Abdul fattah
Well-known member
- Joined
- Mar 16, 2023
- Threads
- 64
- Comments
- 66
- Solutions
- 1
- Reactions
- 512
- Thread Author
- #1
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুশরিকদের কতিপয় লোক যারা ব্যাপকভাবে হত্যা ও ব্যভিচারে লিপ্ত ছিল। তারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে জিজ্ঞেস করল, আপনি যে দীনের প্রতি মানুষদের আহ্বান জানাচ্ছেন, এ তো অনেক উত্তম বিষয়। তবে আমাদের পূর্বকৃত গুনাহসমূহের কাফফারা সম্পর্কে আপনি যদি আমাদের নিশ্চিতভাবে কিছু অবহিত করতেন। তখন এ আয়াত নাযিল হয়: “আর যারা আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহকে ডাকে না এবং যারা আল্লাহ যে নফসকে হত্যা করা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না। আর যারা ব্যভিচার করে না”। [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ৬৮]
আরো নাযিল হয়, “বলুন ‘হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজদের উপর বাড়াবাড়ি করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না”। [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৫২]
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৮১০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২২।
আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একলোক আরয করল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা জাহেলী যুগে যা করেছি, এর জন্যও কি আমাদের পাকড়াও করা হবে? তিনি বললেন, “যে ব্যক্তি ইসলাম অবস্থায় ভালো করবে, জাহেলী যুগে সে কী করেছে, তার জন্য পাকড়াও করা হবে না। আর ইসলাম গ্রহণের পর যে মন্দ করবে, তাকে প্রথম ও শেষ সব আমলের জন্য পাকড়াও করা হবে”।
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৯২১; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২০।
হাদীসে উল্লিখিতالإساءة শব্দের অর্থ কুফুরী ও শির্কী। যে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণের পরে আল্লাহর সাথে শির্ক ও কুফুরী করবে তাকে জাহেলী ও ইসলাম যুগের সব আমলের জন্য পাকড়াও করা হবে। আর যে ব্যক্তি শির্ক ও কুফুরী করবে না, তাকে জাহেলী যুগের আমলের জন্য পাকড়াও করা হবে না। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
“যারা কুফুরী করেছে আপনি তাদেরকে বলুন, যদি তারা বিরত হয় তাহলে অতীতে যা হয়েছে তাদেরকে তা ক্ষমা করা হবে”। [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৩৮]
আমর ইবন ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত পূর্বের হাদীসে এসেছে,
“ইসলাম পূর্বের সব মন্দ আমল ধ্বংস করে দেয়”।
সহীহ, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১।
ইবন শিমাসা আল-মাহরী রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা ‘আমর ইবন ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে দেখতে উপস্থিত হলাম। তখন তিনি দেয়ালের দিকে মুখ করে অনেকক্ষণ কাঁদছিলেন। তার পুত্র তাকে তার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদত্ত বিভিন্ন সুসংবাদের উল্লেখ পূর্বক প্রবোধ দিচ্ছেন যে, আব্বা! রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আপনাকে অমুক সুসংবাদ দেন নি? রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আপনাকে অমুক সুসংবাদ দেন নি? বর্ণনাকারী বলেন, তখন তিনি পুত্রের দিকে মুখ ফিরালেন এবং বললেন, আমার সর্বোৎকৃষ্ট পাথেয় হচ্ছে ‘লা ইলাহা ইল্লালাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’- এ কালেমার সাক্ষ্য দেওয়া। আর আমি অতিক্রম করেছি আমার জীবনের তিনটি পর্যায়। এক সময় তো আমি এমন ছিলাম যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিরুদ্ধাচরণে আমার চেয়ে কঠোরতর আর কেউই ছিল না। আমি যদি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কব্জায় পেতাম আর হত্যা করতে পারতাম, এ ছিল আমার সবচেয়ে প্রিয় ভাবনা। যদি সে অবস্থায় আমার মৃত্যু হতো, তবে নিশ্চিত আমাকে জাহান্নামে যেতে হতো। এরপর আল্লাহ যখন আমার অন্তরে ইসলামের অনুরাগ সৃষ্টি করে দিলেন, তখন আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্থিত হয়ে অনুরোধ জানালাম যে, আপনার ডান হাত বাড়িয়ে দিন, আমি বায়‘আত করতে চাই। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ডান হাত বাড়িয়ে দিলেন, তখন আমি আমার হাত টেনে নিলাম। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমর, কী ব্যাপার? আমি বললাম, পূর্বে আমি শর্ত করে নিতে চাই। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, কী শর্ত করবে? আমি উত্তরে বললাম, আল্লাহ যেন আমার সব গুনাহ মাফ করে দেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমর! তুমি কী জানো না যে, ইসলাম পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়। হিজরত পূর্বেকৃত গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেয় এবং হজও পূর্বের সকল গুনাহ মিটিয়ে দেয়। ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, এ পর্যায়ে আমার অন্তরে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপেক্ষা বেশি প্রিয় আর কেউ ছিল না। আমার চোখে তিনি অপেক্ষা মহান আর কেউ ছিল না। অপরিসীম শ্রদ্ধার কারণে আমি তার প্রতি চোখ ভরে তাকাতেও পারতাম না। আজ যদি আমাকে তাঁর দেহ আকৃতির বর্ণনা করতে বলা হয়, তবে আমার পক্ষে তা সম্ভব হয়ে উঠবে না। কারণ চোখভরে আমি কখনোই তাঁর প্রতি তাকাতে পারি নি। ঐ অবস্থায় যদি আমার মৃত্যু হতো তবে অবশ্যই আমি জান্নাতী হওয়ার আশাবাদী থাকতাম। পরবর্তীকালে আমরা নানা বিষয়ের সাথে জড়িয়ে পড়েছি। তাই জানি না, এতে আমার অবস্থান কোথায়? সুতরাং আমি যখন মারা যাবো, তখন যেনো কোনো বিলাপকারী অথবা আগুন যেন আমার জানাযার সাথে না থাকে। আমাকে যখন দাফন করবে তখন আমার উপর আস্তে আস্তে মাটি ফেলবে এবং দাফন সেরে একটি উট যবাই করে তার গোশত বণ্টন করতে যে সময় লাগে, ততক্ষণ আমার কবরের পাশে অবস্থান করবে, যেনো তোমাদের উপস্থিতির কারণে আমি আতঙ্ক-মুক্ত অবস্থায় চিন্তা করতে পারি যে, আমার রবের দূতের (ফিরিশতার) কী জবাব দেবো”।
সহীহ, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১।
হাদীসে উল্লিখিত ‘আমর ইবন ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর বাণী, «كُنْتُ عَلَى أَطْبَاقٍ ثَلَاثٍ» অর্থ তিন অবস্থায় বা তিনকালে। যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী,
“অবশ্যই তোমরা এক স্তর থেকে অন্য স্তরে আরোহণ করবে”। [সূরা আল-ইনশিকাক, আয়াত: ১৯] অর্থাৎ এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থা, এক স্তর থেকে অন্য স্তর।
কাযী ‘ইয়াদ্ব রহ. ‘আমর ইবন ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর বাণী, «فَشُنُّوا عَلَيَّ التُّرَابَ شَنًّا» সীন বর্ণে নকতাযোগে বা নকতা ছাড়া, কেউ কেউ বলেছেন, উভয়টির অর্থ একই। এর অর্থ হলো ঢেলে দেওয়া। কেউ কেউ বলেছেন, সীন বর্ণে নকতা ছাড়া অর্থ আস্তে ঢেলে দেওয়া। আর নকতা যোগে অর্থ হলো আলাদা আলাদা করে মাটি ঢালা। এটি মাইয়্যেতের কবরে মাটি দেওয়ার সুন্নাত। আল-মুফহিম, লিলকুরতবী, ১/৩৩০।
আরো নাযিল হয়, “বলুন ‘হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজদের উপর বাড়াবাড়ি করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না”। [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৫২]
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ نَاسًا، مِنْ أَهْلِ الشِّرْكِ كَانُوا قَدْ قَتَلُوا وَأَكْثَرُوا، وَزَنَوْا وَأَكْثَرُوا، فَأَتَوْا مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [ص:126] فَقَالُوا: إِنَّ الَّذِي تَقُولُ وَتَدْعُو إِلَيْهِ لَحَسَنٌ، لَوْ تُخْبِرُنَا أَنَّ لِمَا عَمِلْنَا كَفَّارَةً فَنَزَلَ: ﴿وَٱلَّذِينَ لَا يَدۡعُونَ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَ وَلَا يَقۡتُلُونَ ٱلنَّفۡسَ ٱلَّتِي حَرَّمَ ٱللَّهُ إِلَّا بِٱلۡحَقِّ وَلَا يَزۡنُونَ﴾ [الفرقان: ٦٨] وَنَزَلَتْ: ﴿قُلۡ يَٰعِبَادِيَ ٱلَّذِينَ أَسۡرَفُواْ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُواْ مِن رَّحۡمَةِ ٱللَّهِ﴾ [الزمر: ٥٢].
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৮১০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২২।
عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَنُؤَاخَذُ بِمَا عَمِلْنَا فِي الجَاهِلِيَّةِ؟ قَالَ: «مَنْ أَحْسَنَ فِي الإِسْلاَمِ لَمْ يُؤَاخَذْ بِمَا عَمِلَ فِي الجَاهِلِيَّةِ، وَمَنْ أَسَاءَ فِي الإِسْلاَمِ أُخِذَ بِالأَوَّلِ وَالآخِرِ».
আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একলোক আরয করল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা জাহেলী যুগে যা করেছি, এর জন্যও কি আমাদের পাকড়াও করা হবে? তিনি বললেন, “যে ব্যক্তি ইসলাম অবস্থায় ভালো করবে, জাহেলী যুগে সে কী করেছে, তার জন্য পাকড়াও করা হবে না। আর ইসলাম গ্রহণের পর যে মন্দ করবে, তাকে প্রথম ও শেষ সব আমলের জন্য পাকড়াও করা হবে”।
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৯২১; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২০।
হাদীসে উল্লিখিতالإساءة শব্দের অর্থ কুফুরী ও শির্কী। যে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণের পরে আল্লাহর সাথে শির্ক ও কুফুরী করবে তাকে জাহেলী ও ইসলাম যুগের সব আমলের জন্য পাকড়াও করা হবে। আর যে ব্যক্তি শির্ক ও কুফুরী করবে না, তাকে জাহেলী যুগের আমলের জন্য পাকড়াও করা হবে না। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿قُل لِّلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ إِن يَنتَهُواْ يُغۡفَرۡ لَهُم مَّا قَدۡ سَلَفَ﴾ [الانفال: ٣٨]
“যারা কুফুরী করেছে আপনি তাদেরকে বলুন, যদি তারা বিরত হয় তাহলে অতীতে যা হয়েছে তাদেরকে তা ক্ষমা করা হবে”। [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৩৮]
আমর ইবন ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত পূর্বের হাদীসে এসেছে,
«إنَّ الْإِسْلَامَ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ»
“ইসলাম পূর্বের সব মন্দ আমল ধ্বংস করে দেয়”।
সহীহ, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১।
عَنِ ابْنِ شِمَاسَةَ الْمَهْرِيِّ، قَالَ: حَضَرْنَا عَمْرَو بْنَ الْعَاصِ، وَهُوَ فِي سِيَاقَةِ الْمَوْتِ، يَبَكِي طَوِيلًا، وَحَوَّلَ وَجْهَهُ إِلَى الْجِدَارِ، فَجَعَلَ ابْنُهُ يَقُولُ: يَا أَبَتَاهُ، أَمَا بَشَّرَكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِكَذَا؟ أَمَا بَشَّرَكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِكَذَا؟ قَالَ: فَأَقْبَلَ بِوَجْهِهِ، فَقَالَ: إِنَّ أَفْضَلَ مَا نُعِدُّ شَهَادَةُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ، إِنِّي قَدْ كُنْتُ عَلَى أَطْبَاقٍ ثَلَاثٍ، لَقَدْ رَأَيْتُنِي وَمَا أَحَدٌ أَشَدَّ بُغْضًا لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنِّي، وَلَا أَحَبَّ إِلَيَّ أَنْ أَكُونَ قَدِ اسْتَمْكَنْتُ مِنْهُ، فَقَتَلْتُهُ، فَلَوْ مُتُّ عَلَى تِلْكَ الْحَالِ لَكُنْتُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ، فَلَمَّا جَعَلَ اللهُ الْإِسْلَامَ فِي قَلْبِي أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ: ابْسُطْ يَمِينَكَ فَلْأُبَايِعْكَ، فَبَسَطَ يَمِينَهُ، قَالَ: فَقَبَضْتُ يَدِي، قَالَ: «مَا لَكَ يَا عَمْرُو؟» قَالَ: قُلْتُ: أَرَدْتُ أَنْ أَشْتَرِطَ، قَالَ: «تَشْتَرِطُ بِمَاذَا؟» قُلْتُ: أَنْ يُغْفَرَ لِي، قَالَ: «أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ الْإِسْلَامَ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ؟ وَأَنَّ الْهِجْرَةَ تَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهَا؟ وَأَنَّ الْحَجَّ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ؟» وَمَا كَانَ أَحَدٌ أَحَبَّ إِلَيَّ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَلَا أَجَلَّ فِي عَيْنِي مِنْهُ، وَمَا كُنْتُ أُطِيقُ أَنْ أَمْلَأَ عَيْنَيَّ مِنْهُ إِجْلَالًا لَهُ، وَلَوْ سُئِلْتُ أَنْ أَصِفَهُ مَا أَطَقْتُ؛ لِأَنِّي لَمْ أَكُنْ أَمْلَأُ عَيْنَيَّ مِنْهُ، وَلَوْ مُتُّ عَلَى تِلْكَ الْحَالِ لَرَجَوْتُ أَنْ أَكُونَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ، ثُمَّ وَلِينَا أَشْيَاءَ مَا أَدْرِي مَا حَالِي فِيهَا، فَإِذَا أَنَا مُتُّ فَلَا تَصْحَبْنِي نَائِحَةٌ، وَلَا نَارٌ، فَإِذَا دَفَنْتُمُونِي فَشُنُّوا عَلَيَّ التُّرَابَ شَنًّا، ثُمَّ أَقِيمُوا حَوْلَ قَبْرِي قَدْرَ مَا تُنْحَرُ جَزُورٌ وَيُقْسَمُ لَحْمُهَا، حَتَّى أَسْتَأْنِسَ بِكُمْ، وَأَنْظُرَ مَاذَا أُرَاجِعُ بِهِ رُسُلَ رَبِّي.
ইবন শিমাসা আল-মাহরী রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা ‘আমর ইবন ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে দেখতে উপস্থিত হলাম। তখন তিনি দেয়ালের দিকে মুখ করে অনেকক্ষণ কাঁদছিলেন। তার পুত্র তাকে তার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদত্ত বিভিন্ন সুসংবাদের উল্লেখ পূর্বক প্রবোধ দিচ্ছেন যে, আব্বা! রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আপনাকে অমুক সুসংবাদ দেন নি? রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আপনাকে অমুক সুসংবাদ দেন নি? বর্ণনাকারী বলেন, তখন তিনি পুত্রের দিকে মুখ ফিরালেন এবং বললেন, আমার সর্বোৎকৃষ্ট পাথেয় হচ্ছে ‘লা ইলাহা ইল্লালাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’- এ কালেমার সাক্ষ্য দেওয়া। আর আমি অতিক্রম করেছি আমার জীবনের তিনটি পর্যায়। এক সময় তো আমি এমন ছিলাম যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিরুদ্ধাচরণে আমার চেয়ে কঠোরতর আর কেউই ছিল না। আমি যদি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কব্জায় পেতাম আর হত্যা করতে পারতাম, এ ছিল আমার সবচেয়ে প্রিয় ভাবনা। যদি সে অবস্থায় আমার মৃত্যু হতো, তবে নিশ্চিত আমাকে জাহান্নামে যেতে হতো। এরপর আল্লাহ যখন আমার অন্তরে ইসলামের অনুরাগ সৃষ্টি করে দিলেন, তখন আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্থিত হয়ে অনুরোধ জানালাম যে, আপনার ডান হাত বাড়িয়ে দিন, আমি বায়‘আত করতে চাই। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ডান হাত বাড়িয়ে দিলেন, তখন আমি আমার হাত টেনে নিলাম। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমর, কী ব্যাপার? আমি বললাম, পূর্বে আমি শর্ত করে নিতে চাই। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, কী শর্ত করবে? আমি উত্তরে বললাম, আল্লাহ যেন আমার সব গুনাহ মাফ করে দেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমর! তুমি কী জানো না যে, ইসলাম পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়। হিজরত পূর্বেকৃত গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেয় এবং হজও পূর্বের সকল গুনাহ মিটিয়ে দেয়। ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, এ পর্যায়ে আমার অন্তরে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপেক্ষা বেশি প্রিয় আর কেউ ছিল না। আমার চোখে তিনি অপেক্ষা মহান আর কেউ ছিল না। অপরিসীম শ্রদ্ধার কারণে আমি তার প্রতি চোখ ভরে তাকাতেও পারতাম না। আজ যদি আমাকে তাঁর দেহ আকৃতির বর্ণনা করতে বলা হয়, তবে আমার পক্ষে তা সম্ভব হয়ে উঠবে না। কারণ চোখভরে আমি কখনোই তাঁর প্রতি তাকাতে পারি নি। ঐ অবস্থায় যদি আমার মৃত্যু হতো তবে অবশ্যই আমি জান্নাতী হওয়ার আশাবাদী থাকতাম। পরবর্তীকালে আমরা নানা বিষয়ের সাথে জড়িয়ে পড়েছি। তাই জানি না, এতে আমার অবস্থান কোথায়? সুতরাং আমি যখন মারা যাবো, তখন যেনো কোনো বিলাপকারী অথবা আগুন যেন আমার জানাযার সাথে না থাকে। আমাকে যখন দাফন করবে তখন আমার উপর আস্তে আস্তে মাটি ফেলবে এবং দাফন সেরে একটি উট যবাই করে তার গোশত বণ্টন করতে যে সময় লাগে, ততক্ষণ আমার কবরের পাশে অবস্থান করবে, যেনো তোমাদের উপস্থিতির কারণে আমি আতঙ্ক-মুক্ত অবস্থায় চিন্তা করতে পারি যে, আমার রবের দূতের (ফিরিশতার) কী জবাব দেবো”।
সহীহ, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১।
হাদীসে উল্লিখিত ‘আমর ইবন ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর বাণী, «كُنْتُ عَلَى أَطْبَاقٍ ثَلَاثٍ» অর্থ তিন অবস্থায় বা তিনকালে। যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী,
﴿لَتَرۡكَبُنَّ طَبَقًا عَن طَبَقٖ ١٩﴾ [الانشقاق: ١٩]
“অবশ্যই তোমরা এক স্তর থেকে অন্য স্তরে আরোহণ করবে”। [সূরা আল-ইনশিকাক, আয়াত: ১৯] অর্থাৎ এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থা, এক স্তর থেকে অন্য স্তর।
কাযী ‘ইয়াদ্ব রহ. ‘আমর ইবন ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর বাণী, «فَشُنُّوا عَلَيَّ التُّرَابَ شَنًّا» সীন বর্ণে নকতাযোগে বা নকতা ছাড়া, কেউ কেউ বলেছেন, উভয়টির অর্থ একই। এর অর্থ হলো ঢেলে দেওয়া। কেউ কেউ বলেছেন, সীন বর্ণে নকতা ছাড়া অর্থ আস্তে ঢেলে দেওয়া। আর নকতা যোগে অর্থ হলো আলাদা আলাদা করে মাটি ঢালা। এটি মাইয়্যেতের কবরে মাটি দেওয়ার সুন্নাত। আল-মুফহিম, লিলকুরতবী, ১/৩৩০।