরম আবহাওয়া সুবিমল আবহাওয়াতে পরিণত হবে। আর তখন আল্লাহ নদীনালা ও ঝরনা সৃষ্টি করবেন, যা আমাদের অনুর্বর ভূমিকে উর্বর ভূমিতে পরিণত করবে, আর শুকনো লতাগুলাহীন ভূমিকে সবুজ-শ্যামল করে দেবে। এটা তো স্পষ্টই। এ হাদিস আরব অঞ্চলের পূর্বেকার অবস্থায় ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে জানান দিচ্ছে।
২. নতুন চাঁদের ফুলে ওঠা :
কিয়ামতের নিকটবর্তিতার একটি দলিল হলো, মানুষ দেখবে, নতুন চাঁদ ওঠার সময় বড় হয়ে উঠছে। এমনকি এর সময়ের ব্যাপারে বলা হয়েছে যে, সদ্য ওঠা চাঁদকে মনে হবে দু-তিন দিনের পুরোনো চাঁদ। ইবনে মাসউদ (রাদিআল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, কিয়ামতের নিকটবর্তিতার আলামত হলো, নতুন চাঁদের বড় হয়ে ওঠা। – সহিহুল জামি আস সগির : ৫/২১৩; আল মুজামুল কাবির
আনাস (রাদিআল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, কিয়ামতের নিকটবর্তিতার আলামত হলো, মানুষ নতুন চাঁদকে বড় হয়ে উঠতে দেখবে। সদ্য ওঠা চাঁদের ব্যাপারে বলা হবে, দুরাত পুরোনো চাঁদ। মানুষ মসজিদকে যাতায়াতের পথ হিসেবে গ্রহণ করবে। হঠাৎ মৃত্যু বেড়ে যাবে। – সহিহুল জামি : ৬/২১৪; আল আওসাত
৩. আহলাম, দাহমা ও দুহাইমার ফিতনা :
আব্দুল্লাহ বিন উমর (রাদিআল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিনের কথা। আমরা রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর পাশে বসা ছিলাম। তিনি ফিতনা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। ফিতনা সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করলেন। এমনকি আহলাসের ফিতনার কথা উল্লেখ করলেন। তখন জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, “আহলাসের ফিতনা কী?” রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জবাব দিলেন, "পলায়ন ও লুটতরাজের ফিতনা।” এরপর আসবে সাররা (সচ্ছলতা ও ফূর্তির) ফিতনা। এরপর অন্ধকারময় ধোঁয়া বের হবে আমার বংশের এক লোকের পায়ের নিচ থেকে। সে দাবি করবে, সে আমার অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আদতে সে আমার অন্তর্ভুক্ত হবে না। কারণ আমার বন্ধু হলো মুত্তাকিগণ। এরপর মানুষ এক লোকের অধীনে একত্র হবে, যে হবে পাঁজরের ওপর কোমরের হাড়ের মতো (শাসকপদের অনুপযুক্ত)। এরপর আসবে দুহাইমার (ঘন অন্ধকারময়) ফিতনা। এ ফিতনা উম্মাহর সবাইকে চপেটাঘাত করবে। যখন বলা হবে এ ফিতনার অবসান হয়েছে, দেখা যাবে, তখন তা প্রসারিত হয়েছে। এ ফিতনাকালে মানুষ সকালে মুমিন থাকবে, সন্ধ্যায় কাফির হয়ে যাবে। এমনকি মানুষ দুটো শিবিরে বিভক্ত হয়ে যাবে। একটি হবে ইমানের শিবির, যাতে কোনো নিফাকি থাকবে না। অপরটি নিফাকের শিবির, যাতে কোনো ইমান থাকবে না। যেদিন এমনটা ঘটবে, সেদিন বা তার পরের দিন দাজ্জালের অপেক্ষায় থেকো। – ফাতহুল বারি : ১৩/৭৮
আহলাস হলো, উটের পিঠে জিনের নিচে বেঁধে দেওয়া কাপড়। এটার সাথে এ ফিতনার সাদৃশ্য দেওয়ার কারণ হলো, আহলাসের কাপড়টি যেমন উটের সাথে সব সময় লেগে থাকে, তেমন এ ফিতনা শুরু হওয়ার পর মানুষের সাথে লেগে থাকবে। খাত্তাবি (রহ:) বলেন, এ সম্ভাবনাও রয়েছে যে, এ ফিতনাকে আহলাসের সাথে সাদৃশ্য দেওয়ার কারণ হলো, তার কালো রং ও অন্ধকারচ্ছন্নতা।
সম্পদ ও সুস্থতার প্রাচুর্য মানুষকে যে আনন্দ দেয়, সেটা হলো সাররা। কিন্তু এর দিকে ফিতনাকে যুক্ত করার কারণ হলো, এ সচ্ছলতাই ফিতনার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। কারণ, মানুষ তখন বিপদ ও অভাব মুক্ত থাকবে, তাই তারা পাপ ও গুনাহ করতে দ্বিধা করবে না।
'পাঁজরের ওপর কোমরের হাড়ের মতো' -এখানে উপমা দেওয়া হয়েছে। পাজরের ওপর কোমরের হাড় যেমন অসংলগ্ন ও অযথার্থ স্থানে স্থাপিত, তেমনই সে শাসকও হবে অনুপযুক্ত।
দুহাইমা অর্থ হলো, এমন দুর্যোগ, যা হঠাৎ এসে তার অনিষ্টতা নিয়ে আঘাত হানে মানুষের ওপর।
— মৃত্যু থেকে মহাপ্রলয়, চতুর্থ পরিচ্ছেদ, ড. উমর সুলাইমান আল আশকার; রুহামা পাবলিকেশন
বি. দ্র : রুহামা পাবলিকেশন সালাফী প্রকাশনী নয়। সকলকে সাবধানতা অবলম্বনের অনুরোধ করছি। কোনো বিষয়ে সন্দেহ হলে সম্মানিত সালাফী আলেমদের শরণাপন্ন হোন।
Last edited: