লেনদেন ও ব্যবসা ইসলামে শরীআত-সম্মত উপার্জন মাধ্যম

Abu UmarVerified member

If you're in doubt ask الله.
Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Joined
Nov 25, 2022
Threads
664
Comments
1,232
Solutions
17
Reactions
7,375
উপার্জনের দিক থেকে শরীআত-সম্মত সম্পদ কয়েকপ্রকার।

প্রথম প্রকার: মালিকানাহীন সম্পদ লব্ধ করা

তা এমন সম্পদ মৌলিকভাবে যা কারো মালিকানায় নেই। এমন সম্পদের ক্ষেত্রে ফকীহগণ ‘বৈধবস্তু অর্জন করা’ ও ‘বৈধবস্তুর মালিক হওয়া’ অভিধা ব্যবহার করেন। এমন সম্পদের ক্ষেত্রে নিয়ম হচ্ছে, যদি তাতে কারো অধিকার না থাকে, তাহলে উক্ত সম্পদ সর্বপ্রথম যে ব্যক্তি লব্ধ করতে সক্ষম হবে, সে উক্ত সম্পদের মালিক হয়ে যাবে। যেমন, মাটির নিচে থাকা খনিজ সম্পদ; যদি কোনো ব্যক্তি তা অনুসন্ধান চালিয়ে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়, তাহলে সে উক্ত খনিজ সম্পদের মালিক হয়ে যাবে। মালিকানাহীন পরিত্যক্ত জমিনকে চাষাবাদের মাধ্যমে ও নদীনালা থেকে সেঁচের মাধ্যমে আবাদ করা ও জীবিত করা[1]। সমুদ্র ও নদীর প্রাণী শিকার করা। এসব উপার্জন হালাল এবং উপার্জনকারী তা সানন্দে কাজে লাগাতে পারে। তবে শর্ত হচ্ছে, উক্ত সম্পদগুলো কোনো ব্যক্তির মালিকানায় ও অধিকারে থাকবে না। যদি সেগুলো কোনো ব্যক্তির অধিকারে না থাকে, তখন সর্বপ্রথম উপার্জনকারী ও অর্জনকারী তার মালিক হয়ে যাবে।

দ্বিতীয় প্রকার: জোরপূর্বক লব্ধ করা সম্পদ, যদি তার থেকে জোরপূর্বক সম্পদ লব্ধ করা হারাম না হয়

এ প্রকার সম্পদ হচ্ছে, কাফিরদের সাথে যুদ্ধ করে মুসলিমরা তাদের থেকে যেসব সম্পদ লব্ধ করে, যেমন―ফাই[2] ও গনীমতের[3] সম্পদ।

তৃতীয় প্রকার: কারো অধিকার আদায় না করার কারণে জোরপূর্বক লব্ধকৃত সম্পদ

কারো ওপর যদি কারো অধিকার থাকে আর সে যদি তার অধিকার আদায় না করে, তাহলে অধিকার সমপরিমাণ সম্পদ জোর করে লব্ধ করা যায়। যেমন ওয়াজিব যাকাত এবং অধিকার হিসেবে প্রাপ্ত খরচ। যদি সচ্ছল ব্যক্তি অধিকার প্রদান না করে বা যার ওপর অধিকার রয়েছে সে অধিকার আদায় না করে, তাহলে তার সম্মতি ছাড়াই বিচারকের মাধ্যমে উক্ত অধিকার লব্ধ করা যাবে এবং তার সম্মতি ছাড়াই লব্ধকৃত সম্পদ শরীআতের অনুমোদন অনুযায়ী অধিকারীর মালিকানায় চলে যাবে।[4]

চতুর্থ প্রকার: কোনো কিছুর বিনিময়ে লব্ধ সম্পদ

অর্থাৎ শরীআতসম্মত উপায়ে ও শর্ত অনুযায়ী ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ।

পঞ্চম প্রকার: কোনোরকম বিনিময় ছাড়াই লব্ধকৃত সম্পদ

যেমন সাদাকার মাধ্যমে বা দানের মাধ্যমে বা অসিয়াতের মাধ্যমে প্রাপ্ত সম্পদ; যদি তাতে শরীআতসম্মত শর্ত বিদ্যমান থাকে।

ষষ্ঠ প্রকার: সম্পদের মালিকের স্বাধীনতা ও ইচ্ছা ছাড়াই লব্ধ সম্পদ

যেমন উত্তাধিকারের মাধ্যমে প্রাপ্ত সম্পদ; যদিও তাতে মুওয়াররিসের[5] কোনো স্বাধীনতা ও ইচ্ছা থাকে না।

- উস্তায আব্দুল্লাহ মাহমুদ।​

[1] ইসলামের ভূমি আইন হচ্ছে, যদি কোনো জমির কোনো মালিক না থাকে বরং মালিকানাবিহীন পড়ে থাকে, তাহলে উক্ত জমি সর্বপ্রথম যে দখল করবে, সে তার মালিক হয়ে যাবে। কিন্তু বাংলাদেশ ভূমি আইনে এসব জমির মালিক সরকার।―অনুবাদক
[2] ফাই বলতে বোঝায়, কাফিরদের যে সম্পদ মুসলিমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করা ছাড়াই পেয়ে থাকে। এমন সম্পদের মালিক সাধারণত বাইতুল মাল বা রাষ্ট্রীয় কোষাগার হয়ে থাকে। বাইতুল মাল ও সরকার তা বিভিন্ন কাজে প্রয়োজন অনুপাতে খরচ করে থাকে।―অনুবাদক
[3] গনীমত বলতে বোঝায়, কাফিরদের যে সম্পদ মুসলিমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করে পেয়ে থাকে। এমন সম্পদ যোদ্ধাদের মাঝে বণ্টন করে দেওয়া হয়। তবে বাইতুল মাল বা রাষ্ট্রীয় কোষাগারের জন্য তা থেকে একপঞ্চমাংশ কর্তন করা হয়ে থাকে।―অনুবাদক
[4] যেমন কেউ কারো কাছে টাকা পাবে কিন্তু টাকা দিচ্ছে না অথবা স্বামী তার স্ত্রীর খরচ প্রদান করছে না। তাহলে এ ক্ষেত্রে জোরপূর্বক বা বিচারের ফয়সালা অনুযায়ী অধিকার আদায় করা যাবে।―অনুবাদক
[5] মুওয়াররিস বলতে বোঝায়, যে ব্যক্তি মারা যাবার ফলে তার জীবিত উত্তরাধিকারীদের উত্তরাধিকারী বানিয়ে যায়। সহজ কথায় মৃতব্যক্তিকে মুওয়াররিস বলা হয়। সামনে আমরা সবজায়গায় মুওয়াররিস শব্দটি ব্যবহার করবো, ইনশাআল্লাহ।―অনুবাদক
 
Similar threads Most view View more
Back
Top