‘ইয়াজিদ ইবন মুয়াবিয়ার ব্যাপারে মানুষজন তিনভাগে বিভক্ত। এরমধ্যে দুইভাগ চরমপন্থী, আর একভাগ মধ্যমপন্থী।
চরমপন্থী দুই দলের একদল মনে করে— ইয়াজিদ হলো কাফের এবং মুনাফিক। কারণ— তার কূটকৌশল এবং নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি তার বিদ্বেষের কারণেই নবিজীর দৌহিত্র হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুকে হত্যা করা হয়। ইয়াজিদ মনে করতো— বদর এবং অন্যান্য যুদ্ধে নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবিগন (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) কর্তৃক, বিশেষ করে আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক ইয়াজিদের দাদা উতবাহ, তার দাদার ভাই শাইবাহ এবং তার মামা ওয়ালিদ ইবন শাইবাহ খুন হয়৷ এর প্রতিশোধ নিতেই ইয়াজিদ নবিজীর দৌহিত্র, আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুর পুত্র হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুকে হত্যা করে। বলে রাখা ভালো— রাফেজীরাও (ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাওয়া একটা দল) ঠিক এভাবে চিন্তা করে থাকে৷ এমনকি— তারা আবু বকর, ওমর এবং উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুমাকেও কাফির সাব্যস্ত করতে দ্বিধা করে না। সুতরাং, এদের দৃষ্টিতে ইয়াজিদকে কাফের মনে হওয়াই স্বাভাবিক।
চরমপন্থীদের দ্বিতীয় দল মনে করে— ইয়াজিদ ছিলো অত্যন্ত পরহেজগার, তাকওয়াবান এবং একজন ন্যায়নিষ্ঠ শাসক। তাদের দাবি— ইয়াজিদ একজন সাহাবি যে কি-না নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময়ে জন্মগ্রহণ করেছে এবং নবিজীর আদর-স্নেহ পেয়ে ধন্য হয়েছে। তাদের কেউ কেউ ইয়াজিদকে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু এবং ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর চাইতেও উঁচু দরের সাহাবি ভাবে এবং অনেকে তাকে নবি পর্যন্ত ভাবে।
যারা প্রথমদিকের মুসলিমদের সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন এবং যাদের ন্যুনতম বিবেচনা বোধ রয়েছে তারা মাত্রই বুঝেন যে— ইয়াজিদ ইবন মুয়াবিয়াকে কেন্দ্র করে উপরিউক্ত দুই দলের চিন্তা এবং বিশ্বাস অবশ্যই ভুল এবং তা কোনোভাবে সুন্নাহর আলেমদের অভিমত নয়।
তৃতীয় এবং মধ্যমপন্থীদের বিশ্বাস হলো এই— ইয়াজিদ ইবন মুয়াবিয়া ছিলেন মুসলমানদের একজন শাসক। তার যেমন ভালো কাজ আছে, তেমনি আছে মন্দ কাজও। উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতের আগ অবধি তার জন্ম হয়নি। তিনি কাফির নন, তবে এটা ঠিক— হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুকে হত্যার বিষয়টা তার মাধ্যমেই ঘটেছে। সে কোন সাহাবি ছিলো না। না সে ছিলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালার কোন প্রিয়তম বান্দা। ইমাম আহমাদ রাহিমাহুল্লাহ সহ আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আহ’র আলিমদের অভিমতও এটাই।
সালিহ ইবন আহমাদ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে বললাম, ‘বাবা, কেউ কেউ বলে যে— তারা নাকি ইয়াজিদকে ভালোবাসে’। তিনি (ইমাম আহমাদ) বললেন, ‘আমার ছেলে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা এবং শেষ দিবসে বিশ্বাস করে এমন কেউ কি ইয়াজিদিকে ভালোবাসতে পারে?’
আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ‘বাবা, তাহলে কেনো আপনি ইয়াজিদকে অভিশাপ দেন না?’
তিনি বললেন, ‘তোমার বাবাকে কখনো কাউকে অভিশাপ দিতে দেখেছো?’
– শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া আল-হাররানী আল-হাম্বলী (রাহিমাহুল্লাহ)
মাজমু’আল ফাতওয়া, খন্ড : ৪র্থ, পৃষ্ঠা : ৪৮১-৪৮৪
চরমপন্থী দুই দলের একদল মনে করে— ইয়াজিদ হলো কাফের এবং মুনাফিক। কারণ— তার কূটকৌশল এবং নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি তার বিদ্বেষের কারণেই নবিজীর দৌহিত্র হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুকে হত্যা করা হয়। ইয়াজিদ মনে করতো— বদর এবং অন্যান্য যুদ্ধে নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবিগন (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) কর্তৃক, বিশেষ করে আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক ইয়াজিদের দাদা উতবাহ, তার দাদার ভাই শাইবাহ এবং তার মামা ওয়ালিদ ইবন শাইবাহ খুন হয়৷ এর প্রতিশোধ নিতেই ইয়াজিদ নবিজীর দৌহিত্র, আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুর পুত্র হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুকে হত্যা করে। বলে রাখা ভালো— রাফেজীরাও (ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাওয়া একটা দল) ঠিক এভাবে চিন্তা করে থাকে৷ এমনকি— তারা আবু বকর, ওমর এবং উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুমাকেও কাফির সাব্যস্ত করতে দ্বিধা করে না। সুতরাং, এদের দৃষ্টিতে ইয়াজিদকে কাফের মনে হওয়াই স্বাভাবিক।
চরমপন্থীদের দ্বিতীয় দল মনে করে— ইয়াজিদ ছিলো অত্যন্ত পরহেজগার, তাকওয়াবান এবং একজন ন্যায়নিষ্ঠ শাসক। তাদের দাবি— ইয়াজিদ একজন সাহাবি যে কি-না নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময়ে জন্মগ্রহণ করেছে এবং নবিজীর আদর-স্নেহ পেয়ে ধন্য হয়েছে। তাদের কেউ কেউ ইয়াজিদকে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু এবং ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর চাইতেও উঁচু দরের সাহাবি ভাবে এবং অনেকে তাকে নবি পর্যন্ত ভাবে।
যারা প্রথমদিকের মুসলিমদের সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন এবং যাদের ন্যুনতম বিবেচনা বোধ রয়েছে তারা মাত্রই বুঝেন যে— ইয়াজিদ ইবন মুয়াবিয়াকে কেন্দ্র করে উপরিউক্ত দুই দলের চিন্তা এবং বিশ্বাস অবশ্যই ভুল এবং তা কোনোভাবে সুন্নাহর আলেমদের অভিমত নয়।
তৃতীয় এবং মধ্যমপন্থীদের বিশ্বাস হলো এই— ইয়াজিদ ইবন মুয়াবিয়া ছিলেন মুসলমানদের একজন শাসক। তার যেমন ভালো কাজ আছে, তেমনি আছে মন্দ কাজও। উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতের আগ অবধি তার জন্ম হয়নি। তিনি কাফির নন, তবে এটা ঠিক— হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুকে হত্যার বিষয়টা তার মাধ্যমেই ঘটেছে। সে কোন সাহাবি ছিলো না। না সে ছিলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালার কোন প্রিয়তম বান্দা। ইমাম আহমাদ রাহিমাহুল্লাহ সহ আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আহ’র আলিমদের অভিমতও এটাই।
সালিহ ইবন আহমাদ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে বললাম, ‘বাবা, কেউ কেউ বলে যে— তারা নাকি ইয়াজিদকে ভালোবাসে’। তিনি (ইমাম আহমাদ) বললেন, ‘আমার ছেলে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা এবং শেষ দিবসে বিশ্বাস করে এমন কেউ কি ইয়াজিদিকে ভালোবাসতে পারে?’
আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ‘বাবা, তাহলে কেনো আপনি ইয়াজিদকে অভিশাপ দেন না?’
তিনি বললেন, ‘তোমার বাবাকে কখনো কাউকে অভিশাপ দিতে দেখেছো?’
– শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া আল-হাররানী আল-হাম্বলী (রাহিমাহুল্লাহ)
মাজমু’আল ফাতওয়া, খন্ড : ৪র্থ, পৃষ্ঠা : ৪৮১-৪৮৪