সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

সিয়াম কাফের বা অমুসলিমের জন্য রোযা এ দুনিয়ায় আদায়যোগ্য ওয়াজেব নয়

Abu Abdullah

Knowledge Sharer

ilm Seeker
Uploader
Salafi User
Threads
745
Comments
997
Solutions
19
Reactions
10,183
Credits
6,271
কাফের বা অমুসলিমের জন্য রোযা এ দুনিয়ায় আদায়যোগ্য ওয়াজেব নয়। কেননা, সে রোযা রাখলেও তা শুদ্ধ হবে না এবং আল্লাহর দরবারে কবুলও হবে না। যেহেতু রোযা (অনুরূপ যে কোন ইবাদত) শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম প্রধান শর্ত হল ইসলাম। (যেমন শর্ত হল ইখলাস ও মুহাম্মাদী তরীকা।) মহান আল্লাহ বলেন,

(وَمَا مَنَعَهُمْ أَنْ تُقْبَلَ مِنْهُمْ نَفَقَاتُهُمْ إِلاَّ أَنَّهُمْ كَفَرُوْا بِاللهِ وَبِرَسُوْلِهِ وَلاَ يَأْتُوْنَ الصَّلاَةَ إِلاَّ وَهُمْ كُسَالَى وَلاَ يُنْفِقُوْنَ إِلاَّ وَهُمْ كَارِهُوْنَ)​

অর্থাৎ, ওদের অর্থ সাহায্য গ্রহণে বাধা কেবল এই ছিল যে, ওরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে অস্বীকার করে, নামাযে শৈথিল্যের সাথে হাজির হয় এবং একান্ত অনিচ্ছাকৃতভাবেই দান করে। (কুরআনুল কারীম ৯/৫৪)

বলা বাহুল্য, দানের মত জিনিস; যার উপকার অপরের উপর বর্তে -তা যদি কবুল না হয়, তাহলে অন্যান্য ইবাদত বেশী কবুল না হওয়ার কথা।

কোন কাফের যদি রমাযানের দিনে ইসলাম গ্রহণ করে, তাহলে দিনের অবশিষ্টাংশ রোযা নষ্টকারী জিনিস হতে তাকে বিরত থাকতে হবে। কেননা, মুসলিম হওয়ার সাথে সাথে রোযা তারও উপর ওয়াজেব হয়ে যায়। অবশ্য ইসলাম কবুল করার পূর্বে যে রোযা অতিবাহিত হয়ে গেছে তা আর কাযা করতে হবে না। কারণ, সে সময় তার উপর রোযা ওয়াজেব ছিল না। মহান আল্লাহ বলেন,

(قُلْ لِلَّذِيْنَ كَفَرُوْا إِنِ انْتَهَوْا يُغْفَرْ لَهُمْ مَا قَدْ سَلَفَ)​

অর্থাৎ, কাফেরদেরকে বল, যদি তারা (কুফরী থেকে) বিরত হয়, তাহলে তাদের অতীতের পাপ মাফ করে দেওয়া হবে। (কুরআনুল কারীম ৮/৩৮)

আর যেহেতু লোকেরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে মুসলমান হত, অথচ তিনি তাঁদেরকে তাদের (ইসলামের পূর্বে) ছুটে যাওয়া নামায, যাকাত বা রোযা কাযা করতে আদেশ করতেন না।

কিন্তু মহান আল্লাহ কাল কিয়ামতে তা ত্যাগ করার জন্য এবং অনুরূপ দ্বীনের সকল ওয়াজেব কর্ম ত্যাগ করার জন্য কাফেরদেরকেও শাস্তি দেবেন। সেদিন মুমিনরা কাফেরদেরকে দোযখে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে যে প্রশ্ন করবে, সেই কথা মহান আল্লাহ কুরআন মাজীদে উল্লেখ করে বলেন,

(مَا سَلَكَكُمْ فِيْ سَقَر؟ قَالُوْا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّيْنَ، وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ الْمِسْكِيْنَ، وَكُنَّا نَخُوْضُ مَعَ الْخَائِضِيْنَ، وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ الدِّيْنَ)​

অর্থাৎ, কিসে তোমাদেরকে সাকার (জাহান্নামে) নিক্ষেপ করেছে? তারা বলবে, আমরা নামাযী ছিলাম না, মিসকীনকে আহার্য দান করতাম না, অন্যায় আলোচনাকারীদের সাথে আলোচনায় যোগ দিতাম এবং কিয়ামতের দিনকে মিথ্যা মনে করতাম। (কুরআনুল কারীম ৭৪/৪২-৪৬)[1]

মুসলিম রোযাদারদের সামনে অমুসলিমদের রমাযানের দিনে পানাহার করায় কোন ক্ষতি নেই। কেননা, তাতে রোযাদার মুসলিম আল্লাহ আযযা অজাল্লার প্রশংসা করবে যে, তিনি তাকে ইসলামের প্রতি পথপ্রদর্শন করেছেন; যে ইসলামে রয়েছে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক সুখ। (তাদেরকে দেখে) আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করবে যে, তিনি তাদের ঐ (ভ্রষ্টতার) আপদ থেকে মুক্তি দিয়েছেন; যারা তাঁর হেদায়াতের আলো গ্রহণ করেনি। আর বিদিত যে, মুসলিমের জন্য যদিও এ দুনিয়াতে রমাযানের দিনে শরীয়তের আইন অনুযায়ী পানাহার করা নিষিদ্ধ, কিন্তু কিয়ামতের দিন সে তার উপযুক্ত বিনিময় প্রাপ্ত হবে। সেদিন তাকে বলা হবে,

(كُلُوْا وَاشْرَبُوْا هَنِيْئاً بِمَا أَسْلَفْتُمْ فِيْ الأَيَّامِ الْخَالِيَة)​

অর্থাৎ, তোমরা পার্থিব জীবনে ভালো কাজ করেছিলে তারই কারণে (আজ) তৃপ্তির সাথে পানাহার কর। (কুরআনুল কারীম ৬৯/২৪)

অবশ্য সাধারণ স্থানে অমুসলিমদেরকে প্রকাশ্যভাবে পানাহার করতে বারণ করতে হবে। কারণ, তা ইসলামী রাষ্টেºর পরিবেশের প্রতিকূল।


রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী​
 
Top